শৈশবে বৃষ্টির পানি খাওয়া ও সংরক্ষন করার অনুভূতি

in hive-129948 •  14 days ago 

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন আমার প্রিয় ও সহযাত্রী সকল ভাই ও বোনেরা। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন।আজ আবারও হাজির হয়ে গেলাম আপনাদের সবার অতি নিকটে। ফেলে আশা অনেক স্মৃতির মাঝ থেকে কিছু স্মৃতি নিয়ে। আমাদের চলার পথে জীবনে সুখ দুঃখ কতো স্মৃতি জড়িয়ে আছে।সেই শৈশব থেকে শুরু করে মৃতুর আগ পর্যন্ত স্মৃতিগুলো যেন চোখে ও মনের মনি কোঠায় ভেসে বেড়ায়। আর তার মধ্যে জীবনে এমন অনেক ঘটনা থাকে যা কখনও ভোলা যায় না। যাইহোক আজ কয়েকদিন ধরে দেশের অনেক জায়গায় প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। আর এই বৃষ্টি দেখে আমার ফেলে আসা দিনগুলোর মধ্যে বৃষ্টিকে নিয়ে অনেক স্মৃতি মনে পরে গেল। আসলে বৃষ্টিকে ঘিরে আমাদের সবার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। আর সেই থেকে আমারও কিছু স্মৃতি আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলে এলাম। তাহলে চলুন পড়ে আসি আজ আমার শৈশবের বৃষ্টির পানি খাওয়া ও সংরক্ষন করার কিছু অনুভূতি।

rain-3524800_1280.jpg

sourch

আসলে জীবনে অনেক সময় অনেক পরিস্থিতে মানুষের থাকতে হয়। আমরা তখন যাত্রবাড়ি এলাকায় থাকি। তখন সেই এলাকা ছিল নিচু এলাকা সেখানে বছরে প্রায় ৪-৫ মাস বর্ষার পানি থাকতো। আর সেই পানি থাকতো ১২-১৪ হাত পর্যন্ত। আর তখন আমাদের ছিল টিউবওয়েল কল। আর এই পানি উঠার কারনে আমাদের আর আমাদের আশেপাশের বাড়ির সবার কল ডুবে যেত। আর সেক্ষেত্রে আমাদের বিশুদ্ধপানির প্রচুর কষ্ট হয়ে যেত।আর সেই কল যতদিন বর্ষার পানি থাকতো ততদিন কল ডোবা অবস্থায় থাকতো। সেক্ষেত্রে আমাদের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় পানির জন্য যেতে হতো দূরের যে সকল বাসাগুলোর বাড়ির উপরে চাপকল লাগানো ছিল তাদের বাসায়।আর প্রতিদিন নৌকা করে এত পানি আনাও অনেক সমস্যা ও কষ্ট হতো।কিন্তু কিছু করার নেই জীবনের অনেক সময় চলার পথগুলো মেনে নিয়ে চলতে হয়।

তবে আমি একটি জিনিস ভাবতাম আল্লাহ তার সকল বান্দার জন্য কোন না কোন একটা পথ রহমতের দরজা দিয়ে খুলে দেয়। এই কথা বললাম কেন। আমরা যত বছর ওখানে ছিলাম যদিও কল ডুবে যাওয়াতে আমাদের অনেক কষ্ট হতো। কিন্তু আর একদিক দিয়ে আল্লাহর রহমতের দরজাও আমাদের জন্য খোলা থাকতো।প্রচুর বৃষ্টি যখন নামতো তখন আমরা বৃষ্টির পানি ধরে রাখতাম। ভাবছেন কিভাবে এটা করতাম? আমার বাবা একদিন প্রচুর বৃষ্টি দেখে বলল যে আমাদের ছাতাটি তাকে দিতে, তখন আমরা বাবাকে ছাতা দিলাম। আর বড় একটি বালতি চাইলো তাও দিলাম। পড়ে আমাদের বাড়ির চাল বেয়ে যে পানি পরতো সেইটার নিচে ছাতা আর বালতি পেতে দিত। প্রথমে ছাতা ধরতো পরে ছাতার নিচে বালতি দিত বৃষ্টির নিচে।

আমাদের আবার বড় বড় বালতি আর বড় পানি রাখার ড্রাম ছিল।বৃষ্টির পানিতে যখন বাড়ির চাল ধুয়ে যেত তখন আমরা এই পানিগুলো সংরক্ষন করতাম। নিমিষেই দেখা যেত বড় বালতি ভরে যেত। তখন সেগুলো থেকে ড্রামে রাখতাম ও অন্যান্য সককিছু ভরে রাখতাম। প্রথম প্রথম অনেক মজা পেতাম বৃষ্টির পানি খাব। কিন্তু বৃষ্টির পানিতো খেয়ে মজা নেই নোনতা লাগে। কত বৃষ্টির পানি খাওয়া যায় বলেন। প্রথম দুএকবার আনন্দ পেতাম। পড়ে ভালো করে লক্ষ করলাম বৃষ্টির পানি খেয়ে কেউ স্বাদ পাচ্ছে না।তাই আমরা বাহির থেকে শুধু খাবার পানি আনতাম আর বৃষ্টির পানি আমরা সবসময় বড় ড্রাম আর বালতি সহ সব ভরে রাখতাম। আর সেগুলো দিয়ে আমরা ভাত তরকারি রান্না করতাম ।আর অন্যান্য যাবতীয় থালবাসন ধোয়া, তরিতরকারি ধোয়া, সব কাজ করতাম। তবে বৃষ্টির পানি দিয়ে ভাত রান্না করলে ভাত অনেক ঝর ঝরে হতো। আর ভাতটা খেতেও অনেক স্বাদ লাগতো।আর এভাবে করে দেখতে দেখতে বৃষ্টির পানি দিয়ে আমাদের ৪-৫ মাস কেটে যেত। খুব বেশীদিন হলে আমাদের পানি বিশুদ্ধ রাখার জন্য কি একটি মেডিসিন যেন ব্যবহার করা হতো। মাঝে মাঝে আমাদের প্রতিবেশীরাও আমাদের থেকে বৃষ্টির পানি নিতে আসতো। আর এভাবেই আমরা বৃষ্টির পানি ধরে অনেকদিন যাবৎ সংরক্ষন করে রেখেছি আর খেয়েছি।

আর এই ছিল আমার আজকের পোস্ট। আপনারা কে কে বৃষ্টির পানি খেয়েছেন? আর আমার মত সংরক্ষন করেছেন জানাবেন। আজ তাহলে শেষ করলাম পরবর্তীতে আবারও নতুন ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হারির হবো।সবাই ভালো থাকবেন।

পরিচিতি

আমি মাহফুজা আক্তার নীলা । আমার ইউজার নাম @mahfuzanila। আমি একজন বাংলাদেশী ইউজার। আমি স্টিমিট প্লাটফর্মে যোগদান করি ২০২২ সালের মার্চ মাসে। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যোগদান করে আমি অনেক বিষয় শিখেছি। আগামীতে আরও ভালো কিছু শেখার ইচ্ছে আছে। আমি পছন্দ করি ভ্রমন করতে, ছবি আঁকতে, বিভিন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি করতে, ডাই প্রজেক্ট বানাতে ও আর্ট করতে। এছাড়াও আমি বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে। মন খারাপ থাকলে গান শুননি। তবে সব কিছুর পাশাপাশি আমি ঘুমাতে কিন্তু একটু বেশীই পছন্দ করি।

❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এগুলো এখন হারিয়ে যাওয়া অতীত বলা যায়। বৃষ্টির পানি অনেক পরিষ্কার এবং বিশুদ্ধ পানি। এই পানি ধরে রাখার প্রচলণ এখন অনেক কমে গিয়েছে। যদিও গ্রামের দিকে এখনও ধরে রাখা হয়। বেশ ভালো লাগল আপনার পোস্ট টা পড়ে।

ঠিক বলেছেন ভাইয়া এগুলো এখন হারিয়ে যাওয়া অতীত। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। আসলে অবাক হলাম যে বৃষ্টির পানি খেয়ে থাকতে হতো আপনাদের ওখানে। তবে আল্লাহর রহমতে আমাদের এখানে আজও এমন সমস্যা হয়নি। তবে আপু আপনি ঠিকই বলেছেন আল্লাহ কোন না কোন একটা দরজা খুলে দেয়। যেমন আপনার বাবা আপনার কাছ থেকে ছাতা নিল এবং চালবেয়ে যে পানি নাম ছিল ওই পানি বালতি ভরে রাখত। এর কারণ হচ্ছে আপনাদের ওখানে বৃষ্টি হলে টিউবওয়েল গুলো পানির তলে থাকতো। তাছাড়া ১২-১৪ হাত পানি মানে তো অনেক। যাই হোক এই বৃষ্টির পানিতে আপনাদের চার-পাঁচ মাস কেটে যেত বিষয়টা ভালো লাগলো। তবে বৃষ্টির পানি বিশুদ্ধ পানি। তবে যখন আকাশ থেকে গুড়ি গুড়ি শিলা বর্ষণ হয় তখন ঐ শিলা গুলো খাই বেশ ভালো লাগে আমার। অনেকেই বলে শীল পড়ছে। আমি এই শিল খেয়েছি। ধন্যবাদ আপু পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

জি ভাইয়া বৃষ্টির পানি বিশুদ্ধ পানি। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

আপু সব কষ্ট সহ্য করা যায় কিন্তু পানির কষ্ট সহ্য করা সত্যি অনেক কষ্ট। পানি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সকাল থেকে রাত ২৪ ঘন্টায় লাগে। ছোটবেলায় আপনাদের ছোট একটি কল ছিল। বর্ষার পানিতে সেটা আবার ডুবে যেত। তখন অন্যদের কল থেকে পানি নিয়ে আসতে হতো এটা সত্যি অনেক কষ্টকর। তবে বৃষ্টির পানি কিন্তু খুবই বিশুদ্ধ পানি। তবে আকাশ থেকে যদি শিলা পড়ে না সেগুলো খেতে কিন্তু বেশ মজা লাগে। আপনার শৈশবে বৃষ্টির পানি খাওয়ার সুন্দর অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ আপু।

জি আপু পানি আমাদের জীবনে সকাল থেকে রাত অবদি ২৪ ঘন্টাই লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে।