আগের পর্বে বলেছি যে একটি মজার বেপার ঘটেছিল। সেই ঘটনা দিয়েই শুরু করছি।
আমরা নিজেরা কিছু ফটোগ্রাফি করে নদীর তীব্র বাতাস অনুভব করছিলাম। তখন প্রায় ৯০ মিনিটের মত সময় পার হয়েছিল। হঠাৎ কানে ভেসে আসল কে যেন গান গাইছে ওরে নীল দড়িয়া আমায় দে রে দে ছাড়িয়া। কন্ঠ অনেক সুন্দর। পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখি মাঝ বয়সি একজন ভদ্রমহিলা গান গাচ্ছিলেন, আর তার পাশে ঘনিষ্ঠ হয়ে বসে মাঝবয়সী একজন ভদ্রলোক হাতে তালি দিচ্ছিলেন। ভাবলাম হাসবেন্ড ওয়াইফ খুব রসিক তাই এত ঘনিষ্ঠ। আমিও গান শুনে দৌড়ে গিয়ে তাদের পাশে বসে পড়লাম। আমিও সাথে গানের সুর দিচ্ছিলাম। গান শেষে ওয়ান মোর ওয়ান মোর বলার পরও ভদ্রমহিলা বলছেন আর গাইব না। পরে ভদ্রমহিলার হাসবেন্ড বললেন, আরে ছেলেগুলো রিকোয়েস্ট করছে আরেকটি গেয়ে শোনিয়ে দাও। উনি বলার পর ভদ্রমহিলা আবার গান ধরলেন ও নদীরে একটি কথা সুধাই শুধু তোমারে। উনি গান গাইলেন আমরাও সাথে তালি দিলাম। আরও কয়েকটি গান গাওয়ার পর উনারা নিচে যাবেন তখন দুজনকে ধন্যবাদ দিয়ে বললাম আপনারা অনেক মজার হাসবেন্ড ওয়াইফ, খুব সুখে আছেন দেখেই বুঝা যাচ্ছে। তখনি অবাক করে দিয়ে ভদ্রমহিলা বলল আমি একটি স্কুলের হেড মিস্ট্রেস আর উনি সেই স্কুলের কমিটির সভাপতি। আমি বললাম তাহলে কি স্টুডেন্ট নিয়ে এসেছেন? তারা কোথায়? তখন ভদ্রলোকটি বললেন আমি আর উনি মাঝে মাঝে এরকম একা ঘুরতে বেড়িয়ে পরি। আমাদের ভাল লাগে ঘুরতে। আমার আর বুঝতে বাকি রইল না এখানে কি চলছিল। যাই হোক আমিও পরে পাশ কাটিয়ে চলে আসলাম। হি হি হি।
তারপর নদীর কিছু ছবি তুললাম। প্রথম ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি ট্রলার চলছে মাঝ নদীতে। দ্বিতীয় ছবিতে অথৈ পানি ভেসে যাচ্ছে আকাশের দিকে। আর তৃতীয় ছবিটি হচ্ছে লাইফ সেভিং হুইলের।
প্রায় তিন ঘন্টা বিশ মিনিট নদীপথে লঞ্চ জার্নির পর আমরা আমাদের গন্তব্যস্থলে পৌছালাম। সেখানে গিয়ে যখন লঞ্চ পাড়ে ভিড়ল তখন ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরের ঘাটের কিছু ছবি তুললাম।
ঘাটে নেমে একিটি অটোরিকশা নিয়ে আমরা চলে গেলাম সোজা ইলিশ মাছের বাজারের ঠিক পাশেই একটি পার্কে। সেখানে গিয়ে কিছু সময় কাটিয়ে আমরা কিছু ছবি তুলে নিলাম।
পার্ক থেকে আমরা ডাকাতিয়া নদীতে কিছুক্ষণ ডিংগি নৌকা দিয়ে ঘুরলাম।
তারপর আমরা আমাদের সেই কাঙ্ক্ষিত ইলিশের বাজারে গেলাম। বাজার দেখে আমি রীতিমত অবাক, এত ইলিশ আমি আমার জীবনে কখনো দেখিনি। বিভিন্ন জায়গায় জায়গায় ইলিশের স্তুপ দিয়ে রেখেছে। বেশিরভাগ স্তুপ পুরো একসাথে কিনতে হবে। খুচরা কেউ বিক্রি করে না। অল্প কিছু জায়গায় খুচরা বিক্রি করছিল তাও ১০,২০, ৩০ টা একসাথে কিনতে হবে। এর মধ্যে আমরা খুঁজে কিছু কিছু জায়গায থেকে আমাদের যতটুকু দরকার ততটুকু ইলিশ কিনেছি। একটি ছবিতে ঝুড়ির মধ্যে কিছু ইলিশ দেখা যাচ্ছে, এই ইলিশগুলো আমি কিনেছিলাম। প্রতিটি ইলিশ এভারেজে ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ছিল এবং এভারেজে প্রতিটির দাম পড়েছে ৩০০ টাকা করে। বাকিরাও তাদের পছন্দ মত ইলইশ কিনেছে। এর মধ্যে একজন যে আসতে একটু অনিহা দেখিয়েছিল সে বেশি কিনেছে এবং খুব খুশি এত কম দামে মাছ পেয়ে। ইলিশের বাজার ঘুরে, ইলিশ মাছ বরফে করে নিয়ে আমরা আবার ফিরে এলাম লঞ্চ ঘাটে। বিকেল নাগাদ আমরা আবার লঞ্চে উঠে ঢাকায় ফিরে এলাম।
ডিভাইস | আইফোন, স্যামসাং |
---|---|
মডেল | ৫ এস, গ্যালাক্সি এ ৬ |
ফটোগ্রাফার | @miratek , সাইফুল |
লোকেশন | https://what3words.com/opens.cyber.priced |
আমি আমার চাঁদপুরের এক দিনের ভ্রমনের কাহিনী এখানেই শেষ করছি। আশা করি আপনাদের অনেক ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ সবাইকে।
দারুণ তো ইলিশের এই বাজার।স্তুপাকারে বেশ সুন্দর করে ইলিশ মাছগুলো সাজানো হয়েছে।যাইহোক দেখে কিন্তু ভালোই লাগলো। তবে প্রথমে যে মজার কাহিনী শেয়ার করলেন তা পড়েই মজা পেলাম।আমিও প্রথমে একসাথে বসা দেখে ভাবলাম হাজব্যন্ড আর ওয়াইফ।তাদের এর সুন্দর সম্পর্ক এগিয়ে যাক🤪।মজা করলাম ভাইয়া।ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি ব্লগ শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এত ইলিশ একসাথে দেখে আমারও খুব ভাল লেগেছিল। ইচ্ছে হচ্ছিল সব ইলিশ মাভহব নিয়ে চলে আসি। হি হি। সেই হাসবেন্ড ও ওয়াইফ এর কথা আমার মনে পড়লে এখনো হাসি পায়। ধন্যবাদ আপু সুন্দর কমেন্ট করে পাশে থাকার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এইভাবে তাজা তাজা ইলিশ কিনতে দেখে খুবই ভালো লাগলো। খেতে খুব ভালো হবে। সত্যি ইলিশের বাজারটা দেখতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। আমার তো ইচ্ছে করছে আপনার মত ইলিশের বাড়ি চাদপুরে গিয়ে ঘুরে আসে। এবং এভাবে নিজের হাতে মাছ কিনে নিয়ে আসি। পাশের সেই পার্কটিও বেশ সুন্দর নিরিবিলি ছিল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সামনে থেকে তাজা ইলিশ গুলো দেখে আমারও ভাল লাগছিল। আমি কেনার সময় খুবই উউচ্ছসিত ছিলাম। যদি কখনো সময় হয় ইলিশের সিজনে গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এরকম জার্নি তে,এরকম রসিক মানুষ পেলে সময় কোনদিক দিয়ে চলে যায় তা বোঝাই যায়না।আর বেশ সস্তা দরে ইলিশ পেয়েছেন।সব দিক থেকে আপনাদের জার্নি টাকে সফল বলা যায়।অনেক ভাল লেগেছে আপনাদের ঘোরাঘুরি অভিজ্ঞতা পড়ে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এটা ঠিক বলেছেন যেকোন ভ্রমণে দু একজন রসিক মানুষ না থাকলে ভ্রমণটা এনজয় করা যায় না। এর আগে আমি ইউনিভার্সিটিতে থাকাকালীন একটি গ্রুপের সাথে কক্সবাজার গিয়েছিলাম। তাদের প্রায় সবাই আমার অপরিচিত ছিল। প্রথমে ভেবেছিলাম আসলে কি মজা হবে? পরে ভ্রমনে গিয়ে দেখলাম দুটি মানুষ খুবই মজার ছিলেন এবং আসার পর তাদের দুজনকে আমি স্পেশাল ধন্যবাদ দিয়েছিলাম
পুরো ভ্রমনটিকে এত প্রাণবন্ত করে রাখার জন্য। ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়া এই তো দেখছি ইলিশের গোডাউন। এত ইলিশ এক সাথে আমিও জীবনে দেখি নাই। যায় হোক আপনার ইলিশ গুলো দেখে ভালই লাগলো। প্রতি ইলিশ তিনশো টাকা হলে অনেক ভাল হয়েছে। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমিও প্রথমে ঢুকে এত ইলিশ দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। ওখানে খুচরা খুব একটা পাওয়া যায় না ভাগ্যক্রমে আমরা কিছু পেয়েছিলাম। আর খুচরাগুলো সস্তা হয়, তবে স্তুপেরগুলো কিনলে আরও সস্তায় পাওয়া যায়। ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit