আজকের দিনে নিশ্চয়তা নিয়ে ভাবতে গিয়ে গুলিস্তান ও নবাবপুরের কথা মনে পড়ে গেল। আজ সকাল ৯টায় বের হয়েছিলাম, আর বাসায় ফিরেছি রাত ১০টায়। দিনের পুরোটা সময় কেটেছে পুরান ঢাকার এই ব্যস্ত এলাকায়। আজ পুরান ঢাকার ইতিহাস বা ঐতিহ্য নিয়ে কিছু বলবো না, বরং বলবো এই এলাকার বাস্তব পরিস্থিতি নিয়ে, যেখানে জীবন এক মুহূর্তের জন্যও নিশ্চয়তায় নেই।
এখানে আমাদের জীবনের কতটুকু নিশ্চয়তা⁉️
Device:Samsung A33 (5G)
পুরান ঢাকার নবাবপুর ও গুলিস্তান এলাকা অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এবং ব্যস্ত। এখানকার রাস্তা ও অলিগলি এতটাই সরু যে কখনো কখনো একজন মানুষের পক্ষে ঠিকভাবে হাঁটাও মুশকিল হয়ে পড়ে। রাস্তায় যানবাহনের চাপ, হকারদের ভিড়, এবং মানুষের চলাচলের কারণে পুরো এলাকাটি সবসময়ই বিশৃঙ্খল থাকে। তবে এখানকার সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হচ্ছে বিশৃঙ্খল বৈদ্যুতিক তারের জটলা।যখন নবাবপুরের গলিগুলো দিয়ে হাঁটছিলাম, তখন মনে হচ্ছিল যেন আমরা বিশাল এক মাকড়সার জালের নিচে হাঁটছি। কিন্তু এটি কোনো সাধারণ মাকড়সার জাল নয়, এটি বৈদ্যুতিক তারের জট, যা বছরের পর বছর ধরে এখানে জমেছে। খুঁটিগুলোর সাথে অসংখ্য বৈদ্যুতিক, টেলিফোন ও কেবল টিভির তার ঝুলে আছে।এই তারগুলোর মাঝে অনেক পুরোনো, ক্ষতিগ্রস্ত ও ছেঁড়া অবস্থায় রয়েছে, যা যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
এখানে একটি ছোট উদাহরণ দেই-একবার আমি নবাবপুর রোড ধরে হাঁটছিলাম, তখন হঠাৎ দেখি একটা বৈদ্যুতিক তার ঝুলে নেমে এসেছে, যা একজন পথচারীর গায়ে পড়ে গেল। সৌভাগ্যক্রমে সেটি বিদ্যুতায়িত ছিল না, কিন্তু এই ধরনের ঘটনা এখানে নিত্যদিনের ব্যাপার। গুলিস্তানের ফুটপাতে হেঁটে গেলেও আমাদের মাথার উপরের এই তারের জট আমাদের আশঙ্কার কারণ হয়ে থাকে।শুধু বৈদ্যুতিক তারই নয়, এখানে ছোটখাটো অগ্নিকাণ্ডও প্রায়শই ঘটে। বিভিন্ন দোকানের সামনে বৈদ্যুতিক সংযোগগুলোর কোনোরকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই ব্যবহার করা হয়। অনেক দোকান মালিকই নিজেদের মতো করে অবৈধ সংযোগ নিয়ে থাকেন, যার ফলে মাঝেমধ্যেই আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। কিছুদিন আগেও নবাবপুরে একটি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল, যেখানে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণে কয়েকটি দোকান পুড়ে যায়। অথচ এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধানে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ে না।
এছাড়াও, এই এলাকার রাস্তাঘাটে প্রায়ই খোলা ম্যানহোল দেখা যায়। সামান্য অসতর্কতার কারণে যে কেউ দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন। সন্ধ্যার পর অনেক রাস্তা আলোকহীন হয়ে পড়ে, যার ফলে নিরাপত্তাহীনতার মাত্রা আরও বেড়ে যায়।একটি শহরের উন্নয়নের জন্য অবকাঠামোর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু পুরান ঢাকার গুলিস্তান ও নবাবপুরের মতো এলাকাগুলোতে সেটার কোনো সঠিক ব্যবস্থা চোখে পড়ে না। এখানকার রাস্তা, ফুটপাত, বৈদ্যুতিক সংযোগ,সবকিছুই যেন এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে চলছে।
তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়-এখানে আমাদের জীবনের কতটুকু নিশ্চয়তা? আসলে, আমাদের শহর ব্যবস্থাপনা যতদিন না পর্যন্ত আধুনিক ও নিরাপদ হবে, ততদিন এখানে জীবনের নিশ্চয়তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে। আমরা কি এই অব্যবস্থাপনার মধ্যে নিয়মিত ঝুঁকি নিয়ে চলতে থাকব, নাকি পরিবর্তনের জন্য জোরালো আওয়াজ তুলব? এটাই এখন আমাদের ভাবার বিষয়।
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
X-Promotion
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এখানে জীবনের নিশ্চয়তা নেই বললেই চলে। দিনকে দিন পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। ঠিক এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির জন্য ঢাকাকে বসবাসের অযোগ্য শহর বলা হয়।
লিখনী ভালো ছিল 👌
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit