শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি-এক সফল সাস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন II written by @maksudakawsar II

in hive-129948 •  6 days ago 

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? আশা করবো সবাই ভালো আছেন সৃষ্টিকর্তার রহমতে । আমিও আছি আপনাদের দোয়ার বরকতে জীবন নিয়ে ভালোই। দিন যায় কথা থাকে। দিন কিন্তু সত্যি সত্যি চলেই যাচ্ছে। চলে যাচ্ছে সময়। সময় কখন আসে আর কখনই বা যায় সেটা টেরই পাই না। তাই ব্যস্ততার পরিমানও দিনের পর দিন বেড়েই যাচ্ছে। আজকাল যেন জীবনের সাথে যুদ্ধ করেই জীবন পার করতে হচ্ছে। তবুও সময় করে বসে পড়লাম আপনাদের জন্য একটু লেখালেখি করার জন্য। আমি আশা করি আজকের ব্লগ আপনাদের সবার অনেক বেশি ভালো লাগবে। সব সময় চেষ্টা করি ভালো ভালো ব্লগগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।


audience-1853662_1280 (2).jpg

Source

প্রতিটি মানুষের জীবনে ছেলেবেলা হলো একটি স্বর্ণ যুগ। আমরা কেউ কিন্তু আমাদের ছেলেবেলাকে ভুলতে পারি না। জীবনের প্রতিটি পদে পদে আমাদের কাছে আমাদের ছেলেবেলা ধরা দেয় স্মৃতি হয়ে। ছেলেবেলার সেই আনন্দঘন দিনগুলো আমাদের জীবনে মাঝে মাঝে মধুর স্মৃতি বিলিয়ে দেয়। নিয়ে যায় সেই শৈশবের কিছু সুন্দর মূহূর্তে। যেখান থেকে ফিরে আসাটাই বেশ মুশকিল। তবুও আমরা ফিরে আসি। আমাদের কে ফিরে আসতে হয়। আর আজ আমি আবার চলে আসলাম আপনাদের মাঝে আমার সেই ছেলেবেলার আরও কিছু স্মৃতি আপনাদের মাঝে ভাগাভাগি করার জন্য।

আমাদের জী্বনের সবচেয়ে সুখের দিনগুলো ছিল আমাদের স্কুল জীবনে। স্কুল জীবনে আমরা যে আনন্দ আর সুন্দর মূহূর্ত গুলো পার করেছি তা মনে হয় জীবনের কোন সময়েই ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। কারন আমাদের জীবনের সুনালী সময়গুলোই কিন্তু আমরা তখন পার করেছি। তাই তো স্কুল জীবনের বন্ধুদের কে কখনও ভুলে যাওয়া যায় না।সেই সব বন্ধুরা জীবনের প্রতিটি মূহুর্তে স্মৃতি হয়ে থাকে। আর আজ চেষ্টা করবো স্কুল জীবনের কিছু স্মৃতি আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

সদ্যমাত্র স্কুল জীবন পাড় করে কলেজ জীবনে পা রেখেছি। সে সময়েই ডাক আসলো স্কুলের বন্ধুদের কাছ হতে। মানে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিল যে স্কুলের নামে একটি সংগঠন করবে। আর সেই সংগঠনের সদস্য হবে স্কুল হতে পাস করে যাওয়া সকল ছাত্রছাত্রী। তার মানে এই সংগঠনটি হবে পুরানো ছাত্রছাত্রীদের একটি সংগঠন। আমাকে সভানেত্রী করে কমিটি গঠন করা হলো। আমিও বেশ উৎফুল্ল মনে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব গ্রহণ করে নিলাম। খুব ভয়ে ছিলাম সেই কমিটির দায়িত্ব কতটুকু পালন করতে পারবো।

যাই হোক সংগঠনের নামও ঠিক হয়ে গেল। এবার সংগঠন হতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো একটি পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। যেখানে আয়োজন করা হবে একটি সাংস্কুতিক অনুষ্ঠানের। তাই অনুষ্ঠানের রূপ রেখা নিয়ে বার বার কমিটির মিটিং ডাকা হলো। সেই মিটিং এর মাধ্যমে পুনঃ মিলনী অনুষ্ঠানের সকল আয়োজন গুলো কে ধাপে ধাপে সাজানো হলো। আমার উপর পুরো দায়িত্বই ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি আয়োজন করার । কি যে এক ঝামেলা। কিন্তু যেহেতু সভাপতি হয়েছি তাই দায়িত্ব তো পালন করতেই হবে। আমি নিজেও বেশ আনন্দিত ছিলাম দায়িত্ব পেয়ে।

যাই হোক। যেহেতু অনুষ্ঠান করতে হবে তাই দায়িত্বটাও সঠিক ভাবে পালন করতে হবে। আমি সবার সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলাম সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামে মোট গান হবে ১০ জন শিল্পীর। এর মধ্যে ৪-৫ জন আমাদের স্কুলেরই ছাত্রী। আর বাকী গুলো স্কুলের সিনিয়র ভাইদের সাথে কথা বলে হাসান চৌধুরী, রবি চৌধুরী, নাসির, সহ কিছু নাম করা শিল্পীদের রাখা হয়েছিল। অবশ্য এই শিল্পী গুলো স্কুলের পাশেই একটি রেকডিং অফিস ছিল সেখানে গান রেকডিং করতে আসতো। যাক গানের বিষয়টা তো শেষ হলো। এবার দরকার দুজন ডান্সার।

কি করবো ভেবে পাচিছলাম না। তাই এলাকার জানা শোনা ভাগিনা ভাগ্নিদের দিয়েই নাচের প্রোগ্রাম করার ব্যবস্থা করলাম। যাদের মধ্যে একজন এখন বাংলা চলচিত্রের নায়িকাও। যাই হোক অনুষ্ঠান নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় পার করতে হচেছ। খাওয়া দাওয়া আর ঘুম সব জেনে কোথায় হারিয়ে গিয়েছিল। চিন্তায় শেষ। কেমন হবে অনুষ্ঠানটি। সবাই পছন্দ করবে তো। ভাবী আর ভাবী। এক সময়ে চলে আসলো সেই দিন। সকাল থেকে বেশ চিন্তায় ছিলাম। শেষে না আবার জুতার বাড়ী খাই।

দেখতে দেখতে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেল। উপস্থাপিকা দিলাম আমাদের একজন বান্ধবীকে। ও বেশ দর্শকদের মন জয় করে উপস্থাপনা করতে পারে। যাই হোক একে এক গানের শিল্পীরা গান গেয়েই চলেছে। কিন্তু আমাদের যে স্পেশাল শিল্পী রয়েছে, যাদের নাম পসপেক্টাসে ছাপানো হয়েছে তাদের কেউ এসে পৌঁছেনি। আমার তো মাথায় হাত। এমন যদি হয় তাহলে কি মান সম্মান থাকবে। কোন রকমে পরিচিত শিল্পীদের দিয়ে সময় পার করছি। কিন্তু দর্শক তো সেই রকমের চিলাচিল্লি শুরু করে দিলো।

অবশেষে রাত ১০ টার পর আমাদের সব ষ্পেশাল শিল্পীরা আসতে আসতে আসা শুরু করলো। আমিও বেশ স্বস্থি পেলাম। অনুষ্ঠানে আসা সকল দর্শকদের কাছ থেকে বেশ বাহবাও পেতে শুরু করলাম। সবাই বলছে বেশ দারুন হয়েছে পুরো প্রোগ্রামটি। আমিও বেশ খুশি হলাম। জীবনের প্রথম কোন সংগঠনের হয়ে একটি অনুষ্ঠান করে সফলতা অর্জন বেশ ভালো লাগলো আমার কাছে। তবে জীবন আর জীবিকার তাগিদে সেই সংগঠন হতে আমাকে বিদায় নিতে হলো এক সময়। শান্তনা শুধু এতটুকুই যে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব আমি সঠিক ভাবে পালন করতে পেরেছি।

জানিনা কেমন লাগলো আমার আজকের টপিকটি। আশা করি আপনাদের কাছে আজকের পোষ্টটি বেশ ভালা লাগলো। ভালো থাকবেন, সুখে থাকবেন। আর নিজেকে ভালো রাখার চেষ্টা করবেন।

আমার পরিচিতি

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।


3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeF5StuMqDPqgYjRhUxqFbXTvH2r2mDgNbWweA4YGBo825oLh4oqEqeynn5EZL11LdCrppngkM (1).gif

VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

1000206266.png

1000206267.png

❤️❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️❤️

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

image.png

আপু অনেক দারুন একটি পোস্ট আজ আমাদের মাঝে শেয়ার করলে। সে জীবনে আমরা কখনো ফিরে যেতে পারবো না। কিন্তু মাঝে মাঝে যখন বিশেষ কিছু স্মৃতি মনে পড়ে তখন মনে হয় কেন বড় হলাম তখনই তো ভালো ছিলাম। আজ আপনার লেখা শৈশবের স্মৃতিগুলো পড়ে আবারও কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে গিয়েছিলাম আমিও সেই দিনগুলোর মাঝে। পুরোটা যদিও মনে নেই। আজ আপনার পোস্ট পড়ে সেই দিনের সেই অনুষ্ঠানের কিছু কিছু মনে পড়ে গেল।

ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

অনেক সুন্দর অতীত জীবনের কথা তুলে ধরেছেন। অনেক ভালো লাগলো এত সুন্দর অনুষ্ঠানের কথা জেনে। যেখানে গানের আয়োজন করা হয়েছে। আপনার স্টুডেন্ট এর পাশাপাশি সিনিয়র ভাইরাল ছিল প্রোগ্রামের অংশ। একের পর এক সুন্দরভাবে লাইনে বিস্তারিত উপস্থাপন করেছেন। তবে জীবনের স্রোতধারা মানুষকে কোথায় নিয়ে যায় কেউ জানেনা। অতীতে যা কিছু করা হয় সবগুলো যেন ইতিহাস হয়ে থাকে। সুন্দর এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের বিষয়ে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন দেখে ভালো লাগলো।

মন্তব্যের মাধ্যমে উৎসাহিত করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

অনেক সুন্দর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে চলে যাচ্ছি। আসলে স্মৃতির পাতা থেকে এই সমস্ত দিনগুলো মনে করতে পারলে অনেক ভালো লাগে। আবার অন্যদের মাঝে উপস্থাপন করার মধ্য দিয়ে জানার সুযোগ করেও দেওয়া যায়। আপনার জীবনের না জানা সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানের বিষয় জানার সুযোগ পেলাম আজ।

ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।