ভ্রমণ 🚴 পদ্মা নদীতে ইলিশ মাছ কিনতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা।

in hive-129948 •  last year 

১৫কার্তিক , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

৩১অক্টোবর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
১৪রবিউস সানী ১৪৪৫ হিজরী
মঙ্গলবার।
হেমন্তকাল।


আসসালামু আলাইকুম,আমি মোঃআলী, আমার ইউজার নাম @litonali।আমি বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি


🐟🐟

IMG_20231031_185904.jpg

IMG_20231031_190132.jpg

নদীমাতৃক আমাদের এই বাংলাদেশ। প্রধান নদী পদ্মা মেঘনা যমুনা । এই তিনটি বড় নদীর ছোট বড় শাখা রয়েছে হাজারো। সারা বাংলাদেশকে জালের মত ঘিরে রেখেছে। এর সাথে সংযুক্ত রয়েছে হাজারো খাল বিল নালা। বর্ষা এলে চারিদিকে ধুম পড়ে যায় মাছের। হাজারো রকমের নদীর মাছ। আর আমরা তো মাসে ভাতে বাঙালি একসময় ছিলাম কিন্তু এখন আর এটা বলতে পারি না বলতে গেলে লজ্জা হয়। আমাদের জাতীয় মাছ ইলিশ আর এই মাছের দামি সবথেকে আমাদের দেশে বেশি। অথচ আমাদের দেশ থেকে অন্যান্য দেশে রপ্তানি করা হয় সেখানকার দাম এদেশের তুলনায় অনেক কম। যাহোক থাক এসব দুঃখের কথা। আসুন এবার ভ্রমণ কাহিনী শুরু করি। অক্টোবরের ১২ তারিখ থেকে পদ্মা নদীতে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। কারণ এ সময় বঙ্গোপসাগর থেকে মিঠা পানিতে মা ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য চলে আসে। অধিক পরিমাণে মাছের সংখ্যা বাড়াতে এসময় সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। দেওয়া হয় এই সময় জেলেদের জন্য বিশেষ সুবিধা এবং খাদ্যদ্রব্য। কিন্তু আমাদের অঞ্চলে এটা সম্পূর্ণই ভিন্ন। সেই ভিন্নতা এবং কিছু ফটোগ্রাফি আজ আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো।


🐟

IMG_20231031_185851.jpg

IMG_20231031_185812.jpg

IMG_20231031_190024.jpg

IMG_20231031_190011.jpg

যখন ইলিশ মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা পরে তখনই আমাদের দিকে ইলিশ মাছ ধরার ধুম পড়ে যায়। সাধারণত এটা বর্ষার শেষের দিকে হয়ে থাকে। পদ্মানদীর প্রচলন্ড স্রোত ঢেউ এবং পুলিশের দৌড়ানি অপেক্ষা করেই এই মাছ শিকার করা হয়। তবে অন্যান্য সময়ের তুলনায় পদ্মা নদীর পাড় থেকে মাছ কিনলে আপনি বাজার থেকে অর্ধেক দামে কিনতে পারবেন। এত পরিমানে ইলিশ মাছ ধরা পড়ে এমনও সময় আছে যে মাছ বিক্রি করার লোক খুঁজে পাওয়া যায় না অতি অল্প দামে। গত শুক্রবারে পদ্মা নদীর পাড়ে গিয়েছিলাম ইলিশ মাছ কেনার জন্য। তবে কপাল খারাপ এদিন খুব করে পুলিশের অভিধান চলছিল এজন্য জেলেরা মাছ ধরা বাদ দিয়ে ঘাটে নৌকা বেঁধে রেখেছিল। উপরের ফটোগ্রাফি গুলোতে দেখতে পাচ্ছেন পদ্মা নদীর পাড়ে জেলেদের অস্থায়ী বাসস্থান। আমাদের গ্রাম্য ভাষায় বলা হয় কুঁড়েঘর। রাত-দিন 24 ঘন্টায় এরা মাছ ধরে ক্লান্ত হয়ে গেলে এই ঘরের মধ্যে আশ্রয় নেয়। এবং এখানে রান্না করে খাওয়ার সব ব্যবস্থা তারা করে ফেলে।


