আমার ছেলেবেলার কিছু স্মৃতিময় কথা

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

আসসালামু আলাইকুম।

আশা করি আপনারা সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন।

এই তো সেই দিন প্রায় মাস দুই আগের কথা আমার বাংলা ব্লগের 20 তম ব্যাচে আমার নতুন সদস্য হিসাবে পা রাখা । আজ দেখতে দেখতে 20তম ব্যাচের ব্লগাররা প্রায় ভেরিফাইড মেম্বার হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। স্কুল জীবনে যেমন শিক্ষকরা অক্লান্ত পরিশ্রম দিয়ে আমাদের কে মানুষ হিসাবে গড়ে তুলার চেষ্টা করেছেন। তেমনি করে আমার বাংলা ব্লগের ফাউন্ডার, এডমিন আর মডারেটরগনও তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম আর এবিবি স্কুল এর সহায়তায় আমাদের কে একজন যোগ্যতা সম্পন্ন ব্লগার হিসাবে গড়ে তুলার চেষ্টা করেছেন। তাই আমি মনে করি সামান্য ধন্যবাদ দিয়ে তাদের কে মূল্যায়ণ করা যাবে না। তাদের জন্য অন্তরের অর্ন্তস্থল হতে রইল শ্রদ্ধা ও ভালবাসা। ভাল থাকবেন আপনারা সবাই।

মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। দশ মাস মায়ের গর্ভে থাকার পর প্রতিটি মানব সন্তান এই পৃথিবীর আলোর মুখ দেখে। ধীরে ধীরে সে এই সুন্দর পৃথিবীর আলোয় এসে নিজেকে মানিয়ে নেয়। একটি মানব জীবনে অনেকগুলো ধাপ তাকে পাড় করে পৃথিবীতে বিচরন করতে হয়। তার মধ্যে থাকে শৈশব, কৈশর, যৌবন আর বৃদ্ধকাল। আর জীবনের এই প্রতিটি ধাপ এক সময় মানুষের কাছে অতীত হয়ে যায়। এই অতীত হয়ে যাওয়া সময়গুলো শুধু স্মৃতি হয়ে স্মৃতির ডাইরীতে লেখা হয়ে থাকে চিরদিন।

আজ সেই স্মুতির পাতা থেকে কিছু শৈশবের স্মৃতি তুলে ধরব। যা ছিল দূরন্ত পানা আর দুষ্টুমিতে ভরা। শৈশবের সেই মিষ্টি মাখা সময়গুলো মনে পড়লে আজও আবার ফিরে যেতে মন চায় আমার শৈশব জীবনে। কতই না মধু মাখানো সময় ছিল। তাই তো আজ বার বার সেই গানের কলিগুলো মনকে উদাসীন করে তুলে- ‘’মুছে যাওয়া দিনগুলি আমায় যে, পিছু ডাকে’’......।

বাবা সরকারি চাকুরী করতেন বিধায় আমার বেড়ে উঠাটাও সরকারি কর্মচারীদের কোয়ার্টারে । তাই ছেলে বেলাটা ও কেটেগেছে সেখানে । তখন আমি অনেক ছোট । কোন ক্লাসে পড়ি তা আমার পুরোপুরি মনে নেই। তবে এখনও সেই স্মৃতি মনে পড়ে। রাতে যখন বিদ্যুৎ চলে যেত তখন সমবয়সি সবাই রাস্তায় নেমে পড়তাম। আর সবাই মিলে লুকোচুরি খেলতাম। আমরা অন্ধকারে মাঝে মাঝে একে অপরের সাথে পোশাক বদলও করে ফেলতাম । যাতে করে যে চোর থাকে সে আমাদের কে ছুতে না পারে। কি যে মজার দিন গেুলো কেটেছে তখন।

image.png

ছবির অবস্থান সোর্স
ফটোগ্রাফার- মাকসুদা কাউছার
ক্যামেরা-Redme-11pro

ছেলে বেলায় কি খেলাটা আমরা খেলি নাই। দাড়িয়া বান্ধা, গোল্লাছোট, বৌচি, ডানগুটি, কুতকুত আরো অনেক অনেক খেলা। দুরন্ত পানা ছিল ছেলে বেলায় আমার স্বভাব। খেলাধুলা খেলতে গিয়ে কত যে হাতপা কেটে গেছে। তা বলার ভাষা রাখে না। যখন ডিসেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়ে যেত,তখন কোয়াটারের সব সম বয়সীরা আর বইয়ের দাড়ের কাছে যেতাম না। খুব মিছ করি সেই সব দিন গুলি। তাই মাঝে মাঝে গলা ছেড়ে গেয়ে ফেলি -> দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় রইলো না, রইলো না, রইলোনা সেই যে আমার নানা রং এর দিন গুলি।

