আসসালামু আলাইকুম। আশা করছি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আজ আপনাদের সাথে এই বছরে আমার খেজুর রস খাবার গল্প শেয়ার করব।
মামের বোতল নিয়ে গিয়েছিলাম, অন্য একজনও খাবে বলে বায়না ধরেছিল তাই -_-
দেখতে দেখতে শীতের মাঝামাঝি চলে এলাম। তাই ভাবছিলাম এই বারও কি খেজুর রস খাওয়া হবে না? আমি আসলে বাইরে বানানো কোন রস যেমনঃ আখের রস এসব খাইনা। কিন্তু খেজুর রসের কথা উঠলে সেটা অন্য ব্যাপার।
যাই হোক অনেক দিন ধরে এটার খোঁজ করছিলাম, কিন্তু সঠিকভাবে কিছুই জানতে পারছিলাম না। শেষে একদিন দেখি এক ভাই খেজুর রসের গুমোর শেয়ার করেছে, চৌরঙ্গীতে সকাল ৮টার আগে আসলে পাওয়া যায়। সেখান থেকে সব ইনফরমেশন টুকে রেখেছিলাম।
এরপর বেশ কিছু দিন আর কোন কথা নেই এই নিয়ে। ভাবটা আসলে এমন ছিল যে জানিই তো কই পাওয়া যায়, যখন ইচ্ছা হবে খেয়ে নিব। এর কিছুদিন পর খেতে ইচ্ছা করল, কিন্তু ঐ যে ৮টার আগে ঘুম ভাঙানো অসম্ভব।
সেদিন সকালে অনেক গুলো এলারম দিলাম, কিন্তু ঘুম ভাঙতে ভাঙতে ৭ঃ১৫। চিন্তা করলাম এখন উঠে রেডি হয়ে যেতে যেতেই তো ৮টার বেশি বাজবে। এই ভেবে আবার শুয়ে পড়লাম। ৫ মিনিট শুয়ে ছিলাম, কিন্তু পরে কি মনে করে উঠে পড়লাম। ফ্রেশ হলাম, রেডি হলাম, সব শেষে হাটা ধরলাম। (বলতে ভুলে গিয়েছি ক্যাম্পাসে এখন রিকশা নিষিদ্ধ)
ভাবা যায় প্রীতিলতা থেকে জাহানারা ইমাম হলের মাঝে কোন লোক নেই! তবে ভালই লাগছিল। প্রকৃতির মাঝে একা! তবে যত যাই হোক রিলাক্স করতে পারছিলাম না, ৮টার আগে পৌঁছুতে হবে।
শর্টকাট নিয়েছি। কেউ আবার ভাববেন না জঙ্গলে চলে গিয়েছি। এটা রাস্তার পাশে শর্টকাট অতিভুজ। আর বেশি দূর নেই, স্বস্তি পাচ্ছিলাম। কারণ ৮টা বাজতে ১০ মিনিট দেরী তখনো।
এবং চৌরঙ্গী পৌঁছুলাম, কিন্তু রস মামা কই???
এত মন খারাপ লাগছিল কি বলব। আমি তো ৮টার আগেই গেলাম, তাইলে সে কই গেল? ভাবলাম সব দিন বুঝি আসেনা। কিছু সময় ওখানে দাঁড়িয়ে থেকে কি করব ভাবলাম। পরে আবার সামনের দিকে হাঁটা ধরলাম। ট্রান্সপোর্ট, ফজিলাতুন্নেসা হল এবং মেডিকেল হয়ে চৌরঙ্গী ব্যাক করে হলে চলে যাব।
ট্রান্সপোর্ট পার করে হলের দিকে যাচ্ছি। সামনের যে ওয়াল পেইন্টিং আছে ওইটা আমার খুব পছন্দ। *আমি ছুটে যাই আমার মত*
ঘড়ি না দেখেই বলে দিতে পারি ৮টা বেজে গিয়েছে। অন্য পারের পিচ ঢালা রাস্তা ধরে শাটল বাস তার দিনের প্রথম যাত্রা শুরু করেছে।
হল ছাড়িয়ে, মেডিকেল মাড়িয়ে যখন যাচ্ছিলাম, তখন মনে হল বাম দিকে গাঢ় রঙের কিছু একটা আছে যেটা আগে চোখে পরেনি। ফিরে তাকাতেই দেখলাম বৃক্ষশ্রয় থেকে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ আমাকে ডাকছেন!
পেইন্টিঙটা অনেক আগে করা হয়েছে, কিন্তু এই তল্লাটে শুধু রাতেই যাওয়া পড়েছে আমার, তাই আর সাক্ষাৎ হয়নি।
যাই হোক, আবার হাঁটা ধরলাম। সামনের সুন্দর লেক থেকে ঠান্ডা বাতাস এসে আমায় ছুঁয়ে যাচ্ছিল।
খেজুর রস না পাওয়ায় মন খারাপ হয়েছিল। তাই প্রকৃতি এবং রবি ঠাকুর দর্শন করে সেটাকে কমানোর চেষ্টা করছিলাম। ঠিক যেই সময় সফল হয়ে পড়েছিলাম তখন তিনি দেখা দিলেনঃ
মামা মহাব্যস্ত। বসতে না বসতেই যেমন খদ্দের তেমনি ফোন কল!
অনেকে ওখানেই খাচ্ছিল, কিন্তু আমি তো আবার শেয়ার করব, তাই ২ গ্লাস (হাফ লিটার) বোতলে নিয়ে নিলাম। গ্লাস প্রতি ২০ টাকা। আমার কাছে দুর্লভ জিনিস হিসেবে অনেক চিপ লেগেছে। মামা আমদের কোয়ালিটির নিশ্চয়তা দিয়েছে যে সে এই রস টিচারদের বাড়িতেও পাঠায়।
রুমে ফিরে ছবি তুলে আমার বোনকে দিলাম, বোতলে কি আছে বলার জন্য। আর সে এই রিপ্লাই দিলঃ
আমার আর কিছু বলার ছিল না। কিন্তু হ্যাঁ, দিস মেইড মাই ডে। :D
আশা করছি যারা খেতে চান তারা সবাই এই বছরে খেজুরের রস খেতে পারবেন। আর ঢাকার মধ্যে কেউ না পেলে বলবেন, আমি ব্যবস্থা করে দিব।
ক্যাটাগরি | স্পেসিফিকেশন |
---|---|
ডিভাইস | রিয়েলমি ৮ ৫জি |
লোকেশন | জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় |
ধন্যবাদ সবাইকে
@kitki