জেনারেল রাইটিং-গরীব খুঁজে খাদ্য আর ধনী খুঁজে খিদে

in hive-129948 •  10 days ago 

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন আমার প্রিয় সহযাত্রী ভাই বোনেরা? আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের সবার দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। আশা করি সবার দিনটা ভাল কেটেছে। আজকে আপনাদের সবার মাঝে আমার আরও একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আজ আমি একটি জেনারেল রাইটিং নিয়ে আপনাদের সবার মাঝে হাজির হয়েছি।আশা করি আপনাদের সবার কাছে অনেক ভালো লাগবে। তাহলে চলুন আজ আমার জেনারেল রাইটিংটি দেখে আসি যে কি বিষয় নিয়ে লেখলাম। হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আমি সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে জেনারেল রাইটিং পোস্ট নিয়ে এসেছি। আমার আজকের জেনারেল রাইটিং এর বিষয় হল

Growth_20250129_140200_0000.png

গরিব খুঁজে খাদ্য আর ধনী খুঁজে খিদে

আসলে প্রতিটা মানুষের মৌলিক সকল চাহিদা মেটানোর মধ্য দিয়ে খাদ্য অন্যতম ভূমিকা পালন করে। আর খাদ্য প্রতিটা মানুষের ক্ষুধা মেটানোর জন্য ও মানুষের বেঁচে থাকার জন্য একমাত্র প্রধান উৎস। কিন্তু আমাদের চারপাশে সমাজের অনেক কিছুর কারণে সবার জন্য সকল চাহিদা মেটানো সমানভাবে সম্ভব হয়ে পড়ে না। সুতরাং বলা যেতে পারে প্রতিটি গরীব মানুষের জীবনের প্রধান হল খাদ্যের অভাব আর প্রতিটা ধনী মানুষের সমস্যাগুলো হল প্রকৃত খিদে অনুভব করা।

আমরা আমাদের আশেপাশে সকল মুসাফিরদের দিকে লক্ষ্য করলে দেখতে পারি যে তারা খাদ্যের জন্য প্রতিনিয়ত ব্যস্ত থাকে। তারা সারাদিন তাদের দৈহিক যে কাজকর্মগুলো থাকুক না কেন তা থেকে যা উপার্জন করে তা দিয়ে তারা পরিবারের জন্য একমাত্র ভাত জোগার করাই তাদের জন্য অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আর ক্ষুধার যন্ত্রণা এতটা যে তাকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। আমি মনে করি যাদের তিনবেলা খাওয়াই ঠিকমতো জোটে না তাদের কাছে জীবনের সবচেয়ে বড় চাহিদা খাদ্য। যার জন্য তারা সব সময় খাদ্যের জন্য সংগ্রাম করে ক্ষুধা নিবারণ করার জন্য।

কারণ তারা যদি না খেয়ে থাকে তাদের খাওয়ানোর মতো কেউ নেই। তাদের ক্ষুধা নিবারণ করার জন্য যেকোনো কাজের বিনিময় তাদের প্রতিদিনের খাবার যোগাড় করতে হয়। অন্যদিকে আমাদের আশেপাশে ধনী মানুষগুলোর কাছে খাদ্যের কোন অভাব নেই। তারা যখনই যা খেতে চায় তখনই তা জোগাড় করে খাওয়ার সামর্থ্য আছে। প্রতিটা ধনী মানুষের বাড়িতে অঢেল খাবার পড়ে থাকে। দেখা যায় তাদের ফ্রিজে অপজাপ্ত খাবার রয়েছে। এমনকি দেখা যায় এই খাবারগুলো তারা খেতে না পেরে ফেলে দেয়। এমনকি তারা চাইলে নামিদামী রেস্টুরেন্ট গুলোতেও গিয়ে দামি দামি খাবার খেয়ে আসতে পারে। যা কোন গরিব মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।

আর ধনী মানুষের অপর্যাপ্ত খাবার থাকে বলে তারা কখনো গরিব মানুষের ক্ষুধা বুঝতে পারে না। কিন্তু অন্যদিকে আবার ধনী মানুষগুলো এত প্রাচুর্য ও ভালো দামি দামি খাবারের সাগরে থেকেও অনেক সময় প্রকৃত ক্ষুদার স্বাদ হারিয়ে ফেলে। তাদের অতিরিক্ত খাবার ও বিলাসিতার কারণে বিভিন্ন খাদ্যাবাসে তাদের খোদার অনুভূতিগুলো ধীরে ধীরে কমে যায়। তখন তাদের মুখে রুচিও কমে যায়। একসময় দেখা যায় তারা নামিদামি খাবার ও উপযুক্ত খাবারের কারণে তাদের দেখা দেয় বিভিন্ন রোগ ও সমস্যা। যার জন্য একসময় এই নামিদামি ও বড়লোকীয় খাবারগুলো তারা আর খেতে চায় না। তখন তারা খোঁজে কম দামি ও সুস্বাদু খাবারের খোঁজ।

কিন্তু তাতেও তারা প্রকৃত খাবারের তৃপ্তির সুখ খুঁজে পায় না। তাই তারা নতুন নতুন খাবারের খোঁজ করে। যেগুলো খেলে তাদের মুখে রুচি আসবে। এমনকি সুস্থ জীবন যাপন পার করতে পারবে। আসলে এতেই বুঝা যায় মানুষের প্রকৃত আনন্দ ও তৃপ্তি সম্পদের মধ্যে নয়। যতটুক প্রয়োজন ততটুকু হলে যথেষ্ট। কারণ দেখা যায় যার অনেক অভাব রয়েছে সে আরো কিছু পাওয়ার জন্য অনেক লড়াই করতে থাকে। আর যার প্রচুর প্রাচুর্য আছে সে তার ঐ খাবারের মধ্যে প্রকৃত প্রকৃত সুখ খোঁজে।

তাই আমরা এর থেকে অনেক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে যে, অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়। প্রতিটা গরিব মানুষের জন্য যেমন খাবার ও স্থান জরুরি তেমনি সকল ধনীদের জন্যও পরিমিত ধন-সম্পদ ও খাবার দাবারের প্রয়োজন। একজন মানুষের বেঁচে থাকার জন্য কতটুকু সম্পদ আর খাবার লাগে যতটুকু আছে তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকা দরকার। আমি মনে করি প্রকৃত সুখ তখনই পাওয়া যায় যখন কিছু প্রয়োজন ও অল্প কিছু সীমাবদ্ধ বজায় থাকে। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত আমরা যেন প্রয়োজনে অতিরিক্ত কিছু না চাই এবং আমাদের যা যা আছে তাতেই আমরা তৃপ্তি থাকি।

আমার পরিচিতি

আমি মাহফুজা আক্তার নীলা । আমার ইউজার নাম @mahfuzanila। আমি একজন বাংলাদেশী ইউজার। আমি স্টিমিট প্লাটফর্মে যোগদান করি ২০২২ সালের মার্চ মাসে। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যোগদান করে আমি অরেনেক বিষয় শিখেছি। আগামীতে আরও ভালো কিছু শেখার ইচ্ছে আছে। আমি পছন্দ করি ভ্রমন করতে, ছবি আঁকতে, বিভিন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি করতে, ডাই প্রজেক্ট বানাতে ও আর্ট করতে। এছাড়াও আমি বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে। মন খারাপ থাকলে গান শুনি। তবে সব কিছুর পাশাপাশি আমি ঘুমাতে কিন্তু একটু বেশীই পছন্দ করি।

❤️❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️❤️

image.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার কথাগুলোর মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে বাস্তবতা। আপনি একদম ঠিক বলেছেন ভাই গরীব খুঁজে খাদ্য আর ধনী খুঁজে খিদে। গরিবেরা দুমোঠো খাদ্যের জন্য দৌড়ায় আর ধনীরা খাবার হজমের জন্য দৌড়ায়।আপনি দারুন সুন্দর করে কথাগুলো গুছিয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

হ্যাঁ বড়লোকের খাবার হজমের জন্য দৌড়ায়। ধন্যবাদ আপনাকে।

Screenshot_20250129-172718.png

Screenshot_20250129-172352.png

এই কথাগুলো একদম সত্য। গরীব আসলে নিজের পেটে দুটো খাবার দেওয়ার জন্য বেশ কঠোর পরিশ্রম করে । কিন্তু সমাজে যার বেশী আছে সে আরও বেশী চায় আর চায়। আপনি দারুন সুন্দর করে কথাগুলো গুছিয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

সুন্দর বলেছেন সমাজে যার বেশি আছে সে আরো বেশি চায়। ধন্যবাদ আপু।

আপনার শেয়ার করা টপিকস ভীষণ ভালো লেগেছে পড়ে। প্রতিটি গরিব মানুষ কঠোর পরিশ্রম করে দুই বেলা খাওয়ার জন্য এদিক ওদিক ছুটে বেড়ায়। কত জনের কাছে ছোট হয় দুই বেলা খাওয়ার জন্য একটু কষ্ট করে আয় করার জন্য। আর ধনী মানুষের যতই থাকনা তাদের চাহিদা আরও বেশি। আমাদের সমাজের অসম বন্টন অনেক বেশি বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। ধন্যবাদ আপু আপনার লেখা পড়ে ভালো লেগেছে।

হ্যাঁ ধনী মানুষের হাজার থাকা সত্ত্বেও তাদের চাহিদার শেষ নেই। ধন্যবাদ আপনাকে।

বাস্তব সত্যি কথা আপনার আজকের পোস্টের বিষয়টি।গরীব মানুষ ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাতর।আর ধনীরা ক্ষুধের জন্য কাতর।গরীব মানুষ ভোর হলেই খাবারের সন্ধানে ব্যস্ত হয়ে পরে।আর ধনীরা খাবার থাকা সত্ত্বেও খেতে পারে না।খুব সুন্দর ভাবে বিষয়টি নিয়ে লিখে শেয়ার করেছেন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

গরিব মানুষেরা ভুল হলেই খাবারের সন্ধানে বের হয়। অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপনার কথাগুলোর মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে বাস্তবতা। যে বাস্তবতা যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। দুবেলা দুমুঠো খাবার পাওয়ার জন্য গরিবরা কষ্ট করে। আর বড়লোকরা খাওয়ার মাঝখানে ডুবে থাকে। তারা চিন্তায় থাকে কখন খিদে লাগবে। একদম বাস্তবতা তুলে ধরেছেন আপু।

বড়লোকেরা খাবার মাঝখানে ডুবে থেকেও তাদের খিদে পায় না। ধন্যবাদ আপনাকে।

গরিব খুঁজে খাদ্য ধনী খুঁজে খিদে দারুন পোস্ট লিখেছেন আপু। গরিব মানুষ তিনবেলা পেট ভরে খেতে পারলেই হয় এর জন্য কতই না কষ্ট করে। তার থেকেও বেশি কষ্ট করে আরও বেশি পাওয়ার আশায়। কিন্তু ধনী মানুষ যাদের প্রচুর অর্থ সম্পদ আছে তারা তাদের মুখের রুচি কোথায় সেটা খুঁজে বেড়ায়। তবে আমরা যে অবস্থায় থাকি না কেন আমাদের প্রয়োজনের বাইরে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। ধন্যবাদ আপু।

গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।

আপনার টাইটেলের লেখা গুলো হৃদয় ছুঁয়ে গেলো। সত্যি বাস্তব কথা বলেছেন আপনি
গরিব মানুষ খাবার খুঁজে পায় না আর বড় লোকেরা খাবার গ্রহণ করার জন্য খিদে খুজে পায় না। গরিব মানুষ খাবারের জন্য ছটফট করে। আসলে বাস্তবতা খুবই কঠিন। আপনার পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে আপু।

সত্যি ভাইয়া বড়লোকরা খাবার খাওয়ার জন্য খিদে খুঁজে পায় না। ধন্যবাদ আপনাকে।

"গরীব খুঁজে খাদ্য আর ধনী খুঁজে খিদে" উক্তিটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আর্থিক অবস্থান যতই ভিন্ন হোক, মানুষের চাহিদা কখনো পূর্ণ হয় না। ধন-সম্পদ বাইরের ক্ষুধা মেটাতে পারে, কিন্তু অন্তরের খিদে কখনো শেষ হয় না।

হ্যাঁ প্রাচুর্য বাইরের খিদা মেটাতে পারে। কিন্তু মনের খিদা মিটাতে পারে না।

আপনার লেখাটি সত্যিই হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো আপু। গরীব মানুষের খাদ্যের জন্য লড়াই আর ধনী মানুষের প্রকৃত ক্ষুধার অভাব—এই বাস্তবতাটি আপনি দারুণভাবে তুলে ধরেছেন। আসলেই, মানুষের প্রকৃত সুখ সম্পদের পরিমাণে নয়, বরং পরিমিত জীবনযাপনে।ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

হ্যাঁ মানুষের প্রকৃত সুখ সম্পদের মধ্যে নয় সীমিত জীবন যাপনে।

বাস্তবিক কথা নিয়ে সুন্দর পোস্ট করেছেন। আসলে গরিব চিন্তা করে তিন বেলা খেতে। আর বড় লোকগুলো চিন্তা করে তাদের টাকা-পয়সা আরও বৃদ্ধি করতে এবং খাওয়া-দাওয়ার মান বৃদ্ধি করতে। তবে এটি ঠিক বড়লোকদের ফ্রিজে অনেক কিছু থাকে। তবে তারা ইচ্ছা করলে গরিব লোকদেরকে খাওয়াতে পারে হেল্প করতে পারে। ধন্যবাদ খুব মূল্যবান এবং বাস্তবিক কথা নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।

হ্যাঁ গরিব চিন্তা করে তিনবেলা খেতে পারবে কিনা। আর বড়লোক এত খাবার সামনে থাকতেও খেতে পারে না।

গরিবেরা কিছু খাওয়ার জন্য কোন কিছু পায় না এবং তাদের যে স্বল্প আয় রয়েছে সেটি দিয়ে তারা কোন কিছুই করতে পারে না। তাদের যে ক্ষুধা রয়েছে সেটি তারা কোনভাবে নিবারণ করতে পারে না৷ অন্যদিকে যে সকল ধনী ব্যক্তিরা রয়েছে তারা সবসময়ই অনেক টাকা পয়সা নিয়ে পড়ে থাকে৷ সব সময় চেষ্টা করতে থাকে কিভাবে তাদের সেই টাকা বৃদ্ধি করবে। তারা যদি তাদের নিজস্ব যে খাবার এর একটা চাহিদা থাকে সেটি পূরণ করতে চায় তাহলে তারা সেটা পূরণ করতে পারে না৷ কারণ তারা কিভাবে বুঝবে খাদ্যের মূল্য এবং কিভাবে তারা যে ক্ষুধার্ত মানুষের খিদে রয়েছে সেটি বুঝতে পারবে৷ কারন তারা তো সবসময় খাবার সামনে থাকার পরেও খাবার খায় না৷ অন্য দিকে গরিবেরা খাবার খাওয়ার জন্য খাবার খুঁজেও পায় না৷ খুব সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি৷ ধন্যবাদ আপনাকে৷

গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

আপু আপনার গরীব খুঁজে খাদ্য আর ধনী খুঁজে খিদে টাইটেলের গুরুত্ব প্রথমে বুঝতে পারি নাই, পরে ব্লগটি পড়ে বুঝতে পারলাম। খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও বিষয় ভিত্তিক একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।