আমার বাংলা ব্লগ:- ঝড়ের সময় আম কুড়ানোর গল্প

in hive-129948 •  9 days ago 

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন আপনারা সবাই। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আপনাদের দোয়াতে আমিও অনেক ভালো আছি। বন্ধুরা আজকে আপনাদের মাঝে আমি আমার পুরনো দিনের একটি গল্প শেয়ার করতে চলেছি, আর যে গল্পটি ঝড়ের সময় নিয়ে।

max-larochelle-uu-Jw5SunYI-unsplash.jpg
Src

আসলে বর্তমান সময়ে এমনটা দেখা যায় না, আর আজকে যে ঘটনাটি আপনাদের সাথে শেয়ার করব সেটা এখান থেকে আরো ২০/২২ বছর আগের কথা। যখন আমি মামুন সবেমাত্র নতুন নতুন ক্লাস সিক্সে উঠেছি। এই ঘটনাটি তখনকার।

আসলে বন্ধুরা সেই সময়টা অনেক আনন্দের ছিল, যে আনন্দের অনুভূতিগুলো এখনো মনে পড়লে অনেক মিস করি। সেই সময়ের মানুষগুলোকে, সেই সময়ের জিনিসগুলোকে, সেই সময়ে আনন্দ গুলোকে।

তখন আমরা বন্ধু-বান্ধব সবাই মিলে কত আনন্দ করতাম, কত ফুর্তি করতাম, যার কোন সীমা ছিল না। সেই সময়টাই আমাদের কারোর ভেতরে এমন কোন শয়তানি বুদ্ধি ছিল না বা খারাপ কোন চিন্তাভাবনা ছিল না, ছিল শুধু আনন্দ আর আনন্দ।

যখন বর্ষাকাল পড়তো বর্ষার সময় আমরা তো জানি কমবেশি ঝড় দেখা দিত আগেকার সময়, বর্তমানে একটু কম দেখা যায়। তবে যখন ঝড়ের সময় হতো তখনই সবেমাত্র আম গাছে আম পাকার মত হতো। যে সময়টা আমের বোঁটা গুলো অনেক নরম থাকত যার জন্য একটু বাতাস পেলেই আম গাছ তলায় অনেক আম পড়তো, আর সেগুলোই কুড়াতে যেতাম আমরা বন্ধুরা মিলে।

ঠিক এমনই একটি দিন সন্ধ্যাবেলায় হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হল, আর যখনই বৃষ্টি শুরু হল তখনই তো বুঝতে পারলাম বৃষ্টি যখন শুরু হয়েছে অল্প অল্প তাহলে ঝড় হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আগেভাগেই প্রস্তুতি নিয়ে নিলাম, আমতলায় আম কুড়াতে যাওয়ার জন্য।

আসলে বন্ধুরা সেই সময় তো আর টেলিফোনের এত চলন ছিল না, তাই বর্ষা মাতাই আমি একটি বস্তা মাথায় দিয়ে আমি আমার পাশের বাড়ির বন্ধুর কাছে গেলাম তাকে গিয়ে জানান দিলাম। যে তুই রেডি হও আমরা কিন্তু এখনই বেরিয়ে পড়বো আম কুড়ানোর জন্য।

এভাবে আমি দুই তিনজনের বাড়িতে গেলাম, দুই তিন বন্ধুকে বললাম আর তারা সবাই একটি করে বাজার করা ব্যাগ নিয়ে নিল। আসলে সেই সময়টাই বাজার করা ব্যাগ নিয়ে যেতাম আম তলায় আম কুড়ানোর জন্য।

বলতে না বলতেই ঝড় শুরু, আর তখন আমরা চারজন বন্ধু মিলে বেরিয়ে পড়লাম আম কুড়ানোর জন্য আমাদের বাড়ির পাশে একটা বাগানে। যে বাগানটা মূলত আমাদের ছিল না, আমাদের এলাকার চেয়ারম্যানের ছিল।

তবে আমাদের চেয়ারম্যান সাব অনেক ভালো ছিল, আমরা এত দুষ্টামি করতাম, এত জ্বালাতন করতাম, তার বাড়িতে গিয়ে। তার বাগানে গিয়ে, সে কখনোই আমাদেরকে কোন গালিগালাজ বা খারাপ মন্তব্য করত না। সে বলতো তোমরা যাই করো তাই করো কোন কিছু নষ্ট করো না, যেটি খাওয়ার জিনিস সেটা তোমরা খেয়েও, তবে যতটুকু পারো ততটুকু খেও আমার তাতে কোন আফসোস নেই।

james-graham-wUw5-mPkpmw-unsplash.jpg
Src

এভাবেই আমরা কিছুক্ষণ হাঁটার পর আমরা আম গাছ তলায় গিয়ে পৌঁছালাম, গিয়ে দেখি আমতলায় আগে থেকে অনেক মানুষের ভিড়, আমরা আসলে বুঝতেই পারেনি আমরা অনেক বেশি দেরি করে ফেলেছি আসতে। ইতিমধ্যেই আমতলা থেকে অনেক আম কুড়িয়ে পেয়েছে অন্যরা, আর আমরা সর্বশেষে যাওয়া কারণে আমরা একটি আম কুড়িয়ে পেলাম না।

যার জন্য আমাদের চারজনের অনেক বেশি মন খারাপ হয়ে গেল, এত কষ্ট করে এই ঝড় বৃষ্টির মধ্যে আসলাম আম কুড়ানোর জন্য কিন্তু আম পেলাম না এই আফসোসটা একটু মনে গেঁথে গেল।

বন্ধুরা যেহেতু এটি আমার জীবনের একটা সত্য ঘটনা নিয়ে গল্প, তাই এই গল্পটি বেশ বড়। আমি আশা করি আমার গল্পের বাকি অংশ আপনাদের সাথে একে একে শেয়ার করব, আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আমার গল্পের বাকি অংশ পড়ার জন্য একটুখানি অপেক্ষা করুন, আমি আবার পুনরায় আপনাদের মাঝে আমার গল্পের বাকি অংশ শেয়ার করব।

আজ এই পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, আর আমার গল্প আপনাদের পড়ে যদি এতটুকু পরিমাণে ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনারা কমেন্টস এর মাধ্যমে জানাবেন, আপনাদের ছেলেবেলা কি এমনটা ছিল?

নিজের সম্পর্কে ছোট্ট কিছু বর্ণনা

mamun benner.jpg
text15.png

আমি মোঃ মামুন, বাংলাদেশী। তবে কাজের সুবাধে বর্তমানে মালয়েশিয়ায় প্রবাসি জীবন যাপন করছি। নিজের অনুভূতিগুলোকে লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করি এবং অভিজ্ঞতাগুলেোকে ভিডিওর মাধ্যমে শেয়ার করি। তবে গান করতে বেশী ভালোবাসি, আর গেম খেলতেও ভালোবাসি,তাই অবসর সময়ে গান করি, ও গেম খেলি। বন্ধুত্ব তৈরী করতে ভালোবাসি। জীবনকে ভালোবাসি এবং উপভোগ করার চেষ্টা করি।

text15.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

  ·  9 days ago (edited)

আপনার আম কুড়ানোর গল্প পড়ে ফিরে গিয়েছিলাম শৈশবে। ঠিকই বলেছেন, এখন আর আগের মতো ঝড় দেখা যায় না। আমার জন্মের পর আমের সময় খুব ঝড় আমি একবার দেখেছি। সেবার আমি অনেক আম কুড়িয়েছিলাম। আমাদের গ্রামের বাড়িতে অনেক আম গাছ আছে সেবার ঝড়ে অনেক আম পড়েছিলো।আমি আর আমার দিদা মিলে অনেক আম কুরিয়াছিলাম। আমি তখন অনেক ছোট ছিলাম ক্লাস থ্রিতে পড়তাম হয়তো। দিনগুলো এখন বড্ড মনে পড়ে। আপনার আম কুড়ানোর গল্পটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

অতীতের স্মৃতি স্মরণ করতে আমিও খুব পছন্দ করি। ইতিমধ্যে আমি দুইটা পোস্ট শেয়ার করেছিলাম আম কুড়ানো নিয়ে। আজকে আপনার গল্পটা পড়ে বেশ ভালো লাগলো আমার। তবে আম পোড়ানোর মধ্যে যেমন আনন্দ রয়েছে তেমন ঝড়-বৃষ্টিতে বেশ অনেক সময় ভয়ানক সমস্যা ও সৃষ্টি হয় এটা সত্য।

ছেলেবেলাটা সত্যিই যেন সকলের কাছে বড় স্পেশাল। সব সময় মনে পড়ে সেই সময়কার কথাগুলো। আপনার শৈশবের কথাও পড়ে খুব ভালো লাগলো। বন্ধুদের সঙ্গে আউটপূরণের গল্প পড়তে ভালো লাগছিল। আসলে বড় হওয়ার সাথে সাথে পৃথিবীটাই কেমন যেন বদলে যায়। কিন্তু তখন আর ফিরে পাওয়ার উপায় থাকে না সেই হারানো শৈশবটি।