জেনারেল রাইটিং- তীব্র গরমে যাদের জীবন হয়ে উঠেছে দূর্বিসহ ||written by@maksudakar ||

in hive-129948 •  10 months ago 

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? জানি চারদিকে উত্তাপের যে ঘনঘটা চলছে তাতে ভালো না থাকারই কথা। কি ঘর কি বাহির কোথাও যেন আজ এতটুকু শান্তি পাওয়া বেশ মুশকিল হয়ে পড়েছে। আর ‍সুস্থ্যতার কথা নাই বা বললাম। চরম এই গরম আবহাওয়ায় ঘরে ঘরে এখন অসুস্থতা বেড়েই চলছে। কখন যে কে অসুস্থ হচেছ সেটাই বুঝা মুশকিল।এমন পরিস্থিতে তে খেটে খাওয়া মানুষ গুলো কে পড়তে হয়েছে চরম বিপদের মুখে।

বন্ধুরা প্রতি সপ্তাহেই চেষ্টা করি আপনাদের মাঝে একটি হলেও জেনারেল রাইটিং শেয়ার করতে। তাই তো আজও চলে আসলাম আপনাদের জন্য আরও একটি নতুন জেনারেল রাইটিং নিয়ে। আমি চেষ্টা করি আমার জেনারেল রাইটিং গুলোতে সমাজের নানা রকমের সমস্যা গুলো কে তুলে ধরতে। হয়তো সেটা আপনাদের মনের মত করে হয়ে উঠে না।তাতে কি চেষ্টা তো হলো। আপনাদের উৎসাহ পেলেই তো এগিয়ে যাওয়া যাবে। আশা করি আমার আজকের জেনারেল রাইটিংটিও আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে।

তীব্র গরমে যাদের
জীবন হয়ে উঠেছে দূর্বিসহ

thermometer-4767444_1280.jpg

Source

প্রকৃতি কিন্তু আমাদের পরম বন্ধু। আর এই প্রকৃতিই কিন্তু সময় মতো তার রূপকে পরিবর্তন করে নিতে জানে। সারা বছর আমরা প্রকৃতি হতে অবাধ ভালোবাসা পেয়ে থাকি। প্রকৃতির রঙে নিজেকে সাজাই। আবার সময় মত আমরা সেই প্রকৃতিকে আঘান করতেও কিন্তু পিছ পা হই না। তাই বলে কি প্রকৃতি আমাদের সেই অত্যচার মুখে বুঝে সহ্য করে যায়। না প্রকৃতি কিন্তু সেটা করে না। প্রকৃতি তার সময় মত ঠিকই শুধে আসলে সব প্রতিশোধ নিয়ে নেয়। যা আমরা আজ বেশ কিছুদিন যাবৎ উপলব্দি করতে পারছি। আর প্রকৃতির এমন প্রতিশোধে জনজীবন হয়ে পড়েছে স্থবির।

গতকাল পর্যন্ত দেশের সর্বচ্চো তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। যা গতকাল যশোর জেলাকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে গরমের তীব্রতা কাকে বলে। তীব্র তাপদাহের কাছে পরাজয় স্বীকার করে ইতিমধ্যে দেশের প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুল গুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। থমকে গেছে জনজীবন। খুব বেশী প্রয়োজন না হলে মানুষ এখন ঘরের বাহিরে যেতে চাচেছ না। আর এমন অবস্থা দেখে বিশেষজ্ঞরা বেশী বেশী স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার পরামর্শও প্রদান করছেন। বেশী বেশী পানি পান করা, তরল জাতীয় খাবার খাওয়া এবং ভাজাপোড়া বা ফাস্টফুড কে এড়িয়ে চললেই এই সময়ে আমাদের সুস্থ্য থাকা সম্ভব।

তীব্র এই গরমে সমাজরে উচু তলার মানুষ গুলোর তেমন কোন সমস্যায় না হলেও ভেঙ্গে পড়েছে সমাজের বঞ্চিত মানুষের জীবন। সমাজের উচু তলার মানুষ গুলো তো একটু গরম অনুভব করলেই এসির ভিতর সময় পার করে। আবার রাতে সেই এসি চালিয়েই এক সুখের নিদ্রায় রাত্রি পার করে দেয়। কিন্তু সমাজের নিচু তলার মানুষ গুলো যারা কিনা এসি কিনা তো দূরের কথা, এসির নাম পর্যন্ত শুনেনি। যাদের বসবাস বস্তির খুপরির মধ্যে তাদের জীবন কি চলছে। তাদের এমন খুপরির ঘরে তো সামান্য বাতাসও ঢোকা দায়। যার কারনে বেশীর ভাগ রাতই তাদের কাটাতে হচেছ জেগে থেকে।

একটু গরম অনুভূত হলে হয়তো সমাজের উচু তলার মানুষ ‍গুলো সারাটাদিন ঘরের ভিতরই কাটিয়ে দেয়। আর সমাজের যেসব মানুষ গুলো দিন আনে দিন খায়। যাদের এক বেলা রিক্সার পেন্ডেলে পা না দিলে বাসার চুলা জ্বালানো দায় হয়ে পড়ে। যাদের ভিক্ষার চাল না হলে অনাহারে দিন কাটাতে হয়। তাদের কথা কি আমরা একবারের জন্যও ভেবে দেখি। কি ভাবে তারা এত প্রখোর রোদের মধ্যে রিক্সার প্যান্ডেলে পা রাখে? কি ভাবে শরীরের ঘাম ঝড়িয়ে রিক্সা করে আপনাকে আর আমাকে বহন করে নেয়? এসব মানুষ ‍গুলোর জীবন আজ কতই না দূবিসহ হয়ে পড়েছে।

আমরা যখন গরমের তীব্রতা হতে বাঁচার জন্য বড় বড় শোরুম গুলোতে ভিড় জমাই কোন ব্রান্ডের এসি কেনার জন্য। তখন হয়তো সমাজের অনাহারে থাকা মানুষ গুলো পেট কে ঠান্ডা আর শীতল করার জন্য নিজের শরীরের ঘাম ঝড়াতে ব্যাস্ত সময় কাটায়। কিন্ত আমরা তো নিজেকেই নিয়েই ব্যাস্ত। তাদের কথা শোনার মানুষ কোথায় আজ? আমরা যদি নিজেদের কে শীতল করার পাশা পাশি সমাজের নিচু শ্রেনীর দু একজন মানুষের পাশে দাড়াঁই তাহলে হয়তো এই সময়ে দু একটি পরিবার তাদের পরিবারের সদস্যদের পেট কে ঠান্ডা করতে পারে। তাই আসুন নিজেদের পাশাপাশি আমরা সমাজের এসব অসহায় মানুষ গুলোর কথা একটু ভেবে দেখি ।

image.png

শেষ কথা

সত্যি কিন্তু এই বিষয়টি আমাকে ‍ভাবীয়ে তুলছে । কেমন কাটছে এসব বঞ্চিত মানুষ গুলোর জীবন এমন তীব্র গরমে। আশা করি আমাদের সবার বিবেক ‍গুলো জাগ্রত হবে। এবং আমরা তাদের পাশে দাঁড়াতে পারবো অনায়াসে।

image.png

ধন্যবাদ সকলকে
@maksudakawsar

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।

image.png

Screenshot_1.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

এটা আপনি সত্যি কথা বলেছেন সমাজের উঁচু পর্যায়ের মানুষেরা গরমের ভেতরে এসির ভিতরে থেকে নিজেদের গরম নিবারণ করে কিন্তু নিম্ন পর্যায়ের মানুষেরা গরমে অনেক কষ্ট করে। বিশেষ করে বস্তির মানুষেরা তো বেশ কষ্ট করে। অনেক সুন্দর একটি বাস্তবতা মূলক পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

দাদা আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্য করে উৎসাহিত করার জন্য।

গরমের এমন রেকর্ড তাপমাত্রা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয় যা ক্রমেই খারাপ পরিণতির দিকে যাবে যদি আমরা মনোযোগ না দিই নিজেদের শুধরাতে।

ঢাকা শহরের কথাই ভাবা যাক না কেন, যেভাবে গাছপালা নিধন করা হয়েছে, বাগানগুলো শেষ করে বিল্ডিং বানানো হয়েছে তাতে করে গরমের দিনে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিজেরা বাড়াচ্ছি।

যা হোক, চলমান হিট ওয়েভ কমে আসুক এ দোয়া করি। আল্লাহ রহমত বর্ষিত করুন। আমিন।

আপনার সাথে আমারও এই একই রকম দোয়া রইল ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।

সত্যি আপু এই গরমে আমরা সারাদিন ফ্যান ছেড়ে দিয়ে থেকেও হাস ফাঁস করছি।আর খেটে খাওয়া মানুষ গুলো দিন রাত এই গরমে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।আল্লাহ এই তাপ কমিয়ে দিয়ে পৃথিবীটাকে শীতল করে দিবেন এটাই হোক চাওয়া।আমরা যারা একটু ভালো আছি আসুন সুবিধা বঞ্চিত মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াই।ধন্যবাদ আপু সমসাময়িক এই বিষয়টিকে নিয়ে পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

আপু আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। এত সুন্দর করে উপলব্ধি মূলক মন্তব্য করার জন্য।

বিগত দুইদিন আমাদের এখানেও প্রচন্ড পরিমাণে গরম পড়ছে আপু। তবে আপনার এই কথা একেবারেই সত্যি, যারা উঁচু তলার মানুষ তারা তো এসির ভিতর থেকে তাদের মন প্রাণ ঠান্ডা করে নিচ্ছে কিন্তু যারা খেটে খাওয়া মানুষ অর্থাৎ ভ্যান রিক্সা চালায়, তাদের কথা আসলে কেউই চিন্তা করে না। তবে একটা কথা কি জানেন তো আপু, যারা এসির ভিতর থাকে তারা কখনো এই মানুষগুলোর কষ্ট অনুভব করতেই পারবে না।

সেটাই তো সমস্যা দাদা। আমরা তো নিজেদের নিয়েই ব্যাস্ত। যাই হোক আশা করি বেশ তাড়াতাড়ি প্রকৃতি তার রাগ কমিয়ে নিবে। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর এবং সাবলীল মন্তব্যের জন্য।

যাই হোক আশা করি বেশ তাড়াতাড়ি প্রকৃতি তার রাগ কমিয়ে নিবে।

এই অপেক্ষায়ই আছি আপু। এখন দেখা যাক, কবে সেটা সম্ভব হয়।

আসলে এখন প্রতিনিয়ত গরমের তাপ বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছে। একইসাথে এর ফলে অনেক মানুষ অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে৷ অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়ছে। তবে অনেকেই আছেন যারা এই গরম থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্নভাবেই পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন এবং তারা ভালোই আছেন৷ তবে যারা খেটে-খাওয়া মানুষ রয়েছে এবং তাদেরকে প্রতিনিয়ত বাহিরে কাজ করতে হচ্ছে৷ এর ফলে তারা অনেকেই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন৷ সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই চাওয়া তিনি যেন এই গরম অতি তাড়াতাড়ি কমিয়ে দেন।

ধন্যবাদ ভাইয়া এমন সুন্দর মন্তব্য করে পোস্টটি মূল্যায়ণ করার জন্য।

আপু বিশ্বাস করেন এই গরমে যতবার রিক্সায় চড়েছি ততবারই তাদের জন্য মনটা খারাপ লেগেছে। কি দূর্বিসহ জীবন তাদের। আপনি খুব সুন্দর করে তাদের দূর্বিসহ জীবনের বর্ণনা তুলে ধরেছেন। তাই আমিও মনে করি তাদের পাশে আমাদের দাড়াঁনো উচিত।

ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্ট পড়ে এমন সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।