শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি- আমি যখন প্রেমের পিয়ন II written by @maksudakawsar II

in hive-129948 •  2 months ago 

আসসালামু আলাইকুম

আমরা যারা আমাদের শৈশবটাকে ফেলে এসেছি। তারা কিন্তু প্রত্যেকেই চাই আবার সেই শৈশবে ফিরে যেতে। চাই শৈশবটাকে আবার খুব কাছ হতে উপভোগ করতে। মাঝে মাঝে হয়তো আমরা কেউ কেউ আমাদের সেই শৈশবে ফিরে যাই। ফিরে যাই হাজারও স্মৃতির মাঝে। কারন আমরা কেউ কখনও আমাদের জীবন থেকে ফেলে আসা শৈশব কে মুছে দিতে পারবো না।

কেমন আছেন সবাই? বেশ ভালো আছেন নিশ্চয়। আসলে প্রিয় মানুষগুলো ভালো থাকুক এই কামনাই করি। প্রতিদিনের মত করে আজও চলে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন করে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আসলে সব সময়ই ভাবী যে নিজের মনের মাঝে ঘুরপাক খাওয়া কথা গুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। তাই তো আজও আবার সেই ছেলেবেলার কিছু স্মৃতি কথা নিয়ে চলে আসলাম আপনাদের মাঝে। আশা করি আমার আজকের পোস্টটিও আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে।

HOUR (5).png

CANVA দিয়ে তৈরি

শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি-আমি যখন প্রেমের পিয়ন

বয়স আর তখন কত হবে। তবে তখন আর প্রেম কি বুঝতাম না। শুধু টিভি আর সিনেমায় দেখতাম নাচানাচি করতে। যাই হোক। একদিন আমার মনে একটি প্রশ্ন জেগেছিল। সেটা অবশ্য পড়ে বলবো। যেহেতু তখন খুব ছোট ছিলাম তাই আমাদের এলাকার বড়রা সবাই আমাকে বেশ আদর করতো। প্রায় আমাকে চকলেট কিনে দিতো। কিন্তু কেন যে এসব কিনে দিতো সেটাই তো বুঝতাম না। ভাবতাম আমাকে বেশ আদর করে। আরে না রে ভাই এমনি এমনি কি কেউ আদর করে নাকি? এমনি এমনি যে কেউ আদর করে না সেটা এখন বুঝি। যাই হোক এমন চকলেট আর আচার পেয়ে কিন্তু বেশ ভালো লাগতো।বেশ মজা করে বন্ধু বান্ধব নিয়ে খাওয়া দাওয়া করতাম।

কিন্তু সে সময়ে এই চকলেট আর আচার পেতে আমাকেওে একটু কষ্ট করতে হতো। মানে কিছু লাল নীল খাম একজনের কাছ হতে আর একজনের কাছে পৌঁছে দিতে হতো। কিন্তু খামের মধ্যে কি ছিল সেটা বুঝে উঠার শক্তি তখন আমার ছিল না। শুধু বুঝতাম ভাইয়ারা আপুদের খাম পাঠাতো। আবার আপুরাও ভাইয়াদের খাম পাঠাতো। তবে বেশ কিছু দিনের মধ্যে কিন্তু আর বুঝতে দেরী হলো না যে খাম দেওয়া ভাইয়া আর আপুরা একজন আর একজন কে পছন্দ করে। মানে প্রেম করে। কিন্তু আমার ভিতরে একটা প্রশ্ন কাজ করতো। এই যে ভাইয়ারা আর আপুরা একজন আর একজনের সাথে চিঠি চালাচালি করে আর প্রেম করে তাহলে তারা কেন সিনেমার নায়ক নায়িকাদের মত করে ডান্স করে না। আর গান করে না? যা এখন বুঝতে পারছি কেন করে না।

বিষয়টা কিন্তু কেবল খাম চালাচালির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। মাঝে মাঝে আমাদের কে আবার তাদের কে ডেকে নিয়ে নীরব কোথাও দেখা সাক্ষাতের ব্যবস্থাও করে দিতে হতো। আরে মানে বুঝলেন না। দুজন দুজনার সাথে যেন একটু ভাব বিনিময় করতে পারে সেটার ব্যবস্থা করে দিতে হতো। তবে এ ক্ষেত্রে আমাদের চার্জ একটু বেশীই হতো। যদি কেউ চার্জ কম দিতো তাদের কে আমরা বেশী সময় ভাব বিনিময় করার সুযোগ দিতাম না। মানে তারা যখন ভাব বিনিময় করতো তখনহঠাৎ আমরা চিৎকার করতাম মানুষ আসছে বলে। আর তখনই দুজন দুদিকে ছুটে যেত। এই বিষয়টা যখন তারাও বুঝতে পারলো তখন তারা আর আমাদের কে কম দিতে পারতো না।

একদিন তো এক ঘটনা ঘটলো। আমাদের এক বড় ভাই আর আপু দেখা করবে। তো আমরা ব্যবস্থা করলাম আপুদের বাসার ছাদে। কথা হলো আপুর আম্মুও তখন শেলোয়ার কামিজ পড়তো। তো ভাইয়া ছাদে গিয়ে আপুর আম্মুকে আপু মনে করে হাত ধরেছিল। আর আপুর আপু তো ছাদে থাকা লাঠি দিয়ে এক দৌড়ানি। তবে আপুও কিন্তু ছাদেই ছিল। কখন যে উল্টো পাল্টা হয়ে গেল সেটাই আমরা বুঝতে পারি না। তাই সেবার আর কোন আয় হয়নি। বরং পেদানী খেয়েছিলাম বেদম। আজওে সেই ছেলেবেলার প্রেমের পিয়ন হওয়ার কথা গুলো ভুলতে পারি না। মনে হলে নিজে নিজেই খিল খিল করে হাসি।

শেষ কথা

সত্যি বলতে মুছে যাওয়া দিন গুলো আমায় যে পিছু ডাকে। তাই তো মনে ইচ্ছে জাগে একবার যদি সুযোগ পেতাম তাহলে আবার শৈশবে ফিরে যেতাম। আপনাদের ইচ্ছে কি একটু জানাবেন তো। অপেক্ষায় রইলাম আপনাদের মতামতের।

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।

image.png

image.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

বেশ মজার কিছু স্মৃতি শেয়ার করেছেন আমাদের সাথে। বেশ পাখনা ছিলেন বোঝায় যাচ্ছে ছোট বেলায়। আপু ভাইয়ার দুর্বলতার সুযোগে বেশ কামিয়ে নিয়েছিলেন তখন। যাহোক, পেদানী খাওয়ার কাহিনীটি আরও মজার :)

ভাল থাকুন। শেয়ার করতে থাকুন ছোট বেলার স্মৃতিগুলো!


ক্ষুদে স্বাস্থ্যবার্তা

রক্তের সুগার (Blood sugar) পরিমাপ করা হয় সাধারণত ২টা ইউনিট এ; মি.লি.মোল (mmol/l) এবং মি.লি.গ্রাম (mg/dl)। আমরা অনেকেই কনফিউজড থাকি এটা নিয়ে। খুব সহজেই একটা থেকে অন্যটাতে কনভার্ট করা যায়। মি.লি.মোল × ১৮= মি.লি.গ্রাম এবং মি.লি.গ্রাম ÷ ১৮= মি.লি.মোল।

উদাহরণ দেখিঃ ১। রক্তের সুগার ৫ মি.লি.মোল= ৫ × ১৮= ৯০ মি.লি.গ্রাম। ২। রক্তের সুগার ১৮৫ মি.লি.গ্রাম= ১৮৫ ÷ ১৮=১০.২৭ মি.লি.মোল।

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।

হুম আমিও শুনেছি এসব কথা। আপনি নাকি আপনার বান্ধবীদের নিয়ে এসব কাজ করে বেড়াতেন। যার জন্য আপনি পেদানীও খেয়েছেন অনেক। যাই হোক এমন করে সে সমস্ত কথা আমাদের মাঝে সুন্দর করে তুলে ধরার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।

ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।