স্কুল থেকে পালিয়ে হঠাৎ এক্সিডেন্ট //পর্ব ১

in hive-129948 •  10 days ago 

আস্সালামু আলাইকুম /আদাব 🤝

আমার প্রাণ প্রিয় বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা সবাই। আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো ও সুস্থ আছি ।আমি @mahfuzur888, বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে আপনাদের সাথে আছি ।

_a0ea6b45-2d22-4e15-932a-15994c25ba19~2.jpeg

আমার বাংলা ব্লগের প্রাণ প্রিয় বন্ধুরা, প্রতিদিনের মতো আজকে নতুন আরো একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম আপনাদের সবার মাঝে। আজকের এই পোস্টটি সাজিয়েছিলাম আমার জীবনের একটি গল্প নিয়ে। যা ঘটেছিল স্কুল ফাঁকি দিয়ে সিনেমা দেখতে গিয়ে।

সালটি ছিল ১৯৯৭ সাল। আমি তখন হরিনা বাগবাটি উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস নাইনে পড়ছি আর্স বিভাগ নিয়ে। তো ক্লাস নাইনে আমাদের বাংলা ইংরেজি এবং অংক এই তিনটি ক্লাস সকল বিভাগ একসাথে করতে হতো। প্রতি রবিবার এবং বুধবার ইংলিশ সেকেন্ড পেপার ক্লাস নিত মোঃ জেলহোসেন নামের একজন শিক্ষক। তিনি ছিলেন যেরকম উঁচা লম্বা স্বাস্থ্যবান এবং একটু কালো গড়নের। যাকে দেখে আমরা প্রতিটা ক্লাসের ছেলেমেয়েরা খুবই ভয়ে থাকতাম। এবং তার ক্লাসটা প্রতিদিনই বাড়ি থেকে কমপ্লিট করে আসতাম। যেদিন ওনার ক্লাসটা কঠিন থাকতো তখন অনেকেই ক্লাসে আসতো না। বিভিন্ন অজুহাতে বাড়িতে থেকে যেত। যদিও কেউ স্কুলে আসতো তবে সেই স্যারের ক্লাসটা কিভাবে না করা যায় সেই ফন্দি আঁটতো।


যথারীতি সেই টিচার রবিবারের ক্লাস নিয়ে বুধবারের জন্য একটি রচনা দিয়ে গেলেন এবং রীতিমত শাসিয়ে গেলেন পড়া না পারলে বেত্রাঘাত করবেন। তো আমি রবিবার ক্লাস শেষে বাড়ি চলে গেলাম। এবং আমাদের ওইখানে প্রতি রবিবার এবং বৃহস্পতিবার হাট বার। আমার বাবা যেহেতু হোমিও ডাক্তারি করেন সেই সুবাদে প্রত্যেক হাটে আমাকে বাজার করতে হয়। বাজার শেষ করে যে দু-এক টাকা উপরি পাই সেই দু-এক টাকা আমার কাছে থেকে যায়। এভাবে নিয়মিত উপরি পাওয়ার পর আমার হাতে মোটামুটি ভালই টাকা থেকে যায় । যাই হোক সোমবার মঙ্গলবার ক্লাস করার পরে চলে আসলো সেই কাঙ্ক্ষিত বুধবার। তো আমার বিভাগে আমার একজন বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল নাম ছিল রেজাউল। তো বুধবারে টিফিন পর্যন্ত সমস্ত ক্লাস শেষ করলাম। এবং টিফিনের পরেই সেই কাঙ্খিত স্যারের ক্লাস ইংলিশ সেকেন্ড পেপার। আমরা সবাই টিফিনের ৩০ মিনিট ব্রেকের পরে যার যার গ্রুপ অনুযায়ী ভাগতে থাকলাম। আমার কাছে যেহেতু কিছু উপরি ইনকামের টাকা রয়েছে। সেই সুবাদে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড বলল চল সিনেমা দেখে আসি। সিনেমাটাও ছিল সালমানশাহর একটি প্রেমের ছবি। "আমি তোমাকে চাই "।


তো রীতিমতো আমি আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের কথায় রাজি হয়ে গেলাম এবং তাকেও আমার টাকা দিয়ে সিনেমা দেখার জন্যও রাজি হয়ে গেলাম। তখন যেহেতু স্কুলটা পুরো চারদিকে ঘেরা ছিল ইটের দেয়ালে। তাই আমার বেস্ট ফ্রেন্ডকে বাহিরে জানালার পাশে পাঠিয়ে দিয়ে আমি ভিতর থেকে ব্যাগ দুটি জানালা দিয়ে পার করে দিলাম। এবং সেই ব্যাগ দুটি আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাইয়ের বাসায় রেখে চললাম সিনেমা দেখার জন্য। সিনেমার শো শুরু হতো বারোটা থেকে তিনটা পর্যন্ত। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড আমার কাছ থেকে ২৪ টাকা নিয়ে এ ক্লাসের দুটি টিকিট কেটে নিয়ে আসলো। যথারীতি লম্বা সিরিয়ালে ভিড়ের মধ্যে আমরা দুজনে সিনেমা হলে প্রবেশ করলাম।এবং সিনেমা হলে প্রবেশ করার পর দেখতে পেলাম আমাদের মত আরো অনেকেই সিনেমা দেখার জন্য এসেছে স্কুল ফাঁকি দিয়ে।


যাই হোক যথারীতি বারোটা পনের মিনিটে সিনেমা শুরু হলো। এবং আমাদের জাতীয় পতাকা উত্তোলন হলো আমরা সবাই দাঁড়িয়ে জাতীয় পতাকে সম্মান প্রদর্শন করলাম। সিনেমাটা যেহেতু রোমান্টিক সিনেমা তাই আমাদের আগ্রহ টাও অনেক বেশি ছিল। তারপরে মনে মনে একটা ভয় ছিল সিনেমা দেখা শেষ করে বাড়িতে কিভাবে পৌঁছানো যায় সবার অজান্তেই। একদিকে যেরকম আনন্দ উপভোগ করছিলাম অন্যদিকে মনের মধ্যে একটি ভয় কাজ করতে ছিল। সিনেমাটি যখন আনুমানিক ৩০ মিনিট পার হয়ে গেল তখন হঠাৎ করেই কে যেন বলে উঠল সেই ভয়ংকর নামটির কথা। আর সেই নামটি হল মোঃ জেলহোসেন স্যার। স্যারের নামটি শোনার সাথে সাথে যে যার যার মত দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলো। তো আমি বসেছিলাম সিনেমা হলের পিছনের দিকে একটি চেয়ারে। কিন্তু বিভিন্ন ক্লাস থেকে এত পরিমান স্টুডেন্ট এসেছিলো যে স্যারের নাম শোনার সাথে সাথে অনেক ভিড় জমে গিয়েছিল বাহির হওয়ার জন্য।আমি সবার আগে বাহির হওয়ার জন্য সিটের উপর দিয়ে জাম যখন করতেছিলাম। ঠিক তখনই একটি ফ্যানের সাথে আমার মাথা লেগে ফ্যানটি বন্ধ হয়ে যায়।


তো বন্ধুরা আজকের পর্ব এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আমার কি অবস্থা হয়েছিল সেই অংশটুকু আপনাদের সাথে আগামী পর্বে শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ। সে পর্যন্ত আপনারা সবাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদে থাকুন আল্লাহ হাফেজ 💗🙏💗।

k75bsZMwYNtze9xHvT6xWCdz7q3QGD35ZKdaPpVrFksWkCyUAiXP2m1nJD351cseM5n4M89xXhNLcb3dfeBgH335jTD3fckm2SGxKbkuyaYT9Rbj1HAaZjPRVYnDLZispU1b7cSCEpskiFW34Y9LgmdWwdW6MPBDx.png


ফোনের বিবরণ

Zskj9C56UonWToSX8tGXNY8jeXKSedJ2aRhGRj6HDecqreqo2XAMzrcrFMezsQ2JYvnkCG8natanTeTWALXvA2X1jsqXD4Nf1w7BTTxEyx7JRMmmeNnz.png

ক্যামেরাস্যামসাং গ্যালাক্সি
ধরণগল্প ।
মডেলএম ৬২
ক্যাপচার@mahfuzur888
অবস্থানরাজশাহী- বাংলাদেশ


19-28-53-banner-abb3.png

3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3Ce9mzjKNKmBKDNB5bPjytfpGcNzZvsf4kqDNjsgbD5sqJcQmA1hgTqT9wQbCkTa3KEsqrYDBjB.gif

31Q3JAt52XV3K5QcbwxWSgVchhxuEjDPdvUXeiz5hyFcP6pgsytGKPH2yswNpfwm42DwgqpJvZarcjQfADhrdMojh3Bo8Y75dieBs7jEZH...chbbz54g2jJYzx9x1eZeGk7mVyAj9QCnk6CAu4DNeXdfLW4i8Rzh1PTvUQ8SjyvoWHrZjWxdfRY9SS14A8ddv6TSQKCxSsFrd47Yp4qKGuzsc1bqmyG34qn6H.webp

আমার পরিচয়


IMG-20240412-WA0011.jpg

আমার নাম মোঃমাহফুজুর রহমান।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের একজন সুনাগরিক। সর্বদাই নিজেকে দেশের মঙ্গল কামনায় ব্যস্ত রাখি। আমার জন্মভূমিকে আমি মায়ের মতো ভালোবাসি।আমি ভ্রমণ করতে খুবি ভালোবাসি।তাছাড়া ফটোগ্রাফি করতে আমার ভালো লাগে,আর রান্না করা আমার নেশা, এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে নতুন কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। তাই আমি আমার সৃজনশীলতা ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে চাই। এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়,ধন্যবাদ সবাইকে।🌹💖🌹।

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PxWHDWW9CETD5B5Jw9Q6ERAnD25KhyHKAX53jBLJKQRtPJf1WFG3aJd6PXbp2...SwCeUWfeYFqXEU6k9E1QBR3LLWpTGQPTugeRKSuzSqXPiupWgvjugsTQfwLmEzMp6y8qhddmwictcszT5MtchDJq2GfNthESS97LtxV2WaG7p797tQfCnHDy4R.gif

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন💖

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!

image.png

অনেক সুন্দর অতীত ইতিহাস তুলে ধরেছেন। যেখানে বেশ অনেক কিছু জানার সুযোগ করে দিয়েছেন আপনি। প্রথমত জানলাম ১৯৯৭ সালে আপনি ক্লাস নাইনে পড়তেন মানবিক বিভাগ নিয়ে। দিকে জেল হোসেন নামক শিক্ষকের ক্লাসের ভয়ে সবাই অজুহাত তৈরি করে ক্লাসে অনুপস্থিত থাকার চিন্তা করতেন। টিফিনের পরে হাওয়ায় টিফিন পিরিয়ডে অনেকে পালিয়ে যাওয়ার পায়তারা। আসলে বিস্তারিত জেনে অনেক ভালো লাগলো আর আমিও যেন আমার স্কুল লাইফ স্মরণ করতে পারলাম এক নিমিষে।

প্রতিটি স্কুলে একটি করে কঠিন স্যার থাকে এবং সেই স্যারকে ভীষণ ভয় পায় সকল ছাত্রছাত্রীরা।আপনারা দেখছি পালিয়ে স্কুল ফাঁকি দিয়ে সিনেমা দেখতে গেছেন এবং অনেকেই গেছেন। স্যারের নাম শুনে পালাতে গিয়ে মহা বিপদ হয়ে গেছে আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম মাথা লেগে ফ্যান বন্ধ হয়ে যাওয়ার মারাত্মক ঘটনাটি কি হবে জানার অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ পোস্ট টি ভাগ করে নিয়েছেন জন্য।