প্রতি পূর্ণিমার মধ্যরাতে একবার আকাশের দিকে তাকাই
গৃহত্যাগী হবার মত জোছনা কি উঠেছে ?
কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ গৃহ ত্যাগ করার মত একটা জ্যোৎস্নার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। বালিকা, নবদম্পতি অথবা কবির জ্যোৎস্না নয়, তিনি চেয়েছিলেন সিদ্ধার্থের মত গৃহত্যাগী হবার মত জ্যোৎস্না যাতে গৃহের সমস্ত দুয়ার খুলে যায় এবং তিনি বেরিয়ে পড়তে পারেন বিবিধ ডাকের প্রতি সাড়া দিয়ে। তাঁর অপেক্ষা ছিল সঠিক জিনিসের জন্য, সঠিক মুহূর্তের জন্য। তবে তার মাঝে দৃঢ়তা এবং ইচ্ছাশক্তির কোন অভাব ছিল না।
কিন্তু আমার ক্ষেত্রে জিনিসটা ১৮০ মাত্রায় উল্টা হয়েছে। আমার কাছে সময় আছে, সুযোগ আছে এবং সঠিক জিনিসটাও আছে। আমার মাঝে যেটার অভাব সেটা হল প্রচন্ড ইচ্ছাশক্তি এবং সেই ইচ্ছাশক্তিকে ধরে রাখার ক্ষমতা। জীবনটাতো সমতল না, তাই এটা ত্রিকোণমিতির সূত্র মানুক আর না মানুক কোণ, ঢাল, আনত তল ইত্যাদি তৈরি করবেই। আর আমি এই চরম সত্যকে মেনে নিতে মাঝে মাঝেই দ্বিধা করি। সামনে চড়াই-উৎরাই দেখলে মোকাবিলা করার আগে আমি আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলি। এরপর নিজেকে টেনে তুলে যখন সেটার পেছনে ছুটি তখন বাকি সব ভুলে যাই। আবার সব শেষে যখন জীবন থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিন হারিয়ে যায়, তখন আমার টনক নড়ে। আবার আফসোস আর আক্ষেপের ঝুলি বড় হতে থাকে।
এইসব থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রথমেই যেটার দরকার ছিল সেটা হল সমস্যাটাকে খুঁজে বের করা এবং সেটা স্বীকার করে নেওয়া। এভাবেই এরপর সাক্ষী হলাম নিজের ধীর পরিবর্তনের। নিজের ভেতরের গন্ডি ছেড়ে বাইরে বের হয়ে দেখতে শুরু করলাম। সাথে পজিটিভিটিটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ জীবন জটিলতার সাথে মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপারটা ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
নেগেটিভ বা ঋণাত্মক চিন্তাধারা যেমন মানুষকে কঠিনের দিকে নিয়ে যায়, তেমনি পজিটিভ বা ধনাত্মক চিন্তাধারা জীবনকে সহজ ও সাবলীল করে। তাই ঘটনাগুলোকে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে দেখার চেষ্টা করতে হবে। এভাবে হয়ত অনেক কিছুই ঘটবে যেটা আমাদের উপকার করবে না, কিন্তু মানসিক শান্তি বা স্বস্তি বলে যে বিষয় আছে সেটা খুব ভালভাবে আমাদের ছুঁয়ে যাবে।
এই জীবনমন্ত্রে বিশ্বাস করে আমি আমার জীবনকে পরিবর্তন করছি। খুব ধীর সেই পরিবর্তন তবু দিন শেষে যেন স্থায়ী হয় এই চেষ্টায় আছি। জীবনের কাঠিন্য যেন জীবনের সহজতাকে একঘরে করে দিয়ে জীবনের সব আনন্দ মাটি করে না দেয়; বরং যেন এই সহজ মন্ত্রটা জীবনের কাঠিন্যের মধ্যে ঢুকে তাকেও লঘুতর করে দেয়। আমার ছোট জীবন থেকে ইতোমধ্যে বহু সময় চলে গিয়েছে। আর হারাতে রাজি নই। তাই আমি আজ কাঠিন্যের মধ্যেও আনন্দ খুঁজি।
অনেক সময় দেখা যায় আমাদের জীবনে একটা ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে কিন্তু আমরা সেই ঘটনাটা পছন্দ করছিনা, চাই না যে সেটা ঘটুক। কিন্তু সেটা ঘটবেই। তখন আমরা বেশির ভাগ মানুষ বিস্বাদ খাবার খাওয়ার মত সেই ঘটনাটাকে অতি বিস্বাদভাবে আমাদের জীবনে ঘটতে দেই। এখানেই আমাদের একটু ভুল। কারণ ঘটনাটা কিন্তু ঘটছেই। তাইলে আমাদের বিমুখতা কেন? যেটা আমরা রোধ করতে পারবো না, আমাদের উচিত সেই আবর্তনেই জীবন চালানো। সেই জিনিসটাকে উপভোগ করার যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে।
একটা উদাহরণ দিলে হয়ত আরো ভালভাবে বোঝা যাবে। ধরি আজকে ছুটির দিন, আমার প্ল্যান আছে পুরোটা দিন রেস্ট নিব, খাব, মুভি দেখব, ঘুমাব। কিন্তু হঠাত কোন আত্মীয় ফোন করে বলল তার সাথে তখুনি ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। এই কাজে হয়ত আমার প্ল্যান বিঘ্নিত হবে, বিরক্ত হব, কিন্তু তবু আমাকে কাজটা করতেই হবে। তো এখন কাজটাকে যদি আমরা পজিটিভ চিন্তা করে না করি, বা উপভোগ না করি তাহলে আমাদের জীবনের ঐ সময়টুকু কিন্তু নষ্ট হবে।
আসলে জীবনটা কিন্তু খুব বেশি বড় না, তাই এখানে একটু একটু করে সময় নষ্ট হওয়া মানেও অনেক কিছু। আর আমরা সবাই একটা পরিপূর্ণ জীবন অতিবাহিত করতে চাই। তাই জীবনের সঠিক মানে বের করে সেই অনুযায়ী চলাটা গুরুত্বপূর্ণ।
বি দ্রঃ একদিনে আমার পক্ষে আমার জীবনমন্ত্রের বা জীবন-যাপনের সব দিক লেখা সম্ভব নয়। কারণ দিক তো অনেক, কিন্তু ঘটনার অভাবে তারা অনেক সময় অন্তরালে থেকে যায়। তাই ঘটনা বা চর্চার ক্ষেত্রের অভাবে তাদের অনেকের সঠিক ব্যাখ্যা করা আমার জন্য এখন সম্ভব নয়। এজন্য আমি বর্তমানে হুমায়ুন আহমেদ স্যারের মত ঘটনা ঘটার অপেক্ষায় আছি।
খুব সুন্দর করে বর্ণনা করেছেন একদম সত্যি কথা বলেছেন কখনোই একদিনে জীবন মন্ত্রের জীবনযাপনের সব দিক গুলো বর্ণনা করা সম্ভব নয়। কারণ আমাদের জীবন সেতো এক মহাযজ্ঞ আমাদের জীবনে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত অনেক ঘটনা ঘটে থাকে যা কখনোই বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। আপনার জীবন যাপন বৃত্তান্তের উপস্থাপনা আমার খুব ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনি ঠিকই বলেছেন আমাদের জীবন মহাযজ্ঞ যেখানে প্রতিনিয়তই অনেক ঘটনা ঘটছে। সবগুলোকে বর্ণনা করা কঠিন, আর একদিনে তো অসম্ভব। তবে ঘটনাগুলোকে যদি কিছু দিক বিবেচনায় বলি তাহলে হয়ত কিছুটা বলা সম্ভব।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
twitter
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জীবনের প্রতিটা কাজই পজিটিভ চিন্তা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ঘটে যাওয়া কিছু জিনিশ কে নেগেটিভ ভাবে নিলেই মন খারাপ হয়। কাজে বিঘ্ন ঘটে। অথচ পজিটিভ ভাবে মেনে কাজ গুলো করলে খুব সহজেই হয়ে যায়। খুব সুন্দর লিখেছেন আপু। ধন্যবাদ আপনাকে। কিন্তু আফসোস এই পোস্ট এ যেখানে কিছু শেখার আছে মানুষ সেটা এড়িয়ে যায়। শুভকামনা রইলো আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit