ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে একদিনের ভ্রমন।। 10% beneficiary to @shy-fox

in hive-129948 •  2 years ago 
আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। একদিন অফিসে বসে কলিগরা ইলিশ মাছ নিয়ে আলাপ করছিলাম যে কোথায় সস্তায় ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। তখন কেউ বলল যাত্রাবাড়ী কমে পাওয়া যায়, কেউ বলল সদরঘাট কমে পাওয়া যায়, কেউ আবার বলল কারওয়ান বাজার কমে পাওয়া যায়।আমি বললাম চাদপুর সস্তায় পাওয়া যায়। তখন উপস্থিত সবাই বলল যেখানে যাওয়া যাবে না সেখানকার কথা বলে লাভ নেই। আমি বললাম আপনি এখান থেকে (অফিস নারায়নগঞ্জে) কারওয়ান বাজার গেলে যেতে ৭০-৮০ টাকা আবার ফিরতে ৭০-৮০ টাকা লাগবে। তাহলে আপনার প্রায় ১৫০ টাকার মত যাতায়াত খরচ লাগবেই। সদরঘাট থেকে মাত্র ১০০ টাকায় আপনি সেই সুদুর চাঁদপুর ঘুরে ইলিশও কিনে নিয়ে আসতে পারবেন। আর ঢাকার জ্যামে বসে না থেকে লঞ্চে গেলে লঞ্চ জার্নি হয়ে যাবে, চাদপুর দেখা হয়ে যাবে, মাছও কিনা হয়ে যাবে। এখানে আমার একটি প্রবচন মনে পড়ল। হি হি।


20181130_155629.jpg



যাই হোক শেষ পর্যন্ত আমিসহ ৫ জন যাব বলে ডিসিশন হল। আমি বললাম নেক্সট শুক্রবার যাওয়া যায়। তারাও এক কথায় রাজি হল। আমি সবাইকে প্ল্যান বলে দিলাম যে শুক্রবার সকালে আমরা সদরঘাট থাকব সকাল ৬ঃ৪৫। শুক্রবার যথা সময়ে সবাই হাজির হয়েছে শুধু একজন ছাড়া। ওনাকে ফোন দিতেই বলল আমি কাছাকাছি আছি আপনি টিকেট কাটুন। আমি এই ফাকে টিকেট কেটে নিলাম। আমাদের লঞ্চের নাম বোগদাদিয়া-৭। ঠিক ৭ঃ১০ এ আমাদের লঞ্চ ছাড়ল।
চাদপুর নিয়ে কিছু কথা বলি। চাদপুর বাংলাদেশের একটি সুন্দর জেলা। চাদপুরে ইলিশ মাছ বেশি পাওয়া যায় বলে চাদপুরকে ইলিশের বাড়িও বলা হয়। ঢাকা থেকে চাদপুর বাই রোড এবং নদীপথে লঞ্চে দুটি উপায়ে যাওয়া যায়। আমরা গিয়েছিলাম লঞ্চে। ঢাকা থেকে লঞ্চে গেলে সদরঘাট থেকে উঠতে হয় এবং সদরঘাট থেকে প্রায় ৩ ঘন্টার কিছু বেশি সময় লাগে।

20181130_105504.jpg

20180921_113033.jpg



খরচ বাচানোর জন্য আমরা ১০০ টাকার স্ট্যান্ডিং টিকেট কেটেছিলাম। লঞ্চে উঠেই আগে চা খেলাম। কারন এত সকালে লঞ্চ হওয়ায় সবাই খুব সকালে উঠেছে এবং সবার ঘুমে চোখ বন্ধ হয়ে আসছিল। তারপর লঞ্চ ছাড়ার পর বেশ কিছুক্ষণ নিচে থেকে আমরা সোজা চলে গেলাম সারেং এর ঘরের ঠিক সামনের ডেকে (আমি যেহেতু এর আগেও গিয়েছি তাই জানি ওই জায়গাটা বেশি সুন্দর)। সারেং এর ঘরের সামনে সচরাচর কাউকে যেতে দেয় না। আমাদের কি মনে করে দিয়েছে জানিনা।


20180921_115212.jpg

20180921_115216.jpg



উপরের দুটি ছবির প্রথমটি হচ্ছে সারেং এর ঘর। এখান থেকেই লঞ্চের চালনা করা হয়। লঞ্চের গতি, গতিপথ নিয়ন্ত্রণ, হুইসাইল সব এখান থেকেই কন্ট্রোল করা হয়। আমার অনেক রিকোয়েস্টের পর সারেং আমাকে ঢুকতে দিয়েছিল। আর দ্বিতীয় ছবিতে সারেং এর ঘরে অনেক সুইচ দেখা যাচ্ছে। দেখে বুঝা যায় না এতটুকু একটি ঘরে এত বড় লঞ্চের সব কিছু কন্ট্রোল হয়।


G_1664428819669.jpg

20180921_100402.jpg

20180921_105923(0).jpg



তারপর আমরা কিছু নিজদের ফটোগ্রাফি করে নিলাম। এত বাতাস ছিল যে কোন কিছু না ধরে দাঁড়িয়ে থাকা যাচ্ছিল না। অনেক ব্যালেন্স করে দাঁড়িয়ে তারপর কিছু ছবি তুলে নিয়েছিলাম।

20180921_110038.jpg

20180921_095728.jpg



হঠাৎ আমার টাইটানিক ছবির জ্যাকের কথা মনে হল। তাই জ্যাক আর রোজের মত একটি পোজ দিয়ে ছবি তোলার চেষ্টা করলাম। যদিও এখানে রোজকে নেয়া হয়নি। জ্যাক কিন্তু একদম কিনারাতে গিয়ে পোজ দিয়েছিল। আমি কিনারাতে তুলতে গেলে হয়ত আমি নদীর গভীরে সেই পোজ দিতে হত। জ্যাকের পোজে ছবি তুলতে গিয়ে বাতাসের গতির কারনে ২-১ বার নিচে বসে যেতে হয়েছিল।



20180921_113733.jpg



এই ছবিতে যে ফ্ল্যাগ দেখা যাচ্ছে তা লঞ্চের নিজস্ব ফ্ল্যাগ। প্রতিটি লঞ্চে এই রকম ফ্ল্যাগ থাকে। বাতাসের তীব্র গতিতে ফ্ল্যাগটি উড়ছিল। আমার দেখতে ভাল লেগেছে তাই একটি ছবি তুললাম। লঞ্চ দুর্বার গতিতে সামনে চলছে। ঘড়ি দেখে বুঝলাম ৯০ মিনিট কখন চলে গিয়েছে টের পাইনি। এর কিছুক্ষণ পর একটি মজার বেপার ঘটেছিল তা আপনাদের সাথে পরবর্তী পর্বে শেয়ার করব।


ডিভাইসআইফোন, স্যামসাং
মডেল৫ এস, গ্যালাক্সি এ ৬
ফটোগ্রাফার@miratek, সাইফুল
লোকেশন(https://what3words.com/roosts.assume.leaky)

(https://what3words.com/foreheads.asserts.longingly)|



আজ এই পর্যন্তই। আশা করি আমার পোস্ট পড়ে আপনাদের ভাল লেগেছে। পরবর্তী পোস্ট নিয়ে আবার আসব। ধন্যবাদ সবাইকে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

অনেক সুন্দর ভাবে জার্নির বর্ণনা দিয়েছেন ভাই।মনে হচ্ছে আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম।লঞ্চ জার্নি আসলেই অনেক মজার হয়।বেশি মজা হয় লম্বা জার্নিতে সাথে ৩-৪জন বন্ধু থাকলে।মজার অভিজ্ঞতা গুলো শোনার অপেক্ষায় রইলাম।

আমি যেভাবে গিয়েছি বা অ্যারেঞ্জ করেছি তার সম্পূর্ণটা এখানে গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করেছি। আপনার ভাল লেগেছে যেনে আমারও ভাল লাগছে। এরকম তিন চার জন মাঝে মাঝে বের হয়ে ঘুরতে খুব ভাল লাগে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

আপনার আজকের পোস্ট পড়ে নতুন কিছু বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম। বেশ ভালো লাগলো এত সুন্দর বর্ণনামূলক পোস্ট দেখে। আশা করি এভাবে আরও অনেক পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন।

আমার ভ্রমণের পোস্ট আপনার ভাল লেগেছে এটাই আমার সারথকতা। আমি চেষ্টা করেছি ডিটেলস এখানে শেয়ার করার। ধন্যবাদ ভাইয়া।

ভাইয়া ইলিশের দেশ চাদঁপুরে আমিও গিয়েছিলাম গত মার্চে। আপনি গিয়েছেন বোগদাদ-০৭ এ। আমরা গিয়েছিলাম বোগদাদ-০৮। ভালই লাগে লঞ্চ জার্নি। যায়হোক ইলিশের জন্য ইলিশের দেশে চলে গেছেন। ভালই হয়েছে। ধন্যবাদ।

ইলিশ কেনা থেকেও আমি বেশি এনজয় করেছি লঞ্চ জার্নিটা। বিশেষ করে সারেং এর ঘরের সামনে ডেকে বসলে এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।