ন্যাড়া পোড়ানো আর কিছু ইতিহাস // ১০% লাজুক 🦊-কে

in hive-129948 •  3 years ago  (edited)

নমস্কার,

"আজ আমাদের ন্যাড়া পোড়া কাল আমাদের দোল পূর্ণিমাতে চাঁদ উঠেছে বল হরি বোল।" বিখ্যাত এই লাইনটি সব প্রায় সব বাঙালিই জানে।


সনাতন ধর্মে দোলের ঠিক আগেরদিন ন্যাড়া পোড়ানোর প্রচলন আছে। পশ্চিমবঙ্গে ন্যাড়াপোড়া বলা হলেও ভারতবর্ষের সর্বত্র হোলিকা দহন নামেই পরিচিত। হোলির ঠিক আগের সন্ধ্যায় ন্যাড়া পোড়ানো হয় তাই বলাই যায় ন্যাড়া পোড়ানো থেকেই হোলির শুভারম্ভ।

রীতি অনুযায়ী ফাগুনের পূর্ণিমাতে শুকনো ডাল, পাতা এক জায়গায় স্তূপাকার করে সেটাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া। পুরোটাই প্রতীকী! অশুভের উপর শুভর জয়।

ভগবত পুরান অনুযায়ী প্রায় ৫০০০ বছর পূর্বে ভারতে হিরণ্যকশিপু নামের জনৈক দৈত্যরাজ ছিলেন। হিরণ্যকশিপুর ভাই হিরণ্যাক্ষ ভগবান শ্রী বিষ্ণুর হাতে নিহত হওয়ায় হিরণ্যকশিপু তাঁর রাজ্যে বিষ্ণু আরাধনা বন্ধ করে দেন। কথায় আছে না, বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো। দৈত্যরাজের নিজের ছেলে প্রহ্লাদই শ্রী বিষ্ণুর পরম ভক্ত হয়।

বিষ্ণুভক্ত প্রহ্লাদের বিষ্ণু উপাসনা সহ্য করতে না পেরে দৈত্যরাজ খুব চালাকি করে তার সন্তানকে মারায় উদ্যত হন। দৈত্যরাজ প্রহ্লাদকে মারতে তার বোন হোলিকাকে দায়িত্ব দেন। চতুর বুদ্ধি খাটিয়ে হিরণ্যকশিপু তার বোন হোলিকার কোলে প্রহ্লাদ কে বসিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। আসলে হোলিকার কাছে এক বিশেষ ধরনের চাদর ছিলো যে চাদরে আগুন স্পর্শ করতে পারতো না। উদ্দেশ্য ছিল প্রহ্লাদ সেই আগুনে পুড়ে যাবে কিন্তু বেঁচে যাবেন হোলিকা। ঈশ্বরের অপার ইচ্ছে ভক্তির জোরে প্রহ্লাদ সে যাত্রায় বেঁচে গেলো কিন্তু আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেলো তার পিসি হোলিকা।



সেই থেকেই সনাতনধর্মীরা দোলের আগেরদিন ন্যাড়া পোড়ায় যেটা হোলিকা দহন উৎসব বলা হয়। যুগ যুগ থেকেই সনাতনধর্মীদের বিশ্বাস যে ন্যাড়া পোড়ানোর মাধ্যমে অশুভের দমন হয় ও শুভশক্তির জয় হয়। যেমনটা ভক্ত প্রহ্লাদ তার ভক্তি জোরে সে যাত্রায় বেঁচে যায় কিন্তু দুষ্ট হোলিকা মারা যায়।



ছোট বেলায় আজকের দিনটা ছিল খুব মজার ছিলো আমরা সবাই মিলে কাঠ, পাতা জোগাড় করে আগুন লাগিয়ে দিতাম। পরের দিন অনেক হুল্লোড় করে রঙ খেলতাম।





Support @heroism by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ভাই প্রথমে ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা রইলো।

আসলে এসব ইতিহাস আমার অজানা জদিও আমি ইতিহাসের ছাত্র তবুও জানা নেই।আপনার পোস্ট থেকে জানতে অয়ারলাম আমাদের পাশের এলাকায় এমন উতসব চলছিলো কাল খুবই দারুন ধন্যবাদ সুন্দর উপস্থাপনার মাধ্যমে শেয়ার করার জন্য

যতদিন বাঁচি, শিখি ততদিন।

দাদা আপনার পোষ্টের মাধ্যমে অজানা একটা বিষয় জানতে পারলাম। আসলে আমরা যে ধর্মেরই অনুসারী হইনা কেন প্রত্যেকেরই উচিত ধর্মীয় বিষয়গুলো ভালভাবে জানার চেষ্টা করা। এই যে ন্যারা পোড়ানোর ইতিহাস আপনি বললেন আমার ধারনা বেশিরভাগ হিন্দু ভাইয়েরা এই ইতিহাস জানেন না। যাই হোক নতুন কিছু জানানোর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

ন্যাড়া পোড়ার পেছনের ইতিহাস হয়তো অনেকেই জানেন না, তাই চেষ্টা করলাম আমি যতটুকু জানি সবার মাঝে ভাগ করে নিতে। ধন্যবাদ ফিরদৌস দা 🤗

দাদা প্রথমেই আপনাকে দোলের শুভেচ্ছা। ন্যাড়া ন্যাড়া পোড়া অনেক শুনেছি।কিন্তুু এই ইতিহাস জানতাম না।আজকে দাদা আপনার পোস্টের মাধ্যে কিছু জানতে পারলাম।ধন্যবাদ দাদা ভালো ছিলো।শুভেচ্ছা রইলো।

দিদি আপনাকেও দোলের শুভেচ্ছা। কিছটা অবগত করা গেলো আমি তাতেই খুশি 🤗

দাদা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই , সেই সাথে দোল পূর্ণিমার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন, ভাই আপনার পোস্ট থেকে দোল পূর্ণিমার আগের দিনে ন্যাড়া পুড়ানো বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হলাম। শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল দাদা আপনার জন্য।