আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
শুভ রাত্রি প্রাণের প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সকলকে। সেই সাথে অবিরাম ভালোবাসা সকলের প্রতি। সকলের সুস্থতা এবং সুন্দর জীবন কামনা করেই আজ আবার শুরু করতে যাচ্ছি আমার আজকের ব্লগটি। বেশ কিছুদিন যাবৎ বেশ অসুস্থতার মধ্য দিয়ে সময় পার করতে হয়েছে আমাকে। কিন্তু তবুও চেষ্টা করেছি আপনাদের মাঝে নিজেকে তুলে ধরতে। হয়তো বা তেমন ভাবে নিজেকে তুলে ধরতে পারিনি। তবে ইনশাল্লাহ্ আবারও নিজেকে নতুন করে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে আজ হতে আমার হাজারও প্রচেষ্টা।
অসুস্থ হই আর যাই হই। জীবন তো আর থেমে থাকার নয়। জীবন তো জীবনের গতিতেই চলবে। আর জীবন কে চালিয়ে নিতে ব্যর্থ হলেই কিন্ত হারিয়ে যায় জীবনের গতি। তাই তো জীবন কে থেমে যেতে দিতে নেই। আর আমিও এই কথাটি বেশ বিশ্বাস করি। তাই তো যতই অসুস্থতা আর ঝড় বয়ে যাক জীবনের উপর দিয়ে জীবনের তাগিদে প্রয়োজনীয় কাজ গুলো কে সেরে নিতেই আমাকে পথ চলতে হয়। আর এমনই একটি জরুরী কাজে বেশ কয়েকবার আমায় যেতে হয় ঢাকার মিরপুরে। আর ঢাকার যে রাস্তার অবস্থা তাতে করে মিরপুর হতে খিঁলগাও আসতে তো আমার বারটা বেজে যায়। আর এ কারনেই কিছুটা স্বস্থি পেতে এবার চড়ে নিলাম সেই বিখ্যাত মেট্রো রেলে। আর এতে করে আমার প্রায় এক ঘন্টা সময় বেচেঁ গেলে। আর আজ আমি আপনাদের সাথে আমার মেট্রো রেলে ভ্রমন নিয়েই কিছু কথা বলবো। আশা করি এমন একটি সুন্দর মূহূর্ত আমার মত আপনাদের ও বেশ ভালো লাগবে।
মেট্রো রেলের কথা তো আপনারা সবাই শুনেছেন। হয়তো ঢাকায় যারা বসবাস করেন তাদের অনেকেই ইতোমধ্যে মেট্রো রেল ভ্রমনও করে নিয়েছেন। আমিও শুনেছি। কিন্তু যেহেতু মেট্রো রেল মাত্র ঢাকার আগার গাঁ হতে উত্তরা দিয়াবাড়ি পর্যন্ত চালু হয়েছে তাই আজ পর্যন্ত এই পরিবহনটি তে আমার আর উঠা হয়নি। অবশ্য অফিস কলিগদের সাথে বহুবার প্ল্যান প্রোগ্রাম করেও সেটা বেস্তে গেছে। তবে একটি কথা না বললে নয়, আমি যেহেতু ঘুরতে বেশ পছন্দ করি তাই মেট্রো রেলে ভ্রমন নিয়ে প্রায় প্রতিদিন আমার কলিগরা আমার সাথে ট্রোল করে। এই তো দু দিন আগেও প্ল্যান ছিল মেট্রো রেলে দিয়াবাড়ি যেয়ে মাজ মাস্তি করে ফিরে আসবো। কিন্তু হায় কপাল আর হলো না। তাই মনে এক রকমের জিদ চাপলো। এবার আমি একবার হলেও মেট্রো রেলে ভ্রমন করবো। যেই ভাবনা সেই কাজ।
জরুরী কাজে মিরপুর রূপনগর গিয়েছিলাম দুদিন আগে। যদিও শরীর টা তেমন ভালো ছিল না। তো সেখানের কাজ শেষ হয়ে গেল বিকেল ৪ টার মধ্যে। আর বিকেল চার টায় বাসে উঠে যেদিক দিয়ে আসার চেষ্টা করি না কেন, সেটা রাত আটটা বাজবে। তাই যেটাই বলেন না কেন, জিদ আর সময় বাঁচানো, সব চিন্তা এক সাথে করে ভাবলাম মেট্রো রেলে করে আগে আগারগাঁ তো যাই তারপর দেখা যাবে কি করার। এতে করে সময়ও বাচঁবে, আবার কলিগদের ট্রোল হতে রক্ষাও পাবো। তো রূপনগর থেকে রিক্সায় করে পূরবী সিনেমা হলের সামনে এসে ঢুকে পড়লাম মেট্রো রেল স্টেশনে। ঢুকেই দেখি বিশাল এক জায়গা জুড়ে টিকেট কাউন্টার। এখানে দু রকমের টিকেট কাউন্টার। একটি হলো যারা প্রি-পেইড কার্ড হোল্ডার তাদের জন্য। আর অন্যটি হলো যারা টাকা দিয়ে টিকেট কাটতে চায় তাদের জন্য। তো আমি টাকা দিয়ে টিকেট কাটার সিরিয়ালে দাড়াঁলাম।
আমার সিরিয়াল আসলো। আমিতো ভাবলাম টাকা দিলে রিসিট দিবে। ওমা আমি দুটো টিকেটের টাকা দিলাম। পূরবী হতে আগারগাঁ এর ভাড়া নিলো ৩০/- টাকা করে ৬০/- টাকা। কিন্ত আমায় কোন টিকেট দিলো না। টিকেটের পরিবর্তে ব্যাংকের এটিএম কার্ডের মত দুটো কার্ড ধরিয়ে দিলো। আমি তো মহাখুশি। কার্ড নিয়ে পরদিন অফিস কলিগদের কে দেখাবো যে আমি মেট্রো রেলে ভ্রমন করেছি। তারপর কার্ডটি পান্স করে ঢুকে গেলাম মেট্রো রেলে উঠার জন্য।অবশ্য মেট্রোরেলে উঠতে এক্সিলেটার দিয়ে উপরে উঠতে হয়। আর আমরা তাই করলাম। তারপর অপেক্ষা করতে লাগলাম সেই না দেখা মেট্রো রেলের জন্য। ওমা দু মিনিট ও গেল না মেট্রোরেল এসে তো হাজির। আমি যেমন মুগ্ধ হলাম মেট্রো রেল দেখে তেমনি করে মুগ্ধ হলাম মেট্রো রেলের জন্য মানুষের অপেক্ষা করার বিশাল জায়গা দেখে। আমার কাছে কিন্তু কিছু সময়ের জন্য মনে হতে লাগলো যে আমি মনে হয় বিশ্বের অন্য কোন দেশে আছি। বেশ ভালো লাগলো এমন সুন্দর পরিবেশ দেখে।
তারপর মেট্রোরেলের দরজার কাছে যেতে যেতে সিমসিম খোল যা এর মত করে দরজা খুলে গেল আর আমরাও ভিতরে প্রবেশ করলাম। ভিতরে ঢুকতেই দরজা আবার লেগে গেলো। বেশ সুন্দর পরিবেশ ভিতরে। শীতল ঠান্ডা বাতাস, সেই সাথে এক দারুন পরিবেশ। লোকাল বাসের মত ভিড় নেই, নেই কোন ঘেমে যাওয়ার অপশন। এমনকি জায়গায় জায়গায় বিরক্তিকর থেমে থাকা নেই। মেট্রো রেলে বসে যেমন উপভোগ করছিলাম যেমন তার ভিতরের পরিবেশ, তেমনি করে বাহিরের পরিবেশ আর বাহিরের দৃশ্যও কিন্তু কম সুন্দর লাগেনি আমার কাছে। আমি মনে হয় ঢাকার শহরে এই প্রথম কোন কিছুতে উঠে এত এত তৃপ্তি পেলাম। যদিও পূরবী থেকে উঠার পরে রেলটি আগারগাঁ আসতে আসতে আরও দুটো স্টেশনে থেমেছে। তাও মনে হয় এক মিনিটেরও কম। আবার রেলের ভিতরে সুন্দর ধরার হেন্ডেল আর সিট ও কিন্তু তৈরি করা আছে। আমার মনে হয় আমি ট্রেনে উঠে মাত্র দশ মিনিটের মধ্যে এসে আগারগাঁতে পৌছে গেছি। কিন্তু আমি যদি বাসে আসতাম তাহলে এই আগারগাঁ আসতেই আমার সময় লেগে যেত ৫০- ৬০ মিনিট।
কিন্তু মেট্রো রেল থেকে নেমে তো ভাবলাম চলে আসবো। আরে আসার সময়ও নাকি আবার পান্স করে আসতে হয়। তা আমি তো আর জানি না। যে সেই কার্ড গুলো পান্স করে মেশিনের ভিতর ঢুকিয়ে দিতে হয়। তাহলে তো আগে তো কয়েকটি ছবি তুলে রাখতাম। মেজাজ গেল গরম হয়ে। নিজেকে আদি কালের গ্রামের মানুষ মনে হচিছল। যাক তারপর খুব অনুরোধ করে দুটো কার্ড নিয়ে ছবি তুলে নিলাম। এরপর বের হয়ে সি এন জি নিয়ে সুজা চলে আসলাম খিলঁগায়ে। মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে। তবে সিএনজি তে আসতে আসতে ভাবতে লাগলাম যে কবে যে এই মেট্রোরেল কমলাপুর পর্যন্ত আসবে আর আমি প্রতিদিন এত সুন্দর একটি পরিবহনে করে অফিসে আসা যাওয়া করতে পারবো! বিশ্বাস করেন প্রতিদিন বাসে চড়ে অফিস করতে কিন্তু আমার অনেক কষ্ট হয়। তার উপর যে পরিমান জ্যাম। বসে থাকতে থাকতে কোমড় ব্যাথা হয়ে যায়। যাই হোক পরদিন কিন্তু আমাকে নিয়ে ট্রোল করা আমার সেই কলিগদের কে মেট্রো রেলের ছবি দেখিয়ে একটু জ্বালিয়ে দিতে আমিও কোন ভুল করিনি। হি হি হি।
পোস্টের ধরন | মেট্রো রেল ভ্রমন |
---|---|
ডিভাইস | VIVO-Y22S |
ফটোগ্রাফার | @maksudakawsar |
স্থান | মিরপুর ঢাকা , বাংলাদেশ |
আজ এখানেই শেষ করছি। আবার আসবো নতুন কোন ব্লগ নিয়ে নতুন ভাবে আপনাদের কাছে। কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার মেট্রো রেলের গল্প ? আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের আশায় রইলাম। সবাই ভালো থাকবেন এবং সাবধানে থাকবেন।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Tweet
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার পোস্টটি পড়ে হাঁসছিলাম অনেকক্ষণ। আসলে প্রথমবারের মতো তো তাই তো টিকেটের বিষয় বুঝতে পারেননি।না হলে তো আগেই ছবি তুলে রাখতে পারতেন । যাই হোক আপনি তো প্রথমবার হলেও ঘুরেছেন মেট্রো তে। আমি তো এখনো তাও করতে পারিনি। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যাক আমিও খুশি হলাম আপনাকে হাসাতে পেরেছি। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমারও এখনো মেট্রোরেল ভ্রমণ করার সৌভাগ্য হয় নি আপু। আপনার পোষ্ট থেকে নতুন নতুন কিছু তথ্য পেলাম। আমি তাহলে আগেভাগেই কার্ডের ছবি তুলে রাখবো, মিস করবো না... যাই হোক, পুরো প্রকল্প চালু হলে অনেক মানুষের ই ভোগান্তি কমবে আর সময় বাঁচবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জ্বি আপু মিস করেন না যেন আগেভাগে কার্ডের ছবি তুলে রাখার জন্য। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit