এক অন্যরকম ঠকে যাওয়া

in hive-129948 •  5 months ago 

নমস্কার বন্ধুরা,

কলকাতা শহরটা বেশ অদ্ভুত। লক্ষাধিক মানুষ সারাদিন সারারাত ছুটে চলেছে কর্মসংস্থানের জন্য, নিজের এবং পরিবারের জন্য সৎ পথে দুমুঠো পেটের ভাত জোগাড় করার জন্য। সেখানেই কিছু মানুষ সারাদিন ছুটে চলেছে অন্য মানুষকে ঠকিয়ে টাকা রোজগার করার জন্য। মাঝেমধ্যে আমিও সম্মুখীন হই সেরকমই কিছু মানুষের সাথে। পথ চলতি দাঁড় করিয়ে টাকা দাবি করে বসে, কোনোসময় সেটা বাড়ি যাওয়ার ভাড়া নেই বলে আবার কোনো সময় সকাল থেকে কিছু খাইনি। শুরুতে বিষয়টা যে আসলে লোক ঠকানো সেটা না বুঝলেও এখন সেটা ঠিকই বুঝে যাই।

the-child-4387036_1280.jpg

Copyright free Image Pixabay

মূল ঘটনায় যাই, রোজকার মতন আজ দুপুর বেলায় বেরিয়েছি দুপুরের খাবার খেতে। বৃষ্টির দিন হওয়ায় খিচুড়ি খেয়ে ফিরে আসছি সেই সময় এক জোড়া বৃদ্ধ-বৃদ্ধা পথ আটকালেন। পথ আটকে বৃদ্ধা খুব ধীরে ফিসফিস করে বললেন বাবা কুড়িটা টাকা হবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম কুড়ি টাকা নিয়ে কি করবেন? উত্তর পেলাম কল্যাণী থেকে এসেছি বাবা বাড়ি ফেরার টাকা নেই। বাড়ি ফেরা কুড়ি টাকা দিয়ে হবে? এতদূর রাস্তা।হ্যাঁ হবে। কথায় কথায় জিজ্ঞেস করলাম তারা কিছু খাবেন কিনা। খেলে নাকি খরচ বেশি তাই ২০ টাকা পেলে তাদের হবে। কথায় কথায় জিজ্ঞেস করলাম কল্যাণী থেকে কলকাতা এতদূর কি কাজে এসেছিলেন। সেটার উত্তর পেলাম না। তার পরিবর্তে দুজনকে বেশ অপ্রস্তুত হতে দেখলাম। আর কথা না বাড়িয়ে ৫০ টাকা পকেট থেকে বের করে তাদের দিয়ে এগিয়ে গেলাম। বুঝতে পারলাম ঠকছি তবুও টাকাটা দিলাম।

elderly-2914879_1280.jpg

Copyright free Image Pixabay

বৃদ্ধ ও বৃদ্ধার বয়স ৮০ র উপরে তো হবেই। বৃদ্ধ সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারলেও বৃদ্ধা কুঁজো হয়ে গেছেন। দুজনের পোশাক আশাক দেখে ভদ্র মনে হবে। তাদের সাথে কথা বলেও মনে হয়েছে তারা এই কাজটা বেশি দিন ধরে করছেন না, হয়তো পেটের দায়ে পড়েই শুরু। কথার মধ্যে কিছুটা সরলতা এখন আছে। তাই ঠকছি জেনেও টাকাটা দিয়েছি। তাছাড়া পথে ঘাটে তো নানান ভাবেই ঠকছি, আজ না হয় দুটো বৃদ্ধ বৃদ্ধার কাছে ঠকলাম।




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness

Or

Set @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

দাদা এমন পরিস্থিতিতে আমিও পরি।তবে আপনি বৃদ্ধ -বৃদ্ধাকে দিলেন এটা মানা যায়। কিন্তু আমি কালকেও রিকশায় জ্যামে বসা একটি ৪/৫ বছরের বাচ্চা আমাকে বলছে কিছু খাবে।আমি টাকা দিয়েছি তাকে।কিন্তু আমি অন্য সময় হলে তাকে কিছু কিনে দিতাম নয়তো আমার বাসায় এনে রাখতে চাইতাম খাওয়ানোর জন্য কিন্তু টাকা দিতাম না।আমি জানি ও ভিক্ষা করে বেড়াচ্ছে।এই বয়সে মোটেও এটা ঠিক নয়।কদিন ধরে মন খারাপ আব্বুর জন্য। আর হাসপাতাল থেকে ই ফিরছিলাম।তাই আর কথা বাড়াইনি।টাকা দিয়ে দিয়েছি।

তাছাড়া পথে ঘাটে তো নানান ভাবেই ঠকছি, আজ না হয় দুটো বৃদ্ধ বৃদ্ধার কাছে ঠকলাম।

দাদা দারুণ লাগলো এই কথাটি পড়ে। আমাদের দেশেও একই অবস্থা। রাস্তা ঘাটে বের হলেই কম বয়সী থেকে শুরু করে, বৃদ্ধ বয়সী মানুষেরা এভাবে টাকা চায়। তবে আমি যদি দেখি বয়স্ক মানুষ,তাহলে টাকা দিয়ে দেই। কিন্তু কম বয়সী কিংবা দেখতে সবল মনে হলে,তাদেরকে টাকা দেই না। যাইহোক তাদের দু'জনকে ৫০ টাকা দিয়ে খুব ভালো করেছেন দাদা। আসলে রাস্তা ঘাটে বয়স্কদেরকে এমন অবস্থায় দেখলে বেশ মায়া লাগে। এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

এমন পরিস্থিতিতে আমিও পড়েছি কয়েকবার। হয়তো তারা ফ্রট কিন্তু শত চেষ্টা করেও সত্যি বলতে আমি তাদের এড়িয়ে যেতে পারি না। নিজের কাছে যা থাকে দিয়ে আসি। আপনার ক্ষেএেও ব‍্যাপার টা এমনই। এইসব ঠকে যাওয়ার মধ্যে আফসোস থাকে না মহানুভবতা থাকে।

যেহেতু বৃদ্ধ বৃদ্ধাকে দেখে ভদ্র মনে হয়েছে আপনার।আর এত বয়স্ক লোক হয়তো পরিস্থিতির চাপে পড়েই এই পথে নেমেছে।যদিও সঠিক বলা যাচ্ছেনা তাদের উদ্দেশ্য।তারপরেও যেহেতু অপ্রস্তুত হয়ে গিয়েছিল আপনার প্রশ্ন পেয়ে।তাই হয়তোবা নতুন ও হতে পারে এই রাস্তায়।আপনি ৫০ টাকা দিয়ে ভুল কিছু করেন নি।যেটা শেষে বলেছেন কতই তো ঠকেছেন এবার ঠকবেন জেনেই ইচ্ছা করে ঠকলেন।যারা ঠকে তারাই জীবনে জিততে পারেন।তাদের চাহিদা বেশি ছিলনা ২০ তারপরেও ৫০ দিয়েছেন।আপনি বেশ ভালো মনের মানুষ।ধন্যবাদ দাদা পোস্টটি পড়ে সত্যি অনেক ভালো লাগলো।

পোস্টটা খুব মন দিয়ে পড়লাম। প্রতিদিন এমন ঠকবাজদের হাতে পড়ি আমরা। আমার অঞ্চলে একজন লোক আছে যে সকলের কাছে টাকা চেয়ে বেড়ায়। অথচ যারা তাকে চেনে তারা জানে সে সরকারি চাকুরিজীবী ছিল। কোটিপতি সে। কিন্তু স্বভাবে মানুষের কাছ থেকে টাকা চেয়ে বেড়ানো অভ্যাস। আমি প্রথম কয়েকবার ঠকেছিলাম। কিন্তু তারপরে তাকে দেখলেই শত হস্ত দূর দিয়ে পালাই। এমন মানুষদের থেকে দূরে থাকাই ভালো।