১৬ ডিসেম্বর।। বিজয় দিবস নিয়ে কিছু কথা।। 10% beneficiary to @shy-fox

in hive-129948 •  2 years ago 
আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আজ মহান বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর। আজকের এই দিনে সবাইকে জানাই বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা। ১৯৭১ সালের এই দিনে আমাদের প্রিয় দেশ বাংলাদেশ পাক হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে মুক্তি পায়। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস ঘোষনা করা হয় ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারী। অনেক আন্যায়, অত্যাচার, ব্যাভিচার, হয়রানি, খুনের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ৯১ হাজার ৬৩৪ জন সৈন্য ঢাকার সোহরাওয়ারদী উদ্যানে আত্মসমর্পণ করে।

pexels-md-ahsan-mahmud-11255399.jpg

সোর্স pexels

ভোটে জয়ী সাধারন মানুষের অধিকার হরনের জন্য পাক বাহিনী এই যুদ্ধে লিপ্ত হয়। তারা চেয়েছিল বাংলাদেশের মানুষকে সারা জীবন শোষন করে যাবে। সেই উদ্যেশ্য নিয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মাঝরাতে ঢাকায় গনহত্যা শুরু করে। তখন তাদের কাছে ছিল অত্যাধুনিক সব অস্ত্র আর গোলা বারুধ। আর বাংলাদেশের সাধারন মানুষের কাছে লাঠি আর সৈনিকদের কাছে দুনলা বন্ধুক ছাড়া আর তেমন কিছুই ছিল না। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অপারেশন সার্চ লাইট নামের এক গনহত্যার মাধ্যমে রক্তের বন্যা বয়ে দিল পুরো ঢাকা জুড়ে। সেই অপারেশন ধীরে ধীরে ধাবিত হল পুরো দেশে। তারপর শুরু হয় বাংলাদেশের সাধারন আনুষের প্রতিবাদ। যার যা কিছু ছিল তা নিয়েই ঝাপিয়ে পড়ল সেই নরপিশাচ পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে। রাত নেই দিন নেই ঘর নেই বাড়ি নেই শুধু প্রশিক্ষন নিয়েছে আর যুদ্ধ করেছে। অস্ত্র পায়নি তাতে কি হয়েছে লাঠি নিয়েই ঝাপিয়ে পড়েছে। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ফিরিয়ে নিয়ে আসল বাংলাদেশের স্বাধীনতা।পাকিস্তানী লেফট্যানেন্ট জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ নিয়াজী ভারতের লেফট্যানেন্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে আত্মসমর্পণ এর কাগজে সাইন করে। কিন্তু এর মধ্যে ঝড়ে যায় প্রায় ৩০ লাখ শহীদের তাজা প্রান আর লাখো মা বোন হারায় ইজ্জত। আর যাদের কথা না বললেই নয় সেই বীরশ্রেষ্ঠদের কথা যারা নিজের জীবনের পাশপাশি আরো অনেক ভুমিকা রেখে গিয়েছেন।

pexels-ferdous-hasan-14557593.jpg

সোর্স pexels

বিজয় দিবস উপলক্ষে সাভারে একটি বিশাল স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়। প্রতি বছর সেই স্মৃতিসৌধে ছোট বড় সবাই শহীদদের সম্মানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সারাদেশের প্রতিটি স্কুল প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে অফিস আদালতে আয়োজন করা বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান।
আজ সকালে বাসা থেকে যখন বের হচ্ছিলাম তখন দেখি ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা হাতে হাতে পতাকা নিয়ে যাচ্ছে। বুঝলাম তারা বিজয় দিবস উদযাপন করছে। কিছুদূর যেতে দেশাত্মবোধক গানগুলোর ধ্বনি কানে বাজছিল। মনে পড়ল স্কুল কলেজের সেই দিনগুলো যখন ১৫ ডিসেম্বর সারাদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের (১৬ ই ডিসেম্বরের) আয়োজনের জন্য কাজ করতাম। ১৬ ডিসেম্বর ১০ টা বাজার পর স্কুলে যেতাম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পালনের জন্য। যেমন খুশি তেমন সাজো তে যুদ্ধের অনেক নমুনা তুলে ধরা হত। খুব ভাল লাগত দেখে। আর যে গানই হবে সব দেশাত্মবোধক গান। দিন শেষে বাতাসা বা সাগরিকার প্যাকেট নিয়ে বাসায় আসতাম।

