একটু সতেজতার খোঁজে || 10% beneficiary @shy-fox

in hive-129948 •  3 years ago 

আসসালামু আলাইকুম।
আশা করি সবাই ভালো আছেন।
আমিও ভালো আছি।

অনেকবার খেয়াল করেছি, আমার বাংলা ব্লগে অনেকের পোস্টে একটা ট্রেন্ড আছে। সেটা হলো একটা পোস্ট শুরু করার আগে সেদিনের তারিখটা পোস্টের শুরুতে উল্লেখ করা। তাদের সুন্দর সাজানো পোস্ট দেখে আমারো সাধ জাগল এই নিয়মটা মানার। তাই একদিন আমিও শুরু করলাম। অবশ্য মাত্র একটা পোস্টেই (পূর্ববর্তী পোস্ট) আমি এটার ব্যবহার (করেছি!) করতে পেরেছি। আগের পোস্ট করার সম্ভবত দিন দুয়েক পর আজকে আবার লিখতে বসেছি। কিন্তু আজকে আমার সেই সদ্য করা নিয়ম মানতে পারলাম না। এই পরীক্ষাময় জীবনে আজকাল সময় বা তারিখের দিকে নজর থাকতে চায় না। এছাড়াও আমি খুব নাস্তানাবুদ হয়ে আছি তাই গুগল মহাশয়কেও আর ঘাটতে ইচ্ছা করছে না।

জীবনে যত সমস্যাই আসুক কোন সমস্যাকে খুব বড় সমস্যা বলে মনে হয় না যদি দম ফেলার বা নিজেকে গুছিয়ে নেওয়ার একটু সময় পাওয়া যায়; অন্ততপক্ষে এটা আমার ক্ষেত্রে সত্য। এই যে যেমন, যখন পড়তে পড়তে মনে হয় কতদিন এই ক্যাম্পাসে একটু ঘোরা হয়না (আসলে কিন্তু প্রতিদিনই ঘুরি!), কতদিন বান্ধবীদের মুখ দর্শন করতে পারছিনা (এটাও রোজ নিয়ম করেই হয়), তখন যদি তাদের একবার দেখা পাই বা ক্যাম্পাসে এক চক্কর মেরে আসি তখন সমস্যাকে মোকাবেলা করার জন্য কেমন করে যেন নিজের ভেতরে একটা শক্তি তৈরী হয়। এই মনস্তাত্ত্বিক শক্তির বলে আমি আবার এগিয়ে যেতে পারি সাবলীলভাবে। অনেকে পাওয়ার ন্যাপ নেয়। কিন্তু আমার এর দরকার হয়না। আমার পাওয়ার আসে আমার ভালবাসার জায়গা আর মানুষগুলো থেকে।

তাই জীবনের সব ব্যস্ততাকে এক পাশে রেখে প্রতিদিনই নিজের জন্য একটু সময় বের করি। দৈর্ঘ্যের আন্দাজে সময়টা খুব সীমিত; ৩০ মিনিট থেকে বড় জোড় এক ঘন্টা। এর মধ্যেই বাইরে বের হওয়া, খাওয়া, ছবি তোলা ঘুরে বেড়ানো, জীবনমুখী ও মনস্তাত্বিক আলোচনা সব কিছুই চলে।

এই রকমই গত পরশুদিন আমি আর আমার সাথে সদ্য বন্ধুত্ব হওয়া এক বান্ধবী বিকালে ৩০ মিনিট সময় নিয়ে ঘুরতে বের হলাম। আমাদের দুইজনেরই পুরোদমে পরীক্ষা চলে তাই কেউ এর বেশি সময় ব্যয় করতে রাজি নই। গন্তব্য ছিল মেডিকেলের পাশের লেক। লেক দর্শন কিন্তু উদ্দেশ্য না। লেকের ধারে পানিপুরি বিক্রি হয়, সেটার লোভেই যাওয়া!

জীবনমুখী আলোচনা করতে করতে হাঁটছিলাম। হঠাৎ দুজনই থেমে গেলাম। হাঁটা থামিয়ে দিয়ে রাস্তার ধারে থাকা বিশাল গাছগুলোর দিকে তাকিয়ে আছি। পাতাঝরা গাছগুলোর পেছনে অস্তায়মান সূর্য রক্তিম আভা ছড়াচ্ছিল। মুগ্ধ দৃষ্টিতে কিছু কাল চেয়ে থেকে ভাবলাম, এ দৃশ্য যদি ফোনে বন্দি না হয় তাহলে পাপ হবে।

IMG20220307173411.jpg

IMG20220307173259.jpg

IMG20220307173312.jpg

সময় সীমিত; তাই অনিচ্ছাসত্ত্বেও পা বাড়াতে হলো। জানিনা কয়েকদিন ধরে খুব চাপে থাকার জন্যই এত ভালো লাগলো কিনা!

IMG20220307173939.jpg
এই লেকের অপজিট লেকের ধারে আমাদের কাঙ্ক্ষিত পানিপুরি। অর্ডার দিয়ে একটু হাওয়া খাচ্ছিলাম। (আমাদের জীবনমুখী আলোচনা তখনও চলমান।)

এরপর প্রচন্ড ঝালযুক্ত পানিপুরি গলাধঃকরণ করে সিন্ধান্ত নিলাম এবার একটু চা না খেলেই নয়। তাই পুরান কলার দিকে পা বাড়ালাম আবার। এই জায়গায় যখনই যাই একটা জিনিসে আমার দৃষ্টি আটকে থাকে সব সময়। প্রতি বারই ইচ্ছা হত এই জিনিসের সাথে ছবি তুলতেই হবে আমাকে। তাই সেদিন চায়ের অর্ডার দিয়ে তাঁর নিকটবর্তী হয়ে একটি অটোগ্রাফ নয়; বরং এক এলবাম ফটোগ্রাফের আকুতি জানালাম।

IMG_20220308_111130.jpg
শ্রদ্ধেয় হুমায়ূন ফরীদি স্যার। ছবিতে যদিও বোঝা যাচ্ছেনা; কিন্তু বাস্তবে এটা খুব সুন্দর।

চা খেতে খেতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। হাঁটছি আর চা খাচ্ছি। 'এক মামার দোকান থেকে চা খেলে অন্য মামা রাগ/ অভিমান করে' এই ধরণের আলোচনায় আমরা যখন মত্ত তখন সোডিয়াম বাতির আলোয় অন্ধকার ফুঁড়ে বের হলেন এক সিনিয়র আপু। তখন আর এক দফা খাওয়া দাওয়া চলল। আমরা সবাই তেঁতুলের শরবত খেলাম আর মশা খেল আমাদের যত্ন করে তৈরি করা হিমোগ্লোবিনের শরবত।

আধা ঘন্টা সময় নিয়ে বের হলে আমরা কোনদিনই সময়ের মধ্যে হলে ফিরতে পারিনি। সেদিনো প্রায় এক-দেড় ঘন্টা লেগেছিল। হলে ফেরার সময় একদম অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল। লেকের অন্য ধারে র‍্যাগ চত্বরে আলো জ্বলছিল। খুব সুন্দর লাগছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমার ছবি তোলার যন্ত্রটা সব অন্ধকারকে আলো বানিয়ে দিতে সদা তৎপর থাকে। তাই অন্ধকারের কোন ছবিতে অন্ধকার ব্যাপারটা ভাল বোঝা যায়না।

IMG20220307183747.jpg

এরপর হলে ফিরে পড়া শুরু করলাম। কিন্তু সৌভাগ্য বলব নাকি দুর্ভাগ্য? পরীক্ষা ইতিমধ্যে দুই দফায় ক্যান্সেল হয়েছে এবং ১৫ তারিখের আগে এইটা হবার সম্ভাবনা নেই। মানে যা পড়েছি সব আবার নতুন করে পড়তে হবে। -_-

জীবনের অসমতা ও সমাধান না হওয়া সমীকরণগুলো অনেক সময়ই আমার লিখায় উঠে আসে। আমি এই জিনিসগুলোকে মাঝে মাঝে নিছক আনন্দ বা কখনো খুব গভীর থেকে লিখার চেষ্টা করি। আশা করি আপনার খারাপ লাগছে না / লাগবে না।

লোকেশনঃ https://what3words.com/hazy.trailers.replied
ডিভাইসঃ রিয়েল মি ৮ ৫জি

ধন্যবাদান্তে
@kitki

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার মনের কিছুকথা আপনি পোস্টে তুলে ধরেছেন নিজেকে নতুন করে উজ্জীবিত করার আপনার যে কৌশল বা পরিকল্পনা সেটা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। যাইহোক আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অনেক অনেক সুন্দর হয়েছে একেবারে মন ছুঁয়ে গেছে। আপনার ফটোগ্রাফির মধ্যে কেমন যেন একটা ব্যাপার আছে নিরব সৌন্দর্য্য। ধন্যবাদ সুন্দর সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।