শীতকালীন মজার মুহূর্ত: "সংসদ ভবনের সামনে মামুন ভাইয়ের পিঠার দোকান"

in hive-129948 •  2 months ago 

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমি ঢাকা কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

Picsart_24-11-02_15-05-04-049.jpg

শীতকাল আসা মানে কেবলমাত্র ঠান্ডা হাওয়া, বরং এর সাথে নিয়ে আসে অসংখ্য আনন্দের মুহূর্ত। শীতের এই আনন্দে এক অন্যরকম অভিজ্ঞতার সন্ধান পেতে, আমি প্রতি দিনের মতো আবারো গিয়েছিলাম সংসদ ভবনের সামনে। এই এলাকাটি প্রতিদিন হাজারো মানুষের ভিড়ের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থাকে। কিন্তু আজকের দিনটি বিশেষ ছিল, কারণ আমি একটি নতুন পিঠার দোকানের সন্ধান পেলাম, যা আমাকে সত্যিই আকর্ষিত করল।তার নাম মামুন। মামুন এবং তার ভাই মিলে একটি বড় ভ্যানে শীতকালের সবচেয়ে জনপ্রিয় পিঠা, অর্থাৎ ভাপা পিঠা এবং চিতই পিঠা তৈরি করে বিক্রি করছে। এদের সৃষ্টিশীলতার আরেকটি নিদর্শন হলো এখানে ২০ রকমের ভর্তা প্রস্তুত রাখা। চিতই পিঠা খাওয়ার জন্য বিশেষভাবে এই ভর্তাগুলো সাজানো হয়েছে। এবং সেখানেই মজার বিষয় হলো, এই ২০ পদের ভর্তাগুলো সম্পূর্ণ ফ্রিতে পাওয়া যাচ্ছে!ভেবে দেখলাম, শীতকালীন ভোজনের আনন্দের সাথে যদি এই ভর্তাগুলো যোগ হয়, তাহলে তো কথাই নেই। ভাপা পিঠার দাম ১০ টাকা এবং চিতই পিঠার দামও ১০ টাকা।তো বন্ধুরা আজকের পুরো ব্লগ জুড়েই থাকছে মামুন ভাইয়ের পিঠার দোকান নিয়ে।আশা করছি পুরো ব্লগটিতে আপনারা সবাই সাথে থাকবেন।তো চলুন তাহলে এবার শুরু করা যাক...

1000036150.jpg

প্রতি দিন বিকেল ৪ টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত সংসদ ভবনের সামনে এই পিঠা বিক্রি হয়। আমি নিজেই প্রায় প্রতিদিন সেখানে গিয়ে পিঠা খাই। ভ্যানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পিঠার গন্ধ আমাকে মুগ্ধ করে। প্রথমে আমি ভাবলাম, শুধু একটি ভাপা পিঠা এবং চিতই পিঠা নিয়েই আমি সন্তুষ্ট হব। কিন্তু যখন আমি দেখলাম, ভর্তাগুলো পেয়ে যাচ্ছি একদম ফ্রিতে, তখন আমার কাছে মনে হলো, আমি যেন শীতকালীন পিঠার উৎসবে প্রবেশ করছি।

1000036148.jpg

মামুন ভাইয়ের সাথে আলাপ করতে গিয়ে জানতে পারলাম, সে এবং তার ভাই একসাথে কাজ করেন। তারা এ কাজটি শুরু করেছেন শীতের মৌসুমে মানুষের মধ্যে আনন্দ ছড়ানোর উদ্দেশ্যে। পিঠার ব্যবসা তাদের পরিবারের ঐতিহ্য, এবং তারা চায় যে, তাদের তৈরি পিঠাগুলো প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিক। তাদের হাস্যোজ্জ্বল মুখাবয়ব এবং আন্তরিকতা সত্যিই আমাকে আকৃষ্ট করেছিল।

