আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
শুভ রাত্রি প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সকলকে। সেই সাথে অবিরাম ভালোবাসা সকলের প্রতি। সকলের সুস্থতা এবং সুন্দর জীবন কামনা করেই আজ আবার শুরু করতে যাচ্ছি আমার আজকের ব্লগটি। মন খারাপ থাকলে প্রায় চলে যাই বাহিরে। প্রকৃতির কাছে। নিজেকে একখানি প্রাণবন্ত করে তুলতে। কারন মন যখন খারাপ থাকে তখন মনটা হয়ে থাকে অনেক অস্থির। আর প্রকৃতির মাঝে ছুটে গেলে সেই অস্থিরতা থেকে অনেকটা মুক্তি পাওয়া যায়। আর এই কারনেই সেদিন ছুটে গিয়েছিলাম প্রকৃতির কাছে।
এই তো কয়েকদিন আগের কথা। হঠাৎ মিরপুরে গিয়েছিলাম ডাক্তার দেখাতে। সেদিন অবশ্য আগে থেকে প্লান করেই গিয়েছিলাম যে ডাক্তার দেখানোর পর কিছুটা সময় একটু ঘুরে বেড়াবো। তো ডাক্তার দেখানো শেষ হলে দুপুরের খাবার সেড়ে নিলাম একটি হোটেলে। তারপর ভাবনা চিন্তা করতে লাগলাম যে কোথায় যাওয়া যায়? তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম কাছাকাছি মিরপুর বেড়িবাধেঁ একটু ঘুরে বেড়াবো। যেই ভাবা সেই কাজ। সেখান থেকে পঞ্চশ টাকায় চলে গেলাম মিরপুর বেড়িবাধেঁ। কিন্তু না আমরা তখনও বেড়ে বাধেঁ পৌঁছাতে পারিনি। কারন রিক্সাওয়ালা আমাদের ভুল জায়গায় নামিয়ে দিয়েছে। ঢাকার শহরে জায়গা না চিনলে যা হয় আর কি। তারপর আবার আর একটি অটো ঠিক করলাম। সেখানেও খেলাম ধোকা। মামা একশত টাকা ভাড়া নিয়ে ১০-২০ কদম দূরে নিয়ে নামিয়ে দিয়ে বলে এটাই বেড়িবাধঁ। কি আর করার। ঝগড়া করবো নাকি?
তারপর আমরা বেড়িবাধেঁর দিকে এগোতে লাগলাম। কিন্তু সেখানেও টাকা। দুজনে বিশ বিশ চল্লিশ টাকা দিয়ে ভিতরে ঢুকে গেলাম। কিন্তু হায় ভিতরে তো শুধু নদী ছাড়া আর কিছুই নেই। ভাবতে লাগলাম আমাদের দেশের কি অবস্থা। তারপর কিছুটা সময় বসে রইলাম প্রকৃতির মাঝে। রৌদ্র একটু কমার জন্য। কারন রোদ একটু কমলেই আমরা নৌকা ভাড়া করবো নদীতে ঘুরার জন্য। বেশ কিছুক্ষন পর রোদ্র কমে আসলে নৌকা ঠিক করা শুরু করলাম। বাপরে বাপ ঘাটে তো নৌকার অভাব নেই। কিন্তু কেউ তো দেখি ঘন্টায় ছয়শত টাকার নিচে যেতে চায় না। অনেক দামাদামী করার পর একটি ছোট ছেলেকে পেলাম। যে নাকি ৩০০ টাকায় এক ঘন্টা ঘুরাতে রাজি হয়েছে। তারপর আমরা সেই ছেলেটির নৌকায় উঠে পড়লাম।
আমরা উপভোগ করতে লাগলাম দূরের আকাশ নদীর বুকে মিশে যাওয়ার দৃশ্য। উপভোগ করতে লাগলাম নদীর বুকে ভেসে বেড়ানো কচুরিপানার দৃশ্য। কিছুদূর যেতে চোখে পড়লো দূরের চর। আবার দেখা গেল নদীর বুকে মাছ ধরার ট্রলার। নদীর বুক দিয়ে চলে বেড়াচেছ বড় বড় বালুর জাহাজ আর ট্রলার গুলো। আর নদীর বুকে নৌকায় চড়ে এমন সব দৃশ্য দেখে মনটাই ভরে গেল। উপভোগ করতে লাগলাম বাংলার অপরূপ রূপ বৈচিত্র। তখন মাঝি বেটাকে বললাম যে একটা গান ধরতে । মাঝি বেটা আর রাজি হলো না। তাই নিজের কন্ঠে নিজেই গান করা শুরু করলাম।
এদিকে বেলা যতই শেষ হচেছ নদীর বুকে ঘুরে বেড়াতে ততই ভালো লাগছে। আরে ভালো লাগবেই না বা কেন। দূর আকাশে ততক্ষনে মেঘের ভেলা ভেসে বেড়াচ্ছে। দূর থেকে দেখে যেন মনে হচেছ যে মেঘের ভেলাগুলো বুঝি আকাশ ভেঙ্গে নদীতে মিশে গেছে। আবার ক্ষনে মনে হচ্ছে যে এই বুঝি আকাশ টি ধরতে পারবো। বেশ দারুন ছিল পড়ন্ত বিকেলের নদীর বুকের আকাশ । আর বিকেলের সূর্যাস্ত যেন আরও বেশী নদীর দৃশ্যগুলো কে সুন্দর করে দিয়েছিল। এদিকে নদীর বুকে ড্র্রেজার মেশিনে বালি তোলার দৃশ্যটিও যেন মন কে আরও অনেক গুন রাঙিয়ে দিল। তারপর ঘড়ির কাটায় এক ঘন্টা পার হয়ে গেল। মাঝি ভাই আমাদের কে আরও একটু ঘুরাতে চাইলেও আমরা আর ঘুরতে রাজি হলাম না।
তারপর আমরা নদীর পাড়ে এসে নদীর পাড়ের দৃশ্য আর পড়ন্ত বিকেলের দৃশ্য গুলো কিছুটা উপভোগ করলাম। কিছুটা সময় সেখানে থাকার পর আমরা আস্তে আস্তে বাসার দিকে রওনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিলাম। তবে নদীর বুকে নৌকায় ঘুরে বেড়ানোর মজা যে কি সেটা না ঘুরলে কিন্তু বুঝা যায় না। অবশ্য আমরা যারা শহরে থাকি তাদের কাছে এ যেন এক বিশাল ব্যাপার। আর গ্রামের মানুষগুলোর কাছে তো এটা পান্তা ভাত।
পোস্টের ধরন | ভ্রমন পোস্ট |
---|---|
ডিভাইস | VIVO-Y22S |
ফটোগ্রাফার | @maksudakawsar |
স্থান | বেড়িবাধঁ, মিরপু, ঢাকা , বাংলাদেশ |
আজ এখানেই শেষ করছি। আবার আসবো নতুন কোন ব্লগ নিয়ে নতুন ভাবে আপনাদের কাছে। কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার আজকের ব্লগটি ? আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের আশায় রইলাম। সবাই ভালো থাকবেন এবং সাবধানে থাকবেন।
Tweet
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বাহ আপু। আপনার মিরপুর বেড়িবাঁধ ঘুরার অভিজ্ঞতা পড়ে খুবই ভালো লাগলো! এত্ত এত্তগুলা ছবি শেয়ার করেছেন যে মনে হচ্ছে আমিও আপনার সাথেই বসে আছি আর উপভোগ করছি একটি চমৎকার বিকেলআমারো বেশ কদিন আগে নদীর পাড়ে বসে থাকতে ভীষণ ইচ্ছে করছিলো। মন খারাপ থাকলে খুব ইচ্ছে করে জলের কাছাকাছি চলে যেতে। এতে মন হালকা হয়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ সুন্দর এবং গঠন মূলক একটি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit