দেওয়া-নেওয়া || 10% beneficiary @shy-fox

in hive-129948 •  3 years ago  (edited)

Stories de Bom Dia.jpg
this image was created by me in Canva

জীবন মানে একাকীত্ব নয়। জীবন মানে সমাজ-সংসার, জীবন মানে বহু লোকের আনাগোনা। একাকিত্বের বন্দিদশা থেকে যেদিন মানুষ তাকে মুক্ত করতে পারবে, সেদিন থেকেই সে জীবনের আসল মানে বুঝতে পারবে। সেদিন সে নিজের চারপাশে গড়ে ওঠা শক্ত প্রাচীরকে ভেঙেচুরে স্বজাতির ডাকে বাইরে বেরিয়ে আসবে। জীবনের এক অন্য মানে সেদিন তার কাছে ধরা দেবে। এভাবে আত্মকেন্দ্রিক এক মানুষ সমাজের জালে জড়িয়ে পড়ে এবং সামাজিকতাকে নিজের ভেতরে ধারণ করে।

সমাজ জীবনের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত বিষয় হলো মানুষ নামের সামাজিক জীবগুলো একে অন্যকে সাহায্য করা। একটা আদর্শ সমাজের উদাহরণ এমনটিই হওয়া উচিত। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল এই কাঙ্খিত বিষয়টি মাঝে মাঝেই অনাকাঙ্খিত কিছু ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সদ্য খোলস থেকে বের হওয়া মানুষটি আজকের তথাকথিত সমাজকে একটি আদর্শ সমাজ হিসেবেই গণ্য করে, আর মাঝে মাঝেই এটাই সবচেয়ে বড় ভুল হিসেবে প্রতিপন্ন হয়।

কথায় আছে ডোন্ট জাজ আ বুক বাই ইটস কাভার। এটা ব্যাখ্যা করলে দাঁড়ায় কোন কিছুর বা কোন ব্যক্তির বাহ্যিক চেহারা দেখে তার গুণাগুণ বা ব্যক্তিত্বকে যাচাই করা ঠিক না। তাহলে উপায় কি? সদ্য পৃথিবীর রূপ দেখা সেই মানুষটা এত বৈচিত্রের ভিড়ে কিভাবে তাহলে মানুষকে যাচাই করবে? উত্তর হলঃ দেওয়া-নেওয়া বা নেওয়া-দেওয়া।

Stories de Bom Dia.gif
this gif was created by me in Canva

আমাদের মধ্যে অনেক সভ্য মানুষ আছে যাদের আমার লেখা এটুকু পড়েই দুটো ভ্রুর মাঝে ভাঁজ পড়েছে। কারণ অনেকের কাছেই কাউকে কিছু দেওয়াটা ঠিক থাকলেও কারো থেকে কিছু নিতে সম্মানে বাঁধে। আবার অনেকে এমন আছে যারা দুদিক থেকেই নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে চায়। তারা কাউকে কিছু দিবেও না কারো থেকে কিছু নিবেও না। তবে আমি বলব মানুষ চিনতে চাইলে দেওয়া নেওয়ার পর্বটা একবার হলেও করতে হবে।

ধরুন আপনি নতুন একটা শহরের গিয়েছেন বসবাস করার জন্য। আপনার বাড়ির ঠিক পাশেই যার বাড়ি সেই ভদ্রলোক বা ভদ্রমহিলাটি কেমন মানুষ তা আপনি জানেন না। কিন্তু আপনাকে জানতেই হবে, তাকে একবার বাজিয়ে দেখতেই হবে। কারণ আপনাকে জানতে হবে সে কেমন মানুষ, তার কাছ থেকে সাহায্য পাবেন কিনা, সে আপনার বিপদে পাশে থাকবে কিনা।

শুধু এক প্রতিবেশী না, আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে আশেপাশে প্রতিটি মানুষকে বাজিয়ে দেখতে হবে। কে সত্যিকারের আন্তরিক মানুষ আর কে আন্তরিকতার মুখোশ পড়ে ঘোরাঘুরি করছে তা আমাদের বের করতেই হবে, তাদের চিনে রাখতেই হবে।

এজন্য প্রয়োজন না থাকলেও একটিবার তাদের কাছে কিছু চেয়ে দেখবেন। কার রিসোর্স থাকা সত্ত্বেও আপনাকে সেটা হস্তান্তর করছে না আর কার না থাকা সত্ত্বেও আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বা পাশে থাকছে, সেটা বুঝতে সুক্ষ্ম বুদ্ধির মালিক হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।

নির্ঝঞ্ঝাট জীবনযাপন করতে অনেক কিছুর দরকার হয় না। আশেপাশে কয়েকজন নির্ভরযোগ্য মানুষ থাকলেই সারাটা জীবন দিব্যি কাটিয়ে দেওয়া যায়।

সবার জীবন যেন মুখোশযুক্ত মানুষের সংগ থেকে মুক্ত থাকে এই কামনায় আজকের লেখা এখানেই শেষ করছি।

ধন্যবাদ সবাইকে।

@kitki

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপু আপনার পোস্টের মাধ্যমে কয়েকটি সুক্ষ্ম জিনিস আপনি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। আসলেই আমাদের সমাজের চারপাশে শুধু মুখোশ পরা মানুষের আনাগোনা। এর মধ্য থেকে সত্যিকার বিশ্বস্ত আপনজন মানুষ খুবই কম পাওয়া যায়। আর জীবনে সুখে থাকার জন্য আশেপাশে এমন বিশ্বস্ত অল্প কিছু মানুষ থাকলেই চলে। আমারও মাঝে মাঝে মনে হয় আশে পাশের মানুষগুলোকে একটু বাজিয়ে দেখি কিন্তু শুনেছি ধর্মে এ ব্যপারে নিষেধ আছে। সুন্দর এ পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

গিভ অ্যান্ড টেক, মানি দেওয়া এবং নেওয়া। এই বিষয়টা আসলে পৃথিবীতে চিরন্তন সত্য একটি বিষয়। কেননা মানুষ এ বিষয়ে ভিত্তি করেই বর্তমানে চলাফেরা করতে হয়। যেকোনো বিষয়ে টেক অ্যান্ড গিভ এর মধ্যমে কার্যক্রম চলতে থাকে। সেটা যেকোন ক্ষেত্রেই হতে পারে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এই কামনা করি সব সময়।

নির্ঝঞ্ঝাট জীবনযাপন করতে অনেক কিছুর দরকার হয় না। আশেপাশে কয়েকজন নির্ভরযোগ্য মানুষ থাকলেই সারাটা জীবন দিব্যি কাটিয়ে দেওয়া যায়।

মুক্ত ভাবনা হোক সমাজ সংস্করণের হাতিয়ার। "ভাল" বোধগম্য হোক সবার জীবনে।

পুরোপুরি একমত ভাই। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

আপু আপনি খুব ভালো লেখেছেন।কিন্তুু কিছু কিছু কথা একমত হতে পারলাম না।দেওয়া নেওয়া দিয়ে মানুষ বোঝা যায় না।কারন আমি এমন মানুষ ও দেখিছি তারা কোন কিছু একে বারেই দিতে জানে বললেই হয়,কিন্তুু নেওয়ার সময় ও ছাড় দিবে না।কিন্তুু কারো কোন বিপদে পড়লে কোন কিছু না দিয়ে হোক কিন্তুু নিজের শ্রম ও চেষ্টা দিয়ে উপকার করে। তবে এটা সত্যি বাহ্যিক দেখে মানুষ চেনা যায় না।ধন্যবাদ আপনাকে

ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। তবে আপু কিছু দিতে জানা মানে কিন্তু আমি শুধু টাকা পয়সা বা এই জাতীয় জিনিস বোঝাইনি, শ্রম দেওয়াটাও একটা দেওয়া, সাহায্য করতে না পারলেও যারা চেষ্টা করে তাদের চেষ্টা থেকেই তারা কি পরিমাণ আন্তরিক সেটা বোঝা যায়। আমি তাদের চিনে রাখতে বলেছি যারা কোন দিনই বিপদে পাশে দাঁড়াবে না অথচ নেওয়ার সময় ঠিকই নিবে।

আপু আপনার লেখাতে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনার বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন। এটা পড়ে আমার খুব ভালো লাগলো কিন্তু তারপরও আমরা সবকিছু জানতে চাই না কারণ বাস্তবতা খুব কঠিন। আপনি অত্যন্ত সঠিক একটা কথা বলেছেন কোন ব্যক্তির বাহ্যিক চেহারা দেখে তার গুণাগুণ বা ব্যক্তিত্বকে যাচাই করা ঠিক না। সুন্দর একটি বক্তব্য তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ ভাইয়া। আসলেই আমরা সব কিছু জানতে চাইনা, অথবা জেনেও জানিনা। কারণ আমরা অনেক সময় বাস্তবতাকে মোকাবিলা করতে চাইনা। এড়িয়ে চলাই মাঝে মাঝে উত্তম পন্থা।