আনন্দময় ট্রেন ভ্রমনে বাংলাদেশের অপুরুপ প্রকৃতি

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

আসসালামু আলাইকুম

আজ মঙ্গলবার, ১লা নভেম্বর, ২০২২ ইং
বাংলা ১৪ই কার্তিক ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় বেশ ভাল আছি।

আমি মাকসুদা আক্তার। তবে steemit প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি আমার অর্জিত জ্ঞান, অভিজ্ঞতা আর সৃজনশীলতা কে কাজে লাগিয়ে সবধরনের কনটেন্ট তৈরি করতে এবং আপনাদের সাথে শেয়ার করতে।

বন্ধুরা আপনারা যারা আমার কনটেন্ট গুলো পরে থাকেন তারা সবাই হয়তো জানেন যে পারিবারিক কাজে আমি ইতোমধ্যে কয়েকবার যশোর জেলার ঝিকরগাছায় নানাবাড়ী গিয়েছি। তবে ঢাকা থেকে যশোরে ভ্রমনটা ট্রেনে হলেই ভাল হয়। তাই এবারও আমরা ট্রেন ভ্রমন করলাম। আর এবার ভ্রমনটা ছিল একটু ভিন্ন রকম। যা আপনারা সম্পন্ন পোস্টটি পড়লে বুঝতে পারবেন।

image.png

চলুন তাহলে আমার আজকের পোস্টের মাধ্যমে ট্রেনে করে ঘুরে আসা যাক যশোর হতে।

এবার আমরা দুই ভাইবোন যাচ্ছি। আর এবার যাচ্ছি জমি সংক্রান্ত বিষয়ে। মায়ের জমি আমাদের নামে নামজারী করতে। এইজন্য ট্রেনের টিকেট দুইটি কাটা হলো রাত ১১.৩০ মিনেটে। আমরা সময় মত রেল স্টেশনে পৌঁছালেও আজকের ট্রেন আধঘন্টা লেট। তাই আর কিছু করার নাই। অপেক্ষার প্রহর গুনতে হলো।

image.png

লোকেশন

অবশেষে রাত ১২.০০ টায় বেনাপোল একপ্রেস স্টেশনে আসে। আমরা আমাদের নির্ধারিত ট্রেনের কামরায় প্রবেশ করি এবং আমাদের নির্ধারিত সিটে যেয়ে বসি। কিন্তু এবার এর সিটটি আমার একেবারে পছন্দ হয়নি। তাই ছোটভাই কে একটু বকাবকি করলাম। তবে এবার এর টিকেট খুব অল্প সময়ের মধ্যে কাটা হয়। এজন্য সিট এরকম হয়েছে। যাক আমরা আমাদের নির্ধাতির জায়গায় বসার পড়ে ট্রেন ছেড়ে দিলো। আর আমরা চললাম আমাদের নির্ধারিত গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।

image.png

image.png

লোকেশন

এরই মধ্যে আমি প্রায় একঘন্টা কাটিয়ে দিলাম আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুদের সাথে ডিসকোর্ডে আড্ডায়। আর এরই মধ্যে আমাদের একবন্ধু ডিজে চ্যানেলে আমাকে আমার কিছু প্রিয় গান শোনার ব্যবস্থা করে দিল। আড্ডা দিতে দিতে আর গান শুনতে শুনতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম, তা নিজেও বুঝলাম না।

যখন আমার ঘুম ভাঙ্গে তখন ট্রেন সিরাজগঞ্জ যমুনা সেতুতে উঠার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে। এরই মধ্যে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়। কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পর ট্রেনটি যমুনা সেতুতে উঠে যায়। এরই মধ্যে আমার চোখ যায় যমুনা নদীর দিকে। কি অপরুপ এক রাতের দৃশ্য যমুনা নদীর। তাই ভাবলাম এমন একটি দৃশ্য আমি কি করে আপনাদের সাথে শেয়ার না করে থাকবো। তাই ট্রেন থেকে সেই যমুনা নদীর রাতের কিছু ছবি তুলে নিলাম।

image.png

image.png

লোকেশন

যমুনা নদীর অপরুপ ‍দৃশ্য দেখতে দেখতে ট্রেনে যাচ্ছি। আর উপভোগ করছি রাতের বাংলাদেশ।এরই মধ্যে ট্রেন উঠে গেল বাংলাদেশের বিখ্যাত হার্ডিজ ব্রিজ এর উপর। আর এই হার্ডিজ ব্রিজ এর উপর হতে আমাদের স্বপ্নের পদ্ধা সেতু যে দেখতে কত সুন্দর লাগে তা আর বলার ভাষা রাখে না। বিশ্বাস না হলে আপনারা ছবি তে দেখে নেন রাতের স্বপ্নের পদ্ধা সেতু।

image.png
image.png

লোকেশন

ট্রেন ছুটে চলছে ঝুকুর ঝুকুর, ঝুকুর ঝুকুর। এতোমধ্যে রাত্রি প্রায় শেষ হয়ে আসছে। বাহিরের দিকে তাকিয়ে দেখলাম একটু দূরে অনেক আলো। আর এই আলো যেন সারা শহরকে এক অপরুপ আলোয় আলোকিত করে তুলেছে । আমার ভাই পাশে তখন গভীর ঘুমে নিমজ্জিত। তবুও তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলাম এটা কি ? সে বলল এটা রুপপুর পারমানবিক কেন্দ্র। আমি একটু আশ্চর্য্য হলাম। এর আগে অনেক শুনেছি। কিন্তু কখনও চোখে দেখা হয় নাই। আমি এর কিছু ছবি তুলে রাখলাম।

image.png

image.png

লোকেশন

এর মধ্যে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি। আমার ঘুম ভাঙ্গে দূরের মসজিদের আযানের ধ্বনি শুনে। আমি উঠে নামায আদায় করে নিলাম। বাহিরের দিকে তখন চোখ দিয়ে দেখছি ভোর কাটিয়ে দিনের সূর্য্য দেওয়ার জন্য পশ্চিম দিকে সূর্য্য উদয় হচ্ছে। আর সূর্য্য উদয়ের কি এক অপুরুপ দৃশ্য আমার মনকে অস্থির করে তুলল। তাই ট্রেন থেকে সূর্য্য উদয়ের কিছু ছবি তুলে রাখলাম। আর এই ছবি গুলি তোলা হয় কুষ্টিয়া হতে।

image.png

image.png

image.png

লোকেশন

একঘন্টা পর ট্রেন পৌছে গেল যশোর স্টেশনে। এখানে ট্রেন প্রায় ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে। আর এই সময়ে আমরা ট্রেন থেকে নেমে একটু আসে পাশে ঘুরলাম। আর একটু হালকা নাস্তা করে নিলাম। এখানে যেটা আমার ভাল লেগেছে সেটা হলো গরুর দুধের স্বর দেওয়া দুধ চা। যাক ট্রেন ছেড়ে দিল। আর আমরাও এবার ঝিকরগাছা স্টেশনে নামার অপেক্ষায় রইলাম।।

image.png

image.png

লোকেশন

প্রায় ২০ মিনিট পর ট্রেন পৌঁছে গেল আমাদের নির্ধারিত ঝিকরগাছা উপজেলায়। আমরা ট্রেন থেকে নামলাম আর স্টেশন মাস্টারের রুমের পাশ দিয়ে গিয়ে ঝিকরগাছার বিখ্যাত বাহন ভ্যানগাড়ীতে উঠে পরলাম আমাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।

image.png

image.png

image.png

লোকেশন

বন্ধুরা আমি আমার পোস্ট গুলোতে চেষ্টা করি আপনাদের কে কিছু নতুন নতুন বিষয় বা জায়গা সম্পর্কে অবগত করতে। জানিনা আমি কতটুকু স্বার্থক। সে বিচার আমি আপনাদের কাছ ছেড়ে দিয়ে আপনাদের সুন্দর মতামতের অপেক্ষায় থেকে আজকে এখানে শেষ করছি। দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন কনটেন্ট নিয়ে। সে পর্যন্ত ভাল থাকবেন।।

আপনারা সবসময় প্রাণবন্ত, ভাল ও সুস্থ্য থাকুন।

image.png

ফটোগ্রাফির বিবরন
বিষয়ভ্রমন
ডিভাইসOppo-A16
ফটোগ্রাফার@maksudakawsar
ভৌগলিক অবস্থানঢাকা হতে ঝিকরগাছা, যশোর

❤️ধন্যবাদ সকলকে।❤️

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

ধন্যবাদ

প্রথমে আপনাকে এত লং জার্নির জন্য অভিনন্দন। যদি ও জমি সংক্রান্ত বিষয়ে যশোর গিয়েছেন।তবে ট্রেন ভ্রমনটি দারুণ ভাবে উপভোগ করেছেন।আসলে ট্রেন ভ্রমন আমার খুব ভালো লাগে।আসলে যশোর যাওয়ার পথে যমুনা সেতু, হার্ডিজ ব্রিজ এবং এর উপর দিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতু ও রুপপুর পারমানবিক কেন্দ্র,আপনার চমৎকার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে দেখতে পেলাম।আর ট্রেন আধ ঘন্টা লেট। এটাতো আপু কমই। আমি তো শুনেছি ঘন্টার উপরে ও দেরি হয়।তারপরও ঠিকমত নিদিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছতে পেরেছেন।জেনে খুব ভালো লাগলো।অসংখ্য ধন্যবাদ আপু,আনন্দময় ট্রেন ভ্রমনের পাশাপাশি অপরুপ বাংলার প্রকৃতির কিছু চমৎকার ফটোগ্রাফি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল আপু।

ভাইয়া আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্যটি পড়ে মনে হচ্ছে আপনার আন্তরিকতার সহিত পোস্টটি পড়েছেন।

ট্রেন ভ্রমণ তেমন বেশি করা হয় না তবুও আমার কাছে ট্রেন ভ্রমন করতে খুবই ভালো লাগে। এবং গাড়ি থেকে নিরাপদ মনে হয়। ভাই বোন দুজনে মিলে যশোর গিয়েছেন। আপনার রাতের ফটোগ্রাফি গুলো আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। স্বপ্নের হার্ডিজ ব্রিজের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ফটোগ্রাফি গুলো আমার কাছে খুবই ভালো লাগেছে। আপনার আনন্দময় ট্রেন ভ্রমণ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ আপু আপনাকে। তবে এটা যেন ভালো লাগলো যে আমার রাতের ফটোগ্রাফি গুলো আপনার খুব ভালো লেগেছে।

ট্রেন জার্নিটা আমার কাছে একদমই নতুন নয়। কারণ দিনে অন্তত একবার ট্রেনে করে জার্নি করতে হয় আমাকে। তবে সব থেকে যেটা আশ্চর্য এবং সুন্দর লাগলো আপনার পোস্টে সেটা হল আপনার উপস্থাপনা এবং কিছু সময় পরপর আশেপাশের পরিবেশের ফটোগ্রাফি এর মধ্যে ছিল যমুনা নদীর অপরূপ দৃশ্য, রুপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র, সবশেষে কিছু প্রাকৃতিক দৃশ্য। সব মিলিয়ে দুর্দান্ত একটা পোস্ট ছিল।

ভাইয়া আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি কমপ্লিমেন্ট করার জন্য।

আপু আপনার ট্রেন ভ্রমণের গল্প পড়ে ভাল লাগল। কিছুদিন আগেও আপনি বোধহয় আপনার নানা বাড়িতে গিয়েছিলেন। যাইহোক এবার জমি সংক্রান্ত ঝামেলার জন্য যেহেতু সেখানে যাচ্ছেন তাই দোয়া করি আপনার জমি সংক্রান্ত সব ঝামেলা গুলো যেন মিটে যায়। আসলে জমির ঝামেলা হলে বেশ ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। ট্রেন ভ্রমণের গল্প এবং অভিজ্ঞতা তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু।

জ্বী আপু দোয়া করবেন আমি যাতে সকালে থেকে মুক্ত হতে পারি। আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

বাসে জার্নি করার থেকে লং জার্নি গুলো ট্রেনে করাই ভালো। আপনি এত বড় জার্নি ট্রেনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা সত্যি ভালো একটি সিদ্ধান্ত। জমি সংক্রান্ত কাজে ভাই বোন দুজনে মিলে যশোরে গেছেন যা সত্যি গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ । আপনাদের যাত্রা পথের ফটোগ্রাফিতে দূর থেকে পদ্মা সেতুর এক ঝলক দেখা গেল যা দেখে বেশ ভালো লাগলো।

জ্বী ভাইয়া আপনি সত্যি বলেছেন এগুলো আসলে ট্রেনে করে ভালো। ভাই আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ আমার পোস্টটিতে এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

ট্রেন জার্নি বরাবরই আমার ভালো লাগে। বাবার রেলওয়েতে চাকরি করার সুবাধে অসংখ্যবার ট্রেনে যাতায়াত করেছি। বসার সিট নিয়ে সমস্যা সবসময় লেগেই থাকে ট্রেনে।

আপনার বদৌলতে রুপপূর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দেখলাম। তাছাড়াও রাতের চমৎকার কিছু ছবি উপহার দিয়েছেন।
আর ভ্যান বাহনটা আমার কাছে ভালো লাগে, বেশ খোলামেলা।।

আমি চেষ্টা করেছি ভাইয়া আমার পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে পদ্মা সেতু, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অন্যান্য দশম স্থান গুলো দেখানোর জন্য।

লং জার্নির জন্য ট্রেন সেরা ৷ ট্রেনে ভ্রমণ করতে আমার অনেক ভালো লাগে ৷ তবে আপনারা দু ভাই বোন রাতে ট্রেন ভ্রমণ গল্পটা পড়ে বেশ ভালো লাগে ৷ যদিও ট্রেন আধ ঘন্টা লেট করে এসেছে , তবুও আপনারা ঠিকমত নিদিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছতে পেরেছেন জেনে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে আপু, আপনার আনন্দময় ট্রেন ভ্রমনের গল্পটা শেয়ার করার জন্য ৷

ভাইয়া আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য। আশা করি ট্রেন ভ্রমন কাহিনীর সাথে সাথে আমার প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো গুলো আপনার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।

আপু আপনার ট্রেন ভ্রমন গল্পটি পড়ে ভালো লাগলো।গরুর দুধের দুধ চা, খেতে খুবই মজার। জমি সংক্রান্ত ঝামেলা আসলে এত সহজে মেটে না । দোয়া করি খুব শীঘ্রই ঝামেলা মুক্ত হন।অনেক ধন্যবাদ আপু।

আপু আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ এত সুন্দর ভাবে আমাকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য। এটাও যেন ভালো লাগলো যে আমার মত আপনারও দুধের চেয়ে পছন্দ।দোয়া করবেন আমি যেনো ঝামেলা মুক্ত তাড়াতাড়ি হতে পারি