নমস্কার বন্ধুরা,
আলিপুর সার্বজনীনের পুজো দেখে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলাম সুরুচি সংঘে। দক্ষিণ কলকাতার দুর্গা পুজো গুলোর মধ্যে সুরুচি সংঘের পুজো খুবই সুপরিচিত। আলিপুর সার্বজনীন থেকে বড়জোর কিলোমিটার খানেক দূরত্বে থাকা সুরুচি সংঘে পৌঁছতে প্রায় দু কিলোমিটার পথ হাঁটতে হলো, সৌজন্যে অসংখ্য ব্যারিকেড। তবে ষষ্ঠীর দিন থেকে ভীড়ের কথা মাথায় রেখেই চলে গেলাম সুপরিচিত এই ক্লাবে।
যদিও চতুর্থীতে গিয়েও যে পরিমাণে ভিড় পেলাম সেটা ছিলো অকল্পনীয়। ৩০ মিনিটের বেশি সময় ধরে লাইনে দাঁড়ানোর পর তবেই পুজো মন্ডপে ঢোকার সুযোগ হয়েছিল। আদপে যখন পৌঁছেছিলাম তখন বাংলা সিনেমার প্রখ্যাত অভিনেতা প্রসেনজিৎ, বাংলাদেশের প্রখ্যাত অভিনেত্রী জয়া এহসান, চিত্র পরিচালক সৃজিত মুখার্জিরা সুরুচি সংঘে এসেছিলেন।
৭০ তম বছরে পদার্পণ করা সুরুচি সংঘের এ বছরের থিম "মা তোর এই অঙ্গে এত রূপ"। শিল্পী শ্রী গৌরাঙ্গ কুইলার হাত ধরে এবারে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের হস্তশিল্প গুলো উঠে এসেছে, সেখানে স্থান পেয়েছে বাঁকুড়ার টেরাকোটা, বিকনা'র ডোকরা মূর্তি, পূর্ব বর্ধমানের কাঠের পুতুল, মেদিনীপুরের পটচিত্র আরো অনেক কিছুই।
বেশ কিছুটা সময় লাইনে আটোসাটা ভাবে দাঁড়িয়ে থাকার পর যখন মণ্ডপের কাছে পৌঁছালাম তখন শুধুই অভিভূত ভরে তাকিয়ে রইলাম। দাঁড়িয়ে থাকার সব কষ্টই কেটে গেলো। পুরো মন্ডপ তৈরি করা হয়েছে মাছ ধরার পলো দিয়ে, যা আমাদের গ্রামবাংলার জেলেদের মাছ ধরার মূল উপকরণ। পলোর বিভিন্ন রকম আকৃতি দিয়ে মন্ডপ বানানো সাথে বাঁকুড়ার টেরাকোটার পুতুল দিয়ে মন্ডপ সজ্জা। আলোকসজ্জায় সেগুলো আরো ফুটে উঠেছে। আরো অভিভূত হওয়ার বাকি ছিল।
ভীড় দিলে মন্ডপের ভেতরটায় ঢুকে গিয়ে আরো আশ্চর্য হলাম। পুরো মণ্ডপের ভেতরটা মেদিনীপুরের পটের কাজের উপরে করা হয়েছে। আর মাতৃ প্রতিমাতে রয়েছে বাঁকুড়া জেলার ডোকরার ব্যবহার।
শিল্পী এভাবেই সুরুচি সংঘের পুজোতে পশ্চিমবঙ্গের নানান রূপ তুলে ধরেছেন। যা "মা তোর এই অঙ্গে এত রূপ" থিমের সাথে যথাযথ।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmVZ2LnjzbteWf1QSr3MqRaJx7dYMMGANXS258rRfzaubR/Division.jpeg)