Recipe ।। আন্দোসা পিঠা তৈরি ।

in hive-129948 •  2 years ago 
আজ বুধবার

৩রা নভেম্বর ২০২২ ইং || ১৮ই কার্তিক ১৪২৯ বঙ্গাব্দ || ৭ই রবিউস-সানি ১৪৪৩ হিজরি ।

আসসালামু আলাইকুম
প্রাণ প্রিয় বন্ধুগণ, আশাকরি মহান আল্লাহতালার অশেষ রহমতে সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন । আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভাল আছি ।
ছোট থেকেই যে খাবার খেয়ে আমি কখনো ক্লান্ত অনুভব করিনি তা হলো বাড়িতে তৈরি পিঠা । এমন ও হয়েছে পিঠা তৈরি উপলক্ষে আমার নিয়মিত খাবার গ্রহণে অনিয়ম সহসায় ঢুকে পড়েছে । দুই একটা দিন শুধু পিঠা খেয়েই পার করে দেব এটা আমার জন্য খুব একটা বড় ব্যপার নই । তবে ক্ষতি যেটা হয়েছে মাঝে মাঝে প্রচুর এসিডিতে ভুগি । আর উপকারের কথা বলতে গেলে বাড়িতে তৈরি প্রায় সব পিঠার রেসিপি আমার মুখস্থ । আমি বাড়িতে না থাকলে কোন রকম পিঠা পুলি তৈরি করাটা যেন অসম্ভব কল্পনার নামান্তর । আর ছোট থেকে এসব কাজে হেল্প করতে করতে এখন অনেকটা আয়ত্তে চলে এসেছে । অতএব এখন আর কোন সময় অসময় নেই । সকাল ভোর থেকে রাত দুপুর যখন ইচ্ছে পিঠা তৈরি করতে শুরু করে দেই । তেমনি কয়েকদিন আগেই একটা পিঠা তৈরি করছি যা আমার প্রিয় পিঠার মাঝে অন্যতম আমাদের এখানে এটা "আন্দোসা" নামে পরিচিত । বন্ধুরা এখন আমি আপনাদের সাথে আমার তৈরি "আন্দোসা" পিঠার রেসিপি শেয়ার করতে চলেছি ।

আন্দোসা পিঠা রেসিপি.jpg

উপকরনঃ
উপকরণের নাম পরিমাণ
সিদ্ধ চাউলেরন সুজি ১ কেজি
চিনি ৭৫০ গ্রাম
এলাচ ৪টি
দারচিনি পরিমাণ মত
লবণ পরিমাণ মত
ভোজ্য তেল পরিমাণ মত

Untitled design(17).jpg

ধাপঃ০১

প্রথমে আমি সিদ্ধ চাউল ৩০ মিনিটের মত পানিতে ভিজিয়ে রেখে দিয়েছিলাম । পানি থেকে উঠিয়ে অল্প কিছু সময় রোদ্রে শুকিয়ে নিয়েছি । এবং হেমান্দিস্তা দিয়ে পিষে সুজি করে নিয়েছি । একেবারে মিহি দানা দিয়ে নাকি এই পিঠা ভাল হয়না । আমি কখনো চেষ্টা করে দেখিনি । তাই সত্যিটা অজানা ।

IMG_২০২২১০০৫_১৪০২৫৪.jpg

ধাপঃ০২

এবার চুলার উপড় একটি কড়াই বসিয়ে তাতে পরিমাণ মত পানি দিয়ে দিলাম । পানি গরম হয়ে এলে এতে চিনি ও লবণ দিয়ে মিশিয়ে নিলাম ।

IMG_২০২২১০০৫_১৪০৭১৮.jpg

ধাপঃ০৩

চিনি এবং লবণ পুরোপুরি মিশে গেলে এর ভিতরে এলাচ এবং দারচিনি ছেড়ে দিলাম ।

IMG_২০২২১০০৫_১৪১০০০.jpg

ধাপঃ০৪

এবার আমি অল্প অল্প করে সুজি দিয়ে দিলাম । ঠিক যতটা পানি শুকিয়ে নিতে প্রয়োজন হবে ।

IMG_২০২২১০০৫_১৪১১৪৩.jpg

ধাপঃ০৫

চুলা থেকে কড়াই নামিয়ে গরম থাকতে থাকতেই পারফেক্ট দো তৈরি করে নিয়েছি । এখন হাতের সাহায্যে ছোট ছোট ডিম্বাকৃতির শেপ দিয়ে নিলাম । সবগুলো তৈরি করে নিয়ে ভাজতে শুরু করেছিলাম ।

IMG_২০২২১০০৫_১৪২১৪৬.jpg

ধাপঃ০৬

ভাজার জন্য একটি কড়ায়ে পরিমাণ মত তেল দিয়ে গরম হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি । যেহেতু আমি পিঠা গুলো ডুবো তেলে ভাজবো । তাই তেলের পরিমাণ একটু বেশিই দিয়েছি ।

IMG_২০২২১০০৫_১৪৩২২০.jpg

ধাপঃ০৭

তেল গরম হয়ে গেলে একই সাথে ৮-১০ টা পিঠা একই সাথে কড়াইয়ে দিয়ে দিলাম । ।

IMG_২০২২১০০৫_১৪৩৫০৬.jpg

ধাপঃ০৮

কিছুটা সময় নিয়ে গাড়ো বাদামী রঙে ভেজে নিয়েছি । এভাবে একে একে সব গুলো পিঠা ভেজে নিয়েছি ।

IMG_২০২২১০০৫_১৪৩৬২৩.jpg

ধাপঃ০৯

ভাজা পিঠার স্বাদ কয়েকগুণ বেড়ে যায় যদি পরিমাণ মত সঠিক সময় নিয়ে ভেজে নেওয়া যায় । আমি হয়তো এটা খুব ভালভাবে পেরেছি মুচমুচে হয়েছে সাথে স্বাদটাও কম যায় না ।

IMG_২০২২১০০৫_১৫০৮৩৩.jpg

ধাপঃ১০

এখন আমি একটা প্লেটে নিয়ে পরিবেশন করছি । অবশ্য নিজে তৈরি করে নিজেই খাওয়া এর কারণে কারো অনুমতির প্রয়োজন নেই । শুধু ছবিটা ওঠাতে দেরি । খেয়ে শেষ করতে আর কিছু ভাবার প্রয়োজন পড়েনি।

IMG_২০২২১০০৫_১৫১১৪৬.jpg

অনেক রকম পিঠার ভিড়ে এই পিঠা আমি নিজ হাতে এর আগে কখনো তৈরি করিনি । তাই তৈরির আগে আরেকবার আম্মুর থেকে পুরো রেসিপিটা শুনে নিয়েছিলাম । তবে আশার কথা হলো কোন রকম ভুল ভ্রান্তি ছাড়াই এটা খুব সুন্দর ভাবে তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি । আমার প্রিয় পিঠা রেসিপিটি শেয়ার করতে পেরে বেশ ভালো লাগলো । আশাকরি আপনারা এর থেকে উপকৃত হতে পারবেন । ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনা করে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি ।

আল্লাহ্‌ হাফেজ
ধন্যবাদান্তে @maruffhh
ফটোগ্রাফি ডিভাইসঃ mobile
মোবাইল নেমঃ redmi 6a
ক্যামেরাঃ 8mp

আমার পরিচয়

IMG_20170303_142442.jpg

আমার নাম মারুফ হাসান । আমি বাংলাদেশী আমার প্রাণের আবেশ বাংলাদেশকে প্রাণের চেয়েও ভালবাসি । ভালবাসি বাংলা ভাষাকে । আমি পড়াশুনা করেছি তড়িৎ প্রোকৌশল বিদ্যায় । তবে বাংলা সাহিত্য পড়তে ভীষণ ভাল লাগে । আমার ভাললাগার মাঝে ভ্রমণ হলো অন্যতম । সময় সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ি ঘর ছেড়ে । দু চোখে খুজেফিরি প্রকৃতির সৌন্দর্য । আমি আমার সময় গুলো কাজে লাগায় বিভিন্ন সৃজনশীল কাজের মাঝে । নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে ভাল লাগে খুব । বিশ্ব জোড়া পাঠ শালা মোর সবার আমি ছাত্র ।

ধন্যবাদ সবাইকে

zr7XQBzuvvkjgjjPxunUtP5k84gxgWc4mR8PqdBj5rx8AtXSSugGPwSy7JKyM3rgX4k3arRVPC2wT66DqiAYg2UuYrHpE94NCJsYEnjKP7Erbg.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনিও আজ দেখছি খুব কম উপকরণে সুস্বাদু একটা পদ রান্না করেছেন।আর শীত তো প্রায় পড়েই গেলো এই সময়ে মন টা এমনিই কেমন একটা পিঠে পিঠে করতে থাকে। বেশ ভালোই লাগলো বিষয় টা। দেখি চেষ্টা করব কখনও।

আমার আবার শীত গরম নেই। হুটহাট পিঠা তৈরি করতে ভালই লাগে। তারপর ও শীতে অনেক উপাদান সহজলভ্য হওয়াই এই প্রবণতা বেশিই থাকে।

আপনি অনেক সুন্দর ভাবে আন্দোসা পিঠা বানিয়েছেন। সত্যি অবাক করার বিষয় আপনি পিঠা খেয়ে দুই দিন থাকতে পারবেন। তবে পিঠা খেতে আমারও অনেক ভালো লাগে। আপনার পিঠাগুলো দেখে আমার খেতে খুব ইচ্ছে করতেছে। সামনে একদিন বাসায় বানানোর চেষ্টা করব গুলো। ধন্যবাদ আপনাকে পিঠা গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

যদি এটা এর পুর্বে কখনো না খেয়ে থাকেন তবে দারুণ একটা স্বাদ থেকে এখনো বঞ্চিত আছেন। তৈরি প্রক্রিয়া খুবই সহজ আর উপকরণ ও কম। আশা রাখছি একবার খেলে এই পিঠা আপনার ফেভারিট লিস্ট এ চলে আসবে।

বাহ আপনি ছেলে মানুষ হয়েও এত পিঠা বানানো শিখে গিয়েছেন। তাছাড়া পিঠা খেলে আসলে অনেক গ্যাস হয় । আর সব খাবার বাদ দিয়ে যদি পিঠাই খাওয়া হয় তাহলে তো কথাই নেই। আপনার এই আন্দোসা পিঠা আমি আগে কখনো দেখিনি। আজকেই প্রথম দেখলাম। রেসিপি দেখে মনে হলো যে খেতে বেশ সুস্বাদু পিঠাটি। বাসায় একবার বানিয়ে দেখব । ধন্যবাদ আপনাকে।

নিজের হাতে রান্না করে খাওয়ার মজাটাই আলাদা। তবে আমার কি মনে হয় জানেন। ছেলেরা মেয়েদের থেকেও ভাল রাধুনি হতে পারে। তবে অভাব যেটার তা হলো ধৈর্য। যেখানে সাধারণত মেয়েরা ১০০ ছেলেরা ১০। আমি ৫০ এ আছি তাই রান্নাটা শিখেই নিয়েছি। 🙂