নাটক রিভিউ- তুই জীবন ||Drama Review|

in hive-129948 •  29 days ago 

আসসালামু আলাইকুম

নিজেকে নতুন রূপে তুলে ধরার মত এত আনন্দ হয়তো বা অন্য কিছুতে পাওয়া যায় না। আমরা প্রত্যেকেই চাই যে আমাদের ক্রেয়েটিভিটি গুলো অন্যের মাঝে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলতে। হয়তো এর জন্যই কিন্তু আমরা প্রতিনিয়ত নিজেদের কে সাজাই নতুন রূপে। আমিও প্রায় সকল সময়ই চেষ্টা করে যাই যে আমি যেন নতুন নতুন ব্লগগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করে যেতে পারি। হয়তো ব্যাস্ততার কারনে তা হয়ে উঠে না। তবে আজ কিন্তু আবার কিছুটা ভিন্ন রকমের ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম আপনাদের মাঝে।

নাটক আমরা সবাই দেখি। তার উপর আমাদের দেশের নাটক গুলো কিন্তু বেশ দারুন হয়। কিছু কিছু নাটক কিন্তু একেবারে মানের সাথে মিশে যায়। বার বার দেখতে ইচ্ছে করে। বর্তমানে আমাদের দেশে যে কজন অভিনয় শিল্পী আছে তাদের মধ্যে অনেক জুটি কিন্তু বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। আজ আমি তেমনি একটি জুটির নাটক রিভিউ আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। আশা করি আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে।

নাটক রিভিউ-তুই জীবন

Screenshot_১.png

প্রাপ্তি: YouTube

নাটকের কিছু তথ্য

নামতুই জীবন
পরিচালকমোঃ রফিকুল ইসলাম
রচনারুবেল আনুষ
অভিনয়মুশফিক আর ফারহান,আয়শা খান, মিলি বাসার আরও অনেকে
দৈর্ঘ্য৪০মিনিট ৩৯ সেকেন্ড
মুক্তির তারিখ৪ই জুলাই/২০২৪
ধরননাটক
ভাষাবাংলা
দেশবাংলাদেশ
প্রচারআরটিভি

চরিত্র

★ মুশফিক আর ফারহান- ফরিদ
★আয়শা খান - জুঁই

কাহিনী সংক্ষেপ

Screenshot_1.png

Screenshot_2.png

প্রাপ্তি: YouTube

ফরিদ এবং জুঁই চাচাতো ভাই বোন। নাটকের প্রথমেই দেখা যায় জুইঁ স্কুল হতে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে বাসায় ফিরছে। যা দেখে ফরিদ তার ছাতা দিয়ে জুঁই কে বৃষ্টি থেকে রক্ষা করে এবং নিজের ছাতি জুঁই কে দিয়ে দেয়। পরদিন জুঁই পায়েস দেওয়ার উছিলায় ফরিদদের বাড়ীতে যায়। যেয়ে দেখে ফরিদের জ্বর। তখন জুঁই ফরিদ কে পায়েস খাইয়ে দেয়। জু্ঁই ফরিদ কে বলে যে তার মনের কথা মুখে বলতে পারে না তার কি দরকার ছিল ছাতি দিয়ে বৃষ্টিতে ভেজা। এরপর জুঁই বাড়ীতে চলে যায়। এদিকে জুঁই এর বড় বোন তার বাবার কাছে ফোন করে। কিন্তু জুঁই এর বাবা তার মেয়ে কে আর ফোন দিতে না করে। জুঁই এর বাবার রাগের কারন সে প্রেম করে তার পছন্দের ছেলে কে বিয়ে করে বাড়ী ছেড়ে চলে যায়। এদিকে জুঁই এর বাবা ফরিদ কে জুঁই কে স্কুলে দিয়ে আসতে বলে। তখন জুঁই কে ফরিদ তার হোন্ডায় নিয়ে গেলে জুঁই আর স্কুলে না যেয়ে ফরিদ কে নিয়ে ঘুরতে যেতে চায়। ফরিদ যেতে রাজী না হলে জুঁই তার বাবার ভয় দেখায়।

Screenshot_3.png

Screenshot_4.png

প্রাপ্তি: YouTube

এদিকে জুঁই এর বাবা তার বিয়ে ঠিক করে গ্রামের এক ধনী পরিবারের ছেলের সাথে। তাই ছেলে পক্ষ এসে জুঁই কে দেখে যায়। আর এমন কথা শুনে ফরিদের মন খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু ফরিদ নিজের মনের কথা কাউকে বুঝিয়ে বলতে পারে না। এদিকে জুঁই এর বাবা ফরিদের বাসায় আসে জুঁই এর বিয়ের মিষ্টি নিয়ে। কিন্তু এর মধ্যেই ফরিদের মা বুঝে যায় যে তার ছেলে জুঁই কে ভালোবাসে। কিন্তু সেও জুঁই এর বাবা কে বলতে পারে না। জুইঁ এর বিয়ের কথা শুনে ফরিদের বেশ মন খারাপ। কিন্তু ফরিদ তার কষ্ট চাপা দিয়ে জুঁইদের বাসায় যায়। কারন জুঁই এর বাবা বিয়ের সব দায়িত্ব ফরিদ কে পালন করতে বলে। যেহেতু জুঁই এর বাবা ফরিদের মরব্বি তাই ফরিদ তার কথা ফেলতে পারে না।

Screenshot_5.png

Screenshot_6.png

প্রাপ্তি: YouTube

এদিকে জুঁই কে স্কুলে দিতে গেলে রাস্তায় ফরিদের হোন্ডা নষ্ট হয়ে যায়। তখন জুঁই এর হবু স্বামী ফরিদ কে অপমান করে। অন্যদিকে জুঁই এর বাবা ফরিদ কে বিয়েতে সব আত্মীয়দের দাওয়াত দিতে বললে ফরিদ জুঁই এর বোনের কথা বলে। তখন জুঁই এর বাবা রেগে যায়। ফরিদ তখন বুঝতে পারে বড় মেয়ে প্রেম করে বিয়ে বসায় চাচা কতটা কষ্ট পেয়েছে। এদিকে জুঁই ফরিদের সাথে দেখা করে তার ভালোবাসার কথা বলে। কিন্তু ফরিদ শুধু জুঁই এর কথা শুনে কিন্তু উত্তরে কিছু বলে না। কারন ফরিদ বুঝতে পারে যে এই ভালোবাসার পরিনতি কি হতে পারে। তাই ফরিদ জুঁই এর কাছে নিজের ভালোবাসার কোন প্রকাশ করে না।

Screenshot_7.png

Screenshot_8.png

Screenshot_9.png

প্রাপ্তি: YouTube

এদিকে জুঁই এর বিয়ের সব আয়োজন চলছে। ফরিদ সব দেখা শুনা করছে। বিয়ের সব আয়োজন ফরিদ নিজ হাতে করছে। আর এই সব কিছু জঁই দূর হতে চেয়ে চেয়ে দেখছে। বি কষ্টের দৃশ্য। প্রেমিকের সামনে প্রেমিকার বিয়ে। কিন্তু কেউ কিছুই বলতে পারছে না। এদিকে পরিচালক নাটকের এমন জায়গায় একটি গান প্লে করে। যাই হোক এবার জুঁই রাতে ফরিদের সাথে দেখা করে। এবং জুঁই ব্যাগ নিয়ে বাড়ী থেকে বের হয়ে আসে। সে ফরিদ কে নিয়ে অনেক দূর চলে যাবে। কিন্তু না ফরিদ জুঁই কে ফিরিয়ে দেয়। পাশে চাচার মান সম্মান নিয়ে টান দেয়। কারন ফরিদের বাবা মারা যাওয়ার পর এই চাচাই ফরিদ কে মানুষ করে।জুঁই ফরিদের এমন ব্যবহারে বেশ কষ্ট পায়। কাউকেউ সে কষ্ট বুঝতে দেয় না।

Screenshot_10.png

Screenshot_11.png

প্রাপ্তি: YouTube

এদিকে জুঁই এর বিয়ে হয়ে যায়। জুঁই এখন শ্বশুড় বাড়ী যাবে। তাই জঁই তার বাবা মায়ের কাছে আবদার করে আজও যেন ফরিদ জুঁই কে তার শ্বশুড় বাড়ীতে দিয়ে আসে। যেমন করে জুঁই কে ফরিদ স্কুলে দিয়ে আসতো। জুঁই এর এমন আবদারে জুঁইএর বাবা মা ফরিদ কে বলে জুঁই কে তার শ্বশুড় বাড়ী দিয়ে আসতে। তাই ফরিদ চাবি নিয়ে গাড়ীর দরজা খুলে গাড়ীতে বসে থাকে আর অন্য দিকে জুঁই গাড়ীতে উঠতে যাবে। এমন সময় জুঁই মাটিতে পড়ে যায়। এবং মারা যায়। অন্য দিকে জুঁই এর এমন অবস্থা দেখে ফরিদ কে ডাকতে গেলে তখন দেখা যায় গাড়ীর ভিতরে ফরিদও মরে পড়ে আছে। আর এমন সময়ই নাটকটি শেষ হয়ে যায়।

Screenshot_12.png

প্রাপ্তি: YouTube

image.png

ব্যক্তিগত মতামত

আমি জানিনা আমার রিভিউ করার পর আপনারা কেউ নাটকটি দেখবেন কিনা। তবে আমি কিন্তু এ পর্যন্ত নাটকটি কয়েবার দেখেছি। আমার কাছে নাটকটি অসাধারণ লেগেছে। তাই তো আমি যতবার নাটকটি দেখেছি ততবার আমার ভালো লেগেছে। পরিচালক নাটকটিতে একদম বাস্তবতার ছোঁয়ায় ভরে দিতে পেরেছে। দুজন মানুষের মধ্যে সত্যিকারের ভালোবাসা থাকলে কি ঘটতে পারে সেটাই ফুটিয়ে তুলেছেন এখানে। আসলে এমন করেই পৃথিবীতে যে কত না বলা ভালোবাসা বুকে চেপে থাকে। আর কত মানুষই যে ভালোবাসার জন্য এমন করে নিজের জীবন কে বিপন্ন করে।

ব্যক্তিগত রেটিং

১০/১০

নাটকটির লিংক

শেষ কথা

যদিও ব্যস্ততার কারনে নাটক দেখা হয়ে উঠে না। তবে মাঝে মাঝে দু একটি নাটক কিন্তু মন ছুঁয়ে দেয়। আশা করি আপনারাও নাটকটি একবার দেখবেন।

image.png

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।

image.png

image.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

দারুন একটি নাটক তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ইতিমধ্যে। এ জাতীয় প্রেম ভালোবাসা মূলক নাটক গুলো আমার খুব ভালো লাগে। তবে এ সমস্ত নাটকের মধ্যেও বেশ দারুন কাহিনী এবং ভালোবাসার আবেগ অনুভূতি হাসি কান্না থেকে থাকে। তাই এমন নাটক আমিও খুব পছন্দ করি।

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

এই নাটকটি আমি কয়েকদিন আগে দেখেছিলাম। নাটকটি দেখে বেশ ভালো লেগেছিল। নাটকের নায়ক এবং নায়িকা একে অপরকে প্রচন্ড ভালোবাসতো। তবে ফারহান যদি চাইতো,তাহলে নায়িকাকে নিয়ে পালিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু নায়িকার বাবার অর্থাৎ ফারহান তার চাচার মুখের দিকে তাকিয়ে কিছুই করেনি। লাস্টে দু'জনেই মারা যায়। যাইহোক এই নাটকের রিভিউ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

সত্যি বলতে আপু কয়েকদিন আগে আমি এই নাটকটি দেখেছিলাম। আসলে নাটকটি আমার কাছেও কিন্তু ভীষণ ভালো লেগেছে। কিন্তু শেষমেষ দুজনের মৃত্যুটা যেন নাটকের পুরো ঘটনা বদলে দিল। আমি কিন্তু প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো শেষমেশ সবাই মেনে নেবে। কিন্তু তারা কাউকে না বলে দুজনের মধ্যে চেপে রেখেছিল তাই শেষমেষ তাদের এভাবে মৃত্যু হল। যাইহোক বেশ ভালো লাগলো আপনার পুরো নাটকের রিভিউ দেখে।

ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

আপু আপনি অনেক সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করছেন। মুশফিকের নাটক আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আপনার শেয়ার করা নাটক টি কয়েকদিন আগেই আমি দেখলাম। যাইহোক আপনার পোস্টে নাটকের রিভিউ টা পড়ে আরো বেশি ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

খুব সুন্দর একটি নাটক রিভিউ করেছেন আপু। যদিও নাটকটি আমার দেখা হয়নি। তবে নাটকের গল্পটি ভীষণ ভালো লেগেছে। আর আপনি খুব সুন্দর ভাবে নাটকের পুরো গল্পটি উপস্থাপন করছেন। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

এমন সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

সুন্দর একটা নাটক, ভালোই লাগলো ভাইয়া।

ধন্যবাদ আপনাকেও।

খুবই সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ করেছেন আপনি। আসলে নাটকের রিভিউ পোস্ট দেখলে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। যে নাটকটি আমি দেখি নাই সে নাটক দেখার সুযোগ হয়। কারণ সব সময় আপনারা সুন্দর নাটকগুলোর রিভিউ করে থাকেন। চমৎকার একটি নাটকের রিভিউ করার জন্য ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

অনেক বেশি সুন্দর ছিল এ নাটকটার রিভিউ। কিন্তু নাটকের শেষে ভালোবাসা পূর্ণতা পেলো না, এটা দেখে অনেক খারাপ লেগেছে আমার কাছে। ফারহানের নাটকগুলো আমি দেখতে অনেক বেশি পছন্দ করি। আর আয়েশাও আমার অনেক পছন্দের অভিনেত্রী। এই নাটকটা শুরু থেকে বেশ ভালোই লাগছিল। কিন্তু শেষে এরকম কিছু হবে এটা ভাবতেই পারিনি। ফারহান তার চাচার মান সম্মানের কথা ভেবে আইসা কে নিয়ে পালায়নি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দুজনে মারা গেলো বিষ খেয়ে। এটা দেখে সত্যি চোখে জল চলে এসেছে একেবারে।

আপু এমন সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।