ষোড়শ শতাব্দীতে তারা সুলতান সোলেমান দ্য ম্যাগনিফিসেন্টের লাশকে অসম্মান করে
এবং উপযুক্ত অর্থ উপঢৌকন প্রদান করা নাগাদ তারা দ্বিতীয় সেলিমকে সিহ বসতে দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
১৫৭১ সালে লিপান্টোর যুদ্ধে স্পেনের রাজা দ্বিতীয় ফিলিপের নেতৃত্বে একটি খ্রিস্টান ক্যাথলিক জোট অটোমান নৌবাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়। এ নৌবিপর্যয় ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের অজেয় ভাবমূর্তির প্রতি গুরুতর আঘাত। অস্ট্রিয়ার জনের নেতৃত্বে স্পেনীয় ও ভেনিসীয়রা দ্বিতীয় সেলিমের প্রায় গোটা নৌবহর বিধ্বস্ত করে। অটোমান নৌবাহিনী দ্রুত মাথা তুলে দাঁড়ায় এবং ১৫৭৩ সালে ভেনিসকে একটি শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষরদানে বাধ্য করে। ১৬৩৮ সালে পারস্যের বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়ে চতুর্থ মুরাদ সাময়িকভাবে তুর্কি সামরিক বাহিনীর মর্যাদা পুনরুদ্ধার করেন। ভেনিসের কাছ থেকে ক্রীট দ্বীপ কেড়ে নেয়া হয় এবং ১৬৮৩ সালে উজিরে আজম কারা মোস্তফার নেতৃত্বে একটি বিশাল তুর্কি বাহিনী ভিয়েনা অবরোধ করে পোল্যান্ডের তৃতীয় জন ভিয়েনাকে অবরোধমুক্ত করেন। লোরেনের পঞ্চম চার্লস, বাডেনের লুই এবং স্যাভয়ের ইউজিন অভিযান চালালে ১৬৯৯ সালে হাঙ্গেরী এবং আরো কয়েকটি ভূখণ্ড তুরস্কের হাতছাড়া হয়ে যায়। অষ্টাদশ শতাব্দীতে রুশ-তুর্কি যুদ্ধের পরিণামে অটোমান সাম্রাজ্যের ভাঙ্গন ত্বরান্বিত হয়।
নেপোলিয়নের সৈন্যবাহিনী সাময়িকভাবে মিসর দখল করে নেয়। ১৭১৬-১৮ সালে অস্ট্রো-তুর্কি যুদ্ধের পর পাসরোভিচ চুক্তিতে অস্ট্রিয়ার কাছে বানাত, সার্বিয়া ও লিটল ওয়ালাচিয়া (ওলটেনিয়া) ছেড়ে দিতে হয়। চুক্তিতে এ সত্য ফাঁস হয়ে যায় যে, অটোমান সাম্রাজ্য আত্মরক্ষামূলক কৌশল গ্রহণ করেছে এবং ইউরোপে অধিক অগ্রযাত্রায় আগ্রহী নয়। শক্তিশালী অটোমান সাম্রাজ্য কৃষ্ণসাগর ও
ভূমধ্যসাগরে উষ্ণ পানির বন্দরগুলো জারশাসিত রাশিয়াকে ব্যবহারের সুযোগ দেয়নি। শতাব্দীর পর শতাব্দী অটোমানরা ছিল রাশিয়ার একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বৈদেশিক শত্রু। সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দীতে অটোমান সুলতান ও রাশিয়ার জারগণ একে অন্যের বিরুদ্ধে বিরামহীন লড়াই করেন। ১৭৩৯ সালে বেলগ্রেড চুক্তির মধ্য দিয়ে অস্ট্রো-রুশ- তুর্কি যুদ্ধের অবসান ঘটে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী অটোমান সাম্রাজ্য সার্বিয়া ও ওলটেনিয়া ফিরে পায়। তবে তাকে রাশিয়ার কাছে ক্রিমিয়া উপদ্বীপের উত্তরে ডোন নদীর অ্যাজোভ বন্দর হারাতে হয়। প্রুশিয়ার উত্থান রোধে অস্ট্রিয়া ও রাশিয়া ব্যস্ত হয়ে পড়ায় অটোমান সাম্রাজ্য কিছুটা স্বস্তি পায় ।