robert-collins-tvc5imO5pXk-unsplash.jpg

কপিরাইট ফ্রি ছবি সোর্স

ছেলেবেলার কথা মনে হলে মনে পড়ে বাবার সাথে মেলায় যাওয়ার কথা । বাবা প্রতি বছর আমাদের কে মেলায় ঘুরতে নিয়ে যেতেন। মেলায় নিয়ে বাবা আমাদের কে অনেক কিছু কিনে খাওয়াতেন। লাল,ও সাদা মোড়ালী, নিমকি, কদমা, মোয়া, নারকেল এর নাড়ু আরও কত কি। প্রতি বছর ঢাকার কাছাকাছি কায়েত পাড়ায় যে মেলা হতো,বাবা আমাদের কে সেই মেলায় ঘুরতে নিয়ে যেত । আর আমরাও মেলায় যেয়ে নানা রং এর খাবার খেতাম আর মজা করতাম।

image.png

ছবির অবস্থান সোর্স
ফটোগ্রাফার- মাকসুদা কাউছার
ক্যামেরা-Redme-11pro

তখন আমার ছেলে বেলা তাই বাবার সামথ্য বুঝতাম না। আর তাইতো মেলায় যেয়ে যা দেখতাম তাই বাবার কাছে বায়না ধরতাম। মেলায় যখন দেখতাম বেলুন ওয়ালা নানা পদের বেলুন নিয়ে বিক্রি করছে তখন বাবার কাছে বায়না ধরতাম আমাকে সেই বিভিন্ন রং এর এক ঝাঁক বেলুন কিনে দেওয়ার জন্য। আর মজা লাগতো যখন দেখতাম যে বেলুন ওয়ালা আমার কেনার আগ্রহ দেখে পিছে পিছে ঘুরতে থাকতো শুধুমাত্র বেলুন বিক্রি করার জন্য।

image.png

ছবির অবস্থান সোর্স
ফটোগ্রাফার- মাকসুদা কাউছার
ক্যামেরা-Redme-11pro

তারপর মেলায় দেখতাম কি সুন্দর বড় বড় নৌকা বানিয়ে বিক্রি করা হত। কিন্তু আমি আগে বুঝতাম যে, হয়ত বা নৌকা নদীতেই থাকে কিন্তু এই মেলায় ঘুরে বুঝতে পারলাম যে, নৌকা বাজারে বিক্রি করে আর মাঝিরা নদীতে সেই নৌকা চালায়।

image.png

ছবির অবস্থান সোর্স
ফটোগ্রাফার- মাকসুদা কাউছার
ক্যামেরা-Redme-11pro

আসলে এখন ভাবি কেন বড় হলাম? ছেলে বেলার দিনগুলিইতো অনেক অনেক সুন্দর ছিল। বন্ধুদের সাথে খেলা, বাবার সাথে মেলায় বেড়াতে যাওয়া সেই দিনগুলিতো আর ফিরে পাবো নারে ভাই।

কেমন লাগলো আমার আজকের এই স্মুতি বিজরিত পোস্টটি জানাতে ভুলবেন না যেন।
আপনারা ভাল ও সুন্থ থাকুন।

🕵🏾 আমার পরিচয়🕵🏾
আমি মাকসুদা কাউছার, খিলঁগাও, ঢাকায় বসবাস আমার। বাংলা আমার মায়ের ভাষা, বাংলা আমার অস্থিত্ব। আর এই বাংলায় আমার মনের ভাব প্রকাশ করতে যে কমিউনিটি আমাকে সুযোগ দিল তার প্রতি রইল অবিরাম ভালবাসা।

image.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনি অনেক স্মৃতি শেয়ার করলেন আজ। ভালো লাগলো পড়ে। ছেলেবেলায় সরকারি কোয়ার্টারে কাটিয়েছেন ছেলেবেলা। স্মৃতি সবসময় মধুর হয়। ধন্যবাদ সুন্দর এক খানা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

অনেক মজার মজার স্মৃতি আজ আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন সেটা হচ্ছে ছোটবেলার কাহিনী। নিয়ে আসলে ছোটবেলায় আমরা কত কিনা করে থাকি সেটা হচ্ছে কারো গাছের আম চুরি। বা বন্ধুদের সাথে হইল গ্যাঞ্জাম মারামারি ইয়ার্কি ঠাট্টা। ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

আপনার ছোটবেলা টা রঙিন ছিল সেটা আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম। লোডশেডিং হলে ছোটবেলা যে কত খুশি হতাম বলে বোঝাতে পারব না। এছাড়া লুকোচুরি গোল্লাছুট এসব খেলে আমিও বড় হয়েছি। স্মৃতিগুলো মনে করিয়ে দিলেন। বেশ দারুণ পোস্ট ছিল। ধন্যবাদ আপু আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।

@maksudakawsar

10% Beneficiary To @shy-fox 🦊 & 5% @abb-school
এই লেখাগুলো টাইটেল এ লেখার দরকার নেই।

জি আপু আচ্ছা .