আসসালামু আলাইকুম।
প্রথমেই আমি প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের সম্মানিত ফাউন্ডার
@rme দাদা এবং সম্মানিত এডমিন প্যানেল কে ধন্যবাদ জানাতে চাই। যাদের মেধা ও সৃজনশীলতা দিয়ে এই প্লাটফর্মের প্রতিটি সদস্যকে জ্ঞান বিকাশে সহায়তা করে আসছে।
যে কোন প্রতিযোগীয় অংশগ্রহণের জন্য অংশগ্রহণকারীর জ্ঞান, মেধা আর সৃজনশীলতা থাকা প্রয়োজন। কারন প্রতিযোগীতা মানেই হলো হারজিৎ। প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণের ফলে একদিকে যেমন আমাদের জ্ঞানের বিকাশ ঘটে।আবার অন্যদিকে প্রতিযোগীদের মাঝে তৈরি হয় ভাতিত্ববোধ ও বন্ধুত্ব।
এবার আমার বাংলা ব্লগের প্রতিযোগীতার বিষয়টি অনেক সুন্দর এবং আকর্ষণীয়। আর এবারের বিষয় হলো-”শেয়ার করো তোমার প্রথম মোবাইল পাওয়ার অনুভূতি”।
”শেয়ার করো তোমার প্রথম মোবাইল পাওয়ার অনুভূতি”- প্রতিযোগীতায় আমার অনুভূতি শেয়ার করার মধ্য দিয়ে প্রতিযোগীতায় আমার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করলাম।
তাহলে শুরু করা যাক প্রথম মোবাইল পাওয়ার অনুভূতির গল্প।
আমি তখন সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজে এইচ এস সি তে পড়াশুনা করি। আর পড়াশুনা করার পাশাপাশি আমি কিছু প্রাইভেট টিউশনিও করি। কিন্তু আমার কোন মোবাইল ফোন ছিল না। যার জন্য আমার নিজের পড়াশুনা বিষয়ে ক্লাস মেটদের সাথে যোগাযোগ করা এবং আমার ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে বিভিন্ন প্রয়োজনে যোগাযোগ করাটাও আমার কাছে খুবই কঠিন ছিল। এদিকে আবার আমার সকল বন্ধুদেরই মোবাইল আছে। তখন তো আর এখনকার মত এত এড্রোয়েড ফোন এর জয়ঝংকার ছিল না। তখন বেশীর ভাগ মোবাইল ফোন ই ছিল বাটন সিস্টেম।
কপিরাইট ফ্রি ছবি সোর্স
বাবা সরকারি চাকুরী করতেন। সংসার খরচ, ভাই বোনদের পড়াশুনার খরচ সব মিলিয়ে বাবা এমনিতেই হিমশিম খেয়ে যেত। তাই মনের মধ্যে মোবাইল ব্যবহার করার সুপ্ত বাসনা থাকা স্বত্বেও কোন দিন বাবাকে মুখ /ফোটে বলতে পারিনি মোবাইল ফোন এর কথা। আর আমি যেহেতু প্রাইভেট টিউশনি করি তাই ভেবে দেখলাম এখান থেকে কিছু টাকা জমিয়ে দুই মাসে একটিা সেট কিনে ফেলবো। তাই সাথে আরও দুইটা টিউশনি বাড়িয়ে দিলাম এবং দীর্ঘ দুই মাস অপেক্ষা করার পর অবশেষে আমার মোবাইল সেট কেনার সময় চলে আসছে। শেষ হলো অপেক্ষার পালা।
জীবনের প্রথম মোবাইল আমি কিনবো তাই আমার মধ্যে অনেক টান টান একটা উত্তেজনা বিরাজ করছে। আমি মোবাইল কিনবো। আমারও একটা মোবাইল হবে। বন্ধুদের কে বলতে পারবো আমার ও মোবাইল আছে। এসব কিছু মিলিয়ে আমি অনেক এক্সাইটিং ছিলাম। অবশেষে ছোট ভাই কে নিয়ে চলে গেলাম মোবাইল কেনার জন্য। এটা সম্ভবত দুই হাজার পাঁচ -ছয় সাল। কতগুলো যে দোকান ঘুরেছি মোবাইল কেনার জন্য । বেশ কিছু দোকান আর বেশ কিছু ব্রান্ড এর মোবাইল ফোন দেখলাম। তখন আবার সেটের সাথে সিম কোম্পানীর প্যাকেজ ও চলত। গ্রামীন, একটেল আর টেলিটক। অবশেষে আমি একটি সিটিসেল এর প্যাকেজ মোবাইল নিলাম। আমার সেট টি ছিল মটোরোলা। মডেল টি আমার মনে পড়ছে না।
কপিরাইট ফ্রি ছবি সোর্স
জীবনের প্রথম মোবাইল কিনে আমার কি যে অনুভূতি হলো। আমি মোবাইল টি হাত ছাড়াই করতে পারছি না। সারা রাত্র জেগে মোবাইল নিয়ে নাড়াচাড়া করতে রাখলাম। আফসোস তখন তো আর সেলফি তোলার ক্যামেরা ছিল না। যে আমার অনুভূতিগুলো ক্যামেরা বন্দী করতে পারতাম তাহলে আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারতাম।
কপিরাইট ফ্রি ছবি সোর্স
পরদিন সকালে আমি ঘুম থেকে উঠে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে মোবাইল নিয়ে আর ডাইরী নিয়ে আমার মোবাইল কেনার খবরটি আমার বন্ধবী, আত্নীয় স্বজনদের জানাতে বসে গেলাম। আর কি উঠা হয়। কিসের নাস্তা আর কিসের কি। মোবাইল কেনার খুশি তো আশি ধরে রাখতে পারিছি না।
কপিরাইট ফ্রি ছবি সোর্স
কিন্তু আমার এত এত খুশি নিমিষেই শেষ হয়ে গেল। একদিন দুপুরে বাসায় একজন লোক আসে সাহায্য চাওয়ার জন্য। আমি তখন তাকে এটেন্ড করি। জানিনা আর আমি বিশ্বাসও করি না। কিন্তু লোক টা আমাকে কিভাবে যেন কি করে ফেললো। আমি লোকটি কে আমাদের ঘরের ভিতর বসতে দেই এবং তার কথা শুনতে থাক্। বাসায় তখন আমি আর আমার ছোট বোন ছাড়া আর কেউ ছিল না। আর সেই লোকটা আমাদের কে চোখ বন্ধ করে কি যেন পড়তে বলে। তখন আসলে এগুলো বিশ্বাসও করতাম। তাই লোকটির কথা মত চোখ বন্ধ করি। দশমিনিট পর চোখ খুলে দেখি লোকটি আর নেই। এবার বেশ কিছুক্ষন পর খেয়াল হলো সুকেস এ রাখা আমার সে সাধের মোবাইলটি ও আর নেই। অনেক খুজা খুজি করে তাকে আর খুজে পাই নি। তবে তখন আমি সাথে সাথে সিটিসেল অফিসে ফোন করে আমার সেই সিম ও সেটটি লোক করে দেই যাতে সেট টা কেউ আর ব্যবহার করতে না পারে। আমার জীবনের প্রথম কেনা আমার সাধের মোবাইলটি সেই যে হারিয়ে গেল আমি আর ফিরে পেলাম না।
কপিরাইট ফ্রি ছবি সোর্স
আমি চেষ্টা করেছি আমার জীবনের প্রথম মোবাইলটির যে অনুভূতি আমি পেয়েছি তা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে। জানিনা কতটুকু পেরেছি। ফলাফলের অপেক্ষায় রইলাম।।
আপনারা ভাল ও সুন্থ থাকুন।
আমি মাকসুদা কাউছার, খিলঁগাও, ঢাকায় বসবাস আমার।
বাংলা আমার মায়ের ভাষা, বাংলা আমার অস্থিত্ব। আর এই বাংলায় আমার মনের ভাব প্রকাশ করতে যে কমিউনিটি আমাকে সুযোগ দিল তার প্রতি রইল অবিরাম ভালবাসা।
আপনার পোস্টের শেষের অংশ ডাবল হইয়ে গেছে। ঠিক করুন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক করে দিয়েছি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit