পুজো পরিক্রমা ২০২৩ : হাতিবাগান সর্বজনীন

in hive-129948 •  11 months ago 

নমস্কার বন্ধুরা,

বর্তমান সময়ে উত্তর কলকাতার কিংবা পুরনো কলকাতার যে কোনো জায়গায় যাওয়া হলো একটি দৃশ্য আমাদের নজরে খুব আসে। সেটি হলো শত বছর কিংবা অনেক পুরনো কোনো বাড়ির ঠিক পাশেই একটা নবনির্মিত বাড়ি কিংবা বহুতল। আসলে পুরাতন কলকাতার প্রায় সব শতাব্দী প্রাচীন বাড়ি গুলোরই প্লাস্টার খসে পড়ে ইট বেরিয়ে গেছে। আর তার ঠিক পাশেই গা ঘেঁষে হয়েছে কোনো আধুনিক বহুতল। পুরনো বাড়ির সদস্যদের সাথে সম্পর্ক ভেঙে নতুন বহুতলের সদস্যদের মধ্যে তৈরি হয় সম্পর্ক। আদপে পুরনোকে ছাড়া যেমন নতুন সম্ভব নয় তেমনি নতুন ছাড়া পুরাতন সম্ভব হয় না। দুটি বিপরীত হলেও তাদের সম্পর্ক অনেক দৃঢ়। সেই সম্পর্কের টান নিয়েই এবারের হাতিবাগান সর্বজনীন থিম, "দোসর"।

PXL_20231020_221454529_copy_1209x907.jpg

৮৯ বর্ষে পদার্পণ করে হাতিবাগান সর্বজনীনের এবারের পুজোর ভাবনা দোসর। পুরনো ও নতুন দুইয়ের সম্পর্ককে অন্য দৃষ্টিতে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা ব্রতী হয়েছে হাতিবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব পুজো কমিটি। মা ও সন্তানের মধ্যে এক অটুট বন্ধন রয়েছে যেটা সন্তান গর্ভে থাকাকালীন একটা মায়ের সাথে তৈরি করে। যা থাকে আমৃত্যু। সেই যে মায়ের সাথে সন্তানের সম্পর্ক তাকেই দোসর অনুরূপে ফুটিয়ে তুলেছে হাতিবাগান সার্বজনীন। বর্তমান যুগে এসে মানুষের সাথে আরেক মানুষের সম্পর্ক খুবই আলগা হয়ে গেছে। সেই জায়গাতেই এক নতুন বাড়ির সাথে পুরোনো বাড়ির সম্পর্ক যেন আমাদের কাছে অনুপ্রেরণা দায়ক।

PXL_20231020_221512513_copy_1209x907.jpg

PXL_20231020_221553084_copy_907x1209.jpg

কুমোরটুলি পার্কের পুজো দেখে হাঁটতে হাটতে সোজা হাতিবাগানে পৌঁছে গেলাম। প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ হেঁটে যখন হাতিবাগানে পৌঁছেছি তখন চারিদিকে যেন জন সমুদ্র নেমে পড়েছে। হাতিবাগানে চত্বরে মোট চার খানি পুজো তার প্রথম পুজো মন্ডপে হাতিবাগান সার্বজনীনে ঢুকে গেলাম। রাস্তার একদম পাশে এক গলির মুখে পুজো মন্ডপ টি তৈরি করা হয়। মণ্ডপ বানানোর হয়েছে এক সুন্দর চাঁদোয়ার নীচে। মণ্ডপের বাইরের কাজ হয়েছে বাঁশের ও কাঠের। আর মূল মণ্ডপ টিনের পাত দিয়ে। আর একদম উপরে লোহার রড দিয়ে নানা নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মণ্ডপের বাহির সজ্জার বাইরে মাঝখানে একটি বিশাল শঙ্খ আকৃতি বানানো হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে একটি হৃদপিণ্ড। যেটি সবসময়ই নড়াচাড়া করছে। আলো আঁধারের মন্ডপ আরো সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে।

PXL_20231020_221607482_copy_1209x907.jpg

PXL_20231020_221603020_copy_1209x907.jpg

মন্ডপের মধ্যিখানে বিরাজিত হয়ে রয়েছেন স্বয়ং জগৎ জননী মা দুর্গা।

PXL_20231020_221642552_copy_1209x907.jpg




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আসলেই দাদা বর্তমান যুগে মানুষের সাথে মানুষের বন্ডিংটা আগের মতো মজবুত নেই। কাছের মানুষগুলোও কেমন যেন পর পর হয়ে গিয়েছে।

সেই জায়গাতেই এক নতুন বাড়ির সাথে পুরোনো বাড়ির সম্পর্ক যেন আমাদের কাছে অনুপ্রেরণা দায়ক।

একেবারে যথার্থ বলেছেন দাদা। আসলে এসব কিছু দেখেও আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করা উচিত। কিন্তু আমরা যেন চোখ থাকতেও অন্ধ হয়ে গিয়েছি। অনেক কিছু জেনে বুঝেও মানতে চাই না। যাইহোক হাতিবাগান সর্বজনীনের থিমটা দারুণ লেগেছে আমার কাছে। এই থিমটা আসলে একটা ম্যাসেজ সবার জন্য। যাইহোক থিমের সাথে তাদের সম্পূর্ণ আয়োজন একেবারে পারফেক্ট হয়েছে। ফটোগ্রাফি গুলোও এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে। সবমিলিয়ে পোস্টটি বেশ উপভোগ করলাম দাদা। যাইহোক এতো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

"দোসর" নামটাই তো অদ্ভুত সুন্দর। তবে পুরনো এবং নতুনের ভিতর সংযোগ স্থাপন করার জন্য বা ব্যাপারটা কে সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলার জন্য, হাতিবাগান সর্বজনীন ক্লাব বেশ সুন্দর একটা পুজোর থিম তৈরি করেছে। এটা কিন্তু বেশ চমৎকার একটা কনসেপ্ট। তবে তুমি তো দাদা দেড় কিলোমিটার হেঁটেছো , আমরা যখন কলকাতায় পুজোয় ঘুরতে যেতাম তখন সারারাত হেঁটে হেঁটে পুজো দেখে বেড়াতাম।

মণ্ডপের বাহির সজ্জার বাইরে মাঝখানে একটি বিশাল শঙ্খ আকৃতি বানানো হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে একটি হৃদপিণ্ড।

এই হৃদপিন্ডের ওই নড়াচড়ার ব্যাপারটা কিন্তু আমার কাছে বেশ ইন্টারেস্টিং লাগলো দাদা।