নমস্কার বন্ধুরা,
জোরমন্দির শ্রেণীর বা জোড়া মন্দির দেখে এগিয়ে গেলাম কিছু দুরেই থাকা নন্দলাল মন্দিরের উদ্দেশ্যে। যদিও হেঁটে রাস্তা ধরে গেলে বেশ কিছুটা ঘুরেই যেতে হয় তবে আমি জোর মন্দির শ্রেণীর ঠিক পাশ দিয়ে একটা মাটির রাস্তা ছিলো সেটাই ধরে এগিয়ে গেলাম। মাত্র ২০০ মিটার হেঁটে পৌঁছলাম নন্দলাল মন্দিরে। এই মন্দিরটা ছিন্নমস্তা মন্দির এবং দলমাদল কামানের খুব কাছেই রয়েছে এবং জোড়া মন্দির থেকেও অনতিদূরে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকার মন্দিরের আশেপাশের রাস্তাঘাট ভালো করে দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষের মন্দির খুঁজে পেতে খুবই সুবিধা হয়।
নন্দলাল হলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আরেক নাম। নন্দলাল মন্দিরটি ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে উৎসর্গ করেই মূলত বানানো হয়েছে। একরত্ন মন্দির আদলে বানানো এই মন্দিরটিকে বর্তমান সময়ে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ নিজেদের আওতায় নিয়েছে যার কারণে মন্দির চত্বর খুবই গোছালো। চারপাশে ঘেরা বাগানের মধ্যেখানে মন্দিরটি রয়েছে। মাকড়া পাথর বা ল্যাটেরাইট পাথরে নির্মিত মন্দিরটির শৈলী একরত্ন।
নন্দলাল মন্দিরটি সপ্তদশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে নির্মিত হয়েছে তবে ঠিক কোন মল্ল রাজার আদেশে বা সময়ে বানানো হয়েছে তা জানা যায়নি। শুকনো লংকা বা অনেকটা লোহার মরচে রঙের মতো মাকড়া পাথর দিয়ে তৈরি এক-রত্ন শৈলীর নন্দলাল মন্দির বেশ নিচু এবং বর্গাকার মঞ্চের উপরে নির্মিত। মন্দিরের উপরের অংশটি বাংলা স্থাপত্য কলার চালার মতো বাঁকা ছাদ দেওয়া। তার উপরে শিকারা। চারপাশে বারান্দা রয়েছে এবং মন্দিরের প্রতিদিকেই তিনটি খিলান দেওয়া রয়েছে। মন্দির গাত্র মাকড়া পাথর দ্বারা শিল্প কর্মে সজ্জিত। যেখানে ভারতের বিভিন্ন ঐতিহাসিক পটভূমি তুলে ধরা হয়েছে। মন্দির গাত্রের সর্বত্র শ্রী কৃষ্ণ লীলার বিভিন্ন ইতিহাস ফুটিয়ে তোলা আছে। যা সময়ের সাথে সাথে বেশি টাই ক্ষয়ে গিয়েছে।
জোড় মন্দির শ্রেণী দেখবার পরে যখন নন্দলাল মন্দিরে পৌঁছালাম তখন মন্দির প্রাঙ্গণটা একদমই ফাঁকা ছিল যার কারণে মন্দিরের প্রতিটা অংশ খুব ভালোভাবেই মনে গেঁথে নিতে পেরেছি। বর্তমানে মন্দিরের গর্ভ গৃহে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের বিগ্রহটি রাখা নেই। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ মন্দির টিকে নিজেদের আওতায় নেওয়ার সময় ভগবান শ্রী কৃষ্ণের বিগ্রহটি রাধা গোবিন্দ মন্দিরে সরিয়ে নিয়ে যায়।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমাদের বিষ্ণুপুর মন্দিরের ভূমি যেন৷ এই মন্দির আগেও দেখেছি। আপনার পোস্ট থেকে আরও একবার দেখলাম।
এই যে মন্দিরের তিনটি করে খিলান আছে আর এর মাথাটা সরু লম্বা হয়ে উঠেছে৷ ভেতর দিকটা ফাঁকা হলো টাইপ৷ একটু খুঁটিয়ে দেখলে কেমন জানি মনে হয় স্পেশ শিপের আকার যার আদল খানিকটা রকেটের মতন।
বড্ড ভাবায় এই দালান ও উলটো ইউ আকৃতির খিলান দেওয়া মন্দিরের আকার গুলো৷
আপনার বিবরণ ও ছবি দুটোই বেশ ভালো হয়েছে৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
খিলান গুলোতে যা ভাস্কর্য এখন টিকে আছে। মন্দির গুলো আমাকে বেশ অবাক করেছে। সেই সময়ের মানুষের হাতের কাজ এবং মন্দির তৈরির চিন্তন শৈলী জাস্ট অসাধারণ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে রাস্তা ঘাট ভালো হলে এই ধরনের দর্শনীয় স্থানগুলো খুব সহজেই দর্শন করা যায়। যাইহোক নন্দলাল মন্দিরে গিয়ে বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করেছেন দাদা। মন্দির প্রাঙ্গণটা তখন ফাঁকা ছিলো বলে, ঘুরে ঘুরে সবকিছু খুব ভালোভাবে দেখতে পেয়েছেন। মন্দিরের তিনটি খিলান একসাথে দেখতে আসলেই দারুণ লাগছে। ফটোগ্রাফি গুলো দারুণভাবে ক্যাপচার করেছেন দাদা। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদমই তাই। বছর তিনেক আগে এসেছিলাম তখন হেঁটে হেঁটে ঘুরতে বেশ কষ্ট হয়েছিল
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মন্দির নগরী বিষ্ণুপুর। আর সেখানকার টেরাকোটা তো জগৎবিখ্যাত। আপনার ছবিতে যেভাবে মন্দিরের ছবিটা উঠে এসেছে তা অনবদ্য। বাংলার মন্দির ঘরানায় এটি এক রত্ন ধরন। এই এক রত্ন মন্দির আজও বাংলার ঐতিহ্য। বিষ্ণুপুর যতদিন বেঁচে থাকবে, মন্দির ও বীর মল্ল রাজাদের ঐতিহ্য ততদিন অটুট থাকবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
রত্ন বললেও হয়তো কম যায়। মল্ল রাজাদের অসংখ্য ধন্যবাদ যে তারা মন্দির গুলোকে বহিরাগত আক্রমণ থেকে বাঁচিয়ে রেখে গেছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit