"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ২৫ || শেয়ার করো তোমার প্রিয় স্বাদের আচারের রেসিপি - By @marufhh

in hive-129948 •  2 years ago 
আজ রবিবার

২৩শে অক্টোবর ২০২২ ইং || ৬ই কার্তিক ১৪২৯ বঙ্গাব্দ || ২৬শে রবিউল আওয়াল ১৪৪৩ হিজরি ।

আসসালামু আলাইকুম
প্রাণ প্রিয় বন্ধুগণ, আশাকরি মহান আল্লাহতালার অশেষ রহমতে সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন । আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভাল আছি ।

আমার বাংলা ব্লগ(16).jpg

আমি এর পুর্বে কখনো আমড়ার আচার খায়নি । নিজে তৈরি করার তো কোন প্রশ্নই আসেনা । আচার মুলত একটু টক না হলে আমার কাছে অন্তত ভাল লাগে না । সেইক্ষেত্রে আমড়ার স্কোর ১০০তে ১০ কেননা খোসা ছাড়িয়ে নিলে এর মাঝে টকের কোন বালাই নেই । তাই বাড়িতে এই সময়ে আমড়ার প্রাচুর্য থাকার পরেও এটা কখনো তৈরি করা হয়নি । তবে কিছুদিন পুর্বে তনুজা বৌদির আমড়ার আচারের রেসিপি দেখে আমি হঠাৎ অনুপ্রেণিত হয়ে গেলাম । মনে হলো এভাবে কখনো চেষ্টা করিনি কেন ? টমেটোর সসে তেঁতুল দিয়ে এর টক স্বাদ বাড়ানো গেলে আমড়ার জন্য কেন নয় । আর এই সময় সংগ্রহে রাখা তেঁতুল ও আছে ফ্রিজে । তাই আর ভাবনা চিন্তা না করে শুরু করে দিলাম আমড়ার আচার রেসিপি ।
উপকরনঃ
উপকরণের নাম পরিমাণ
আমড়া ১০ পিস
আখের গুড় ২৫০ গ্রাম
সরিষা ১ টেবিল চামচ
শুকনা মরিচ পরিমাণ মত
লবণ পরিমাণ মত
হলুদ গুড়া আধা চা চামচ
সরিষার তেল পরিমাণ মত
পাকা তেঁতুল ৫টি
মরিচ গুড়া পরিমাণ মত
সরিষা ১ টেবিল চামচ
পাঁচ ফোঁড়ন ১ চা চামচ
রসুন দুটি

IMG_২০২২০৯০৩_১৩১৪৫৩.jpg

ধাপঃ০১

প্রথমে আমি পিলার দিয়ে আমড়া গুলোর খোসা ছাড়িয়ে নিলাম । কিছুক্ষন পানিতে ডুবিয়ে রেখে ধুয়ে উঠিয়ে নিলাম ।

IMG_২০২২০৯০৩_১৩১৫১১.jpg

ধাপঃ০২

এবার চুলার উপড় একটি কড়াই বসিয়ে শূকনা মরিচ গুলো ভাল ভাবে ভেজে নিলাম । আচারে শুকনা মরিচ দিলে এর স্বাদ কয়েকগুণ বেড়ে যায় । এই কারনে আমি চেষ্টা করি শুকনা মরিচ ভেজে দেওয়ার ।

IMG_২০২২০৯০৩_১৩১৮৫৭.jpg

ধাপঃ০৩

আমড়া গুলো কুচি করে কেটে নিলাম । এভাবে কেটে নিলে মশলা গুলো ভাল ভাবে মেখে যাবে । এতে স্বাদটা সবখানেই পরিমাণ মত হবে ।

IMG_২০২২০৯০৩_১৪১২২৭.jpg

ধাপঃ০৪

এবার একটি কড়াই চুলাই বসিয়ে ভাল ভাবে গরম করে নিলাম । এরপর এতে সরিষার তেল পরিমাণ মত ঢেলে দিলাম ।

IMG_২০২২০৯০৩_১৪১৩৩৯.jpg

ধাপঃ০৫

তেল গরম হয়ে এলে এর মাঝে পাঁচফোড়ন দিয়ে দিলাম । পাঁচফোড়ন দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই এর সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়লো । মনে হচ্ছিল এটা ভীষণ স্বাদের হতে যাচ্ছে । যায় হোক শেষ পর্যন্ত নিরাশ হইনি ।

IMG_২০২২০৯০৩_১৪১৪৪৪.jpg

ধাপঃ০৬

আমি আগে থেকেই সরিষা গুলো বেটে নিয়েছিলাম । এখন এগুলো কড়াইয়ে দিয়ে দিলাম । একটু পানি দিয়ে দিলাম । এখন এই মশলা গুলো কিছু সময় ধরে কষিয়ে নিতে হবে ।

IMG_২০২২০৯০৩_১৪১৭৩১.jpg

ধাপঃ০৭

এবার আমি কড়াইয়ে কেটে রাখা আমড়া গুলো দিয়ে দিলাম । এখন আমি লবণ, হলুদ ও মরিচ গুড়া দিয়ে দিলাম ।

IMG_২০২২০৯০৩_১৪২০৩২.jpg

ধাপঃ০৮

ভালভাবে মিশিয়ে দিলাম একটু সময় ঢেকে রেখে সিদ্ধ করে নিয়েছি ।আমি তেঁতুল গুলো কিছুটা পানি দিয়ে ভিজিয়ে রেখেছিলাম । এবার আমি তেতুলের কাঁথ তৈরি করে নিয়ে কড়াইয়ে দিয়ে দিলাম ।

ধাপঃ০৯

১০ মিনিট রান্না করার পর আখের গুড় দিয়ে দিলাম এবং ভাল ভাবে মিশিয়ে নিলাম ।

IMG_২০২২০৯০৩_১৪২৮৩৩.jpg

ধাপঃ১০

এরপর সিদ্ধ হয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা । এর মাঝে আমি কয়েকটা টেস্ট করে দেখেছি । লবণ, ঝাল ঠিক মত হয়েছে কিনা । নিশ্চিত ভাবেই একটু ঝাল কম হয়েছিল এখন আমি ভেজে গুড়া করে রাখা মরিচ গুলো স্বাদ মত দিয়ে নিলাম ।

IMG_২০২২০৯০৩_১৪২৯৩২.jpg

ধাপঃ১১

কিছুক্ষণ চুলার উপর রেখে নামিয়ে নিলাম ।

IMG_২০২২০৯০৩_১৪৪০৩৫.jpg

পাত্রে রেখে কোন ছবি উঠানো সম্ভব হয়নি । কারণ কড়াই থেকে টেস্ট করতে করতে আচারের পুরোটাই শেষ হয়ে গেছে । নতুন করে আবার আচার তৈরি করার এনার্জিও নেই মনে । তারপরেও মনে হলো এত সুন্দর আচারের রেসিপি শেয়ার না করলেই না । একবার মনে হলো আবার নতুন করে রেসিপি তৈরি করি । কিন্তু শুধু একটা ছবির জন্য পুরো রেসিপি তৈরি করতে মন চাইলো না । অবশ্য এর পিছে কারণ অন্য কিছুও আছে । গাছে আমড়া শেষ, আখের গুড়, তেঁতুল সরিষা এগুলো কেনার জন্য সুদুর বাজারে যাওয়া লাগবে । আর সবশেষে তৈরি করলেও এমন স্বাদ কি আর পাবো ? তাই এই রেসিপিটাই শেয়ার করে ফেললাম । ভুল ত্রুটি মার্জনীয় ।

আল্লাহ্‌ হাফেজ
ধন্যবাদান্তে @maruffhh
ফটোগ্রাফি ডিভাইসঃ mobile
মোবাইল নেমঃ redmi 6a
ক্যামেরাঃ 8mp

আমার পরিচয়

IMG_20170303_142442.jpg

আমার নাম মারুফ হাসান । আমি বাংলাদেশী আমার প্রাণের আবেশ বাংলাদেশকে প্রাণের চেয়েও ভালবাসি । ভালবাসি বাংলা ভাষাকে । আমি পড়াশুনা করেছি তড়িৎ প্রোকৌশল বিদ্যায় । তবে বাংলা সাহিত্য পড়তে ভীষণ ভাল লাগে । আমার ভাললাগার মাঝে ভ্রমণ হলো অন্যতম । সময় সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ি ঘর ছেড়ে । দু চোখে খুঁজেফিরি প্রকৃতির সৌন্দর্য । আমি আমার সময় গুলো কাজে লাগায় বিভিন্ন সৃজনশীল কাজের মাঝে । নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে ভাল লাগে খুব । বিশ্ব জোড়া পাঠ শালা মোর সবার আমি ছাত্র ।

ধন্যবাদ সবাইকে

zr7XQBzuvvkjgjjPxunUtP5k84gxgWc4mR8PqdBj5rx8AtXSSugGPwSy7JKyM3rgX4k3arRVPC2wT66DqiAYg2UuYrHpE94NCJsYEnjKP7Erbg.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এবারের আচার কনটেস্ট প্রতিযোগিতায় ভিন্ন ভিন্ন ধরনের আচার রেসিপি দেখতে পাচ্ছি। আপনি তনুজা বৌদির অনুপ্রেরণায় টমেটোর সসে আমরা দিয়ে দারুণ আচার রেসিপি করেছেন। আসলে এই ধরনের টক জাতীয় খাবার খেতে সবাই পছন্দ করে ভালো লাগলো।

খুবই মজাদার এবং লোভনীয় একটি আচার রান্নার রেসিপি আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আমাদের বৌদি বরাবরই অনেক মজাদার মজাদার রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করে থাকে, বৌদির আচার রেসিপি দেখে আপনি সেটা তৈরি করেছেন এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো। মজাদার রেসিপি তৈরি করার পাশাপাশি চলমান প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

মামা আপনি তো অনেক সুন্দর ভাবে আচারের প্রতিযোগিতার কনটেস্টে জয়েন করে ফেললেন। সত্যি বলতে মামা আমড়ার আচার আমি খেয়েছি খুবই সুস্বাদু লাগে। সত্যি বলতে মামা আপনার আচার দেখে আমার তো জিভে জল চলে আসছে। আপনার বাড়িতে আমাকে দাওয়াত দিয়েন মামা আচার খাওয়ার জন্য। এত সুন্দর ভাবে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ মামা।

আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা-২৫ এ অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে জানাই আন্তর্জাতিক অভিনন্দন। প্রতিযোগিতা মানেই নতুন নতুন কিছু রেসিপি দেখতে পাওয়া যায়। এই প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে আমরা অনেক আচার সম্পর্কে জানতে পারবো। আমড়া খুবই সুস্বাদু একটি ফল কাঁচা খেতে খুবই ভালো লাগে চাটনি করে খেতেও বেশ ভালো লাগে আর আচার তার তো কোন তুলনায় হয়না। ভাইয়া আপনার আচারের রেসিপি টি অসাধারণ হয়েছে। প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো। সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভকামনা রইল।

আসলে আমিও কখনো আমড়ার আচার খাইনি ৷ তবে আপনার তৈরি আচার দেখে মনে হচ্ছে খুব স্বাদের হয়েছে ৷ আমড়ার খুবই সুস্বাদু একটি ফল কাঁচা খেতে খুবই ভালো কিন্তু আচার খাওযা হয়নি ৷ মনে হচ্ছে আচার করে খেলেও অনেক মজার হয় ৷ ধন্যবাদ আপনাকে প্রতিয়োগিতায় অংশগ্রহণে মাধ্যমে দারুণ এবং লোভনীয় একটি আচারের রেসিপি শেয়ার করার জন্য ৷

তনুজা বৌদির আচারের রেসিপি দেখে আপনিও আচার বানাতে অনুপ্রাণিত হলেন বিষয়টা আসলে খুবই আনন্দের কথা। আপনার আমড়ার আচারের রেসিপিতে দেখে মনে হচ্ছে খুবই সুস্বাদু হয়েছে কালারটাও কিন্তু দারুন হয়েছে, সব মিলিয়ে আমি বলব অসাধারণ হয়েছে ভাই। যেখানে আপনি কখনো আচার বানানাই সেখানে খুবই চমৎকার ভাবে অনেক সুস্বাদু একটি আচার তৈরি করে ফেললেন। প্রতিযোগিতার জন্য শুভকামনা অবিরাম।

আমিও আজকে আমড়া চাটনি তৈরি করেছি আমড়ার আচার বা চাটনি খেতে খুবই ভালো লাগে। বৌদি আমড়ার আচার বানানো দেখে আপনি অনুপ্রাণিত হলেন বিষয়টি আমার কাছে ভালো লেগেছে। আচার তৈরি ধাপগুলো খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছে। কালারটা দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

শীতকালে রোদে বসে আচার খাওয়ার মজাই আলাদা। আমড়ার আচার আমিও আগে খাই নি। যদিও দেখেছি। কিন্তু খাওয়া হয় নি। তবে আপনার বানানো আচার টা আলাদা। আপনার জন্য অনেক শুভ কামনা রইলো।

আমড়া দিয়ে আপনি খুব সুস্বাদু আচার বানিয়েছেন। আমার কাছে আমড়ার আচার খেতে অনেক ভালো লাগে। আপনার আচারের কালার খুব সুন্দর হয়েছে। কালার দেখে মনে হয় খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছিল। ধাপগুলো খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। ধন্যবাদ এত মজাদার রেসিপি শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।