পুজো পরিক্রমা ২০২৪ : প্রতাপাদিত্য রোড ত্রিকোণ পার্ক

in hive-129948 •  last month 

নমস্কার বন্ধুরা,

ভারতে ইংরেজ আসার বহুবছর আগের কথা, তখন শহর কলকাতার পত্তন হয়নি। সুতানুটি, গোবিন্দপুর ও কলকাতা এই তিনটি গ্রাম গভীর জঙ্গলে আবৃত, তার মধ্যে দিয়েই একটি হাঁটা পথের রাস্তা ছিলো কালীঘাট পর্যন্ত। ইংরেজরা কলকাতায় নিজেদের ঘাঁটি গেড়ে বসলে তখন এই রাস্তা পথটিকে নাম দেয় পিলগ্রিমস রোড, যার বাংলা অর্থ তীর্থযাত্রীদের পথ। ৫১ সতী পিঠের মধ্যে অন্যতম সতী পিঠ হলো কালীঘাটের মায়ের মন্দির। সেই সময়ে তিন গ্রামের ভেতর দিয়ে জঙ্গলের পথ ধরেই তীর্থযাত্রীরা যাতায়াত করতেন চিৎপুর থেকে কালীঘাট। চিৎপুরে আছেন, মা শ্রী শ্রী জয়চন্ডী চিত্তেশ্বরীর মন্দির সেখান থেকে সোজা কালীঘাটের মায়ের মন্দির।

1000064515.jpg

দেবী চিত্তেশ্বরীর মায়ের মন্দির প্রতিষ্ঠা করে পুজো প্রচলন করে বাংলার প্রখ্যাত চিত্তেশ্বর রায়। যিনি সেকেলে চিতে ডাকাত নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন। দেবী চিত্তেশ্বরীর হলেন মা দুর্গারই আরেক রূপ। তীর্থ যাত্রীরা মা চিত্তেশ্বরীর মন্দিরে পুজো দিয়ে কলকাতা সুতানটির পথ ধরে কালীঘাটে পৌঁছে যেতেন। কেউ আবার পৌঁছতেন, বহমান মা গঙ্গার জলপথ ধরে। সেই পথের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনেক। যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে কলকাতা গড়ে উঠেছে, যা আজ কল্লোলিনী কলকাতার রূপ পেয়েছে। প্রতাপাদিত্য রোড ত্রিকোণ পার্ক পুজো সমিতির এ বছরের প্রয়াস সেই হারিয়ে যাওয়া পথের গল্প নিয়ে।আমাদের আয়ুর যেমন একপাশে চিত্ত বা চেতনা আর অন্য পাশে মহাকালো ডাক জীবনের মতই। জীবনের মত পথ শুরু হয়ে যেখানে পথের শেষ হয়েছে, দুটোই মায়ের কাছে। এই ভাবনাকে ফুটিয়ে তুলে এবছরে তাদের প্রতাপাদিত্য রোড ত্রিকোণ পার্কের থিম স্ব-পথ, যে পথ ধরে হেঁটে গেলে চেনা যায় নিজেকে।

1000064516.jpg

1000064528.jpg

1000064527.jpg

তৃতীয়ার রাত্তিরে প্রতাপাদিত্য রোড ত্রিকোণ পার্ক দিয়ে আমি আমার সেদিনের পুজো পরিক্রমা শেষ করি। মুদিয়ালি থেকে বেরিয়ে রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশনের দিকে যাব সেই সময় মনে হল কাছেই প্রতাপাদিত্য রোডের পুজো মন্ডপ সেখান থেকে ঘুরে বাড়ি ফিরি। হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছলাম প্রতাপাদিত্য রোড ত্রিকোণ পার্কের পুজোতে। ভাবনাকে ফুটিয়ে তোলার জন্য পুরো মন্ডপটাকে সাজানো হয়েছে সেই সময়ের জঙ্গল আবিষ্ট পথের মত। পুরো কাজটাই করা হয়েছে কাঠের উপরে। মূল মন্ডপের ঢোকার মুখে কালীঘাট মায়ের মন্দিরের আদলের প্রতিকৃতি সেখান ঢুকতে হবে মন্ডপের গর্ভ গৃহে। গর্ভ গৃহে সেই সময়ের চিৎপুর থেকে কালীঘাট আসার যে পথ ছিল সেটাকে খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মা গঙ্গার যাত্রাপথও সেখানে ফুটে উঠেছে। কিভাবে সেই সময় তীর্থযাত্রীরা শ্রী শ্রী জয়চন্ডী চিত্তেশ্বরীর মায়ের মন্দির থেকে কালীঘাট পৌঁছে যেতেন সেটার একটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। মন্ডপে আর পেলাম, পুরোনো গ্রাম কলকাতার আবেশ।

1000064526.jpg

1000064525.jpg

1000064522.jpg

দেবী প্রতিমা শ্রী শ্রী জয়চন্ডী চিত্তেশ্বরীর মায়ের আদলে। মন্ডপের আন্দর সজ্জার সাথে সামঞ্জস্য রেখে খুব সুন্দর আলো আঁধারির মধ্যে মা অধিষ্ঠিত হয়ে আছেন।

1000064524.jpg

1000064529.jpg


"আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির প্রথম MEME Token : $PUSS by RME দাদা

"আমার বাংলা ব্লগের" প্রথম FUN MEME টোকেন $PUSS এখন SUNSWAP -এ লিস্টেড by RME দাদা


X-প্রোমশনের ক্ষেত্রে যে ট্যাগ গুলো ব্যবহার করবেন,
@sunpumpmeme @trondao $PUSS




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness

Or

Set @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

বেশ ভালো লাগলো আপনার লেখাটা বিস্তারিত পড়ে। প্রাচীন কালের কথা, প্রাচীন কলকাতার পথঘাট ধরে তীর্থ যাত্রার পথ - স্ব- পথ- সম্পূর্ণ থিম টাই বেশ দারুণ লাগলো। আর আলো - আধাঁরির খেলায় মায়ের প্রতিমাও বেশ অপূর্ব লাগলো দাদা। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এমম সুন্দর একটি থিমের পুজো পরিক্রমা শেয়ার করার জন্য।

এই ভাবনাকে ফুটিয়ে তুলে এবছরে তাদের প্রতাপাদিত্য রোড ত্রিকোণ পার্কের থিম স্ব-পথ, যে পথ ধরে হেঁটে গেলে চেনা যায় নিজেকে।

প্রতাপাদিত্য রোড ত্রিকোণ পার্কের থিমটা যেমন সুন্দর, তেমনি থিম অনুযায়ী তাদের আয়োজন একেবারে পারফেক্ট হয়েছে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি গুলো জাস্ট অসাধারণ হয়েছে দাদা। সবমিলিয়ে বেশ ভালো লাগলো পোস্টটি দেখে। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

হারিয়ে যাওয়া কলকাতার গল্প দারুন ভাবে তুলে আনলো ত্রিকোণ পার্ক পুজা মন্ডপ। কিছুদিন আগে আমি দেবী চিত্তেশ্বরী মন্দির দেখতে গিয়েছিলাম। কাশিপুর উদ্যানবাটির একদম পাশেই সেই মন্দির। আপনি দারুন সুন্দর করে সেইসব কলকাতার গল্প তুলে আনলেন। আর এই পূজা মন্ডপটি সেই থিমের উপর দারুন প্যান্ডেল করেছে।।