আমার বাংলা ব্লগ (প্রতিযোগিতা-১৭)"ভ্রমণ উৎসব কাহিনী"||১০% shy-fox 🦊🦊 by mahamuddipu

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আমরা প্রতিনিয়ত লেখালেখির মাধ্যমে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারছি। আমাদের লেখালেখির উৎসাহ বাড়ানোর জন্য আমাদের প্রিয় কমিউনিটি থেকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সাম্প্রতিক এবং সুন্দর বিষয়গুলোর ওপর প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। এই বিষয়টি মাথায় রেখে এবারের প্রতিযোগিতার বিষয় হলো নিজের "ভ্রমণ উৎসব কাহিনী" নিয়ে। আর এই সুন্দর প্রতিযোগিতা আয়োজন করার জন্য "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির সকল এডমিনভাইদের জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

ভৌগলিক অবস্থান:

What's 3 Word Location

ডিভাইস:

Device : Vivo Y19

IMG20220501141841.jpg

image.png

কিছুদিন আগে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদ চলে গেল। ঈদকে কেন্দ্র করে সবাই বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করেছেন। কিন্তু এবারের ঈদ এবং বৈশাখ প্রায় পাশাপাশি সময়ে সম্পন্ন হয়েছে। আমাদের এলাকায় "বিরাট" নামক স্থানে বৈশাখ উপলক্ষে বড় একটি মেলা হয়ে থাকে। এই মেলাকে "বিরাটের মেলা" নামে আখ্যায়িত করা হয়। বিখ্যাত এই বিরাটের মেলায় দেশের নানা প্রান্ত থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকজন বাস ভাড়া করে নিয়ে ঘুরতে আসেন এবং পূজা সম্পন্ন করেন। এছাড়াও এলাকার আশেপাশের অন্যান্য ধর্মাবলম্বী লোকজনও এই বিখ্যাত মেলা দেখতে আসে। এই মেলায় ঘুরতে গিয়ে কাটানো সুন্দর মুহূর্ত এবং মেলার ঐতিহ্য আজকে আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব।

image.png

IMG20220501140152.jpg

image.png

IMG20220501140157.jpgIMG20220501140146.jpg

image.png

প্রত্যেক রবিবার করে বিরাটের মেলা সম্পন্ন হয়ে থাকে। ঈদের পরে গতকাল রবিবার ছিল।আমি, আমার ছোট ভাই এবং এলাকার কিছু ছেলেপেলে সহ তিনটি বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম বিরাটের মেলায় ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে। আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম এই মেলার ঘটনা নিয়ে লেখা কনটেন্ট প্রতিযোগিতার টপিক হিসেবে রাখব। ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে বাবার সাইকেলে চড়ে এই মেলায় অনেকবার গিয়েছি। তখন অবশ্য এত কিছু বুঝতাম না। মেলায় অনেক বড় বড় মিষ্টি পাওয়া যেত। সেই মিষ্টি গুলো খেয়ে, নাগর দোলায় চড়ে চলে আসতাম। মেলায় গিয়ে বড় বড় মিষ্টির দোকানের মিষ্টিগুলো দেখে শৈশবের স্মৃতি গুলো মনে পরতে লাগলো। আমাদের জন্মের আগে থেকেই মেলা হয়ে আসছিল। আগে যেমন ধুমধাম এবং উৎসবমুখর পরিবেশে এই মেলা সম্পন্ন হতো এখন অবশ্য এই মেলার আমেজ ততটা নেই।

image.png

IMG20220501141150.jpgIMG20220501141130.jpg

image.png

IMG20220501141010.jpgIMG20220501141005.jpg

image.png

মিষ্টির দোকান সহ বাহিরের যাবতীয় সকল কিছু বাইক নিয়ে ঘুরাঘুরি করে পর্যবেক্ষণ করলাম। কিন্তু মেলার মেইন অংশ যে জায়গায় সম্পন্ন হয় সেখানে এতটা ভিড় ছিল যে,সেখানে বাইক নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না।এজন্য বাইকগুলো চেনা একটি দোকানের সামনে রেখে হেঁটে হেঁটে ভ্রমণ করা শুরু করলাম। রাস্তার পাশে নানান ধরনের দোকান দেখতে পেলাম। ছোট বাচ্চাদের খেলনা, রান্নাঘরের ব্যবহার্য সরঞ্জামাদি মাটির হাড়ি-পাতিল, লোহার দা-বটি-চাকু, বিভিন্ন কসমেটিক সামগ্রী, মুখরোচক বিভিন্ন আচার এবং টক ফলের দোকান এসব দেখতে দেখতে সামনের দিকে এগোতে লাগলাম।

image.png

IMG20220501141245.jpg

image.png

IMG20220501142006.jpgIMG20220501142004.jpg

image.png

হেঁটে যেতে যেতে চলে গেলাম পূজার স্থানে। কী পূজা এখানে সম্পন্ন হচ্ছে, তা অবশ্য আমার জানা ছিল না। সেখানে এত বেশি লোকজন ছিল,যার ফলে সামনের দিকে পা বাড়ানো যাচ্ছিল না। দূরে থেকে ফোন ক্যামেরা উপরের দিকে উঠিয়ে নিয়ে বেশ কয়েকটা ছবি ক্যামেরাবন্দি করে নিলাম। হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকজনরা নাচ-গান করে এবং ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বেশ উৎসবের সঙ্গে পূজাটা সম্পন্ন করছিল। সেখানকার আশেপাশে দূরে থেকে আসা কিছু কিছু হিন্দু মহিলারা চুলায় মাটির পাতিলে করে রান্না করছিল। ভাত এবং করলা সেদ্ধ রান্না করা হচ্ছিল মাটির পাতিলে করে। এই করোলা সেদ্ধ পরবর্তীতে ভর্তা করে গরম ভাতের সঙ্গে খাওয়া হয়।"গরম ভাতের সঙ্গে করলা ভর্তা খাওয়া" নাকি এই মেলার একটি ঐতিহ্য। অর্থাৎ দূর-দূরান্ত থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকজনরা এসে পূজা সম্পন্ন করেন,অতঃপর কলার পাতায় করে করলা ভর্তা এবং গরম ভাত খেয়ে থাকেন।রান্না করার মুহূর্তেও বেশ কয়েকটি ছবি উঠিয়ে নিলাম।

image.png

IMG20220501141505.jpgIMG20220501141428.jpg

image.png

IMG20220501141425.jpgIMG20220501141430.jpg

image.png

IMG20220501141844.jpgIMG20220501141510.jpg

image.png

মেলায় ঘোরাঘুরি এর পর্ব শেষ করার পর বাইক নিয়ে আবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। মেলায় ঘোরাঘুরি করে বেশ ভালো একটা মুহূর্ত কাটিয়েছি। আশা করি আমার শেয়ার করা এই ভ্রমণ উৎসবটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।

image.png

IMG20220501141414.jpg

image.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

প্রথমেই আপনাকে ধন্যবাদ জানায় চলমান প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য যদিও আমি এখন পর্যন্ত চলমান প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেনি তবে খুব শীঘ্রই আমি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করব। আপনার এই ভ্রমণকাহিনী দেখেই বোঝা যাচ্ছে খুবই সুন্দর একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন ।ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

বিরাটের মেলায় আনন্দ উপভোগ এবং আপনার শৈশবের স্মৃতি সব মিলিয়ে অসাধারণ ছিল। আপনার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনার সেরা গল্প নিয়ে আমাদের মাঝে হাজির হওয়ার জন্য। খুবই ভালো লেগেছে এবং বন্ধুদের নিয়ে খুবই আনন্দ ঘন মুহূর্তে কাটিয়েছেন। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

অসাধারন ভ্রমণকাহিনী।। মাটির পটগুলো কত সুন্দর দেখাচ্ছে। ইচ্ছে করছে আমিও ঘুরে আসি। আমিও একজন ভ্রমণপিপাসু। ছোটবেলায় কতই না বায়না ধরতাম পুতুল কিনে দেয়ার জন্য। শুভকামনা।।

আপনার পোস্ট পড়ে মনে হল একে একে ঐতিহাসিক মেলা। আপনি খুব সুন্দর ভাবে মেলা সম্পর্কে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। মেলানিয়ে আমাদের মাঝে সাবারিয়া কৌতুহল থাকে ছোটবেলায় আমিও বাবার সাথে বিভিন্ন ধরনের মেলায় গিয়েছিলাম কিন্তু যতই বড় হয়েছে সে আগ্রহ কমে গিয়েছে। আপনি এখনো মেলা যাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছেন এবং আমাদের মানুষের প্রতিটি ধাপ সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন। মেলাতে বিভিন্ন অঞ্চলের মাটির তৈরি জিনিসপত্র দেখলাম এছাড়াও বড় বড় মিষ্টি আমি কখনো দেখিনি। যাইহোক আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতায় আপনার অংশগ্রহণের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল।

মেলার যে নামটা সেটা কিন্তু বেশ ভালই লাগছে। বিরাটের মেলা আর এইখানেতে মাটির পাত্র গুলো রয়েছে এগুলো আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। এই মাটির পাত্রে রান্না করে খেতেও অনেক বেশি ভালো লাগে আর রান্না বেশি সুস্বাদু হয়। খুব ভাল লেগেছে আপনার এই ভ্রমণ কাহিনী পড়ে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এই মুহূর্তগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

দেখে মনে হচ্ছে মেলার আয়োজন বেশ বড় সড় ছিল। এরকম মেলায় ঘোরাঘুরি করতে আমার কাছে খুব ভালো লাগে ভাইয়া। মেলায় তৈরি মাটির জিনিসপত্র আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। এই মেলায় বিভিন্ন ধরনের জিনিস উঠেছে। আমার তো ইচ্ছে করছে নিজে গিয়ে ঘোরাঘুরি করে আসি। আপনাকে ধন্যবাদ ভাই আপনার ভ্রমণ কাহিনী টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।

যেমন মেলার নাম তেমনি, বিরাট বিরাট মিষ্টি। আমি তো এত বড় বড় মিষ্টি দেখে অবাক হয়ে গেলাম। কত বড় মিষ্টি কখনো দেখা হয়নি, এমনকি খাওয়াও হয়নি। এই মেলা দেখতে অনেক সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করলেন। আপনার সাথে সাথে আমিও উপভোগ করতে পারলাম। অনেক ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

ঈদকে কেন্দ্র করে দেখছি বেশ ভালো ঘোরাঘুরি করলেন। আসলে এই কর্মব‍্যস্ত জীবনে উৎসব ছাড়া সেরকম ঘোরাঘুরির সময় পাওয়াই যায় না। মেলায় দারুণ সময় কাটিয়েছেন। মেলার ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর ছিল। বিশেষ করে মিষ্টির ফটোগ্রাফি টা আমার কাছে চমৎকার লেগেছে। অনেক সুন্দর গুছিয়ে লিখেছেন। যাইহোক ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে আপনার ভ্রমণ কাহিনী টা শেয়ার করে নেওয়ার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা।।

বিরাটের মেলায় দারুন মুহুর্ত ও সুন্দর পরিবেশ উপভোগ করলেন। অনেকদিন হলো এরকম মেলায় গিয়ে এরকম মুহূর্ত উপভোগ করা হয়না। মেলার দৃশ্য পটভূমির সুন্দর কিছু দৃশ্য আমাদের মাঝে তুলে ধরলেন। বিশেষ করে মাটির হাড়ি পাতিল এবং লোকসংস্কৃতির বিষয়টি আমাকে মুগ্ধ করেছে। সুন্দর উপস্থাপনার মাধ্যমে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।

বাহ মেলার নামটি বেশ উদ্ভুদ তো।তবে মেলাটির নামের সাথে মিল আছে😁।আর অনেকদিন পর কলার পাতায় খাওয়ার দৃশ্য দেখে ভালই লাগলো।খুব সুন্দর ছিল ভাই আপনার উপস্থাপনা।🖤

আপনার এত সুন্দর পোস্ট পড়ে পূর্বের দিনে ফিরে গেলাম ভাই। যাই হোক ঈদ উপলক্ষে আপনারা যে ভ্রমণ করেছেন এবং আমার বাংলা ব্লগের এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন এ সমস্ত কিছু দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। তাই ধন্যবাদ জানাই।

সুন্দর এক মেলা তো। মিস্টির সাইজ দেখে আমি শিহরিত ভাই। খুব উপভোগ করেছেন । মেলা দেখতে খুব ভালো লাগে আমার। সব সময় উপভোগ করি মেলায় গেলে। শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য।

মেলা সবসময় আনন্দদায়ক এবং চমকপ্রদ হয়ে থাকে আপনার মেলা উপভোগ করার মুহূর্ত গুলো দেখে সত্যিই অনেক ভাল লাগছিল । বিশেষ করে , বিভিন্ন রকমের নিত্যনতুন জিনিস এবং খাবার-দাবার গুলো আমার নজর কেড়েছে। আপনার অভিজ্ঞতাগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার ফলে আমরা আপনার এই অভিজ্ঞতা থেকে সামান্য কিছু অভিজ্ঞতা হলেও উপভোগ করতে পারলাম এবং এগুলো নিজের জীবনে আশা করি উপলব্ধি করতে পারব ।