1000036145.jpg

২০ রকমের ভর্তা নিয়ে আমি কিছুটা অবাক হলাম। পিঠার সাথে এই ভর্তাগুলো চিতই পিঠার স্বাদকে আরো বেড়ে দেয়। বিভিন্ন ধরনের ভর্তা, যেমন সরিষা ভর্তা,শুটকি মাছে ভর্তা, ডিমের ভর্তা, আলুর ভর্তা, মরিচ ভর্তা,পেঁয়াজ ভর্তা,রসুন ভর্তা,ডাল ভর্তা ইত্যাদি সত্যিই অসাধারণ। আমি যখন প্রথমবারে ভর্তাগুলো ট্রাই করলাম, তখন বুঝতে পারলাম, প্রতিটি ভর্তার স্বাদ আলাদা। পিঠা এবং ভর্তার এই সমন্বয় শীতকালীন এক বিশেষ অভিজ্ঞতা।

1000036146.jpg

যখন আমি প্রথমবারের মতো চিতই পিঠা নিয়ে ভর্তা দিয়ে খেতে বসেছিলাম, তখন অনুভব করলাম, এটি শুধুমাত্র খাবার নয়, বরং একটি উৎসব। প্রথম পিস পিঠার চিতই পিঠা খাওয়া আমার কাছে ছিল এক আনন্দের সময়। ভাপা পিঠার নরম তলা আর চিতই পিঠার সেই গন্ধ আমার মনকে মাতিয়ে রাখে।

সংসদ ভবনের সামনে বসে পিঠা খাওয়া যেন এক বিশেষ অভিজ্ঞতা। সেই স্থানটির সৌন্দর্য এবং চিতই পিঠার সাথে খাবার উপভোগ করা যেন একটি নতুন মাত্রা যোগ করে। এখানে ভিড়ের মধ্যে সবাই একসাথে সময় কাটাচ্ছে, পিঠা খাচ্ছে, হাসাহাসি করছে। মাঝে মাঝে কিছু গান গাওয়া হচ্ছিল, এবং এটি সম্পূর্ণ পরিবেশটিকে আনন্দময় করে তোলে।

1000036143.jpg

একটি সুন্দর সন্ধ্যায়, আমি সেখানে বসে পিঠা খাচ্ছিলাম, আর চারপাশের মানুষের হাসি, চিৎকার এবং কথা বলা আমাকে আনন্দিত করছিল। এখানকার বাতাসে শীতের একটি মিষ্টি ছোঁয়া ছিল, যা পিঠার সাথে মিলে একটি বিশেষ অনুভূতি তৈরি করে।

এই শীতকালের আনন্দের মুহূর্তগুলি আমার জন্য সত্যিই অপরিসীম। সংসদ ভবনের সামনে মামুন ভাইয়ের পিঠার দোকানটি শুধু একটি খাবার বিক্রির স্থান নয়, বরং এটি একটি সমাজের মিলনমেলা। প্রতিদিন সেখানে গিয়ে পিঠা খাওয়ার মাধ্যমে আমি মনে করি, আমাদের জীবনে এই ধরনের ছোট ছোট আনন্দগুলি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ।

1000036149.jpg

শীতের ঠাণ্ডায় পিঠা এবং ভর্তার সঙ্গেও, আমি উপলব্ধি করেছি যে, খাদ্য এবং সংস্কৃতির মধ্যে একটি অটুট সম্পর্ক রয়েছে। এই অভিজ্ঞতা আমার জীবনের একটি স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে, এবং আমি আশা করি আগামী শীতকালে আবারো মামুন ভাইয়ের পিঠার দোকানে গিয়ে এই আনন্দের মুহূর্তগুলো উপভোগ করবো।

1000036144.jpg

আপনারা সবাইকে আমি পরামর্শ দেব, সংসদ ভবনের সামনে মামুনের পিঠার দোকানে এসে একবার হলেও পিঠা খেয়ে দেখুন। এটি কেবল একটি খাবার নয়, বরং এটি একটি আবেগের অভিজ্ঞতা, যা আপনার শীতকালীন স্মৃতিগুলোকে আরো সমৃদ্ধ করবে।


প্রত্যেকটা ছবি তোলার লোকেশন এবং ডিভাইসের নামঃ
Location
Device:Samsung A33 (5G)

আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

standard_Discord_Zip.gif

ফোনের বিবরণ

মোবাইলSamsung A33 (5G)
ধরণ"শীতকালীন মজার মুহূর্ত: সংসদ ভবনের সামনে মামুন ভাইয়ের পিঠার দোকান"
ক্যমেরা মডেলA33 (48+8+5+2)
ক্যাপচার@mohamad786
অবস্থানঢাকা- বাংলাদেশ

আমার পরিচয়

1000024149.png

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ। আমি ঘোরাফেরা, লেখালেখি এবং ফটোগ্রাফি করতে ভালোবাসি। ভ্রমণের মাধ্যমে নতুন জায়গা ও সংস্কৃতি আবিষ্কার করতে আমার আনন্দ লাগে। বিভিন্ন মুহূর্ত ও দৃশ্যকে ক্যামেরার লেন্সে বন্দি করা আমার শখ। লেখালেখির মাধ্যমে আমি আমার ভাবনা, অভিজ্ঞতা ও অনুভূতিগুলো শেয়ার করতে ভালোবাসি। প্রকৃতির সৌন্দর্য, মানুষের জীবনধারা এবং ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আমার লেখার মূল অনুপ্রেরণা। আমি প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করার চেষ্টা করি এবং সেগুলোকে স্মৃতিতে ধরে রাখি। এসব অভিজ্ঞতা আমাকে নতুন করে জীবনকে দেখার অনুপ্রেরণা দেয়।

1000024154.png

1000024151.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

শীতকাল শুরু হওয়ার আগে পিঠা পুলি তৈরি করা শুরু হয়ে গেছে। আপনি তো সংসদ ভবনের সামনে থেকে অনেক মজার মজার পিঠার ফটোগ্রাফি নিলেন। সেগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। পিঠা গুলো দেখে খাবার লোভ লেগে গেল ভাইয়া।

অসংখ্য ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

image.png

দেখে মনে হচ্ছে বেশ জনপ্রিয় একটা পিঠার দোকান ওটা। ২০ রকমের ভর্তা? বিশ্বাস করাই কঠিন। নিশ্চয় ভালই ব্যবসা হচ্ছে উনাদের।

ধন্যবাদ, উনাদের ফিচার করার জন্যে। কেউ ওদিকে গেলে খাওয়ার ট্রাই করবে মামুন ভাইয়ের পিঠার দোকান থেকে।

ভাল থাকুন।


ক্ষুদে স্বাস্থ্যবার্তা

আমেরিকার ফুড এবং ড্রাগ সেফটি সংস্থাটি (FDA) টাইপ ২ ডায়াবেটিস রুগীদের জন্য অটোমেটেড ইনসুলিন ডিভাইস (Automated Insulin Device) হিসাবে অমনিপড ৫ (Omnipod 5) কে অফিসিয়াল অনুমোদন দিয়েছে। এই ডিভাইস তৈরি করেছে ইনসুলেট কর্পোরেশান, যেটা আমেরিকারই আরেকটা কোম্পানি। অনুনোমোদিত ভাবে অনেকেই এটা ব্যবহার করছিল। এখন অনুমোদন পাওয়া গেল। টাইপ ১ ডায়াবেটিসের রুগীদের জন্যে আগে থেকেই এটার অনুমোদন ছিল।

বার বার সুই ফুটিয়ে ইনসুলিন নেয়াটা অনেকের জন্যেই কষ্টকর কাজ। এই অটোমেটিক ডিভাইস দিয়ে ইনসুলিন নেয়াটা বেশ সহজ হবে ডায়াবেটিস রুগীদের জন্যে। একটা ডিভাইস টানা ৩ দিন (৭২ ঘন্টা) ইনসুলিন ডেলিভারি দিতে পারে। প্রথমবার সেটিং করা একটু চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। ইউটিউবে অনেক টিউটোরিয়াল পাবেন। এখানে একটা ভিডিও দিয়ে দিলাম। চাইলে এই আর্টিকেলটাও পড়তে পারেন!

শীতকালে এরকম পিঠাগুলো কম বেশি সব জায়গাতে বিক্রি করা হয়। গরম গরম পিঠাগুলো ভালই লাগে খেতে। তবে বিশ রকম ভর্তা দিয়ে এই পিঠাগুলো বিক্রি করা হয় এটা আগে কখনো দেখিনি। বেশ বড় আয়োজন করে তারা দোকান সাজিয়েছে। ছবিগুলো দেখে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

আমাদের এখানে তো তিন রকম কিংবা পাঁচ রকমের ভর্তা দিয়ে বিক্রি করে ওখানে তো দেখছি বিশ রকমের ভর্তা দিয়ে পিঠা বিক্রি হচ্ছে। ব্যাপারটা কিন্তু বেশ ভালো। শীতকালে রাস্তার ধারে এরকম পিঠা খেতে অনেক ভালো লাগে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

তবে সংসদ ভবনের সামনে প্রত্যেকটা পিঠার দোকানে দেখলাম প্রায় 20 রকমের ভর্তার আয়োজন করা হয়েছে।দেখে আমিও অনেকটা অবাক হয়েছি।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

ঢাকায় অনেক জায়গা এমনভাবে পিঠা বিক্রি করে। বিশেষ করে এখন ভাপা পিঠা বেশি বিক্রি হবে। আমি কখনও খাইনি কিছু বিশেষ কারণে। বেশ লাগল আপনার পোস্ট টা। মামুন ভাইয়ের নিয়মিত ক্রেতা তাহলে আপনি। আর জায়গা টাও বেশ দারুণ। একেবারে সংসদ ভবনের সামনে।

জি ভাই একদম ভালো একটি জায়গায় পিঠার দোকানটা দিছে। প্রতিদিন প্রচুর ইনকাম করে।

এরকম পিঠার দোকানে গিয়ে পিঠা খেতে কিন্তু অনেক বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে রাতের বেলায় একটু বেশি মজা করে খাওয়া যায়। এত রকমের ভর্তা আর পিঠা দেখেই তো আমার ইচ্ছে করছে এখনই নিয়ে খেয়ে ফেলতে। পিঠার পাশাপাশি ভর্তাগুলো কেও দেখতে অনেক লোভনীয় লাগছে। নিশ্চয়ই অনেক মজা করে খেয়েছিলেন পিঠাগুলো। ধন্যবাদ মুহূর্তটা শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।

জ্বী আপু সংসদ ভবনের সামনে অনেক সুন্দর পরিবেশের মাঝে খুব মজা করে পিঠাগুলো খেয়েছিলাম।

একটা সময় ছিল শীত আসলে মানুষের ঘরে ঘরে নতুন পিঠা খাওয়ার আমেজ তৈরি হতো। সবাই ভিন্ন ভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করে থাকে। তবে বর্তমান সময়ে এটা উল্টো তখন ঘরে পিঠা বানানো হতো আর এখন রাস্তায় পিঠা বানানো হয়। একটু গভীরভাবে চিন্তা করে দেখবেন আমার কথার সাথে মিল পাবেন।

আপনি একদম সঠিক কথা বলেছেন ভাইয়া, আগে দেখতাম শীতকাল আসলে ঘরে ঘরে বিভিন্ন রকমের পিঠার আয়োজন করা হয়তো।কিন্তু এখন দেখি বাড়ির কোন আয়োজন হইলে রাস্তায় বাড়ানো পিঠা কিনে নিয়ে যাওয়া হয়।আমাদের বাঙালি ঐতিহ্য আস্তে আস্তে শেষ হয়ে যাচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক।

খাবারের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুব লোভ লেগে গেল। কারণ ভাবা পিঠা আমার অনেক পছন্দের একটি খাবার।

ভাইয়া আজ আপনি অনেক সুন্দর একটি পোষ্ট শেয়ার করেছেন। শীতকালে এই ধরনের পিঠাগুলো কমবেশি সব জায়গায় বিক্রি করে।রোডের ধারে দাঁড়িয়ে পিঠাপুলি খেতে আমার কাছে বেশ ভালই লাগে।আরো যদি গরম গরম খাওয়া যায় তাহলে তো কোন কথাই নেই। পিঠাগুলো দেখে অনেক খেতে ইচ্ছে করছে বিশেষ করে ভর্তা গুলো দেখে অনেক লোভ লেগে গেলো।