নদীর তীরে গ্রাম্য মেলার কিছু চিত্র [beneficiary 10% @shy-fox)

in hive-129948 •  3 years ago 

আজ২৫ই ভাদ্র-১৪২৮বঙ্গাব্দ

বৃহস্পতি বার -শরৎকাল।


আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি মোঃআলী, আমার ইউজার নাম @litonali।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনজানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি।

আজআমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব গ্রাম্য মেলার কিছু চিত্র ও আমি আমার মত করে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে

IMG_8218.JPG

IMG_8219.JPG

প্রতি বর্ষার মৌসুমে আমাদের বাড়ির পাশের নদীতে হয় মেলা।মেলা হল যখন একটি সামাজিক, ধর্মীয়, বাণিজ্যিক বা অন্যান্য কারণে একটি স্থানে অনেক মানুষ একত্রিত হয়। মেলা শব্দটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনে আনন্দের অনুভূতি হয়।মেলার আক্ষরিক অর্থ মিলন। মেলায় একে অন্যের সঙ্গে ভাব বিনিময় হয়।আর তা যদি হয় নদীর তীরে,আর বলার অপেক্ষা রাখেনা কত কত মজা হবে।


IMG_8206.JPG

IMG_8215.JPG

মেলা সাধারণত কোনো বৃহৎ স্থানে,যেখানে মানুষের চলাচল রয়েছে, তেমন স্থানে মেলা অনুষ্ঠিত হয়।মেলা অনেক ধরনের হয়। পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মেলা। একে জাতীয় পর্যায়ের মেলাও বলা যায়। এই মেলায় বাংলার ঐতিহ্যের ধারক-বাহক।মেলার সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্টীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির যোগাযোগ নিবিড় । বাংলার এই সংস্কৃতিতে থাকে সব ধর্মের মানুষের সংস্কৃতির সমন্বয় । কয়েকটি গ্রামের মিলিত এলাকায় বা কোন খোলা মাঠে আয়োজন করা হয় মেলার। মেলাকে ঘিরে গ্রামীণ জীবনে আসে প্রাণচাঞ্চল্য। গ্রামের মেলায় যাত্রা, পুতুল নাচ, নাগরদোলা, জারি-সারি, পালার আসর, ষাঁড়ের লড়াই, মোরগের লড়াই,বিশেষ করে লাঠি খেলা হই হই শব্দ আর লাঠির বড়ির শব্দ , হাডুডু খেলা মুগ্ধ করে আগত দর্শনার্থীদের। এখনও নাগরদোলা সব বয়সীদের কাছে প্রধান আকর্ষণ। মেলায় আবার বিভিন্ন নাটক বা যাত্রাপালারও আয়োজন করা হয়।


IMG_8254.JPG

IMG_8251.JPG

IMG_8252.JPG

IMG_8238.JPG

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, ‘প্রতিদিন মানুষ ক্ষুদ্র দীন একাকী। কিন্তু উৎসবের দিন মানুষ বৃহৎ, সেদিন সে সমস্ত মানুষের সঙ্গে একত্র হইয়া বৃহৎ, সেদিন সে সমস্ত মনুষ্যত্বের শক্তি অনুভব করিয়া মহৎ’।

কবিগুরু যথার্থই বলেছেন। উপলক্ষ যাই হোক না কেন, বাঙালির সকল উৎসবের মধ্যে একটা সার্বজনীন রূপ আছে। এতে ধর্ম, সম্প্রদায়, জাত-পাত বা ধনী-গরিবের সামাজিক বিভক্তি বাধা হয়ে দাঁড়ায় না বরং সকল শ্রেণির মধ্যে সেতুবন্ধন রচিত হয়। আর এ কারণেই কালের বিবর্তনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকতার ধরন পাল্টালেও আবহমান বাংলার সামাজিক উৎসব, পার্বণ বা গণমানুষের মেলবন্ধনের ঐতিহ্য-কৃষ্টিগুলো আজও হারিয়ে যায়নি। মেলা মানেই মহামিলন। মানুষের উচ্ছ্বাস-উল্লাসের বহিঃপ্রকাশ ঘটে মেলার মধ্য দিয়ে। ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায়ের উর্ধে উঠে মেলা মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে দেয়। গ্রাম-বাংলার মেলা তাই হাজার বছরের ঐতিহ্যের এক মহা সম্মিলন।

কবে, কোথায়, কখন প্রথম মেলার প্রচলন হয়েছিল তা জানা না গেলেও এটি যে আবহমান বাংলার এক প্রাচীণ ঐতিহ্য এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। ধারণা করা হয়, গ্রামীণ হাট থেকেই আসে মেলার ধারণা। অতীতে রাজা-জমিদারেরা মেলার আয়োজন বা পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। ধর্মীয় কোনো উপলক্ষে মেলা বসত। তাই বাংলার বারো মাসের তেরো পার্বণের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে মেলা। বৈশাখ থেকে চৈত্র প্রতি মাসেই মেলা অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায়। এক সময় পীর-ফকির বা সাধু-সন্ন্যাসীদের আস্তানাগুলোও মেলার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। ধর্মীয় চেতনার বাইরে অন্যান্য সামাজিক বা লৌকিক আচারগুলোও যুক্ত হতে থাকে মেলার সঙ্গে।

বাংলাদেশের কয়েকটি ঐতিহ্যবাহী লোকজ মেলাসম্পাদনা

বাংলাদেশের এমন কোন জেলা বা উপজেলা নেই যেখানে মেলার আয়োজন করা হয় না। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) গ্রামীণ মেলার ওপর দেশজুড়ে এক জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করে ১৯৮৩ সালে। ১ হাজার ৫টি মেলার সন্ধান পাওয়া যায় ঐ জরিপে। জরিপ কার্যক্রমটি আরও পঞ্চাশ-একশ বছর আগে পরিচালিত হলে মেলার সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি হতো। বিসিকের প্রাপ্ত সংখ্যার নব্বইভাগ মেলাই গ্রামীণ। সারা বছরই দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন নামে এসব মেলা বসে। কখনও বট-পাঁকুড়ের ছায়ায়, নদীর পাড়ে, আবার কখনও মন্দির-মঠ-তীর্থস্থানে বা সাধু-সন্যাসী-পীর-ফকিরদের আস্তানায় এবং গ্রামের খোলা মাঠে বসে এসব গ্রামীণ মেলা।


IMG_8207.JPG

IMG_8195.JPG

IMG_8208.JPG

একসময় হাওর পাড়ের বিভিন্ন গ্রামে বসতো গ্রাম্য মেলা। কালের বিবর্তনে বিলুপ্তির পথে অনেক কিছুই, ধারাবাহিকভাবে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম্য মেলাও। গ্রাম্য মেলায় বসতো সাংস্কৃতিক ভাটিয়ালী বাউল গানের আসর। সাধারণত গ্রাম্য মেলা বসতো বিভিন্ন স্কুল কলেজের মাঠ কিংবা গ্রামের মন্দির, নদীর তীর বা বড় বৃক্ষের নিচে। তখন বিভিন্ন উৎসব কে সামনে রেখে মেলার আয়োজন করতো স্থানীয়রা।

W3W :https://w3w.co/dove.headlined.buttercups

Device :redmi

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

নদীর তীরে এমন গ্রাম্য মেলা খুব একটা আমার চোখে পড়ে না। তবে এমন মেলার দৃশ্য গুলো আমার বাংলা ব্লগে শেয়ার করার জন্য এবং আমাদের দেখার সুযোগ করে দেয়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ভাবে অভিনন্দন জানাতে চাই

আপনার সুন্দর মন্তব্যোর জন্য ধন্যবাদ

নদীর তীরে গ্রাম মেলা সম্পর্কে আপনি অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো খুবই সুন্দর। নদীর তীরে গ্রামমেলা গুলো আসলেই অনেক সুন্দর হয়। দেখতে খুবই ভালো লাগে।আপনার উপস্থাপনা বেশ সুন্দর

ধন্যবাদ ভাই।

  ·  3 years ago (edited)

অনেকদিন পরে কোন মেলা দেখলাম। বাংলাদেশের গ্রামে একসময়ে অনেক মেলা হতো। কিন্তু কালের বিবর্তনে আজ তা হারিয়ে যেতে বসেছে। এরপর আবার করোনার থাবায় লোকসমাগম বন্ধ। সেজন্য যে মেলাগুলো হতো সেগুলোও বন্ধ রয়েছে। খুব ভালো লিখেছেন।

মেলা আমাদের মাঝ থেকে এখনো পুরোপুরি বিদায় নেয় নাই এখনো প্রতি বষার মৌসুমে আমাদের এখানে নদীর পাড়ে মেলা বসে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানায় সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

😍😍

নদীর তীরে গড়ে ওঠা এই প্রাচীন মেলা গুলি আর চোখে দেখা যায় না। আর এই মেলার ছবি গুলি আপনার পোষ্টের মাধ্যমে দেখে অনেক ভালো লাগলো, ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