প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ বাসী ভাই ও বোনেরা আশা করি সবাই খুব ভাল আছেন । আলহামদুলিল্লাহ আমিও বেশ ভাল আছি ।
মনে জমা হাজারো অনুভুতি কখনো প্রকাশ পায়, কখোনো বা মনেই মিলিয়ে যায় । সব চেয়ে কাছের মানুষটিও হয়তো এক সাথে একই ছাদের নিচে পঞ্চাশ বছর কাটানোর পরেও কখোনো টের পাবে না কি চলছে কার মনে । আজ তেমনি একটি অব্যক্ত অনুভুতি আপনাদের সাথে প্রকাশ করতে চলেছি । অপারেশন থিয়েটারের বাইরে অপেক্ষা করছি । একেটা সেকেন্ড যেন একেক ঘন্টা সমান সময় ২টা বেজে ১৫ মিনিট তখনি কান্নার আওয়াজ শুনলাম । অপার্থিব এক আনন্দের ঢেউ উঠে গেল মনে । তবে তার স্থায়ীত্ব ছিল কয়েক সেকেন্ড মাত্র কারণ পুরো ক্লিনিক অন্ধকার করে কারেন্ট অফ হয়ে গেল । দ্বায়ীত্বরত ব্যাক্তিদের দৌড়া দৌড়ি আর আমার নির্লিপ্ত চেয়ে থাকা । জানিনা সেই দুই মিনিট আমি কতটা অবস্বাদ, দুশ্চিন্তা আর অসাহায়ত্বে ভুগেছি । আর এদিকে তার চিৎকার যেন থামেই না । আমার জীবনে এর আগেও একবার এমন মুহুর্ত এসেছে তবে এবারের মত তীব্র অনুভুতি ছিল না । এদিকে বউ অপারেশন টেবিলে আর আমি ছিলাম লোহা লক্করের দোকানে কয়েক ঘন্টা পর শুনেছিলাম আমার প্রথম সন্তান এই পৃথিবীতে তার অবস্থান পাকা করে নিয়েছে । জানিনা এই সমাজ কেন পিতার ভুমিকাকে এত ছোট করে দেখে । আমার স্পষ্ট মনে আছে আমি সেদিনের ছুটি চেয়ে ছিলাম কিন্তু অফিসের দ্বায়ীত্বরত বড় ভাই আমাকে বলেছিল দুপুরের পরে যেও তার পুর্বে এই কাজ টুকু করে ফেল । ইচ্ছেত করছিল সেই মুহুর্তে চাকরীর ইস্তফা পত্র জমা দিয়ে চলে আসি, পরবর্তী সময়ের কথা ভেবেই হয়তো থেকে গেছিলাম । এসে সুস্থ ছেলে এবং স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আর কোন কষ্ট মনে স্থায়ী হয়নি । তবে এবারের পরিবেশ ছিল ভিন্ন । বেকার জীবনের এই এক সুফল নিজের সময় নিজের মত ব্যয় করা যায় কারো অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না । একজন নার্স যখন আমার দ্বিতীয় সন্তানকে কোলে নিয়ে আসছিল প্রচুর কান্না করছিল । এই কান্নার মাঝেও যে এক অপার্থিব সুখ পাচ্ছিলাম । চেষ্টা করলাম ওর কানে আজান এবং একামত দেওয়ার জন্য প্রথম তাকবীরেই ওর কান্না পুরোপুরি থেমে গেল । তবে আমার গলা ধরে এলো । এমনতো না এই বাক্য গুলো প্রথম বলছি । তবে সেদিন পরিস্থিতি অন্য রকম । আর এটা আমার ছেলে এবং আমি দুজনের জীবনেই প্রথম । আজ ওর জীবনের ১৪ তম দিন এবং আজকেই ও একটি নামে পরিচিত হওয়ার অধিকার পেয়েছে । সময়ের স্রোতে আমি আজ দুটি সন্তানের পিতা । দায়ীত্ব বেড়েছে , ভালবাসা বেড়েছে সন্তানদের প্রতি এই অনুভুতি আরো তীব্র হচ্ছে । কিন্তু জানি এগুলো সব সময় অপ্রকাশিতই থেকে যাবে ।
আমার ছেলেদের কিছু ছবি শেয়ার করছি
আজ কোন স্পেশাল দিবস নয়, তবে আমার জীবনে দিনটা খুবই স্পেশাল, ভাল থাকুক পৃথিবীর সব বাবারা, ভাল থাকুক তাদের প্রিয় সন্তানেরা, সুখী হোক বাবা মায়ের ভালবাসা পেয়ে
সবার জন্য সুস্থতা কামনা করে আজ এখানেই সমাপ্ত করছি ।
ধন্যবাদান্তে | @maruffhh |
---|
আপনি খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন আপনার বাবা হওয়ার অনুভূতিগুলো। বড় ছেলের সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করে দেখিয়েছেন এর সাথে উপস্থাপন করেছেন নতুন বাবুর কান্নারত অবস্থার কথা বাচ্চা হওয়ার পরে আযান দেওয়ার অনুভূতিটা ও প্রকাশ করেছেন সুন্দরভাবে। সব মিলে খুব সুন্দর বর্ণনা করে দেখিয়েছেন আপনি। আপনার সন্তানের জন্য দোয়া করি যেন সুস্থ সবল থেকে বড় হতে পারে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার সুন্দর মতামত এর জন্য ধন্যবাদ। অনেক অনুভুতি রয়েছে যা মনে চাপা পড়েই থাকবে আজীবন। তার কিছুটা শেয়ার করার চেষ্টা করেছি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার অনুভূতিগুলো পড়ে সত্যি খুব ভালো লাগলো । আসলে বাবাদের এইরকম অনুভূতি হয়ে থাকে। আপনার সন্তানদের ভবিষ্যত জীবনের উজ্জ্বল সফলতা কামনা করি। মানুষের মত মানুষ হয়ে আপনাদের মুখ উজ্জ্বল করুক এই আশাবাদ ব্যক্ত করি। এত চমৎকার পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে এ পর্যন্ত না আসলে বুঝতেই পারতামনা এত্ত এত্ত সুপ্ত অনুভুতি মনের ভেতরে জেগে। আপনার জন্যেও শুভকামনা রইলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit