||পরীক্ষার দিনের গল্প||১০%@shy-fox এর জন্য

in hive-129948 •  5 months ago  (edited)

আমার বাংলা ব্লগের সকলসদস্যবিন্দু আমার নতুন একটি ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম !
আমি @mdemaislam00 বাংলাদেশ থেকে।আজ রবিবার, জুন ০২/২০২৪


হ্যালো বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আশাকরি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবৃন্দ আল্লাহর রহমতে ভালো আছে। আমার নাম ইমা অন্য দিনের মতো আজও আমি আপনাদের সাথে নতুন কিছু শেয়ার করতে এসেছি ।অন্যদিন হয়তো আমি আপনাদের সাথে মজার মজার রেসিপি নিয়ে হাজির হয়। কিন্তু আজকে আমি আপনাদের সাথে পরীক্ষার দিনের কিছু গল্প শেয়ার করতে এসেছি। আশা করি আমার পরীক্ষার দিনের গল্পটি শুনে আপনাদের অনেক ভালো লাগবে ।তাহলে চলুন বন্ধুরা দেরি না করে পরীক্ষার দিনের সেই গল্পটি শোনা যাক।


landscape-4254269_1280.jpg

Source




যখন প্রাইমারি তে পড়তাম তখন আমাদের তিন জনার অনেক মিল ছিল ।আমি রিমি এবং ইমরান। ইমরান ছেলে হলেও আমাদের সাথে সবসময় মিলেমিশে থাকতো । আমাদের বাসা থেকে কয়েকটা বাড়ির পর ইমরান দের বাসা। আমরা যেখানে যেতাম একসাথে যেতাম। অনেকেই বলতো তুই ছেলে হয়ে ওদের সাথে মিশিস কেন। তাও ইমরান কিছু মনে করত না ।ইমরান আমাদের সাথে থাকলে আমাদের ভালই হতো ।কোন কিছু প্রয়োজন হলে ইমরানকে বললে ইমরান দোকান থেকে কিনে এনে দিত। একটা সুবিধা ছিল দুপুরে আমরা তেমন একটা টিফিন খেতাম না। স্কুলের পাশে একটা ভদ্রলোক বড়া এবং সিঙ্গারা বিক্রয় করতো। লোকটার বড় এবং সিঙ্গারা অনেক জনপ্রিয় ছিল মানুষের কাছে। প্রতিদিন প্রায় আমরা দুপুরবেলায় সেখান থেকে বড়া এবং সিঙ্গারা কিনে এনে আমরা সবাই ভাগ করে খেতাম। তখন ৫ টাকা দিলে দুইটা সিঙ্গারা দিত। কিন্তু এখন আর সিঙ্গারা দাম তেমন নাই ।অনেক বেড়ে গিয়েছে একটা সিঙ্গারার দাম হয়তো এখন 10 টাকা করে নিয়ে থাকে। কোথাও আবার তার একটু কমও নিয়ে থাকে।ইমরান অনেক সুন্দর ফুটবল খেলতে পারতো তাই অনেকবার সে ফুটবল খেলে প্রাইজ পেয়েছিল ।ইমরানের বাবা ছিল না ।ইমরানের বাবা অসুস্থতার কারণে অনেক আগে মারা গিয়েছিল। তাই আমরা ইমরানের সাথে সবসময় মিলেমিশে থাকতাম ।কোনদিন ইমরান টাকা না আনলে আমরা তিনজন ভাগাভাগি করে যে জিনিস খেতাম ইমরানকে দিয়ে খেতাম। ইমরান একটু লাজুক ছিল তাই কোন কিছু খেতে দিলে খেতে চাইত না। আমরা তাও জোর করে ইমরানকে খেতে দিতাম ।এমনকি বাসায় আত্মীয় এলে কিছু আনলে আমরা সেটা স্কুলে বেঁধে নিয়ে যেতাম ইমরানকে দেবো বলে ।সেই প্রাইমারি স্কুল জীবনে তিনজন অনেক মিল ছিল। কিন্তু এখন বড় হয়ে তেমন একটা আর খোঁজ খবর পাওয়া যায় না ।যে যার কাজে সবাই ব্যস্ত হয়ে গিয়েছে


crop-5582141_1280.jpg
Source




ধান কাটার সময় আমাদের পরীক্ষা চলছিল ।দুইটা পরীক্ষা হয়ে গিয়েছিল যেটা লাস্ট পরীক্ষা ছিল সে পরীক্ষাটা হলো বাংলা পরীক্ষা। আমাদের বাড়ির আশপাশে অনেক ধান কাটা হয়েছিল। মাঝেমধ্যে আমি আর ইমরান মাঠ থেকে ধান কুড়িয়ে আনতাম ।তখন অনেক ছোট ছিলাম তাই যেটা ভালো লাগতো সেটাই করতাম । ধান কুড়িয়ে এনে সেই ধান বিক্রয় করতাম ।তখন গ্রামে গরম গরম জিলাপি সন্দেশ এবং নারকেলের খাজা বিক্রয় করতে আসতো ।সেই ধানগুলো দিয়ে আমরা জিলাপি কিংবা নারকেলের খাজা কিনে খেতাম । আসলেই সেদিনকার দিন ভোলার ননা ।সেই দিনগুলো মনে পড়লে গেলে আজও অনেক হাসি পায় ।তখন হয়তো অনেক ছোট ছিলাম তাই যেটা ভালো লাগতো সেই কাজগুলোই বেশি বেশি করে করতাম। আমাদের এদিকে তেমন একটা ভালো রাস্তা ছিল না ।তাই মাঠ দিয়ে স্কুলে গেলে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া যেত। যেদিন বাংলা পরীক্ষা ছিল সেদিন আমরা মাঠ দিয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় দেখলাম অনেক ধান পড়ে আছে ।তখন ইমরান বলল একটু থাম, ধান গুলো কড়িয়ে কোন জায়গায় লুকিয়ে থুয়ে তারপর পরীক্ষা দিতে যাব। আমি বললাম না দেরি হয়ে যাবে। ইমরান বলল না দেরি হবে না খুব তাড়াতাড়ি ধানগুলো আমরা কুড়িয়ে ফেলবো। তখন ধানগুলো কুড়িয়ে স্কুলে যেয়ে দেখলাম অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।


myanmar-5204379_1280.png
Source




পরীক্ষার হলে যে দেখলাম পরীক্ষা অনেক আগে শুরু হয়ে গিয়েছে। হয়তোবা কিছু ক্ষনের মধ্যে পরীক্ষা শেষ হয়ে যাবে। তখন ম্যাডাম আমাদেরকে অনেক বকুনি দিল। বলল আজকে পরীক্ষা তাও এতো লেটে আসা। তোদেরকি কোন বুদ্ধিশুদ্ধি আর হবে না। তখন আমরা ক্লাসে ঢুকে পড়তাম। আমাদেরকে ক-খ এবং কিছু মেলাতে দিল। কোন রকম ক- খ আমি লিখতে পারলাম। কিন্তু ইমরান তেমন একটা ক-খ লিখতে পারছিল না। স্যার আমাদের খাতা নিয়ে বললো তোরা এবার একটা কবিতা বল। ইমরান কবিতা বলতে পারলোতে আমি কবিতার সবকিছুর গুলিয়ে ফেলছিলাম। কেননা অনেক লেটে পরীক্ষা দিতে এসেছিলাম তাই একটু নার্ভাস ছিলাম ।এখনকার মতো বুদ্ধি হলে হয়তো পরীক্ষা দিনে পরীক্ষা না দিতে এসে ধান কুরাতাম না। আসলেই ছোটবেলায় মানুষ অনেক কর্মকান্ড করে ফেলে। যখন বড় হয়ে শোনে তখন কথাগুলো শুনে আসলেই অনেক হাসি পায়। আশা করি আমার পরীক্ষা দিনের গল্পটি আপনাদের ভালো লেগেছে। কতটা ভালো লেগেছে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না।

🌹 ধন্যবাদ সবাইকে🌹

আশা করি আমার পরীক্ষার দিনের গল্প আপনাদের ভালো লাগবে । আজকে এই পর্যন্ত শেষ করছি অন্য দিন নতুন কিছু নিয়ে আবার আপনাদের সামনে হাজির হব।

ব্লগার@mdemaislam00
ব্লগিং ডিভাইসvivo y 12a
অনুবাদেমোছাঃ ইমা খাতুন
Screenshot_2024_0519_194135.jpg
আমার নাম মোছাঃ ইমা খাতুন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বর্তমান ঠিকানা ষোলটাকা, গাংনী মেহেরপুর। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি করতে অনেক পছন্দ করি এছাড়াও আমি লেখালেখি এবং ডাই পোস্ট করতে ভালোবাসি। আমি এসএসসি পাশ করেছি আমাদের গ্রাম থেকে এবং পাশাপাশি ব্লগিং করি এবং নিজের যোগ্যতাকে যোগ্য অবস্থান দেওয়ার চেষ্টা করি। আমি বিশ্বাস করি মানুষ একদিন হয়তো থাকবে না কিন্তু মানুষের কর্ম সারা জীবন থেকে যাবে এই জন্য আমি কাজের ভিতরে আসল শান্তি খুঁজে পাই।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

বন্ধুত্ব আর ছোট বেলার স্মৃতি হলো সোনালী ইতিহাসের সোনালী অক্ষরে লেখা অক্ষত ইতিহাস।যেটা মনে পড়লেই মনের মাঝে আর মুখের কোন এমনিতেই হাসি ভেসে ওঠে।আপনার ছোট বেলার পরীক্ষা দিতে যাওয়ার মজার একটি গল্প লিখেছেন আপু।ভালই মজা পেলাম।ধান কুড়াতে এত ব্যস্ত ছিলেন যে পরীক্ষার কথা মাথায় ছিল না। যাইহোক এরকম কাহিনী সবার জীবনে রয়েছে। পরীক্ষা দিতে যাওয়ার অনুভুতিমূলক পোস্ট পড়ে মজাই পেলুম।

জ্বী ভাইয়া তখন ছোট ছিলাম তাই মাথায় খেয়াল ছিল না ।এখনকার দিন হলে হয়তো সেগুলো করতাম না।

আপনাদের বন্ধুত্ব বেশ ভালো ছিল। আসলে ৫ টাকা সিঙ্গারা ২ টা পাওয়া যেত।তখন বেশ ভালোই লাগতো। এখন একটা সিঙ্গারা ১০ টাকা।আমিও মেয়ে মানুষদের সাথে একটু বেশি মিশতাম। আসলে এমন একটা থাকে ছেলে হলেও মেয়েদের সাথে মিশতে বেশ পছন্দ করে।আপনারাও তাকে বেশ ভালোবাসতেন যেনে খুব ভালো লাগলো । আমরাও ছোটবেলায় অনেক কর্মকাণ্ড করতাম বড় হলে সেগুলো দেখলেই হাসি পায়।

শুনে অনেক ভালো লাগলো আপনিও মেয়ে মানুষের সাথে অনেক মিসতেন।

আসলে ছোটবেলার স্মৃতিগুলো সারা জীবন মনে থেকে যায়। ইমরান ছেলে হলেও আপনাদের সাথে কিন্তু তার বেশ ভালোই বন্ধুত্ব দেখছি। আসলে তখনকার সিঙ্গারার দাম আর এখনকার সিঙ্গারা দামের মধ্যে পার্থক্য তৈরি হয়েছে। বলতে গেলে বর্তমানে প্রত্যেকটা জিনিসেরই দাম বেশি। কিন্তু তখনকার এইসব স্মৃতিগুলো যেন মাথা থেকে কখনোই যাবে না। শেষ পর্যন্ত অন্তত কোন রকমে পরীক্ষা দিতে পেরেছেন দেখে ভালো লাগলো। আপনি সত্যি খুব সুন্দর কথাগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন।

গল্পটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু শুভকামনা রইল।

বেশ ভালো লাগলো আপনার এই পরীক্ষা দিনের গল্প পড়ে। বেশি দারুণভাবে গল্পটা উপস্থাপন করেছেন আমাদের মাঝে। এভাবে যদি নিজের জীবনের ঘটনা শেয়ার করা যায় তাহলে বেশ অনেক কিছু সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। খুবই খুশি হলাম আপনার গল্পটা পড়ার মধ্য দিয়ে।

গল্পটা পড়ে খুশি হওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।