🐟

IMG_20231031_190039.jpg

উপরের ফটোগ্রাফিতে দেখতে পাচ্ছেন একটি টম দোকান তাও আবার পদ্মা নদীর পারে। যেখানে বিক্রি করা হচ্ছে খাদ্যদ্রব্য তেল এবং ধূমপানীয় দ্রব্য। আমি তো প্রথম অবস্থায় এই দোকানটা দেখে অবাক চোখে হা করে তাকিয়ে ছিলাম। এই নদীর পাড়েও দোকান। লক্ষ্য করলে দেখতে পারবেন দোকানে কিন্তু কাস্টমারের ভিড় লেগে আছে। ওখান থেকে এটাও শুনতে পেলাম যে সন্ধ্যার পর থেকে সারারাত মনে হয় নদীর পারে যেন শহর বসেছে। এবং প্রতিটা নৌকায় আলোর ব্যবস্থা থাকে মনে হয় যেন দিকবিদিক আলোগুলো ছোটাছুটি করে বেড়াচ্ছে।


🐟🐟

IMG_20231031_190109.jpg

IMG_20231031_190052.jpg

IMG_20231031_185952.jpg

IMG_20231031_185933.jpg

IMG_20231031_185916.jpg

IMG_20231031_185826.jpg

অন্যান্য সময় দেখেছি ইলিশ মারার সময় এলে নদীতে এত পরিমাণ নৌকা এবং জাল থাকে একটার সাথে একটা লেগে যায়। তবে পুলিশের অভিযানের কারণে নৌকার সংখ্যা যেমন কম। দেখতেই পাচ্ছেন সব নৌকা ঘাটে বান্দা রয়েছে জেলেরা যার যার মত কলার বাগানে অবস্থান করছে পুলিশের আসার কথা শুনে। তবে রাত এলে এই জেলেরা খুব ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। পুলিশের সংখ্যা যত জনই হোক না কেন তাদের মাছ ধরতে বাধা দিতে সাহস করবে না। কেননা ছোটবেলা থেকে নদী নৌকা আর জাল তাদের আত্মার আত্মার সাথে মিশে আছে। হঠাৎ করে পুলিশ দিয়ে যদি ধাওয়া করে নৌকা দিয়ে স্রোত ঢেউ আর দেখবি দেখ ছোটাছুটি করার নৌকার নিচে পড়ে তারা ডুবে মরে যাবে। এজন্য রাতের বেলায় খুব ভালোভাবে মাছ ধরতে পারে কিন্তু দিনের বেলায় পুলিশের ঝামেলায় তারা আত্মগোপনে থেকে যায়। তবে আমি খুব আশা করে গিয়েছিলাম পদ্মা নদীর পাড়ে গিয়ে মাছ কিনব। কিন্তু পুলিশের অভিযানের কারণে না মাছ ধরতে না বিক্রি করছে। শূন্য হাতে ফিরেছি তবে সব মিলে একটু ভালো লাগলো শেষের দিকে। একজন জেলের জালে ধরা পড়েছে ১৪ কেজি ওজনের এক বাঘার মাছ 🐟। মাছ কিনতে পারিনি তবে এত বড় একটা মাছ দেখে খুব ভালো লেগেছে। দাম চাইল হাজার টাকা কেজি। তবে জেলেদের সাথে কথা বলে যেটি জানতে পারলাম তারা তাদের প্রাপ্য পাওনা পায়না। তাদের জন্য যে অনুদান গুলো দেওয়া হয় উপর মহলের লোকজন তা ভাগ করে খেয়ে ফেলে। এজন্য তারা এই পথ অবলম্বন করেছে। যাহোক আমরা বাংলাদেশী হিসেবে গর্ব করে বলতে পারি যে মানুষের চেয়ে আমাদের দুর্নীতির সংখ্যাই বেশি। আর যতদিন পৃথিবী আছে আমরা ততদিন দুর্নীতি করে যাব কারণ এটা আমাদের রক্তের সাথে মিশে আছে। যাহোক এই ছিল আমার পদ্মা নদীর ভ্রমণ ফটোগ্রাফি এবং মাছ কেনার অভিজ্ঞতা।


লোকেশন:


ডিভাইসঃ Redmi Note 5



standard_Discord_Zip.gif

>>>>>|| এখানে ক্লিক করেন ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Witness Banner 2.png


সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

ধন্যবাদ

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

দারুন একটি অভিজ্ঞতা আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইজান। বেশ ভালো লাগলো আপনার এই ইলিশ মাছ কেনার অভিজ্ঞতাটা। আমি খুব মনোযোগ সহকারে দেখার চেষ্টা করলাম আপনার এই সুন্দর আনন্দঘন মুহূর্ত আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন তা সম্পূর্ণরূপে ধারণা পাওয়ার জন্য।

ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।

গতকাল ও বড় একটি বাঘার মাছ ধরা পড়েছে সেটা বাজারে আনা হয়েছিল। তবে এই ইলিশ মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞার মধ্যে নদীর ধারে গিয়ে একদিন ইলিশ মাছ দিয়ে পিকনিক করা দরকার হা হা হা।

Posted using SteemPro Mobile

ঠিকই বলেছ দরকার ছিল একদিন পিকনিক করার কিন্তু সময় সুযোগ না হওয়াতে সবাই একত্র হওয়া যাচ্ছে না

নদীমাতৃক বাংলাদেশ অথচ এই দেশের মাছ বাইরের রাষ্ট্রে যায় আমরাই খেতে পারি না। তবে এটি আপনি ঠিক বলেছেন বাইরের রাষ্ট্রে আমাদের দেশের মাছের দাম কম আর আমাদের দেশে মাছের দাম বেশি। আপনার ভাগ্য খারাপ মাছ কিনতে গিয়ে সেই দিন মাছ ধরে নাই পুলিশের ট্রলের কারনে জেলেরা। শেষ মুহূর্তে চৌদ্দ কেজি ওলা বাঘার মাছ দেখতে পেলেন। যদিও মাছটি আপনি কিনতে পারেন নাই অনেক বড় কারণে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর করে পোস্টটি আমাদের মধ্যে উপস্থাপনা করার জন্য।

কিছু সিন্ডিকেটের কারণে আমরা বিপাকে পড়ে আছি আমাদের দেশের জিনিস আমাদেরকে বেশি দামে খেতে হচ্ছে আর বাইরে গেলে এটা আরো কম দামে পাওয়া যাচ্ছে।

তাহলে লাস্ট পর্যন্ত পদ্মা নদীতে গেলেন ইলিশ মাছ কেনার জন্য। এটি ঠিক বলেছেন আমাদের দেশের মাছ বাহিরে আমাদের থেকে সস্তা বিক্রি হয়। আর আমরা ঠিকমত মাছ পাই না খেতে। তবে অনেক সময় সরকারিভাবে নিষেধ থাকে নদীতে মাছ ধরা। তবে এতে বলতে হবে আপনাদের ভাগ্য খারাপ যে নদীতে গিয়ে মাছ কিনতে পারলেন না। তবে অনেক বড় একটি মাছ দেখতে পেলেন যদিও মাছটি অনেক বড় ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর করে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

কিছু বলার নেই ভাইয়া সিন্ডিকেট তারা অর্থলোপাট করে নিচ্ছে আর আমরা বিপদে পড়ে আছি।

ভাইয়া চিন্তা করেন। আপনাদের দিকে ইলিশ মাছ কেনার লোক পাওয়া যায় না। আর সেই মাছ ঢাকায় আসতে আসতে পচিঁশ শত তিনহাজার টাকা কেজি দাম হয়ে যায়। চিন্তা করেন কোন দেশে আমরা বাস করি। আশা করা যায় কয়েকদিনের মধ্যে নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হয়ে যাবে। আবার জেলেরা নদীতে মাছ ধরতে পারবে। ধন্যবাদ।

আমাদের দিকে এই সময়টাতেই এত অল্প দামে ইলিশ মাছ পাওয়া যায় তবে পরবর্তীতে অনেক দাম বেড়ে যায়।