আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা-৬৯ || ফটোগ্রাফি - ফসলের মাঠে কৃষকের হাসি।

in hive-129948 •  14 days ago 

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন আমার প্রিয় সহযাত্রী ভাই বোনেরা? আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের সবার দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। আশা করি সবার দিনটা ভাল কেটেছে। আজকে আপনাদের সবার মাঝে আমার আরও একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। তবে আজ আমি ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করার জন্য আমার সংগ্রহ করা অতি সামান্য কিছু ফটোগ্রাফির পোস্ট নিয়ে আপনাদের সবার মাঝে হাজির হয়েছি। এ মাসের ৪ তারিখে আমি যশোর বেড়াতে গিয়েছিলাম। দীর্ঘ ১৫ দিন থাকার পর ঢাকায় ফিরে আসার পর প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়েছি। যেমন ঠান্ডা ও সাথে প্রচন্ড কাশি কিছুতে থামছে না। কিছুদিন আগে হ্যাংআউটে শুনেছিলাম কৃষকের মাঠে ফসলের হাসির ফটোগ্রাফি পোস্ট প্রতিযোগিতা দিয়েছে। আর প্রতিযোগিতাগুলো আমাকে ভীষণ আকৃষ্ট করে।

যদিও সবগুলো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারি না। মাঝে মাঝে কোন একটায় অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করি। আর এর মধ্যে ফটোগ্রাফি পোস্ট করতে আমার বেশি ভালো লাগে। তাই তো যখনই ফটোগ্রাফির কোন প্রতিযোগিতার কথা শুনি তখনই কোন না কোন ভাবে অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করি। আর তাই এবারও আমার ফটোগ্রাফির অ্যালবাম থেকে কিছু ফটোগ্রাফি নিয়ে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে চলে এলাম। তবে জানতাম না যে যশোর থেকে আসার পরেই ফসলের মাঠের ফটোগ্রাফির প্রতিযোগিতা আয়োজনের কথা শুনতে পাবো। যদি আগে জানতে পেতাম তাহলে হয়তো আরো ভালো করে কিছু ফটোগ্রাফি করে নিতাম। আমি যশোর যাওয়ার পর যা আমার চোখে পড়েছে তাই আমি ফটোগ্রাফি করেছি। আজ সেই ফটোগ্রাফি থেকে আপনাদের মাঝে ফটোগ্রাফি পোস্ট নিয়ে এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে চলে এলাম। আশা করবো আমার এই ফটোগ্রাফি গুলো আপনাদের ভালো লাগবে।


image.png

📸 ফটোগ্রাফি- ১:

আসলে শীত প্রায় শেষের দিকে। তারপরও যশোর যখন গিয়েছিলাম তখন অনেক শীত ছিল। আর এই শীতের সকালে সূর্যি মামা উঁকি দেয়ার আগেই যশোর জেলার গাছিরা গাছ থেকে রসের হাড়ি নামাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আর রস নিয়ে কিছু রস বাজারে নিয়ে যায় বিক্রি করার জন্য । আর কিছু রস বাড়িতে নিয়ে যায় গুড় তৈরি করার জন্য। আসলে কুয়াশা ঘেরা সকালে গাছিদের গাছে হাড়িভরা রস নামাতে চমৎকার মনমুগ্ধকর দৃশ্য আমার মনে হয় গ্রামীণ বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর আর কোথাও হয়তো দেখাই যায় না। আর এই দৃশ্যগুলো যেন প্রত্যেক মানুষের কে মনে করিয়ে দেয় এ যেন এক রং তুলি দিয়ে আঁকা কোন শিল্পীর এক মনোরম পেইন্টিংয়ের কথা। কতদিন কল্পনা করেছি নিজের চোখে এই ধরনের দৃশ্য দেখব এবার যখন অনেক কাছ থেকে এ দৃশ্যগুলো দেখতে পেলাম তখন নিজের মনকে মানাতে পারছিলাম না। মানুষ মানেই আবেগি আমিও এই প্রকৃতি ও দৃশ্য গুলো দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম। কখনো ভাবি নি এমন চমৎকার কিছু মুহূর্ত আমার জীবনে আসবে। আসলে শীতের সকালে গাছ থেকে যেমন কাঁচা রসের স্বাদ বর্ণনা করা সম্ভব নয়, তেমনি জাল করা রসের তৈরি করা বিভিন্ন পিঠাপুলি স্বাদ বর্ণনা করা সম্ভব নয়। শীতের কুয়াশায় কাঁপতে কাঁপতে সকাল বেলা বিভিন্ন পায়েস ও পিঠাপুলি খাওয়ার মজাই অন্যরকম।

IMG_20250210_163501 (2).jpg

IMG_20250210_163456 (1).jpg

📸 ফটোগ্রাফি- ২:

এবার যে ফটোগ্রাফি দেখছেন তা হলো কৃষকের বাড়ীত ‍গুড় বানানোর ‍দৃশ্য। কৃষক বেশ যত্ন সহকারে গুড় জাল দিয়ে থাকে। আমাদের দেশে এসব অঞ্চলে প্রতি বছর অনেক পরিমান গুড় উৎপাদন করা হয়। যা থেকে এসব এলাকার কৃষকেরা বেশ টাকাও আয় করতে পারে। তবে এসব গুড় কিন্তু ঢাকার বাজারে আবার দাম অনেক বেশী। তাই তো চেষ্টা করলাম গুড় বানানোর কিছু দৃশ্য আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

image.png

image.png

image.png

📸 ফটোগ্রাফি- ৩ :

এই রস বাংলাদেশে কৃষি কাজের মাধ্যমে আয়ের ক্ষেত্রে এক অন্যান্য ভূমিকা পালন করছে। নাটোর রাজশাহী আরো অন্যান্য দেশের দিক দিয়ে যশোর ও কিন্তু খেজুরের রস উৎপাদনে এক অন্যতম ভূমিকা পালন করছে। খেজুরের রস যেমন সবার কাছে অনেক প্রিয় তার পাশাপাশি খেজুরের রস থেকে যে গুড় উৎপন্ন করা হয় তাও কিন্তু সবার কাছে অনেক পছন্দের আসলে এখন অরিজিনাল গুড় বা রস এমন একটা পাওয়া যায় না। কারণ এখন এই কাজগুলো অনেক কঠিন হয়ে গেছে। আগে যেমন এই কাজগুলো অনেক প্রচলন ছিল। গাছে উঠে রস সংগ্রহ করা অনেক কষ্ট । আর তার থেকে গুড় উৎপাদন করাও অনেক কষ্ট। আমাদের দেশে এই রস থেকে অনেক মজার গুড় তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশে ঝোলা গুড় ও পাটালি গুড় থেকেও অনেক টাকা আয় হচ্ছে।

image.png

image.png

image.png

📸 ফটোগ্রাফি- ৪ :

এবার গ্রাম বাংলার আরও কিছু অসাধারণ ফটোগ্রাফি নিয়ে আপনাদের মাঝে আমি হাজির হয়েছি। আর তা হল কৃষকের জন্য মাঠে খাবার নিয়ে যাওয়ার চমৎকার দৃশ্য। এই দৃশ্যগুলো যে কখনও এভাবে দেখতে পাবো ভাবিনি। এটি হচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। মাঠের ক্ষেতে কৃষকের বধু গামছা বেঁধে খাবার নিয়ে যায়। আর কৃষকের বধু হচ্ছে আমার খালাতো ভাইয়ের বউ আমার ভাবি। ভাবি যখন খাবার নিয়ে যাচ্ছিল আমাদের সাথে নিয়ে গিয়েছে ফসলের মাঠ দেখে আসার জন্য। তখন আমরাও তার সাথে যাচ্ছিলাম। সেই বাসা থেকে মাঠ বহুদূর এত দূরে প্রতিদিন রোদের মধ্যে খাবার নিয়ে যেতে হয় । কতই না পরিশ্রম করে তারা। যেমন পরিশ্রম করে সংসারে তেমন পরিশ্রম করে ফসলে। আর দেখতে পেলাম একটি গৃহস্থ বাড়ির কাম অনেক। তাহলে এত কাম কিভাবে করে সেটাই তাদের দেখে আমি ভীষণ অবাক হয়ে গিয়েছি। আর মনে মনে ভাবছি আমরা একটা কাজ করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ি। আসলে গ্রাম বাংলা নারীরা এক একজন অনেক পরিশ্রমী। যাকে বলা হয় বাংলার আইডল নারী। আমি যশোরে গিয়ে দেখতে পেলাম পুরুষদের পাশাপাশি বাড়ির মহিলারাও অনেক পরিশ্রম করতে পারে।

IMG-20250225-WA0066.jpg

IMG-20250224-WA0006.jpg

IMG-20250224-WA0002.jpg

IMG-20250224-WA0001.jpg

📸 ফটোগ্রাফি-৫ :

এবার আরও একটি গ্রাম বাংলার চমৎকার ফটোগ্রাফি নিয়ে আপনাদের মাঝে আমি হাজির হয়েছি। এটি হচ্ছে গ্রাম বাংলার এক ঐতিহ্য খর এর ফটোগ্রাফি। এগুলো ধান বা লতাপাতার শুকনো অংশ থেকে খড় উৎপাদিত হয়। কৃষকরা সাধারণত ধান বা লতাজাতীয় খাদ্যশস্য মাড়াই করার পর অবশিষ্ট ঐচ্ছিক অংশ শুকিয়ে সংরক্ষণ করে রাখে।আর এগুলো শুকনো তৃণবিশেষ বা খড় হিসেবে পরিচিত। খড় গ্রামগঞ্জের প্রতিটা কৃষকের বাড়িতে স্তুপাকারে রাখা হয়। বাংলাদেশের সকল কৃষক বিভিন্ন ফসল ফলানোর পাশাপাশি পশু পালনও করে থাকেন তাই তারা পশুর খাদ্য হিসেবে এগুলো ব্যবহার করেন। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে এগুলো বিক্রি করে থাকেন। যা থেকে তাদের একটি অংশ আয় হয়ে থাকে। গ্রামের ফসলের মাঠের ফটোগ্রাফি করব আর ফসলের এই অংশটি ফটোগ্রাফি করবো না তা কি হয়। তবে আমি চেয়েছিলাম আরো ভালো করে কিছু ফটোগ্রাফি করার জন্য। কিন্তু মনটি ভালো ছিল না কারণ খালা প্রতিনিয়ত অসুস্থ হয়ে যাচ্ছিলো। তবে এই ফটোগ্রাফি টা কিন্তু আমার কাছে বেশ লেগেছে। আরো ভালো লেগেছে আমরা দু বোন যখন একসাথে এই চমৎকার দৃশ্যের ফটোগ্রাফি গুলো করতে পেরেছি। আমার আপুও একদিনের জন্য খালাকে দেখার জন্য যশোর গিয়েছিল। তখন দুই বোন একসাথে এই ফটোগ্রাফিটি করতে পেরেছি।

IMG-20250225-WA0020.jpg

📸 ফটোগ্রাফি- ৬ :

এবার যে ফটোগ্রাফি দেখতে পাচ্ছেন এই ফটোগ্রাফি হল ফসলের মাঠের ফটোগ্রাফি। আর মাঠের মধ্যে যেগুলো জায়গায় জায়গায় থুপ করে রেখেছে দেখছেন এগুলো হচ্ছে মটরশুটি গাছের শুকনো ডালপালা। এখন যশোরের সবগুলো মাঠে ধানের চাষ চলছে। এই খালি মাঠগুলোতে মটরশুটি তুলে ধান রোপন করা হবে। এর আগে এখানে মটরশুটি লাগানো ছিল। তাই মটরশুটি শেষে হয়ে যাওয়ার পর মটর গাছগুলো সব তুলে নেয়া হয়েছে। আর শুকনো মোটরগুলোর মধ্যে দেখলাম অনেক মটরশুটি রয়েছে। আসলে আমাদের সমাজে এমন ও আশেপাশে যারা উচ্চ শ্রেণীর লোক রয়েছে তাদেরকে দেখা যায় কৃষকদের অনেক নিন্দায় । তাদের দেখলে দূরে সরে যায়। কিন্তু এটা কি একবারও ভেবে দেখেছে আজ তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আমরা খেয়ে বেঁচে আছি। তাই আমাদের অবশ্যই কৃষকদের মূল্যায়ন করতে হবে। তাদের প্রাপ্য সম্মান করতে হবে।

IMG-20250224-WA0003.jpg

IMG-20250224-WA0004.jpg

IMG-20250225-WA0065.jpg

📸 ফটোগ্রাফি- ৭ :

একজন কৃষক তিনি তার কৃষি পেশায় নিয়োজিত থেকে এদেশের জন্য ফসল উৎপাদন করেন। একজন কৃষক শুধু ফসল উৎপাদনীই করেন না। ফসলের পাশাপাশি গৃহপালিত প্রাণী ও লালন-পালন করেন। প্রতিটা কৃষক এ পেশায় নিয়োজিতের মাধ্যমে প্রতিটি মানুষের জন্য খাদ্য সরবরাহ করে প্রতিটা মানুষের জীবনকে চলতে সাহায্য করে। আসলে কৃষকের মুখের হাসি শুধু ফসলেই হয় না। গরু ছাগল হাঁস মুরগি পালনেও কিন্তু তাদের মুখে অনেক সময় হাসি ফুটে উঠে। তাই আমার খালাতো ভাইদেরকে যখন দেখছি দিনের বেলায় ফসল ফলিয়ে পাশাপাশি গরু-ছাগলের চাষ করছে ,আর সেগুলো বিক্রির মাধ্যমে তাদের মুখে হাসি তুলে ধরছে। দেখলাম একটি গরু এক লাখ এক লক্ষ ষাট হাজার টাকা বিক্রি করেছে। আর সেই গরু বিক্রি করতে পেরে আমার ভাইয়ের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।

IMG-20250225-WA0069.jpg

IMG-20250225-WA0074.jpg

📸 ফটোগ্রাফি-৮ :

গ্রামবাংলায় প্রতিটি ঘরে গেলেই দেখা যায় যে ঘরে ঘরে ধান সংরক্ষনের জন্য বিশাল আকৃতির একটি ঘর তৈরি করা হয়। যেখানে সারা বছরের ধান গুলো সংরক্ষন করা থাকে। কারন একজন ‍কৃষক তার সারা বছরের খাওয়ার মত ধান রেখেই বাকীটা বিক্রি করে দেয়। তবে এত কষ্টের পর কি একজন কৃষক তার ন্যায্য পাওয়না পায়? যাই হোক কৃষকের বাড়ীতে বানানো মানে আমার খালাদের বাড়ীতে বানানো এই দৃ্শ্যটি কিন্তু আমার কাছে দারুন লেগেছে।

IMG-20250225-WA0062.jpg

📸 ফটোগ্রাফি- ৯:

আপনারা এখন যে ফটোগ্রাফিটি দেখছেন এটি হচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম একটি কৃষি প্রধান ফসল। আর তা হল ধানের চারা। সকালে ঘুম থেকে যখন উঠে খালাদের ফসলের ক্ষেতে হাঁটতে গিয়েছিলাম তখন এই দৃশ্যগুলো দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছি। আরে ফটোগ্রাফি গুলো দেখে এতই মুগ্ধ হয়ে গেছি যে আপনাদের মাঝে শেয়ার করব বলে ফটোগ্রাফি করে নিলাম। সকালে যখন প্রথম সূর্য উঠছে তখন সূর্যের কিরণে ধান ক্ষেতের চারিদিক আলোকিত করে আলোয় আলোয় ভরিয়ে ধানক্ষেতের সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি করে তুলেছে। সেই সূর্যের ☀️ আলোর কিরণ ধানের চারার মাঝে যখন পড়েছে তখন তখন দুটি সূর্য যেন স্পর্শ হয়ে আলোটিকে আরো ঝলমল করে চারিদিক আকর্ষণ করে তুলেছে আর এই দৃশ্যটি অপূর্ব লাগছিল আর এত সুন্দর দৃশ্যটি ফটোগ্রাফি না করার লোভ সামলাতে পারছিলাম না আশা করছি আপনাদের হৃদয়ও আমার এই ফটোগ্রাফি কিছুটা হলেও দোলা দেবে।

IMG-20250224-WA0023.jpg

IMG-20250225-WA0011.jpg

image.png

📸 ফটোগ্রাফি- ১০ :

আজ আপনাদের নিয়ে আমি হারিয়ে যাব দূর দূরান্তে সবুজে ঘেরা ধানক্ষেতের ফসলের মাঠে। আমি যেমন যশোরে গিয়ে এই চমৎকার সুজলা সুফলা পুষ্পে ভরা বাংলাদেশের যশোরে যশোর অঞ্চলের ধানের ফসলের মাঝে হারিয়ে গিয়েছিলাম আজ আপনাদের মনকেও আমি হারিয়ে নিয়ে যাব এই মন মুগ্ধকর সবুজে ভরা ধানের ফসল ফলানো সবুজ প্রকৃতির মাঝে। যশোরে এই সবুজে ধান খেত গুলো দেখে আমার প্রিয় একটি দেশাত্মবোধক গান ভীষণ মনে পড়ছিল এই গানটির মধ্যে এ দেশকে নিয়ে সত্যি কথা তুলে ধরেছে ধনে ধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা তাহার মাঝে আছে যে এক সকল দেশের সেরা। ও সে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সেজে স্মৃতি দিয়ে ঘেরা এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি সকল দেশের রানী সেজে আমার জন্মভূমি। কবি এখানে ঠিক কথাই বলেছে আমাদের এই বাংলাদেশের মত সুন্দর মন জুড়ানো দেশ আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাইতো সব সময় আমার বলতে মনে চায় যতবার জন্মাবো যেন এই ভরে পাখির গান শীতের কুয়াশা ঘেরা প্রকৃতি সবুজে শ্যামলের ফসলের বোনা বাংলার মাঝে জন্মগ্রহণ করি।এই গানটির মাঝে আমাদের বাংলাদেশের প্রকৃতিকে শ্রদ্ধেয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেন তার হৃদয় দিয়ে আরও সুন্দর করে তুলে ধরেছেন যশোরে যেখানে বেড়াতে গিয়েছি শুধু দেখেছি সবুজ ধান ক্ষেত আর ধান ক্ষেত দেখে যেন মনটা জুড়িয়ে যায় আর সবুজ ধান ক্ষেতের মাঝে রাস্তাগুলো যেন সবুজ ধান খেতের ফসলের ও গ্রামের প্রকৃতির সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে তোলে।

IMG-20250226-WA0012.jpg

IMG-20250225-WA0022.jpg

📸 ফটোগ্রাফি- ১১ :

যশোর উপজেলায় কৃষিকাজের কৃষকদের খুব আপনজন হয়ে গেছে আমার খালাতো ভাইরা। তারা তারা তাদের কৃষিকাজের পাশাপাশি তাদের এলাকার তৃণমূলে কৃষকের পাশে থেকে সব সময় সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেন। তারা তাদের জমির পাশাপাশি অন্যান্য জমির ফসলের সেচের পানি সরবরাহ করে অনেক কৃষকদের সেবা দিচ্ছেন। তারা তাদের আশেপাশের সকল কৃষকদের সহযোগিতা করছেন ।আসলে আমি যখনই মাঠে গিয়েছি তখনই কোন মাঠে কোন কৃষকের দেখা পায়নি তবে কৃষকের ছোট্ট মেয়েটি আমাকে ফসলের মাছ ঘুরিয়ে দেখিয়েছে আর এই মেয়েটি হচ্ছে আমার ভাইয়ের মেয়ে ওর মাত্র চার বছর কিন্তু ওর কথা শুনে মনে হবে যেন ও একজন পাকনা বয়স্ক বুড়ি আমাকে এত বড় ফসলের মাঠ পথ চিনিয়ে চিনি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সকল ফসলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে সব ফসলের মাঠ ঘোরাচ্ছিল। আমি সকালে শীতের শিশির ভেজা ধানের ক্ষেতের আইলের উপর দিয়ে হাঁটতে পারছিলাম না আর ও দেখেন কত সুন্দর করে হেঁটে হেঁটে চলে যাচ্ছে। শীতের ঝিরিঝিরি কুয়াশায় শিশির ভেজা ফসলের মাঠের উপর দিয়ে ওর হেঁটে যাওয়ার দৃশ্যটি আমার কাছে অসম্ভব সুন্দর লাগছিল। তাই একটি ফটোগ্রাফি করে রেখেছিলাম আর ভাবলাম এই ফটোগ্রাফিটিও আপনাদের মাঝে শেয়ার করি।

IMG-20250225-WA0008.jpg

IMG_20250208_070606.jpg

IMG_20250208_070453.jpg

📸 ফটোগ্রাফি- ১২ :

এবার আপনাদের মাঝে ধান ক্ষেতের পাশাপাশি ধান ক্ষেতের ফসলের মাঝে আরো একটি ফসল ভুট্টা চাষের একটি ফটোগ্রাফি নিয়ে এসেছি। ভুট্টা এক প্রকার খাদ্যশস্য। ভুট্টার অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। যশোরে দেখতে পেলাম প্রতিটি কৃষক কোন অংশ থেকে কোন অংশে কম নয় এক একটি কৃষক যেন বাংলার আইডল। আর আমি বলব যশোরের কৃষক তারাও প্রচুর পরিশ্রম করতে পারে। একটি নয় দুটি নয় প্রায় অনেকগুলো ফসলে নিয়ে তারা কৃষি কাজ করে থাকে। ধান ও অন্যান্য আবাদি ফসলের পাশাপাশি দেখতে পেলাম ভুট্টা চাষ ও তারা করছে। আমার খালাতো ভাইদেরকেও দেখলাম ধান বিভিন্ন সবজি পাশাপাশি ভুট্টা ও হাঁস-মুরগি গরু সবকিছুই করছে। যশোরের প্রকৃতির মাঝে ফসলের মাঠে যখন ফটোগ্রাফি করতে গিয়েছিলাম তখন দূর থেকে এতই সুন্দর লাগছিল যে দূর থেকে আমি কিছু ফটোগ্রাফি করে নিয়েছি কিন্তু আমি ভুট্টা গাছগুলো দেখে আমি চিনতে পারছিলাম না। কারণ আমি তো ফুটতে কাজ কখনো দেখিনি পরে আমার খালাতো ভাইয়ের মেয়ে আমাকে বলেছে এটা ভুট্টা গাছ। আসলে এই গ্রামে প্রকৃতির মাঝে গিয়ে আমার অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে অনেক অদেখা ও অচেনা জিনিসগুলো দেখতেও চিনতে পেরেছি।

IMG-20250226-WA0011.jpg

IMG-20250226-WA0010.jpg

📸 ফটোগ্রাফি- ১৩ :

এবার আমি একটি সুন্দর ফটোগ্রাফি নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি এই ফটোগ্রাফি টা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। ফসলের গুলোতে যে ধান ও বিভিন্ন সবজি চাষ করে তা কিন্তু নয় এখানে কিন্তু আবাদি গরু ছাগলের জন্য খাবারও চাষ করা হয়। এই ঘাস গুলো কি আমি চিনি না ও আমাকে বলছিল এগুলো তুলে দিতে এগুলো নাকি খাবে কিন্তু কে খাবে সেটা বুঝতে পারিনি আমি মনে করেছি এগুলো হয়তো কোন ভাবে রান্না করে খাওয়া যায়। আর আমাকে বলছিল অনেকগুলো তুলে দিতে। এখন এই কুয়াশা শিশিরে ভেজা কাদা কাদা মাঠে কিভাবে কিভাবে তুলে দিব কিন্তু ও নাছো র বান্দা কথা শুনছিল না আর ওকে ছাড়া তো আমি বাসায়ও চিনব না তাই কি আর করার ওকে কতগুলো ফুল তুলে দিলাম। ও এতোটুকু বাচ্চা এতটুকু হাতে আমার থেকেও বেশি তুলে নিল আর সুন্দর করে ফুলগুলো গুছিয়ে নিল দেখেন এতটুকু কচি হাতে কিভাবে কতগুলো ফুল এক হাতে ধরে রেখেছে আমি তো দেখে পুরোটাই অবাক হয়ে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে ছিলাম ওর দিকে।

IMG_20250208_073829.jpg

IMG_20250208_074101.jpg

IMG_20250208_073718.jpg

📸 ফটোগ্রাফি- ১৪:

যে ফটোগ্রাফিটি দেখতে পাচ্ছেন। এটি হলো বাংলাদেশ একটি অন্যতম শীতকালীন সবজি পাতাকপি। ফসলের মাঠের ফটোগ্রাফি। আসলে আমি এত আপূর্ব দৃশ্য ও প্রকৃতি সামনাসামনি দেখতে পাবো কখনো ভাবি নি। মনে হচ্ছে যেন আমি এখনো অপূর্ব সকালের সবজি ফসলের ক্ষেত্রের মাঝেই রয়ে গেছি। আর মনে মনে ভাবছিলাম আমাদের বাংলাদেশে যারা শ্রম দিয়ে কৃষি কাজ করে যাচ্ছে তাদের মানসিক মেধার উপর কতটা শ্রম দিতে হচ্ছে। তা প্রতিদিন প্রতি মুহূর্ত আক্রান্ত পরিশ্রম করে কত ফসল উৎপাদন করছে যা থেকে বাংলাদেশ সুজলা সুফলা অনন্যত দেশ হিসেবে পরিচিত কিন্তু এতে করে এদেশের কৃষকরা পাচ্ছে না তাদের ন্যায্যো শ্রমের মর্যাদা। আপনারা ফটোগ্রাফিটিতে দেখতে পাচ্ছেন গাছের আড়ালে সূর্য তার মাথা উঁকি দিয়ে সমস্ত পাতাকপি মাঠ থেকে আলোকিত করে তুলেছে তার পাশাপাশি দু-দূরান্ত থেকে তালগাছ গুলো যেন দাঁড়িয়ে তার সৌন্দর্য প্রকৃতির মাঝে তুলে ধরেছে আর এই অসাধারণ দৃশ্য দেখে এমন কেউ নেই যে হারিয়ে যাবে না।

IMG-20250225-WA0007.jpg

IMG-20250225-WA0006.jpg

IMG-20250225-WA0009.jpg

📸 ফটোগ্রাফি- ১৫:

ফুল চাষেও কিন্তু বাংলাদেশ এক অন্যতম ভূমিকা পালন করছে প্রতি বছর যশোর। শীতের সিজন আসলে প্রচুর ফুলের চাষ বেড়ে যায়। আর এই ফুলের চাষ করে বাংলাদেশ অনেক অর্থ আর করছে। যশোরে আমার ভাইয়ারা ধান ও সবজির কৃষি কাজই করেনা তার পাশাপাশি যেমন আবাদি পশু পাখি পালন করে। একটি বিখ্যাত ফসলের চাষ করতে দেখলাম আর এটি হল আমাদের সবারই পছন্দের ফুলের চাষ। আর এই ফুলের চাষ করে তারা বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে থাকে। প্রতিদিন অনেক দূর-দূরান্ত থেকে হাজার মানুষ আসে এই ফুল কেনার জন্য।

IMG-20250224-WA0013.jpg

IMG-20250224-WA0012.jpg

device : vivo y 202s

লোকেশন

আমার পরিচিতি

আমি মাহফুজা আক্তার নীলা । আমার ইউজার নাম @mahfuzanila। আমি একজন বাংলাদেশী ইউজার। আমি স্টিমিট প্লাটফর্মে যোগদান করি ২০২২ সালের মার্চ মাসে। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যোগদান করে আমি অরেনেক বিষয় শিখেছি। আগামীতে আরও ভালো কিছু শেখার ইচ্ছে আছে। আমি পছন্দ করি ভ্রমন করতে, ছবি আঁকতে, বিভিন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি করতে, ডাই প্রজেক্ট বানাতে ও আর্ট করতে। এছাড়াও আমি বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে। মন খারাপ থাকলে গান শুনি। তবে সব কিছুর পাশাপাশি আমি ঘুমাতে কিন্তু একটু বেশীই পছন্দ করি।

❤️❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️❤️

image.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য আপনাকে শুভেচ্ছা।আপনার তোলা ছবিগুলো আমাদের দেশের কৃষকদের পরিশ্রম আর আনন্দের সুন্দর এক গল্প বলেছে। তাদের হাসিমুখের উজ্জ্বলতা যেন ছবির ফ্রেম ছাপিয়ে আমাদের মনেও ছড়িয়ে পড়ে। এমন অসাধারণ কাজের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ঠিক বলেছেন। কৃষকদের পরিশ্রম ফসলের মাঝে হাসি ফুটে ওঠে।

প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে এই মূল্যবান অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য আপনাকে আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ। আপনার তোলা প্রতিটি ফটোগ্রাফি কেবল চোখেই নয়, মনের গভীরতায়ও সেই সংগ্রাম ও আশা ফুটিয়ে তুলছে।প্রতিটি ফটোগ্রাফি অসাধারণ হয়েছে। ধন্যবাদ সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য।

সুন্দর একটি কথা বলেছেন। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আসলে অনেক অভিজ্ঞতা হয়। ধন্যবাদ আপু।

আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে জাস্ট মুগ্ধ হয়ে গেলাম আপু। গ্রাম বাংলার সৌন্দর্যকে মনে হচ্ছে কাছ থেকে দেখেছি। বেশ দারুন সব ফটোগ্রাফি ক্যাপচার করেছেন। খেজুরের রস নেওয়া কৃষকের ফটোগ্রাফি বেশ ভালো লেগেছে। এত বড় বাঁধাকপি ক্ষেত আগে কখনো দেখা হয়নি। ধানক্ষেত এবং সূর্যের ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ ছিল। ধন্যবাদ আপু সুন্দর ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করার জন্য।

আমিও গ্রাম বাংলার এই সৌন্দর্যকে কাছ থেকে দেখে অনেক মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। ধন্যবাদ আপু।

সুস্থতা কামনা করছি যেনো খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে আপনি স্বাভাবিক জীবন উপভোগ করতে পারেন। অসুস্থতার মাঝেও চমৎকার চমৎকার ফটোগ্রাফি নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন। সবথেকে ভালো লেগেছে খেজুর গাছ থেকে খেজুর রস পাড়ার দৃশ্যটি। সর্বোপরি ধন্যবাদ জানাচ্ছি কনটেস্টের অংশগ্রহণ করার জন্য।

ধন্যবাদ ভাইয়া। আমার প্রতিযোগিতায় ফটোগ্রাফি নিয়ে এত সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

প্রথমেই আপনাকে প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জানাই। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে দারুন কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন। আপনার ফটোগ্রাফিতে করা দৃশ্য দেখে একেবারে চোখ জুড়িয়ে জড়িয়ে গেছে। সত্যি বলেছেন কতদিন হলো দৃশ্য গুলো অনেক দেখা হয় না। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আমার প্রতিযোগিতার ফটোগ্রাফি নিয়ে এত সুন্দর মন্তব্য করেছেন তাই অনেক ধন্যবাদ আপু।

এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রথমেই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। অনেক সুন্দর কিছু এলোমেলো ফটোগ্রাফি করে আপনি অংশগ্রহণ করলেন এই প্রতিযোগিতায়। প্রতিটা দৃশ্য কিন্তু একেবারে মুগ্ধ হওয়ার মতো ছিল। আমার কাছে এক কথায় দারুন লেগেছে সবগুলো ফটোগ্রাফি।

আমার প্রতিযোগিতার এলোমেলো ফটোগ্রাফি গুলো আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক ভালো লাগলো।

আপনার ফটোগ্রাফি গুলো একটু ব‍্যতিক্রমী ছিল। এইজন্যই বেশি ভালো লেগেছে আমার কাছে। চমৎকার ছিল আপনার ফটোগ্রাফি গুলো। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ। ধন্যবাদ আমাদের সাথে ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।

আপনাকেও ধন্যবাদ। আমার প্রতিযোগিতা ফটোগ্রাফি নিয়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

আসলে ফসলের মাঠে কৃষকের হাসি দেখলে মনটা ভরে যায়। আপনি কিন্তু দারুণ কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন আপু। বাঁধাকপির ক্ষেত দেখতে তো দারুণ লাগছে। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। এতো সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো আপু।

হ্যাঁ ভাইয়া আমার কাছেও সবুজে ভরা পাতাকপি ক্ষেতগুলো দেখতে অনেক ভালো লেগেছিল। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Polish_20250304_054100692.jpg