জানিনা ৩০ লাখ শহীদদের মর্যাদা আমরা কতটা দিতে পেরেছি। জানিনা তারা যে স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গিয়েছেন তা আমরা ছিটা ফোটাও পূরণ করতে পেরেছি কিনা। তবে আমাদের যদি এতটুকু মনুষ্যত্ব বোধ থাকে আমাদের একটু ভাবা উচিৎ। নিজেদের মধ্যে কোলাহল, হিংসা, ঝগড়া, ফ্যাসাদ, অন্যায় এগুলো বাদ দিয়ে সুন্দর একটি দেশে পরিনত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়া উচিৎ। যারা নিজদের তাজা প্রানের বিনিময়ে আমাদের কে এত সুন্দর দেশটা উপহার দিয়ে গিয়েছে আমরা চাইব সুন্দর সেই দেশ গড়তে পারি এবং দেশকে উচ্চ শিখরে নিয়ে যেতে পারি।
আমি যদি ভুল কিছু লিখে থাকি তাহলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ভাইয়া আপনাকে ও বিজয় দিবসের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।আপনি বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু কথা শেয়ার করেছেন, যা আমাদের ইতিহাসের কথা।এই ইতিহাসকে ভুলে গেলা চলবেনা।নতুন প্রজন্মকে এই ইতিহাস আমাদের তুলে ধরতে হবে।বিজয় এত সহজে হয়নি।লাখো লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমাদের এই বাংলাদেশ। আজ তাই আমরা বিজয়ের পতাকা ওড়াই। এই দেশকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর কিছু ইতিহাস তুলে ধরার জন্য। অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

ধন্যবাদ আপু বিজয় দিবস নিয়ে সুন্দর কিছু কথা লেখার জন্য।

আপনার পোষ্টের ভিতর যেসব কথা উল্লেখ করেছেন, এর ভিতর কিছু কিছু তথ্য আমি গতকাল ইন্টারনেট দেখে পড়েছি এবং তারপর কিছু কিছু পোস্ট এ কমেন্ট করেছিলাম এই ব্যাপারটা নিয়ে। পুরো বিশ্বের ভিতরে বাংলাদেশই এমন একটা দেশ, যারা শুধুমাত্র তাদের মাতৃভাষাকে রক্ষা করার জন্য যুদ্ধ করেছিল পাক সেনাদের বিরুদ্ধে। যদিও বিজয় দিবসে গতকাল চলে গেছে তাও আপনাকে জানাই বিজয় দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

ধন্যবাদ দাদা সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

আমি যখন মাধ্যমিক বিদ‍্যালয়ে ছিলাম ১৬ ডিসেম্বরের কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করতাম। কিন্তু কলেজে উঠার পর এগুলো থেকে সরে এসেছি। তখন দিনটার জন্য অপেক্ষায় থাকতাম সারা বছর। ২৫ মার্চ এর সেই বিভীষিকাময় রাত তারপর ৯ মাস যুদ্ধের পর এর স্বাধীনতা। তবে এখন বিজয় দিবসে যা হচ্ছে দেখলে লজ্জা রাগ দুইটাই হয়।।

জী ভাইয়া এখনকার দিনের বেশিরভাগ ছেলে মেয়েরা এই দিনের তাৎপর্য বুঝে না।

সত্যি বলতে ইতিহাস পড়তে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে বিশেষ করে 1971 সালে কিভাবে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল কিভাবে কে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল এসব শুনতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে ঠিক তেমন কিছু বিষয় জানতে পারলাম আসলে অনেক দুঃখ কষ্ট সহ্য করে আমাদের এই বাংলাকে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। সেসময়ের সেই শহীদদেরকে আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি যারা নিজের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে এই চিরসবুজ বাংলাকে টিকিয়ে রাখার জন্য।

আপনার কমেন্ট পড়ে খুব ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

আমরা বাঙালি সবাই জানে যে কিভাবে 1971 সালে ১৬ই ডিসেম্বর আমাদের এই দেশ জয়ী হয়েছিল। আমার কাছে এরকম ইতিহাস গুলো পড়তে একটু বেশি ভালো লাগে এরকম ইতিহাস পড়ে অনেক কিছুই জানা যায় আমরা অনেক কিছু সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারি। সত্যি ১৬ই ডিসেম্বর এর এই দিনটি ভোলার নয়। এটি শহীদদের স্মরণীয় একটি দিন যা সবাই পালন করে। খুবই ভালো লাগলো আপনার আজকের এই পোস্ট পড়ে।

ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।