বৃদ্ধা ভিক্ষকের আত্নজীবনি 10% Beneficiary To @shy-fox 🦊 & 5% @ abb-school📚

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

আসসালামু আলাইকুম।
আমার বাংলা ব্লগের আমার প্রাণ প্রিয় বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন?
আশিা করি সবাাই অনেক ভাল এবং সুস্থ্য আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক অনেক ভাল ভাবে আছি।
বন্ধুরা আমরা যে পৃথিবীতে বসবাস করি সেখানে অনক অসহায় ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষ রয়েছে্। যারা আমাদের চারপাশে প্রতিনিয়ত ঘুরাফেরা করে।
হতে পারে সে আপনার বাসার গৃহকর্মী, হতেপারে সে রাস্তায় ভিক্ষা করা কোন দরিদ্র ভিক্ষক । আবার হতে পারে সে কোন দরিদ্র অসহায় পেশার মানুষ।
আজ আমি তেমন একজন কে নিয়ে আমার বাংলা ব্লগে কিছু লিখব। তাকে নিয়ে আমার লেখার কারন তিনি অনেক বয়স্ক একজন মহিলা। যাকে দেখে আমার মায়ের কথা মনে হয়ে যায়। আর তিনি হলেন একজন বয়স্ক পথচারী ভিক্ষক। যিনি প্রতিদিন সকাল হতে দুপু র অবধি রাস্তার পাশে বসে অসহায় পরিবারের মুখে দুটো দানা তুলে দেওয়ার জন্য ভিক্ষা করেন। কয়েকদিন যাবৎ আমি তাকে লক্ষ্য করি। উনি সামনে একটি থালা নিয়ে বসে থাকে। তাকে দেখলেই যে কারোরি মায়া লাগবে। আর তাই আমারও অনেক কষ্ট লাগলো তার জন্য ।

image.png

ফটোগ্রাফার- মাকসুদা কাউছার
ক্যামেরা- OPP-A16

তাহলে শুরু করা যাক-
আমি প্রতিদিন যে রাস্তা দিয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দেই আজ কিছুদিন যাবৎ সে রাস্তায় একজন বৃদ্ধা মহিলা ভিক্ষা করতে বসেন। বৃদ্ধা মহিলার বয়স হতে পারে একশত এর উপর। অথবা তারও কম। আজ আমার কেন যেন সকাল থেকে তার কথা মনে হচ্ছে। তাই ভাবলাম তাকে কিছু জিজ্ঞেস করব। কেন সে এত বৃদ্ধ বয়সে রাস্তার ধারে ভিক্ষা করতে বসে? কি তার জীবন কাহিনী।
তাই সকালে একটু আগে আগে বের হয়ে গেলাম। তার কাছে পৌছাতেই তাকে জিজ্ঞেস করলাম নানী কিছু খেয়েছেন সকাল হতে । মাথা নেডে বৃদ্ধা মহিলা উত্তর দিলেন উনি সকালে পান্তা ভাত খেয়েছেন।
কে আছে আপনার পরিবারে? আর এত বৃদ্ধা বয়সে আপনি রাস্তার ধারে এভাবে বসে বসে ভিক্ষা করেন আপনার কষ্ট হয় না?
উনি বলেন কষ্ট তো হয়। কিন্তু কি করমু পেটে তো ভাত দিতে হইবো। তার পর উনার কাছে জানতে পারলাম উনার পরিবারের কথা।

image.png

ফটোগ্রাফার- মাকসুদা কাউছার
ক্যামেরা- OPP-A16

বৃদ্ধা মহিলার একটি ছেলে আর একটি নাতি ছাড়া আর পৃথিবীতে কেউ নেই। ছেলেটা ও আবার শ্বাস কষ্টের রোগী। তাই কাজ কাম তেমন কিছু করতে পারে না। আর একটি নতনী আছে। নাতনী টা বাসায় থাকে।
সংসারের টানা পোড়নে বৃদ্ধা এত বয়স্ক হয়েও প্রতিদিন সকালে এখানে এসে বসে। আর দুপুরে বাসায় চলে যায়। জানা গেল প্রতিদিন সকালে উনার নাতনী তাকে এখানে বসিয়ে দিয়ে যায়। আবার দুপুর হলে এসে নিয়ে যায়। এতটুকু সময়ে যা আয় হয় তা নিয়েই উনি শুকরিয়া আদায় করেন। উনি বলেন এই বৃদ্ধা বয়সে বসে বসে ভিক্ষা করতে উনার অনেক কষ্ট হয়। এ্ই বয়সে আর বসে থাকতে পারেন না উনি। লোকজন মায়া করে উনাকে যে টাকা দিয়ে যায় তা নিয়েই উনি শুকরিয়া আদায় করেন।
উনি বলেন বাসা থেকে বারন করলেও উনি প্রতিদিন জোর করে এখানে ভিক্ষা করতে বসেন। এখন বাজারে জিনিস পত্রের যে দাম, উনি যদি ভিক্ষা না করেন তবে উনার সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হবে । ঘরে চুলা জ্বলা বন্ধ হয়ে যাবে। তা্ই সংসারের মায়ায় তাকে এখানে বসতে হয়। আর উনি ও এই বয়সে ভিক্ষা করতে চায় না। ভিক্ষা করতে উনার ও অনেক কষ্ট হয়। আর পেটের দায়েই তাকে ভিক্ষা করতে হয়।

image.png

ফটোগ্রাফার- মাকসুদা কাউছার
ক্যামেরা- OPP-A16

উনি কথা কথায় ও বলেন যে, প্রতিদিন রাস্তা দিয়ে যাওয়া পথে যেসকল মানুষ তাকে ভিক্ষা দেয় । তাদের অনেক মানুষ তাকে বয়স্করা যেথানে থাকেন সেখানে দিয়ে আসতে চায়। কিন্তু সন্তানের আর নাতনীল মায়ায় উনি সেখানে যায় না। যে সন্তান কে উনি পেটে ধরছে, তারে এমন ভাবে ফেলে রেখে উনে কি করে যাবে। উনি এ ও বলেন যে উনার পরিচিত অনেক বড়লোক মানুষ আছেন, যারা এখনও উনারে টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য করেন, অনেক আদর যত্ন করেন। ভাল মন্দ রান্না হলে খোজ খবর নেন ইত্যাদি।

image.png

ফটোগ্রাফার- মাকসুদা কাউছার
ক্যামেরা- OPP-A16

কৌতহল বসত উনার বয়স জিজ্ঞেস করলে উনি বলেন- *** “ যে জানিনা ঐ হিসাব তো আর রাখি না। আল্লাহ পাঠাইছে, আবার আল্লাহই নিয়া যাইবো। বয়স দিয়া কি করমু? “ ***
আজ এই মুহুর্তে একটি ভাবনা ভাবছি। মা তো মা। তার সাথে কারো তুলনা হয় না।
আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই সমাজের ঐ সমস্ত ব্যাক্তিদের যারা সব সময় এই সমস্ত সুবিধা বঞ্চিত মানুষের পাশে দড়িঁয়ে তাদের দু হাত মেলে দেয় তাদের সহায়তায়।
ধন্যবাদ আপনাদের কে আমার এই পোস্ট টি পড়ার জন্য।

মাকসুদা আক্তার
ঢাকা, বাংলাদেশ

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!