গল্প রাইটিং:-" হৃদয়ে ভুল ভালোবাসা "II written by @maksudakawsarII

in hive-129948 •  4 days ago 

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? আশা করবো সবাই ভালো আছেন সৃষ্টিকর্তার রহমতে । আমিও আছি আপনাদের দোয়ার বরকতে জীবন নিয়ে ভালোই। তবে কেন জানি আজকাল ব্যস্ততাগুলো আমায় দারুন প্যারা দিচেছ। প্যারা দিচ্ছে জীবন আর সময় দুটোই। কিন্তু আমি তো ব্যস্ততা চাই না। চাই একটু শান্তি আর প্রশান্তি। চাই একটু স্বাধীনতা। যাই হোক এসব কথা বলে শুধু শুধু সময় নষ্ট করে লাভ নেই। তাই চলে যাই আজ আপনাদের জন্য আমার লেখা সুন্দর একটি জেনারেল রাইটিং এর কথায়।

প্রতিদিনই চেষ্টা করি আমি আপনাদের মাঝে সুন্দর করে কিছু লিখে উপহার দেওয়ার জন্য। চাই আমাদের চারদিকের মানুষগুলোর মধ্যে কষ্টগুলো কে আমার লেখার যাদুতে আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে। আসলে সত্যি বলতে আজ কেন জানি মনটা অনেক খারাপ। তবুও চেষ্টা করলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য। আশা করি প্রতিদিনের মত করে আমার আজকের জেনারেল গল্পটিও আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে।

heart-1137259_1280.jpg

Source

সূচী মায়ের দ্বিতীয় মেয়ে। সূচীর বড় বোন আলো। দুই বোন আর একমাত্র মা নিয়ে তাদের ছোট সংসার। মায়ের চাকুরীর টাকায় তাদের সংসার চলে। সূচীর মা একটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে ছোট একটি পদে চাকুরী করেন। তবে সূচী এবং তার বড় বোন দুজনই কিন্তু সমান সুন্দরী। এলাকার দু চারজন মেয়ের চেয়ে কিন্তু তারা দু বোন দেখতে শুনতে কোন অংশে কম নয়। আর সে কারনেই এলাকার ছেলেদের চোখ তাদের দু বোনের দিকেই থাকে। আর সে কারনেই সূচীর মা সারাক্ষন দু মেয়ে কে নিয়েই অনেক চিন্তায় কাটায়। কবে যে তার দুই মেযের জন্য ভালো দুটি সমন্ধ আসবে। এই আর কি। এদিকে দেখতে দেখতে সূচীর বড় বোন আলোর জন্য বিয়ের ঘর আসে এবং ভালো একটি জায়গায় বিয়েও হয়ে যায়। আর সূচীর বড় বোন বেশ সুখে শান্তিতে সংসার করে।

বড় বোনের সংসার হওয়ার পর সূচী একেবারে একা হয়ে যায়। সারাদিন সূচী বাসায় একাই সময় কাটায়। আর এর মধ্যেই সূচীর জীবনে নতুন একটি অধ্যায় শুরু হয়ে যায়। সূচী মায়ের অগোচরে কখন যে এলাকার একটি ছেলের সাথে প্রেমের বন্ধনে জড়িয়ে পড়ে সেটা সে নিজেও জানে না। আর জানেনা সূচীর মাও । সূচীর মা যখন অফিসে যায় সেই সময় সূচীর সে ভালোবাসার মানুষটি তার কাছে আসে। সূচী অনুভব করে রাসেল তাকে খুব ভালোবাসে। রাসেল তার জন্য সব কিছুই করতে পারে। তাই সূচী রাসেল কে তার মন থেকে ভালোবেসে ফেলে। বেশ ভালোই যাচ্ছিলো রাসেল আর সূচীর সময়। এলাকার সবাই কিন্তু রাসেল এবং সূচীকে চিনে। এবং তাদের পরিবার কেও চিনে। কিন্তু তাদের মধ্যে যে এমন ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক সেটা কেউ অনুভব করতে পারেনি।

এদিকে রাসেল তার ইনকামের টাকা দিয়ে সূচীর নামে জায়গা বায়না করে। সূচীকে সেই জায়গা দেখাতেও নিয়ে যায়। আর এসব কিছুই ঘটে সূচীর মায়ের অগোচরে। আর এ ভাবেই রাসেল আর সূচী তাদের প্রেম চালিয়ে যায় সবার অগোচরে। সূচী কিন্তু এর মধ্যে রাসেল কে মন আর প্রাণ দিযে ভালোবেসে ফেলে। তাই রাসেলের সাথে এক সময় সূচীর বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়ে যায়। এক সময় সূচী অনুভব করে যে তার ভিতর আর একজন কেউ বেড়ে উঠছে। সূচী এ কথা রাসেল কে জানালে সে সূচীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। এবং সূচীর সে অস্থিত্বকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে নষ্ট করে দেয়। রাসেল সূচীকে বুঝায় যে তার পরিবারে একটি ঝামেলা চলছে, আর সে ঝামেলা শেষ না হওয়া অবদি সে সূচীকে বিয়ে করতে পারবে না। সূচীও রাসেলের এমন কথা বিশ্বাস করে।

কিন্তু দু এক বছর পার হলেই সূচীর মা এমন ঘটনাটি জেনে ফেলে এবং রাসেল কে চাপ দেয় সূচীকে বিয়ে করতে। কিন্তু রাসেল বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে সূচীকে বিয়ে না করার বাহানা দেখায়। এক সময় যখন বিষয়টি রাসেলের পরিবারের কাছে জানানো হয় তখন তার পরিবারও এ বিষয়টি অস্বীকার করে। আর তারা রাসেল কে তাদের পরিচিত টাকা ওয়ালা এক পরিবারে বিয়ে করিয়ে দেয়। আর এ বিষয়ে সূচী বেশ কষ্ট পায়। এক সময়ে সমাজের কাছে বিচার চেয়েও সূচীর মা এ বিষয়ে কোন বিচার পায় না। আর সূচী বার বার রাসেলের কাছে ফিরে যেতে চায়। সমাজ যখন সূচীকে রাসেলের দোষ জিজ্ঞেস করে তখন সূচী নিজের মাথায় সব দোষ টেনে নেয়। আর রাসেল কে ক্ষমা করে দেয়। তারপর সূচী এবং সূচীর মা এলাকা ছেড়ে বহুদূর চলে যায়।

আজ বহু বছর পর যখন সূচীর সাথে রাসেলের দেখা হলো তখন সূচী একজন সরকারী কর্মকর্তা। সূচী এবং তার স্বামী দুজনেই সরকারী চাকুরীতে বড় পজিশন হোল্ড করে আছে। আর রাসেল একটি মদের বারে চাকুরী করে ম্যানেজার হিসাবে। অন্যদিকে রাসেলের ওয়াইফ একটি কিন্ডার গার্ডেনের শিক্ষীকা। কিন্তু আর আর সূচী রাসেল কে চিনতে পারছে না। শুধু এক নজরের দেখা দু চোখে দু ফোটা অশ্রু ফেলে পাশ কটিয়ে চলে গেল সূচী।

জানিনা কেমন লাগলো আমার আজকের গল্পটি। আশা করি আপনাদের সবার কাছেই আমার গল্পটি বেশ ভালো লেগেছে। ভালো থাকবেন।

আমার পরিচিতি

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।


3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeF5StuMqDPqgYjRhUxqFbXTvH2r2mDgNbWweA4YGBo825oLh4oqEqeynn5EZL11LdCrppngkM (1).gif

VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

1000206266.png

1000206267.png

❤️❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️❤️

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

দারুণ একটি গল্প শেয়ার করেছেন আপু। সূচীর মতো এমন অনেক মেয়ে ধোঁকা খায়, রাসেলের মতো ছেলেদের কাছ থেকে। তাই বিয়ের আগে কখনোই শারীরিক সম্পর্কে জড়ানো উচিত নয়। সূচীর ভুলের কারণে শেষ পর্যন্ত সূচী এবং তার মা অনেক দূরে চলে গেলো। যাইহোক এতো চমৎকার একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

আপনার গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে আপু ভুল মানুষকে ভালোবাসলে এমনি হয়। তবে বেইমানদের শাস্তি এভাবেই হয়।যেমনটা রাসেল পেয়েছে। আসলে অন্যা করলে শাস্তি পাবে এটাই স্বাভাবিক। ধন্যবাদ আপু সুন্দর লিখেছেন। খ

সুন্দর মন্তব্য করে উৎসাহিত করার জন্য ধন্যবাদ।

1000015649.jpg

সূচীর সংগ্রাম ও সফলতা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। জীবন যেমন কখনো কঠিন, তেমনই সময়ের পরিক্রমায় অনেক কিছু বদলে যায়। শেষ দৃশ্যটি হৃদয় ছুঁয়ে গেল। অসাধারণ গল্প লিখেছেন আপু।

ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

খুবই সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করেছেন আপনি। আসলে কিছু কিছু মেয়ে এরকম অনেক খারাপ পরিস্থিতির শিকার হয়ে থাকে৷ কিছু কিছু ছেলে থাকে যারা এরকম কিছু করার জন্যই মানুষের সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি করে থাকে৷ ঠিক সেরকমই সুচির সাথেও করেছিল৷ এর ফলে সে এবং তার মা অনেক দূরে চলে গিয়েছে৷ আসলে আমার মতে বিয়ের আগে কোন ধরনের সম্পর্কই করা উচিত নয়৷ সেটি হোক ভালবাসা কিংবা শারীরিক সম্পর্ক৷

ধন্যবাদ সুন্দর করে মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

আপনি কিন্তু দারুন গল্প লেখেন আপু্ আজও বেশ দারুন একটি গল্প আমাদের মাঝে আপনি শেয়ার করেছেন। আসলে আমি মনে করি বিয়ের আগে মেয়েদের এমন সম্পর্কে না জড়ানোই ভালো। যাই হোক অবশেষে যে সূচী একটি সুন্দর জীবন ফিরে পেয়েছে সেটাই অনেক। ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।