মজাদার কচুর ছড়ার টক ডাল রেসিপি

in hive-129948 •  2 years ago 

আসসালামু আলাইকুম

সবাই ভাল আছেন নিশ্চয়। দোয়া রইল সবার জন্য আল্লাহ যেন আপনাদের সকল কে সুস্থ্য রাখেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও বেশ ভাল আছি।

সত্যি বলতে বিয়ের আগে আমি কখনও রান্নাবান্না করিনি। কারন এই বিষয়ের উপর আমার তেমন আগ্রহ বা জ্ঞান কোনটাই ছিল না। এজন্য সবার কাছে আমাকে সবসময় বকা খেতে হতো। তবে বিয়ের পরে আমি রান্নার হাতেখড়ি পাই আমার শ্বাশুড়ীর কাছ হতে। তিনি অত্যান্ত যত্ন সহকারে আমাকে রান্না শিখিয়েছেন।

বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সাথে আমার শ্বাশুরীর কাছ হতে শেখা একটি রেসিপি শেয়ার করবো। যে রান্নাটি আমার মত আপনাদের কাছেও বেশ ভাল লাগবে বলে আমি মনে করি। আর আমার আজকের রান্নার রেসিপিটি হলো- কচুর ছড়ার টক ডাল রান্না রেসিপি

image.png

তাহলে চলুন যাওয়া যাক আমাদের আজকের মজাদার রেসিপি কচুর ছড়ার টক ডাল রান্নার রেসিপি পর্বে।

মজাদার কচুর ছড়ার টক ডাল রেসিপি

প্রয়োজনীয় উপকরণ সমূহ

ক্রমিকবিবরনপরিমান
কচুর ছড়া২৫০গ্রাম
তেলপরিমান মত
কাঁচা মরিচ৪/৫টুকরা
পিয়াজ কুচি৩/৪পিস
রসুন কুচি২পিস
আদা বাটা১ চা চামচ
রসুন বাটা১চা চামচ
হলুদ গুড়া১ চা চামচ
মরিচ গুড়া১চা চামচ
১ ০লবন১পরিমানমত
১১জলপাঁই৩/৪টি
১২ধনেপাতাপরিমান মত

প্রস্তুত প্রণালী

image.png

প্রথম ধাপ

প্রথমে কচুর ছড়াগুলো ভাল করে ধুয়ে নিয়ে একটি পাত্রে পরিমান মত পানি ও সামান্য পরিমান লবন দিয়ে ভাল ভাবে সিদ্ধ করে নিতে হবে। যাতে ছড়াগুলো সহজে হাত দিয়ে নরম ভাবে মাখানো যায়। তারপর যখন কচুর ছড়াগুলো সিদ্ধ হয়ে যাবে তখন সেগুলো ছিলে নিয়ে আলাদা একটা পাত্রে রেখে দিতে হবে।কিছুক্ষন পর সিদ্ধ করা ছড়াগুলোকে হাত দিয়ে ভাল করে ভর্তা করে নিতে হবে। যাতে কচুর ছড়াগুলো একে বাড়ে মিহি হয়ে গলে যায়।

image.png

দ্বিতীয় ধাপ

এবার যে পাত্রে কচুর ছড়ার টক ডাল রান্না করা হবে তাতে ৪ কাপ পরিমান পানি নিতে হবে। তারপর সেই পানির ভিতর হলুদ গুড়া, মরিচগুড়া, পিয়াজ ও রসুন বাটা এবং পরমান মত লবন দিয়ে ভালভাবে হাত দিয়ে মিশিয়ে দিতে হবে। যাতে করে কচুর ছড়া, পানি ও মসল্লা ভালভাবে মিশে যায়। এবার চুলার আচঁ মাঝারী করে দিয়ে ডালের পানি চুলায় বসিয়ে দিতে হবে। তবে কোন ঢাকনা ব্যবহার করা যাবে না।

image.png

তৃতীয় ধাপ

তারপর প্রায় ১৫-২০ মিনিট ডালগুলো ভালভাবে জ্বালে আসলে একটু নেড়েচেড়ে দিতে হবে। এরমধ্যে ডালের পানিগুলো চামুচে করে একটু উঠালে দেখা যাবে যে ডালের পানিগুলো একটু আঠালো হয়ে এসেছে।

image.png

চতুর্থ ধাপ

এবার আগে থেকে কেটে রাখা জলপাঁইগুলো ডালের মধ্যে দিয়ে একটু নেড়ে দিতে হবে। এভাবে কিছুক্ষন চুলায় রেখে দিলে দেখা যাবে যে একটু টক টক একটা ঘ্রাণ বের হয়ে আসবে।

image.png

পঞ্চম ধাপ

এবার কিছুক্ষণ পর ডাল টা চুলা হতে আলাদা একটি পাত্রে নামিয়ে রাখতে হবে।

image.png

ষষ্ঠ ধাপ

এখন আবার চুলায় একটি পাত্র বসিয়ে তাতে একে একে তেল, পিয়াজ কুচি, রসুন কুচি দিয়ে ভালভাবে ভেজে নিতে হবে। যাতে পিয়াজ রসুনগুলো বাদামী রং ধারন করে। পিয়াজ আর রসুন এর রং বাদামী রং হয়ে আসলে তাতে আগে নামিয়ে রাখা ডালগুলো ঢেলে দিয়ে একটু নেড়ে দিয়ে তাতে কেটে রাখা কাঁচামরিচ দিয়ে দিতে হবে।

image.png

সপ্তম ধাপ

পাঁচমিনিট পর চুলায় রাখা কচুর ডালের উপর একটু ধনিয়াপাতা কুচি দিয়ে আবার একটু নেড়ে দিতে হবে। তারপর চুলা হতে নামিয়ে পরিবেশন করতে হবে।

image.png

অষ্টম ও শেষ ধাপ

শেষ হয়ে গেল মজাদার কচু ছড়ার টক ডাল রান্না। এখন সময় এসেছে পরিবেশন করার। তাই এবার একটি বাটিতে কচুর ডালটি নামিয়ে তার উপর একটু ধনিপাতা কুচি দিয়ে পরিবেশন করতে হবে মজাদার কচুর ছড়ার টক ডাল রেসিপি।

image.png

তো বন্ধুরা হয়ে গেল আমাদের মজাদার কচুর ছড়ার টক ডাল রান্নার রেসিপি। কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না যেন।

ছবিতে ব্যবহার করা ডিভাইসOppo
মডেলA16
ফটোগ্রাফার@maksudakawsar
ক্যাটাগরীমজাদার কচুর ছড়ার টক ডাল রেসিপি
ফটোগ্রাঢির অবস্থানখিলগাঁও, ঢাকা

আপনারা ভাল ও সুস্থ্য থাকুন।

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovbgcmPXfT67LV8TUt5esMpLo9p9aAb2GKbwNHvWxWT6X7p7FmZx4AGrrKRe2fbW5DpjEiaqkmuxsfuomijBHU574.png

pBMyo3B2Sao2EbuHAFTX1CNWMbam25xJGPs4sKmLS6XL7jPcLJ4PhfmbsQbXEmSBkiJH1y8vcCZLEDiVjH9fUC37Hpjmz6Czw4oJd4hidqWpdsEDnaUW3Rt3p3eTZGQkoiwZDyH4hdDt99wPqRBy3pVZE1qtEmMBB3MC4V4MJCpzUCii.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

প্রচুর ছরা দিয়ে এমন রেসিপি প্রস্তুত করা যায় আসলে আমি কখনো জানতাম না পূর্বে এমন রেসিপি কখনো খাওয়াও হয়নি।।

প্রথমবারের মতো আপনাকে এরকম রেসিপি প্রস্তুত করতে দেখলাম তবে প্রস্তুত প্রণালী দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুব মজা হয়েছিল।

মেয়েরা শ্বশুর বাড়ি গিয়েই বেশিরভাগ কাজ শিখে নেয় ।কারণ বাবার বাড়িতে থাকতে তো অনেক আদরে থাকে কাজের কথা কেউ বলে না।। যাহোক আপনার শাশুড়ির কাছ থেকে শেখা রেসিপিটি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন খুবই ভালো লাগলো জানতে পেরে।।

কচুর ছড়া কি জিনিস সেটা প্রথমে বুঝতে পারি নি।পরে দেখে বুঝলাম মুখীকচু। আমি আপনার রেসিপির কাছাকাছি একটি রেসিপি "মুখী কচুর ডাল" খেয়েছি।তবে সেটাতে জলপাই ছিল না।তবে সেটা অনেক সুস্বাদু ছিল।আশা করি এটাও অনেক সুস্বাদু হবে।ধন্যবাদ নতুন একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

আমি মনে করি বিয়ের আগে কোন মেয়ে তেমন একটা রান্না করতে পারে না কারণ তখন তারা মায়ের বাড়িতে থাকে। বাবা-মা আর বাড়িতে থাকাকালীন অবস্থায় তারা কখনোই চেষ্টা করে না রান্না করার জন্য কিন্তু যখন তাদের বিয়ে হয় তখন তো অবশ্যই তাদের অল্প অল্প রান্না করতেই হবে। তবে আপনি আপনার শাশুড়ির কাছ থেকে রান্না শিখেছেন এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো এরকম শাশুড়ি পাওয়া অবশ্যই ভাগ্যের ব্যাপার। যাইহোক মজাদার একটি রেসিপি আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। রেসিপিটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

আজকে রেসিপি পোস্টের ছবিগুলো আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে।এভাবেই পোস্টের কোয়ালিটি বৃদ্ধি করতে থাকুন।

আপু আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। এভাবে আপনারা আমার পাশে থাকলে আমি নিশ্চয়ই আগামীতেও ভালো করতে পারব।

কচুর ছড়ার টক ডাল রেসিপি আজকে প্রথম নাম শুনলাম। তবে এই কচু দিয়ে অনেক কিছু রান্না করে খাইতাম । কিন্তু এই কচু দিয়ে যে এত সুন্দর একটি ডাল রেসিপি তৈরি হয় সেটা আগে জানতাম না। কিন্তু আপনার কাছ থেকে সেটা প্রথম জানতে পারলাম। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে তৈরি করার পাশাপাশি ধাপগুলো অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন।
আপনার জন্য শুভকামনা রইল

আপু কখনো কচুর মুখি দিয়ে টক রান্না করে খাওয়া হয়নি। তবে রেসিপিটি দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুবই মজা হয়েছে। আমি অবশ্যই একবার এভাবে কচুর মুখি দিয়ে টক ডাল রান্না করব। নিশ্চয়ই জলপাই দেওয়াতে বেশ ভালই হয়েছে। আমার খুব খেতে ইচ্ছে করছে। আপনাকে ধন্যবাদ আপু নতুন এই রেসিপির জন্য।

আপু আপনার কচুর মুঠি দিয়ে বাল রান্না দেখে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল।আমরা চাচাতো ভাইবোনেরা মিলে নাস্তা খেয়ে পুকুর পাড় থেকে এই কচুর মুখি তুলে এনে মাকে দিলে মা খুব সুন্দর ভাবে জলপাই দিয়ে ডাল রান্না করতো। সেই ডাল খেতে খুবই সুস্বাদু ছিল। আপনার ডাল দেখে মনে হচ্ছে খুবই সুস্বাদু হয়েছিল। ধাপগুলো খুব সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুস্বাদু রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার রেসিপিটি পছন্দ করার জন্য। তবে আপনার বানানে বেশ কিছু ভুল আছে একটু কষ্ট করে ঠিক করে নিবেন