আজকের দিন এবং আমি

in hive-129948 •  3 years ago 

আজ ২১ এপ্রিল, ২০২২। বৃহস্পতিবার।

আজকে অনেক দিন পর কোন এলারম ছাড়া ঘুমাতে গিয়েছিলাম। কারণ আজ কোন তাড়া নেই। কোন ক্লাস বা বাঁধাধরা কোন শিডিউল নেই। বেশ আয়েশ ও আয়োজন করে রাত ২টায় ঘুমাতে গিয়েছি। ভেবেছিলাম অনেক বেলা করে উঠবো। কিন্তু সব সময় যা হয়। হঠাত করে কোন কারণ ছাড়াই দু চোখের পাতা খুলে গেল। জানালার পর্দার ফাঁক দিয়ে আসা আলোয় বেশ বুঝতে পারছি অনেক বেলা হয়েছে তখন। কোন আড়মোড়া নেই, ক্লান্তি নেই। একটা পরিপূর্ণ ঘুম হলে যেমন হয় আরকি। বেশ, এবার পাশ ঘুরে সেল ফোনটা হাতে নিলাম। দেখি সবে মাত্র ৮টা বাজে! মুহূর্তেই মনে হল আজ ঘুম ভাল হয়নি এবং মন কিছুটা বিতৃষ্ণায় ভরে গেল।

pexels-gary-barnes-6248721.jpg
image source

উঠে ফোন নিয়ে আবার বসলাম। ফ্রেশ হলাম। তবে কিছু খেতে ইচ্ছা করল না তাই মোটা একটা বই পড়তে বসলাম। গত দুইদিন ধরে একটা টপিক পড়ছি, কিন্তু শেষ করতে পারছি না। আজ যে করেই হোক শেষ করতে হবে, এই ধারণা নিয়ে বসলেও দুই মিনিট যেতে না যেতে মনে হল এখন ইউটিউব থেকে পড়তে হবে। এই জায়গায় এসে গত দুই দিন ধরে একই কাজ করছি, কিন্তু আবার ইউটিউবে না গিয়ে বইটাই খুলে বসছি। যাই হোক, সবে ভিডিওটা দেখা শুরু করেছি। তখনই লন মোয়ার নিয়ে দুইজন মামা এলো। লন মোয়ারের তীব্র ঘরঘর শব্দে পড়াশুনায় মন বসানো এক প্রকার অসম্ভব। তখন এলাম স্টিমিটে পোস্ট লিখতে।

IMG20220421100908.jpg

তারা এখন দূরে চলে গিয়েছে। বৃষ্টিস্নাত মাঠে তাদের মোয়িং করতে কেমন লাগছে কে জানে? হয়ত এখানে তাদের মনের সেই খবর কেউ রাখেনা। কারণ এখানে দায়িত্ব সবার আগে।

তারা যখন দূরে চলে গেল তখন ব্লকের কোন এক তলা থেকে অন্য এক মামার হাতুড়ির শব্দ শোনা যাচ্ছিল। হয়ত কারো রুমের তালা ভাঙ্গার ডাক পড়েছে। ইদানিং হলে এই কাজটা খুব হচ্ছে। ভুল করে রুমের ভেতর চাবি রেখে তালা দেওয়া, চাবি নিয়ে রুমমেটের বাসায় চলে যাওয়া, আরো নানা অসতর্কতার কারণে বেশ কিছু দিন পর পরই দেখা যাচ্ছে কারো না কারো রুমের তালা ভাঙতে হচ্ছে। এইত মাস খানেক আগে আমার রুমেরও ভাঙতে হয়েছিল। রাতে পড়াতে গিয়েছি, চাবির রিং টাও নিয়েছি। বেশ কথা। পড়ানো শেষ করে চাবির দিকে তাকিয়ে আমার হৃদপিণ্ডের রক্ত একবার ছলাত করে উঠল।

আমার ৩/৪ টা চাবির রিং একটা জায়গায় ঝুলিয়ে রাখি। একদম উপরেই নতুন রিঙটা থাকে। সেদিন তাড়াহুড়ায় না দেখেই একটা রিং নিয়েছি, কিন্তু সেটায় কোন চাবিই ছিলনা! ম্যাম সামনেই ছিল, তাকে বলতেই তালা ভাঙ্গার সব আয়োজন করে ফেলল, সেই রাত ১১ঃ৩০ টা তেই। একটা আশ্চর্যের কথা এই যে, তালাটা ভাঙ্গার পরও আমার তালাটা আসলে ভাঙ্গেনি। মানে কিভাবে কিভাবে যেন সেই তালাটা এখনো ভাল আছে এবং সেটা দিয়ে দিব্যি কাজ চলে যায়। তবু আবার যেন একই ভুল না করি তাই মা আগের থেকেও ভাল একটা তালা গছিয়ে দিয়েছে।

যাই হোক, সেই তালা ভাঙ্গার শব্দ আজ মোয়ারের শব্দকে ছাপিয়ে গিয়েছিল এবং তার বিরক্তির মাত্রাও বেশি। এইসব কিছু যখন স্নায়ুর উপর চাপ ফেলছিল, তখন হঠাত দুটো শব্দই থেমে গেল একসাথে। হঠাত করে এত শব্দ থেকে একদম নিঃশব্দে চলে আসাটাও আবার অন্যরকম চাপ ফেলছিল। মাথা ঘুরছিল আর প্রচন্ডভাবে ঝিমঝিম করছিল। এমনকি সব শব্দ বন্ধ হবার মিনিট পাঁচেক পরও ঝিমঝিম ভাবটা যায়নি।

তবুও এখন উঠে পরতে হবে। কাঁটা ঘাসের গন্ধ নাকে আসার আগেই সব কাজ শেষ করে ফেলতে হবে। কারণ ঐ গন্ধটাও আমার স্নায়ু নিতে পারেনা। আজ কিছুক্ষণ বাইরেও বেরিয়ে আসব ভাবছি। আর প্রান্তিকে যেতে হবে বাজার করতে। কাল আবার একটা পুরোদস্তর বাঙ্গালিয়ানা ভোজ দিয়েছি, সেটার রান্না-বান্নার প্ল্যানও করতে হবে।

ডিভাইসঃ রিয়েল মি ৮ ৫জি
লোকেশনঃ https://what3words.com/hazy.trailers.replied

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

পুরো লেখাটি পড়ছি আর মনে হচ্ছে ঘটনা গুলো খুবই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে । ছোটখাটো ঘটনাগুলোকে আপনি কি সুন্দর তুলে ধরেছেন। আমার বেশ ভাল লেগেছে আপনার পুরো পোস্টটি পড়তে।

ধন্যবাদ ভাইয়া। সূক্ষ্ম জিনিসগুলোকে বুঝতে পারা, চোখের সামনে জীবন্ত দেখতে পাওয়া একজন পাঠকের খুব বড় গুণ।

আপু অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। আমার পড়তে অনেক সময় লেগেছে। কিন্তু ছাড়তে মন চাচ্ছে না এত সুন্দর লাগতেছে পড়তে। অনেক সুন্দর মুহূর্ত গুলো তুলে ধরেছেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। পড়ার সময় আপনার অনুভূতি জানতে পেরে খুব ভাল লাগলো।

আপনার লেখাগুলো পড়তে অনেক সময় লেগেছে কিছু ক্লান্তি অনুভব করলেও পড়া শেষে মনে হল কেন লেখাগুলো শেষ হলো যদি লেখাগুলো শেষ না হয়ে আরো লেখা থাকতো তাহলে নিশ্চয়ই আরও বেশি ভালো লাগতো। আপনার কথাগুলোর মধ্যে কাটা ঘাসের গন্ধ নাকে আসার আগেই সব কাজ সেরে ফেলতে হবে কথাটা অনেক বেশি ভালো লেগেছে। এমন একটা সুন্দর লেখা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনার প্রতি শুভকামনা রইল।

অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু। আমার খুব ভাল লাগছে কারণ যেই ফিলিং নিয়ে লিখাটা লিখেছি একজন হলেও সেটা ধরতে পেরেছে। আপনার জন্যও অনেক শুভ কামনা রইল।