দুশ্চিন্তার কয়েক ঘন্টা

in hive-129948 •  2 years ago 

GridArt_20230407_223152362_copy_1228x818.jpg

নমস্কার বন্ধুরা,

ভোর তিনটের সময় এমন একটা খবর আসবে কল্পনাও করিনি। আসলে খারাপ খবর গুলো কেমন যেন অতর্কিত এসে হামলা করে আর বাস্তব জীবনের অনেক কিছু পাল্টে দেয়। তিনটের সময় যখন ওইপার থেকে আওয়াজ এলো মামার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে তখন ঘুম চটকে গিয়েছে। বিস্তারিত কিছু জানার আগেই ফোন কেটে গেলো। বাকি রাতে আর ঘুম এলো না তাই জেগে কাটিয়ে দিলাম। সকাল ন'টায় কিছু কাজকর্ম সেরে হালকা মুখচোখে জল দিতেই অল্প কিছুক্ষণের জন্য চোখটা লেগে গেলো। বেলা ১১:০০ টায় ফের ফোন এলো। মামার পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্থিতিশীল তবে ডাক্তার দুর্গাপুরে রেফার করেছে।

PXL_20230403_164841656_copy_801x524.jpg

দুপুর বারোটার দিকে জানতে পারলাম অ্যাম্বুলেন্স করে মামাকে নিয়ে দুর্গাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। মনটা আনচান করতে থাকলো। বারবার মনে হচ্ছিলো যাই। আসলে দুঃসময়ে পাশে থাকার মানুষ খুবই কমে গেছে। আসাটা তড়িৎ ঠিক করে ঝটপট ট্রেনের টিকিটটা কেটে নিলাম। বিকেল পাঁচটা কুড়ি মিনিটের ট্রেন। দুর্গাপুর পৌঁছতে পৌঁছতে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা বাজবে। ঘুম আসছিলো না তাই দুপুরটা কেটে গেলো জিনিসপত্র গুছিয়ে নেওয়াতেই।বিকেল চারটা বাজতে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়লাম। স্টেশনে খানিকটা আগে পৌঁছালে দৌড়াদৌড়ি করতে হয় না।

PXL_20230403_171326177_copy_1209x907.jpg

বিকেল পাঁচটার কিছুটা আগে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে গেলাম যেখান থেকে আমার দুর্গাপুর যাওয়ার জন্য টিকিট কোলফিল্ড এক্সপ্রেস। ট্রেনে উঠে আমি আমার নির্ধারিত সিটে বসে পড়লাম। বসার কিছু বাদেই ট্রেন সঠিক সময়েই ছেড়ে দিতেই স্বস্তি পেলাম। আদপে যখন থেকে শুনেছি মামার পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক তখন থেকে মনে যেন একটু সাহস পেয়েছি। দুশ্চিন্তা বেশ কিছুটা কমেছে বললেও কম হয় না।

PXL_20230403_192605408_copy_1209x907.jpg

ট্রেন সঠিক সময়ে দুর্গাপুর পৌঁছলো। মামাকে যে হাসপাতালে আনা হচ্ছে তার নাম দ্যা মিশন হসপিটাল দুর্গাপুর। নেমেই তাই আশপাশের মানুষজনকে জিজ্ঞেস করে হাসপাতালে যাবার বাসে উঠে পড়লাম। রাস্তা অল্প টুকু তবুও বাসে চেপে হাসপাতালে পৌঁছতে প্রায় ঘন্টাখানেক লেগে গেলো। কি আর করার। হাসপাতাল পৌঁছে আধঘন্টা মতো দাঁড়িয়ে থাকতেই অ্যাম্বুলেন্সটা এলো, ঝটপট ইমারজেন্সিতে মামাকে ঢুকিয়ে দেয়ার খানিক বাদেই ডাক্তার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের খবর দিয়ে গেলো। এও জানালো আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষার করলে পুরোটা পরিষ্কার হবে তবে সেগুলো আগামীকাল হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কথা শুনে গত কয়েক ঘন্টার দুশ্চিন্তা কিছুটা হলেও কমলো।




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness


Support @heroism by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

|| Join HEROISM ||

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ঈশ্বর আপনার মামাকে সুস্থ করে দিক , এই আমার প্রার্থনা। আপনিও কিন্তু সাবধানে থাকবেন। আসলে অনাকাঙ্খিত ভাবে খবরটা শুনে আপনার মনে হয় মাথা ঠিক ছিল না। তারপর আবার এতটা পথ জার্নি।

হঠাৎ খবরে মাথাই নষ্ট হয়ে গেলো।

খারাপ খবর গুলো এমন অতর্কিত আসে যা শুনলে সত্যিই মনটা একেবারে ভেঙে যায়। আর এই খবরগুলো শুনলে ঘুম যেন কোথায় পালিয়ে যায়, আর দুশ্চিন্তা এসে বাসা বাঁধে মস্তিষ্কের ভেতরে। মনে হয় এই অতর্কিত খারাপ খবরটা কখন যেন কোন খবরটা শোনাবে আমাকে। দাদা, আপনার মামার এমন অসুস্থতার কথা শুনে সত্যিই খুব খারাপ লাগলো। মহান সৃষ্টিকর্তা যেন আপনার মামাকে খুব দ্রুত সুস্থ করে তোলেন এই কামনা করছি।

তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠলেই ভালো।

প্রথমেই দোয়া রইল যে আপনার মামার জন্য। তিনি যেন খুব দ্রুত সুস্থ্যতা লাভ করেন। আসলে দুশ্চিন্তা গুলো মনের মধ্যে এমন করে বাসা বাধে যে সেটা সরানো টা দুস্কর । আর আপনার তো দুশ্চিন্তা করারই কথা কখন যে কি হয়। আর দুশ্চিন্তা তো আর কারও কথা শুনে না, যে আসবে না।

সেটাই দিদি। হুট করেই এমন খবর।

সত্যি দাদা, হঠাৎ করে এ ধরনের অপ্রত্যাশিত খবর শুনে অস্বাভাবিক হওয়াটাই স্বাভাবিক। আর বর্তমান সময়ে হঠাৎ অসুস্থতা কিংবা হঠাৎ বিপদে পড়লে পাশে তেমন লোক খুঁজে পাওয়ায় কষ্টকর। প্রিয় দাদা আমি আপনার মামার সার্বিক সুস্থতা কামনা করছি। আর যেহেতু দুর্গাপুরে দ্যা মিশন হসপিটালে আপনার মামাকে রেফার করে দিয়েছে এবং আপনার পোস্টটি পড়ে জানতে পারলাম আপনার মামার শরীরের অবস্থা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। তাই আমি আশা করি আপনার মামা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। আর আপনার মামা যতক্ষণ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে না উঠছে ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি অবশ্যই আপনার মামার সেবা যত্নে ব্যস্ত থাকবেন।

বিপদের সময় মানুষেরা যেন দৌড়ে পালায়। প্রতি বার সেটার প্রমান পাই।