স্কুল জীবনের স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা মনে হলেই খুবই ভালো লাগে। স্কুল জীবনের স্মৃতিময় দিনগুলো বন্ধুদের সাথে ছিল সবচাইতে আনন্দের দিন। এই দিনগুলো এখন খুব মনে পড়ে। সেই বন্ধুদের সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো ছিল আমার জীবনের সবচাইতে আনন্দের দিন। আজকে তাই আমার বাংলা ব্লগের প্রতিযোগিতায় -২৩ এর মাধ্যমে সুন্দর একটি আয়োজন করেছেন।প্রতিযোগিতা হল শেয়ার করো তোমার তিক্ত স্কুল জীবনের অনুভূতি। আর স্কুল জীবনে আমাদের আনন্দের অনুভূতি রয়েছে তার সাথে কিছু তিক্ত অনুভূতিও রয়েছে। আজকে তাই আমি এই তিক্ত অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে আসলাম।
আমার স্কুল জীবনের একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি
আমার স্কুল জীবনের একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি
আমি তখন ক্লাস নাইনে পড়ি। আর নাইনে আমার রোল ছিল এক। আমি অংক খুবই ভালো পারতাম। যার কারণে আমার বন্ধুরা আমার কাছ থেকে অংক বুঝে নিত মাঝে মাঝে।আমাদের বন্ধুদের একটি দল ছিল।আমরা বন্ধুরা দলগত ভাবে চলাফেরা করতাম। স্কুলের ভিতরে আমাদের দলটি ছিল অনেক বড়। আমরা সকল বন্ধুরা একটা দল নিয়ে চলাফেরা করতাম। সবাই বলতো নাইনের স্টুডেন্ট গুলো খুবই বন্ধুসুলভ মিলেমিশে থাকে। আর আমার চাচাতো বোন নাম সোনিয়া।সোনিয়া আমাদের স্কুলেই ক্লাস এইটে পড়তো।সোনিয়া খুবই ভালো স্টুডেন্ট। সোনিয়া সুনাম স্কুলে সকল স্যার করে।সব সময় ফাস্ট হয়। আর সোনিয়া আমার চাচাতো বোন যার কারণে আমরা একই সাথে স্কুলে আসা যাওয়া করি এবং সোনিয়ারকে আমি দেখাশোনা করি।কোন সমস্যা হলে সোনিয়া আমাকে বলতো। কারণ আমি ওর বড় ভাইয। তাই আমি ওর বড় ভাইয়ের দায়িত্ব পালন করি। আমাকে খুব সম্মানও করে।
সোনিয়া খুব শান্ত এবং নম্র, ভদ্র একটা মেয়ে ছিল আর সোনিয়া শুধু আমার বোন বলেই আমি ওর সুনাম করছি না। আসলে অনেক ভদ্র একটা মেয়ে। কারো সাথে কোনদিন ঝগড়া এবং কোন খারাপ কাজে নিজেকে জড়ায়নি।তো একদিন সোনিয়ার বান্ধবি সুমা, সে আমাকে বলল ভাইয়া সোনিয়া কি আপনাকে কিছু বলেছে। ও হয়তো আপনি মারামারি করবেন সেইভাবে আপনাকে কিছু বলেনি। কিন্তু সোনিয়া আজকে আমাদের কাছে অনেক কথা বলছে এবং সে কান্না করে দিছে। আমি বললাম সোনিয়া কান্না করে দিছে।কি হয়ে ছে সোনিয়া তো আমাকে সবকিছু বললো না।তখন সুমা বললো আমাদের স্কুলেই ক্লাস টেনের মানিক ভাই। সোনিয়াকে তিন মাস হল ডিস্টার্ব করে। প্রতিদিনই রাস্তার পাশে দাঁড়ায় এবং অনেক কথা বলে। মানিক ভাই প্রেম করতে চাই। কিন্তু সেনিয়া না করে দিছে তার পরও মানিক ভাই বিরক্ত করে মাঝে মাঝেই।আর আজকে নাকি সকালে পাইভিটে আসতে ছিল তখন জোর করে সোনিয়ার হাত ধরে ছিল। যার কারণে সোনিয়া এসে আমার কাছে অনেক কান্না করে দিব।তখন আমি সোনিয়ার কাছে গেলাম। বললাম কিরে সোনিয়া তোকে একজন তিন মাস হল ডিস্টার্ব করে, আমি তোর বড় ভাই তুই আমাকে একবারও বলিসনি কেন? তখন সোনিয়া কান্না করে দিয়ে বলল ভাইয়া আমার ভুল হয়েছে। আমি ভেবেছিলাম এমনি এমনি ঠিক হয়ে যাবে আমি না করেছি কিন্তু ভাইয়া ঠিক হচ্ছেনা। আর তোমাকে বলিনাই কারণ তুমি মারামারি করো। সেজন্য বলিনাই। বললাম ঠিক আছে আমি এটা দেখবো তুই কান্না করিস না।
কথাটা শুনেই তো মাথায় রক্ত উঠে গেল। অনেক রাগ হলো তার পরেও রাগটাকে কন্ট্রোল করলাম। বন্ধুদের সাথে নিয়ে বললাম আজকে মানিক ভাইয়ের সাথে কথা বলব। ওরা বলল ঠিক আছে। বিকেলবেলা স্কুল ছুটি শেষে মানিক ভাইকে বললাম। ভাই আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে। মানিক ভাই বলল ঠিক আছে বটতলায় আসো। স্কুলের মাঠের পাশেই ছিল সেই বটগাছের নিচে মানিক ভাইয এবং আমরাও গেলাম। মানিক ভাইয়ের সাথে বন্ধু ছিল।তো আমি মানিক ভাইাকে বুঝিয়ে বললাম। মানিক ভাই সোনিয়া তো আমার বোন। আপনি আমার বোনকে মাঝেমধ্যে ডিস্টার্ব করছেন। আসলে এটা তো ভাই এক ধরনের বিরক্ত করা হচ্ছে। আপনিকে প্রপোজ করতে পারেন, প্রপোজ করার অধিকার রয়েছে। কারণ প্রেম-ভালোবাসা আমরা করি এবং আপনারা করেন। এটা কোন খারাপ কাজ না।বাধা দেওয়ার অধিকার আমার নেই। কিন্তু সোনিয়া যদি আপনাকে ভালোবাসতো এবং আপনার প্রেমে বিরক্ত না হতো তাহলে আমি কিছুই বলতাম না। কিন্তু সোনিয়া তো আপনার প্রেমে বিরক্ত ভাই। সে প্রতিনিয়ত ডিস্টার্ব ফিল করছে। হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, আমার বোনকে আর ডিস্টার্ব করবেন না। আপনার ও বোন রয়েছে সো প্লিজ আপনার কাছে হাতজোড় করে রিকোয়েস্ট করছি, আপনার এই কাজটা করবেন না। তখন মানিক ভাই বললো ঠিক আছে ঠিক আছে কোন সমস্যা নেই। বেশি বুঝতে হবে না তোমাদের। আমি আমি বুঝি,তারপরে হাত জোড় করে বলে আসলাম। তখন মানিক বলল ঠিক আছে আর হবেনা এই বলল তখন আমরা বন্ধুরা আবারো তার কাছ থেকে চলে আসলাম।
পরের দিন সকালবেলা সোনিয়া তার বান্ধবীদের সাথে স্কুলে যাচ্ছিল। যাওয়ার সময় মানিক ভাই আবারো তাদের সামনে আসে এবং সোনিয়ার হাত জোর করে ধরে।বলে কি রে কি ভাবছিস, তোর ভাইকে আমি ভয় পাবো। তোর ভাই কি বড় মাস্তান হয়ে গেছে। ওকে আমি ভয় পাব নাকি।এই বলে সোনিয়াকে জড়িয়ে ধরে ছিল,সোনিয়া বান্ধবীদের মাসনেই। তখন সোনিয়া আর স্কুলে যায়নি। দৌড়ে বাড়িতে এসেছে। বাড়িতে এসে কান্না করে দিলো।বাড়ির সবাই বসে কি হয়েছে। সোনিয়ার মা আমাকে বললো সোনিয়া স্কুল থেকে ফিরে এসে কিছু না বলে কান্না করছে শুধু।আমি সোনিয়ার কাছে গেলাম সোনিয়া আমাকে সব বলল আর অনেক কান্না করতেছিল।সোনিয়ার কান্না দেখে আমার আর মাথা ঠিক ছিল না। তখনই আমি আমার বন্ধুদের বললাম তোরা এখনই আয় মানিককে শায়েস্তা করব। তো আমরা সকল বন্ধু আসলাম। এসে দেখি মানিক রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আমার হাতে একটি লাঠি ছিল আমি দৌড়ে এসে মানিকের পিঠে আঘাত করলাম।মানিক রাস্তায় পড়ে যায়।আমি তখন আচ্ছামতো মার দিলাম মানিককে।আমার বন্ধুরা সানিকের সাথে দুজন বন্ধু ছিলো ওদের মারতে চাইলো তারা দৌড়ে পালিয়ে গেছে। আমার সাথে আমার বন্ধু আছিলো তখন মানিকে সবাই অনেক মারলাম।হাত পা ধরে মাফ চাইতে লাগলো।বন্ধুরা বললো ছেড়েদেহ মরে যাইবো।
মানিক ভাই এর সাথে মারামারির ঘটনাটি সবাই জেনে গেল। আমাদের স্কুলের স্যার, ম্যাডামরা জেনে গেল এবং গ্রামের মুরুব্বিরা মিলে একটি বিচারের আয়োজন করল। যাতে মীমাংসা করা যায়। এক সপ্তাহ পরে এই বিচারের আয়োজন করা হল। তখন আমরা বন্ধুরা সবাই অনেক কনফিডেন্স ছিলাম যে আমাদের তো কোন দোষ নেই।বিচার শুরু হলো ঘটনা জানতে চাইলো আমরা বললাম যে মানিক ভাইকে সোনিয়াকে অনেক ডিস্টার্ব করে। সোনিয়া তিনমাস কাউকে কিছু বলেনি। ওর বান্ধবী আমাকে বলেছে। তখন আমরা মানিক ভাইয়ের সাথে কোনো রকম খারাপ ব্যবহার করিনি। মানিক ভাইয়ের হাতে পায়ে ধরে বলে ছিলাম,যে সোনিয়াকে বিরক্ত আর করবেন না। কিন্তু সে আবারও এই কাজটা করেছে এবং রাস্তার মধ্যে সোনিয়াকে জড়িয়ে ধরেছিলো। সবাই ঘটনা শুনে বললো মানিক তুই এতো খারাপ ওরা তোকে ভালো করে বলার পরও তুই রাস্তার ভিতর সোনিয়ার সাথে এতো বড় খারাপ কাজ করলি কানো।গ্রামের মুরুব্বীরা বললো মানিক তুই ২০ বার কান ধরে ওঠবস করবি। এবং পরবর্তীতে যদি কোন মেয়ের এ ধরনের খারাপ কাজ করোস তো পুলিশে দিয়ে দেবো। সবার কাছে হাতজোড় করে মানিক মাফ চায়লো, সে বললো আমি আর জীবনে এই কাজ করব না। তারপর থেকে তার সোনিয়াকে কোন সময় ডিস্টার্ব করেনি মানিক ভাই।আসলে বোনের অসম্মান কোনো ভাই মেনে নিতে পারে না। তাই সেদিন অনেক রেগে গিয়ে মানিক ভাইকে অনেক মেরেছিলাম।
আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।
👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আপনার স্কুল জীবনের তিক্ত ঘটনাটি জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। আসলে কেউ যদি বোনকে এভাবে ডিস্টার্ব করে তাহলে মাথা ঠিক থাকার কথা না। আপনি ঠিকই কাজ করেছেন। আমি সেই জায়গায় হলে আমি একই কাজ করতাম। কারণ বোনের সম্মান একজন ভাইয়ের কাছে অনেক।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ ভাই
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit