অমর একুশে বই মেলা ভ্রমন-১ম পর্ব

in hive-129948 •  10 months ago  (edited)

আসসালামু আলাইকুম

হ্যালো কেমন আছেন সবাই? আজ আমি আবারও আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম আমার নতুন একটি ব্লগ নিয়ে। আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ২১শে বইমেলায় যাওয়া ও কাটানোর কিছু মুহূর্ত । একুশে বইমেলায় কখনও যাওয়া হয় না।এই প্রথম তাও আবার অমর ২১ফেব্রুয়ারীর দিন। আর এই দিনটিতে কখনও শাহবাগের ঐ দিকটায় কখনও যাইনি। বাসার কাছেই কোথাও ঘুরে এসেছি। আমার এমন দিনে বাসা থেকে বের হতে খুব একটা ভালো লাগে না।সেদিনও যাওয়ার কোন ইচ্ছা ছিল না। আমার মনে হয় বাহির থেকে বাসায় শান্তি। তারপরও কি আর করা? সবাই এত করে অনুরোধ করেছিল তাই বের হলাম। এক প্রকার হুট করেই চলে গেলাম। আসর নামায পরে বাসা থেকে বের হলাম। কিন্তু বের হয়েই একেবারে বিপাকে পড়েছিলাম। না প্রথমে বাসা থেকে যখন বের হলাম তখন কিন্তু ভালোই যাচ্ছিলাম। রাস্তাঘাট অনেকটাই খালি ছিল। এরপর যখন শাহবাগের কাছাকাছি গেলাম ঠিক তখনি শুরু হলো আমাদের যত ঝামেলা। তাহলে চলুন কিছু বিড়ম্বনার মুহূর্ত নিয়ে বই মেলায় ঘুরে আসার গল্পে আপনাদের ঘুরিয়ে নিয়ে আসি।

image.png

image.png

এখান থেকেই হলো আমাদের ঝামেলা। এই দেখেন কি জ্যাম। রিক্সা আলা মামা যখন যাচ্ছিলো তখন এক রাস্তার জায়গায় অন্য রাস্তায় চলে গিয়েছিল। আমাদের মামা চিনছিল না।সামনের মামাও অন্য রাস্তায় চলে গিয়েছিল। আসলে ঐদিন ছিল ২১শে ফেব্রুয়ারী। আর এই দিনটিতে শাহবাগ আর টিএসসির সকল রাস্তাঘাট যেন মানুষের ভিড়ে সবার কাছে অচেনা হয়ে যায়। তাই সামনের রিক্সা ওয়ালা মামা আমাদের মামাকে বললো আমাদের রিক্সাটিকে ঘুরিয়ে তাকে অনুসরন করতে। আমাদের মামাও তাই করলো।

image.png

image.png

এরপর সেই রিক্সা মামাকে অনুসরন করতে আমাদের মামা তার পিছু নিলো । তারপর আমরা যখন যাচ্ছিলাম তখন ডান সাইটের ট্রাফিক আমাদের রিক্সা মামার প্রতি ক্ষেপে গিয়েছিল। রং সাইট দিয়ে যাওয়ার জন্য। আমার মনে হয় ঐটা ছিল ভিআইপি রাস্তা। কিন্তু ঐখান দিয়েই আমাদের বইমেলার সহজ রাস্তা। তখন আমারা ট্রাফিক ভাইয়াকে অনুরোধ করায় আমাদের কেন যেন ছেড়ে দিল। কিন্তু যেই রিক্সা মামা আমাদের পথ চিনিয়ে নিয়ে আসছিল সে ওইখানেই রয়ে গেল। আর আমারা সামনের দিকে যেতে লাগলাম।

image.png

image.png

image.png

এবার দেখেন আমাদের আরও বিড়ম্বনা। রাস্তাতেই রিক্সায় বসে রইলাম। কারন এত মানুষের ভিড়ের জন্য রিক্সা আর গাড়িগুলো একটু একটু করে যাচ্ছে আর থামছে। আর আস্তে আস্তে সন্ধ্যা হতে লাগলো। তখন আমরা বুঝতে পারলাম আর রিক্সায় বসে থেকে লাভ নেই। তাই আমরা ভাড়া দিয়ে নেমে পড়লাম। আর হাটা শুরু করলাম। বইমেলার উদ্দেশ্যে।

image.png

image.png

এভাবে হাটতে হাটতে রাতের ২১শে ফেব্রুয়ারী আর মানুষের এত সুন্দর সাজ গুজের ভিড়ে যেন শাহবাগের সন্ধ্যার সৌন্দর্য আরও বেড়ে গেল। তাই এই দৃশ্যের ফটোগ্রাফি করে নিলাম। আর শাহবাগে হঠাৎ শুনতে পারলাম মাগরিবের আযান দিচ্ছে। আর ভাইয়া নামাযের জন্য তাড়াতাড়ি হাটা শুরু করেছে। তখন দেখলাম যে শাহবাগের ঐখানে বড় একটা মসজিদ আছে সেখানে পুরুষ আর মহিলাদের সবার নামাযের ব্যবস্থা আছে। তাই আমরাও মাগরিবের নামায আদায় করে নিলাম।

image.png

image.png

শেষ হলো আমাদের মাগরিবের নামায। আবার হাটা ধরলাম বইমেলার উদ্দেশ্যে একবার ভেবেছিলম যে, চলে আসবো । পরে সবাই বলছে যে কাছেই যেহেতু এসে পরেছি, তাই একটু ঘুরেই যাই। বাবা আর আসার নাম নিবো না। তো মসজিদের ঐ পাড়ে হলো বইমেলা। আর যাবার সময় লোভনীয় কিছু আচার দেখলাম। দেখে খেতে ইচ্ছে করলো । কাছে গিয়ে দেখলাম যে অন্য দিনের তুলনায় অধিক দাম। কি আর করা? কিনে নিলাম। আচার খেতে খেতে হাটা ধরলাম। আর মানুষের ভিড়ে যেন আচারগুলো পরে যাচ্ছে।

image.png

এইবার দেখেন যে বইমেলার কাছাকাছি রাস্তার কি অবস্থা? হয়তো কে যে কোথায় যাচ্ছে কেউ বলতে পারে না। আর আমাদের অবস্থাও দেখেন আপু ধরছে একহাতে ভাইয়ার ব্লেজার আর একহাতে ধরছে আমার হাত। আর আমি ধরেছি আমার পেছন জনের হাত। আর এইভাবেই আমরা কিনার দিয়ে হাটলাম। ছবিটা তেমন ভালো আসেনি। কারন যেই অবস্থায় তুলেছি বুঝতেই পারছেন। একজন আরেক জনকে ধরে রেখেছিলাম তো তাই মোবাইল ধরার কোন স্কোপ পাচ্ছিলাম না। এইছিল আমাদে অবস্থা আর এত কষ্টের মাঝেও হাসি পেল হিহিহি।

image.png

অবশেষে সেই কাঙ্খিত বইমেলার কাছে গিয়ে পৌঁছালাম। আর দেখতে পেলাম একটি চেনা মুখ। তখন বড় করে একটা শ্বাস নিলাম। চেনা মুখটি কে হতে পারে আপনারা কি ভাবতে পারেন? আর এর মাঝেই শেষ হয়ে গেল আমাদের বইমেলায় যাবার কিছু বিড়ম্বনা।

আশা করি আপনাদের মাঝে আমাদের সেইদিনের এত কষ্টের মাঝেও বইমেলায় পৌঁছানোর কিছুটা অনুভূতি শেয়ার করতে পেরেছি। এর ২য় পর্ব নিয়ে আবারও যে কোন মূহূর্তে আপনাদের মাঝে হাজির হবো সবাই ভালো থাকবেন।

পোস্টের বিবরন
পোস্টের ধরনভ্রমন পোস্ট
ডিভাইসVIVO
মডেলVIVO-Y22S
ভিডিওগ্রাফার@mahfuzanila
স্থানবাংলা একাডেমী,ঢাকা

পরিচিতি

আমি মাহফুজা আক্তার নীলা আমার ইউজার আইডি @mahfuzanila আমি একজন বাংলাদেশী ইউজার। আমি আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের একজন সদস্য। আমার পছন্দ ঘোরাঘুরি করা ,ছবি আঁকা, বিভিন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি,ডাই প্রজেক্ট বানাতেও দারুণ পছন্দ করি। আর বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে,মন খারাপ থাকলে গান শুনতে ও গান গাইতে আর সবচেয়ে বেশী ঘুমাতে আর কষ্ট পাই অন্যায় না করেও কেউ কষ্ট দিয়ে কথা বললে।

❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

আসলে আপু বিড়ম্বনা নিয়ে আর কি বললো। আর এটা ঢাকার শহরে নতুন কিছু নয়। আসলে ঢাকা শহরের গাড়ি এমনই একবার চলে একবার বন্ধ হয়। যাইহোক শত বিরম্বনার মধ্যে দিয়ে বইমেলায় পৌঁছাতে পেরেছেন জেনে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

ঠিক বলেছেন আপু এত বিড়ম্বনার পরেও পৌছাতে পেরে আমিও অবাগ হয়েছি। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

একুশে ফেব্রুয়ারিতে আপনি বইমেলায় গিয়েছিলেন এটা শুনে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। বুঝতেই পারতেছি যেহেতু একুশে ফেব্রুয়ারি ছিল তাই রাস্তায় অনেক বেশি ট্র্যাফিক জ্যাম ছিল। রাস্তায় এত বেশি ট্রাফিক জ্যাম থাকলে আমার কাছে তো একেবারে ভালোই লাগেনা। তবে এত সবকিছুর মাঝেও বইমেলায় পৌঁছেছেন দেখে ভালো লাগলো। তবে চেনা মুখটা কে ছিল আসলে এটা জানার জন্য আমি অধীর অপেক্ষায় থাকলাম। সুন্দর করে পুরোটা সবার মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

হ্যাঁ ঢাকা শহরের জ্যামের জন্য মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় বাসা থেকে একে বাবে খাবার নিয়ে বের হতে। দেখা যায় সকালে কোথাও বের হলে বাসেই বসে থাকতে হয়। সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

আপনার আপুর ভাইয়ার ব্লেজার ধরে হাঁটার বিষয়টা খুব মজা লেগেছে। আসলে অনেক বেশি ভিড়ের মধ্যে দেখা যায় হাঁটতে হাঁটতে হারিয়ে যেতে হয়। তখন এরকম ধরে হাঁটা ছাড়া উপায় থাকে না। ইদানিং যে কোন মেলাতে যাওয়ার উপায় নেই মানুষের ভিড়ে। তারপরেও তো আপনারা বেশ ভালোই ঘোরাফেরা করেছেন।

হ্যাঁ আপু আমি এক দুবার হারিয়ে গিয়েছিলাম। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য। জন্য।