আস্সালামু আলাইকুম /আদাব 🤝
আমার প্রাণ প্রিয় বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা সবাই। আশা এবং বিশ্বাস করি আপনারা সবাই আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো ও সুস্থ আছি ।আমি @mahfuzur888, বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে আপনাদের সাথে আছি ।
আমার বাংলা ব্লগের প্রাণপ্রিয় বন্ধুরা, প্রতিদিনের মতো আজকে নতুন আরো একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম আপনাদের সবার মাঝে। আজকে আমি আপনাদের মাঝে ঢাকা সদরঘাটে লঞ্চ স্টেশনের কিছু অনুভূতি শেয়ার করতে চাচ্ছি। আসলে গত ০৯ ডিসেম্বর প্রতিদিনের মতো অফিসে গিয়েছিলাম এবং অফিসে যাওয়ার পর আমার এক কলিগকে দেখতে না পেয়ে তার কাছে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। এবং একে একে চতুর্থ বারের কলে সে মোবাইলটি রিসিভ করে। তাকে অফিসে না আসার কারণটা জানতে চাইলে উত্তরে সে বলে অসুস্থ। তো কি অসুস্থ এটা বলার পর সে বলল তার ডিসেন্ট্রি হয়েছে এবং অবস্থা খুবই জটিল। তো বিকালে অফিস শেষ করে আমি তাকে দেখতে গিয়েছিলাম এবং দেখলাম সে ভালই দুর্বল হয়ে পড়েছে। এদিকে আমার কলিগের আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলেছি তারা তাকে যেভাবেই হোক বাসায় যেতে বলেছিলেন। তো আমার কলিগের বাসা ছিল বরিশালে। তো আমার কলিগ বলল সে একটু শক্ত হলেই বাসায় চলে যাবে। এভাবে দুইদিন কাটানোর পর একটু শক্ত হয়েছে কিন্তুু স্বাভাবিকের চাইতে বেশি পরিমাণে লুজ মোশন ছিল। তাই বাসে যেতে ভয় পাচ্ছিল। তখন আমার কলিগের বাবা বরিশাল থেকে লঞ্চের একটি কেবিন বুক করে কেবিন নাম্বারটি বলে দিয়েছে। আর লঞ্চের কেবিন টি বুক করার অর্থ হলো ওই কেবিনের ভিতরেই সবকিছুই রয়েছে। তো আমার কলিগ আমাকে ১১ ই ডিসেম্বর এ ফোন করে বলল তাকে সদরঘাটে লঞ্চে দিয়ে আসতে। আমিও সাথে সাথে রাজি হয়ে গেলাম এবং অফিস একটু আগেই ছুটি করলাম। এবং সরাসরি আমার কলিগকে নিয়েএকটি সিএনজি করে সদরঘাট লঞ্চ স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা করলাম।
অবশেষে দীর্ঘ প্রায় তিন ঘন্টা সিএনজি জার্নি করার পরে পৌছে গেলাম কাঙ্ক্ষিত সদরঘাট লঞ্চ স্টেশনে। যদিও আমার কলিগ অসুস্থ ছিল কিন্তু আমার কাছে জায়গাটা ছিল সম্পূর্ণ নতুন। তাই কলিকে লঞ্চে উঠে দেওয়ার পাশাপাশি অনেকগুলো লঞ্চ একসাথে নোঙ্গর করা দেখে আমার ভালই লেগেছিল। তো আমরা যথারীতি সুন্দরবন নামের এই লঞ্চটিতে উঠে যাই এবং রিসিভশনে গিয়ে দেখি একটি টেবিলের উপরে অনেকগুলো চাবি ছড়ানো রয়েছে। এবং একজন এন্ট্রি করছে আরেকজন সেই কেবিন অনুযায়ী চাবি গুলো হাতে তুলে দিচ্ছে। তো আমার কলিগের কেবিন নম্বর ছিল ৩২৭। আমার কলিগের নাম ছিল আসিফ আর আসিফ নামেই কাবিনটা বুকিং ছিল। কেবিন নাম্বার এবং নাম বলার সাথে সাথে তারা রেজিস্টারে এন্ট্রি করে নিল এবং চাবিটি দিয়ে দিল।
আমি যেহেতু আগে কখনো যাত্রীবাহী লঞ্চে উঠিনি তাই লঞ্চে ওঠার সময় প্রত্যেকটা পদক্ষেপোই আমার কাছে ভালো লাগছিল। তাই দোতালায় যখন বেলকুনি দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন দেখতে পেলাম ছোট্ট একটি নৌকায় অনেকগুলো কার্টুন নিয়ে লঞ্চে লোড করছে। সবশেষে তিনতলায় উঠে আমাদের কাঙ্ক্ষিত ৩২৭ নম্বর কেবিন পেয়ে গেলাম। বেশ কিছু সময় কলিগের সাথে গল্প করে লঞ্চ ভ্রমণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে পাঁচটা সতেরো মিনিটে লঞ্চ থেকে নিচে নামতে থাকি।
যখন আমার কলিগকে বিদায় দিয়ে নিচে নামছিলাম তখন নদী দেখে আমার ভালোই লাগছিল। নদীর ওপারে সারি সারি বিল্ডিংগুলো দেখতে আমার কাছে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছিল। তাই সাথে সাথে ক্যামেরা বন্দি করে রেখেছিলাম আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। তারপর যখন আরো একটু নিচে নামলাম তখন দেখলাম বেশ কিছু পরিবার বেডশীট বিছিয়ে ফ্লোরে বসে আছে শুয়ে আছ। আর এই দৃশ্য দেখে আমার আর্মির চাকুরীর কথা মনে পড়ে গেল। আমার চাকুরীতে থাকা অবস্থায় বেশ কিছু কলিগ ছিল যাদের বাড়ি ছিল বরিশাল । তখন ঢাকা থেকে ছুটি যাওয়ার সময় একটা করে বেডশীট ব্যাগে ভরে নিয়ে যেত। আমরা জিজ্ঞেস করতেই তারা বলতো লঞ্চে বেড সিট বিছিয়ে ঘুমাবো। তখন শুনতাম আর আজকে বাস্তব সেই দৃশ্যটি দেখে নিলাম। এবং ভাবলাম আমার কলিগগুলো হয়তো এভাবেই বেডশীট বিছিয়ে নিজ গন্তব্যে চলে যেত।
অবশেষে আমি সুন্দরবন লঞ্চ থেকে নেমে যখন প্লাটফর্ম দিয়ে হেঁটে বাহিরের দিকে আসছিলাম তখন চতুর্দিক থেকে অন্ধকার নেমে আসছিল। আর সাথে সাথেই অন্যান্য ভিআইপি লঞ্চ গুলো তাদের লঞ্চে লাইটিগুলো জ্বালিয়ে দিল। যা দূর থেকে খুবই সুন্দর দেখাচ্ছিল। তাইতো আমি কাছে গিয়ে দুটি লঞ্চের ফটোগ্রাফি করে রেখেছিলাম আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। যাইহোক কলিগকে লঞ্চে উঠিয়ে দেওয়ার সুবাদে, জীবনের প্রথম সদরঘাট লঞ্চ স্টেশন দেখে আমার খুবই ভালো লেগেছিল বিধায় অনুভূতিগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।
আমার পরিচয়
আমার নাম মোঃমাহফুজুর রহমান।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের একজন সুনাগরিক। সর্বদাই নিজেকে দেশের মঙ্গল কামনায় ব্যস্ত রাখি। আমার জন্মভূমিকে আমি মায়ের মতো ভালোবাসি।আমি ভ্রমণ করতে খুবি ভালোবাসি।তাছাড়া ফটোগ্রাফি করতে আমার ভালো লাগে,আর রান্না করা আমার নেশা, এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে নতুন কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। তাই আমি আমার সৃজনশীলতা ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে চাই। এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়,ধন্যবাদ সবাইকে।🌹💖🌹।
https://x.com/mahfuzur888/status/1873764984062427173?t=LEO3Ci5eMnCwLByub0msQA&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমারও কখনো সদরঘাট যাওয়া হয়নি। কেবল সিনেমা আর অন্যের কাছে গল্পেই শুনতাম আজকে আমার সৌভাগ্য হলো আপনার পোস্ট মাধ্যমে জানতে পারলাম এবং দেখতে পারলাম।আপনার কলিগ অসুস্থ শুনে খারাপ লাগলো, দ্রুত তার সুস্থতা কামনা করছি।ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার প্রথমবার সদরঘাট যাওয়ার অনুভুতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার সম্পূর্ণ্য পোস্টটি দেখে অত্যন্ত সাবলীল ভাষায় একটি গঠনমূলক মন্তব্য করে আমার পাশে থেকে আমাকে উৎসাহ দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক সুন্দর একটি গোছালো পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আমারও লঞ্চে ওঠার অভিজ্ঞতা নেই। তবে ফেরি পারাপার হয়েছি বেশ কয়েকবার। যাইহোক অনেক সুন্দর একটা পোস্ট কিন্তু আমাদের উপহার দিয়েছেন। অনেক ভালো লাগলো এত সুন্দর ভাবে একটি পোস্ট উপস্থাপন করতে দেখে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার ছবিতে যে লঞ্চের ছবিটি তুলে ধরেছেন সেটি তো ভীষণ সুন্দর লাগছে। শেষের দিকে ছবিগুলো একেবারে আলো ঝলমল করছে লঞ্চের ভিতর। এই লঞ্চ গুলির ভিডিও আমি দেখেছি। আজ আপনার পোস্টে তার ডিটেলস পড়ে জানতে পারলাম। আপনার কলিগকে তুলে দেওয়ার সাথে সাথে আপনারও একটি সুন্দর অভিজ্ঞতা হলো লঞ্চগুলির বিষয়ে। দারুন সুন্দর লাগলো আপনার এই পোস্টটি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সদরঘাটে কখনো যাওয়া হয়নি, তবে আপনার অনুভূতি জানতে পেরে খুবই যেতে ইচ্ছা করলো। আপনি খুবই সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। আপনার কলিগকে উঠিয়ে দিয়েছেন জানতে পেরে ভালো লাগলো
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে এসব জায়গাগুলোতে হঠাৎ করে গেলে অনুভূতি অন্যরকম লাগে। আপনি দেখতেছি আপনার কলিগ অসুস্থতার কারণে তাকে নিয়ে আপনি সদরঘাটে গেলেন। এবং সদরঘাট জায়গাটির নাম সব সময় শোনা যায় কখনো সামনে থেকে দেখতে পারি নাই। ভালো লাগলো আপনার সুন্দর অনুভূতি পোস্ট পড়ে সদরঘাটে পদার্পণ যাওয়ার।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit