কুষ্টিয়া মিরপুর জমিদার মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরীর বাড়ি ভ্রমণ।

in hive-129948 •  last year 

০৮কার্তিক , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

২৩অক্টোবর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
০৭রবিউস সানী ১৪৪৫ হিজরী
মঙ্গলবার।
হেমন্তকাল।


আসসালামু আলাইকুম,আমি মোঃআলী, আমার ইউজার নাম @litonali।আমি বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি


🚴

IMG_20231024_151351.jpg

চাকরির সুবাদে বর্তমানে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলায় কিছুদিন রয়েছি। এমনিতেই ভ্রমণ করতে এবং ঐতিহ্যবাহী জায়গা ভ্রমণ করতে আমার অনেক ভালো লাগে। যেখানেই যাই সেখানেই ঐতিহ্যবাহী জায়গার খোঁজ করি। আর সেটা যদি পুরাতন রাজবাড়ী জমিদার বাড়ি হয় তাহলে তো কোন কথাই নেই। চেষ্টা করি সেখানকার সেই ইতিহাস জানতে। কেননা পুরাতন ইতিহাস জেনে সেই বিষয়ে কিছুটা কল্পনায় ভেসে যেতে আমার খুবই ভালো লাগে। আজ আপনাদের সাথে একটি ভ্রমণ পোস্ট শেয়ার করব অবিভক্ত ভারত উপমহাদেশের নদীয়া জেলায় অবস্থিত ছিল পূর্বে এটি। বর্তমানে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুরে অবস্থিত জমিদার মোশারফ হোসেন খান চৌধুরীর বাড়ি। মানুষ পৃথিবী থেকে চলে যায় কিন্তু মানুষের অনেক স্মৃতি রয়ে যায়। সেই জমিদার প্রথা শেষ হয়েছে ১৯৪৭ সালে বঙ্গভঙ্গর পরে। কিন্তু আজও এই উপমহাদেশে হাজারো জমিদারের বাড়ি রাজপ্রাসাদ এবং তাদের সাথে ঘটে যাওয়া হাজারো ইতিহাস মানুষের মুখে এবং বইয়ের পাতায় স্মৃতি হয়ে রয়েছে। তেমনি একটি জমিদার বাড়ির খবর পাই মিরপুরে আসার পরে। যদিও তেমন জাতজমক নেই এখন। তবুও খবর পেয়ে ভ্রমণের জন্য ইতিহাস জানতে ছুটে গিয়েছিলাম। একেকজন জমিদার এক একটা অঞ্চলে তাদের আধিপত্য বিস্তার করে জমিদারি কাজ পরিচালনা করতেন। তেমনভাবে জমিদার মোশারফ হোসেন খান চৌধুরী নদীয়া জেলার কুষ্টিয়া দৌলতপুর ভেড়ামারা এবং মিরপুর অঞ্চল দিয়ে তার রাজত্ব পরিচালনা করতেন।


🚴🚴

IMG_20231024_151415.jpg

রাজা নেই পৃথিবীতে কিন্তু রাজার রাজ প্রসাদ রাজার স্মৃতি বিজড়িত স্থান এবং রাজার ভালো-মন্দ দিক এখনো মানুষের বিবেকে জাগ্রত। এই জমিদার ছিলেন একজন মুসলিম তিনি খুবই ভালো মনের এবং সুফি মানুষ ছিলেন যতদূর জানতে পেরেছি। তার রাজ্যে হিন্দু মুসলিমের কোন ভেদাভেদ ছিল না। ছিলনা কোন অরাজকতা। সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উন্নয়ন এবং উন্নতির দিকে ঝাঁপিয়ে পড়তেন তার ডাকে। গিয়েছিলাম জমিদার বাড়ি ভ্রমণ করতে অনেকের সাথে বসে গল্প করেছি শুনেছি তার প্রশংসা। উপরে যে ফটোগ্রাফিটি দেখতে পাচ্ছেন এটি বংশ-পরম্পরায় জমিদারের পরবর্তী ওয়ারিশ।


🚴🚴

IMG_20231024_151431.jpg

জমিদার নেই আগের মত সেই জমিদারীত্ব কোথাও নেই। তবুও জমিদারের স্মৃতিগুলো আজ দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে। জমিদার বাড়িতে ঢুকতেই প্রথমে যে বিল্ডিংটি দেখলাম। সেই ২০০ বছর আগের কারুকার্য এখনো স্মৃতি হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বাড়ির মাঝখানে করা হয়েছে তাদের পারিবারিক কবরস্থান। জমিদারের বাড়ির চারিপাশ এখনো প্রাচী দিয়ে ঘেরা। শুধু পুরাতন ইট দিয়ে তৈরি বিল্ডিং গুলো ধ্বংস স্তূপের মত এখনো জাগ্রত। তবে জমিদারের বংশধররা অনেক ভালো একটি কাজ করেছে প্রশংসা করতেই হয়। জমিদারের নামে একটি এতিমখানা মাদ্রাসা এবং বড় একটি মসজিদ কমপ্লেক্স তৈরি করেছেন।


🚴

IMG_20231024_151448.jpg

উপরের ফটোগ্রাফিতে দেখতে পাচ্ছেন সেই জমিদারির আমলের পুরাতন ভবন এখনো রয়েছে। জমিদারের বংশধররা সেরকম ভাবে এখনো সংরক্ষণের পরিকল্পনা নেয় নি এজন্যই হয়তো আজ এ অবস্থা। বিল্ডিং এর ওপরে জ্বালিয়েছে ছত্রাক হয়েছে পরগাছরা থেকে বটগাছ। তবুও লোকে বাড়ির পাশ দিয়ে গেলে বলে এটা জমিদারের বাড়ি এটা জমিদারের ভবন। এখন যে বিল্ডিংটি দেখতে পাচ্ছেন এই বিল্ডিংয়ে জমিদারের সকল আইনি কাজ কাম এবং বিচার হতো।


🚴🚴

IMG_20231024_151218.jpg

IMG_20231024_151253.jpg

জমিদার বাড়ির আঙিনায় প্রায় ২০ বিঘা জমির উপরে রয়েছে ইয়া বড় একটা পুকুর। বাড়ির অন্দরমহল থেকে বের হলেই পুকুরটি সিঁড়ি শুরু। পুকুর পুকুরের প্রবেশ পথে রয়েছে বড় একটি গেট। দেখতে পাচ্ছেন বাড়ির প্রায় মধ্যখানে এই পুকুরটি অবস্থিত। সেই সময় যেরকম ডিজাইনে করা হয়েছিল এক কথায় বর্তমান সিনেমায় যেরকম ভাবে দেখানো হয় ঠিক যেন স্বপ্নের মত।


🚴🚴

IMG_20231024_151151.jpg

IMG_20231024_151319.jpg

জমিদার বাড়ি ভ্রমণ করে আমার খুবই ভালো লেগেছে যেমন জমিদার বাড়ির ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পেরেছি তেমনি পুরনো দিনের কিছু জিনিস দেখে নিজেকে কল্পনায় ভাসিয়ে দিতে পেরেছি। বাংলাদেশে এরকম হাজারো জমিদার বাড়ি রয়েছে যেগুলো অরক্ষিত অবস্থায় আজ বিলুপ্তির পথে। তবে আমার মনে হয় যদি সরকারি উদ্যোগে এই ধরনের ঐতিহ্য কালের সাক্ষী করে রাখা যায় পরবর্তী প্রজন্মের জন্য অনেক ভালো হবে সেটা। তবে জমিদারের বংশধররা এখনো জমিদারের স্মৃতি ধরে রেখেছে কিছু কিছু এবং ওই আঙিনায় বড় বড় বিল্ডিং করে এখন তারা থাকছে। যাহোক অল্প পরিসরে জমিদার বাড়ি ভ্রমণের কিছু স্মৃতি এবং কথা সেই সাথে ফটোগ্রাফি আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম আশা করছি ভালো লাগবে।


লোকেশন:


ডিভাইসঃ Redmi Note 5



standard_Discord_Zip.gif

>>>>>|| এখানে ক্লিক করেন ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Witness Banner 2.png


সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

ধন্যবাদ

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

image.png

জি ভাইয়া। আমিও যেখানে যাই ঐতিহ্যবাহী জায়গার খোঁজ করি। আপনি চাকরি সুবাদে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলায় রয়েছেন। জেনে বেশি ভালো লাগলো। জমিদার আমলের পুরাতন ভবনের ছবি আপনি তুলে ধরেছেন অত্যন্ত সুন্দরভাবে এবং বিশ বিঘা জমির উপর একটা পুকুর। পুকুরটি তো আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগলো।আমার কাছেও ভীষণ ভালো লাগলো ভাইয়া। আপনি বাড়ির ঐতিহ্য ইতিহাস সম্পর্কে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। বেশ ভালো লাগলো।

পুরনো দিনের ইতিহাস জানতে এবং এটা নিয়ে একটু কল্পনায় ভেসে যেতে আমারও অনেক ভালো লাগে।
জমিদার বাড়ির ভ্রমণ কাহিনী এবং ফটোগ্রাফি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে অনেক খুশি হলাম ধন্যবাদ।

মাঝে মাঝে ভ্রমণে বের হলে খুব ভালো লাগে। অনেক কিছুই উপভোগ করা যায় । আপনি কুষ্টিয়া মিরপুর জমিদার মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরীর বাড়ি ভ্রমণ করেছেন জেনে খুব ভালো লাগলো। চৌধুরীর বাড়ি চমৎকার সৌন্দর্য উপভোগ করেছেন। চৌধুরীর বাড়ি সম্পর্কে অনেক তথ্য আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। চৌধুরীর বাড়িটি বেশ সুন্দর। চৌধুরীর বাড়ি ভ্রমণের অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

আসলে ভ্রমণ করলে অজানাকে যেমন জানতে পারা যায় অদেখাকে দেখতে পাওয়া যায় তেমনি মনের দিক থেকে অনেক হ্যাপি থাকা যায়।

পুরাতন বাড়ি গুলো দেখতে যেমন ভালো লাগে তেমনটা আকর্ষণ করে। অতীত সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করার অনুপ্রেরণা যোগায়। তেমনি আপনি মোশারফ খানের বাড়িতে দারুন সময় কাটিয়েছেন ।যেটার ভিন্নতা আপনার ভ্রমণের মাধ্যমে আমরা উপভোগ করতে পারলাম ভালো লাগলো।

Posted using SteemPro Mobile

একদম ঠিক বলেছেন অতীত সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা করতে এবং কল্পনায় ভেসে যেতে পুরাতন স্থাপনা গুলো ভ্রমণ করা অনেক প্রয়োজন।

ভাইয়া যে কোন ঐতিহাসিক স্থানে ভ্রমন করতে আমার কাছেও অনেক ভালো লাগে। কারন ঐ সমস্ত স্থানে গেলে অনেক কিছু জানা যায়। আপনি আজকে কুষ্টিয়া মিরপুর জমিদার মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরীর বাড়ি ভ্রমণ করে অনেক তথ্য আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ।