||মানিকের জীবনের গল্প||

in hive-129948 •  yesterday 
আমার বাংলা ব্লগের সকলসদস্যবিন্দু আমার নতুন একটি ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম ! আমি @mdemaislam00 বাংলাদেশ থেকে। আজ , রবিবার জানুয়ারি ১৯/২০২৫

1000006945.jpg
Source


হ্যালো বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আশাকরি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবৃন্দু আল্লাহর রহমতে ভালো আছে। আমার নাম ইমা অন্য দিনের মতো আজও আমি আপনাদের সাথে নতুন কিছু শেয়ার করতে এসেছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে মানিক ও রিমার জীবনের গল্প শেয়ার করতে এসেছি ।মানিক অনেক দরিদ্র ফ্যামিলির সন্তান। সে দেখতে তেমন একটা সুন্দর না গায়ের রং তার কালো ।গায়ের রং কালো হলেও তার মনটা অনেক সাদা ।সে অনেক ভালো মনের মানুষ। সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে ।মানিক মাধ্যমিক পাশ করার পর লেখাপড়া করেনি। তার বাবা যখন মারা যান তখন সে একটা অটোরিকশা কিনে চালাতো। সেই অটো রিক্সা চালিয়ে যা ইনকাম হতো সেই দিয়ে তার মা আর ছেলের সংসার চলত। এমন করে চলতে চলতে অনেকদিন কেটে গেল ।মানিক সিদ্ধান্ত নিল সে বিয়ে করবে। মানিক বিয়ে করবে শুনে তার মা অনেক খুশি হলো। কেননা তাদের সংসারের তারা দুজনই ছিল আর কোন সদস্য ছিল না। তার মায়ের একা একা দিন কাটাতে অনেক খারাপ লাগতো ।আর তার ছেলে যদি বিয়ে করে আনে তাহলে একটা সদস্য বাড়বে। মানিকের বিয়ের কথা শুনে মানিকের মা সবাইকে বলে রাখে মানিকের জন্য ভালো মেয়ে দেখতে। মানিক দেখতে তেমন একটা সুন্দর না হলেও তার ব্যবহার এত ভালো ছিল যে গ্রামের বৃদ্ধ লোকেরা বলল ,আমাদের গ্রামের মিকাইলের মেয়ের সাথে মানিকের বিয়ে দিলে কেমন হয়।


1000006946.jpg
Source




যখন মিকাইলের বাড়িতে মানিকের মা বিয়ের প্রস্তাব পাঠালো তখন মিকাইল অনেক খুশি ছিল ।কেননা বিকেলের মেয়ে অনেক সুন্দর ছিল কিন্তু তার একটা পায়ে সমস্যা ছিল। সে জন্ম থেকে একটা পা বেঁকিয়ে হাটতো বলা যেতে পারে সে এক ধরনের প্রতিবন্ধী ।প্রতিবন্ধী হলেও মানিক তাকে একটুও ছোট চোখে দেখিনি। মিকাইলের মেয়েকে মানিকের অনেক পছন্দ ছিল ।কেননা সে একটু ফর্সা ছিল ।তাই সে ভাবছিল যে আমার সাথে যদি মিকাইলের মেয়ের বিয়ে হয় তাহলে আমি তাকে রাজ রানীর মতো রাখবো । টাকা পয়সা দিয়েই রাজরানির মতো রাখা যায় না। কিন্তু আদর যত্ন ভালোবাসা দিও মানুষকে রাজরানির মতো রাখা যায়। দুই পক্ষ থেকে বিয়ের জন্য রাজি হয়ে গেল এবং সিদ্ধান্ত নিল কিছুদিনের মধ্যেই মানিকের সাথে মিকাইলের মেয়েকে বিয়ে দিবে। মিকাইলের মেয়ের নাম ছিল রিমা ।সে একটু তেজি অহংকারী সবাইকে তেমন একটা পছন্দ করত না। তাদের বাড়ির চাপের কারণে রিমা মানিককে বিয়ে করে ।কিন্তু মানিক এ কথা জানতো না। সে যখন রিমাকে বিয়ে করে বাড়িতে আনলো ।তখন রিমা মানিকের সাথে তেমন একটা ভালো ব্যবহার করত না। তাকে সব সময় অপমান করত কালো বলে ।তবুও মানিক তার কথায় কিছু মনে করত না। হেসে হেসে সবকিছু মুখ বুজে সহ্য করতো। ভাবতো একদিন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে ।রিমা মানিকের বাড়িতে প্রায়ই দশ দিন ছিল ।তার পর সে মায়ের বাড়িতে যেয়ে আর মানিকের বাড়িতে আসেনি। এরকম চলতে চলতে সিদ্ধান্ত নিল রিমা মানিককে ডিভোর্স দিবে। ডিভোর্সের কথা শুনে অনেক কষ্ট পেল। ।


1000006947.jpg
Source




যখন জানতে পারলো রিমা তাকে ডিভোর্স দিবে তখন আর মানিক আপত্তি করল না। কেননা রিমা যখন মানিককে পছন্দই করে না তখন কিভাবে মানিক তার সাথে সংসার করবে ।কিছুদিনের মধ্যে তাদের দুজনার ডিভোর্স হয়ে গেল ।এদিকে রিমার জন্ডিস হয়েছে ।অনেক জায়গায় চিকিৎসা করাচ্ছে তার বাবা-মা কিন্তু কোন কিছু কাজ হচ্ছে না ।ডাক্তার সময় দিয়েছে হয়তো সে আর বেশিদিন বাঁচবে না। অল্প দিনে সে মারা যাবে। যখন মানিক রিমার জন্ডিসের কথা শুনে এবং জানতে পারে সে মারা যাবে তখন সে অনেক কষ্ট পায় ।ভাবে হায়রে জীবন এমন কাউকে বিয়ে করলাম সে আমাকে পছন্দ করলো না ।আবার কিছুদিনের মধ্যে সে মারা যাবে। মানিক আজও বিয়ে করেনি রিমার আশায় ।যখন রিমা জানতে পারলো সে আর বেশিদিন বাঁচবে না তখন সে মানিককে দেখতে চাইলো ।যখন মানিক জানতে পারলো রিমা তাকে দেখতে চেয়েছে তখন সে তার পছন্দের কিছু খাবার কিনে নিয়ে তাকে দেখতে যায়। এবং তার চোখ দিয়ে অঝরে অশ্রু পড়ে তার মুখ দিয়ে আর কথা বের হয় না। রিমা এ তোমার কি অবস্থা হয়েছে আমি তোমাকে অনেক ভালো বাসতাম কিন্তু তুমি আমার সংসার করলে না। তুমি পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলে আমার অনেক কষ্ট হবে। তখন রিমা তার ভুল বুঝে পারলো এবং বলল এখন আমি আমার নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি। কিন্তু বুঝতে পেরে আর কিছু করার নেই মানিক আমি আর এই দুনিয়াতে চাইলেও থাকতে পারবো না। হয়তো কিছুদিনের মধ্যে আমি মারা যাব। আমি ভুল কাজ করেছি তুমি আমাকে মাফ করে দিও ।মানিক তখন বলে আরে পাগলি তুমি আমার কাছ থেকে মাফ চাইছো কেন ।আমি কোনদিনই তোমাকে দোষী ভাবিনি ।সবসময় চেয়েছি তুমি সব সময় ভালো থেকো ।কিছুদিনের মধ্যে রিমা মারা গেল ।মানিক রিমা মারা যাওয়াতে অনেক কষ্ট পেয়েছিল এবং সে পাগলের মতো উদাস মনে ঘুরে বেড়ায় ।সে আজও বিয়ে করেনি হয়তো একদিন করবে‌ বিয়ে করলেও সে রিমার কথা হয়তো কোনদিন ভুলবে না। আশা করি আমার গল্পটি আপনাদের ভালো লেগেছে কতটা ভালো লেগেছে কমেন্টে জানাবেন?

🌹 ধন্যবাদ সবাইকে🌹

আল্লাহ হাফেজ...! আবারো খুব শীঘ্রই দেখা হবে ইনশাল্লাহ ❣️❣️❣️


ব্লগার@mdemaislam00
ব্লগিং ডিভাইসinfinix note 11pro
অনুবাদেমোছাঃ ইমা খাতুন
শ্রেণীগল্প
Screenshot_2024_0519_194135.jpg
আমার নাম মোছাঃ ইমা খাতুন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বর্তমান ঠিকানা ষোলটাকা, গাংনী মেহেরপুর। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি করতে অনেক পছন্দ করি এছাড়াও আমি লেখালেখি এবং ডাই পোস্ট করতে ভালোবাসি। আমি এসএসসি পাশ করেছি আমাদের গ্রাম থেকে এবং পাশাপাশি ব্লগিং করি এবং নিজের যোগ্যতাকে যোগ্য অবস্থান দেওয়ার চেষ্টা করি। আমি বিশ্বাস করি মানুষ একদিন হয়তো থাকবে না কিন্তু মানুষের কর্ম সারা জীবন থেকে যাবে এই জন্য আমি কাজের ভিতরে আসল শান্তি খুঁজে পাই।

6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjnzhd7Ad93hjKY7XXqXwCYMpoU77gVuL2GHGFkJzK3LBmmPDKPbSFkaNFXCeqsm5mEKePEnGR2EDVeYe2eA.png

2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZ6f4GKSwLn3BBFmPFifbbr21AhPTJ7XiTPJGbzxXNzpL3AeDnWebvp5DxFE241B8HGEVAqqCDY5m5Sn.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Congratulations, your post was upvoted by @supportive.

1000006962.jpg

1000006960.jpg

1000006961.jpg

1000006959.jpg

আজকে আপনি আমাদের মাঝে খুব সুন্দর একটি গল্প উপস্থাপন করেছেন। আপনার এই গল্প পড়ে খুব ভালো লাগলো আমার। দারুন ভাবে গল্প লিখেছেন মানিকের জীবন কাহিনী। আসলেও সকল মানুষের জীবন বিভিন্ন ঘটনার সম্মুখীন।