আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একটি লাইফস্টাইল পোস্ট শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। আমরা সবাই জানি যে, গত সোমবার অর্থাৎ ২৭ শে মে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টি হয়েছে। ঝড় বৃষ্টির কারণে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কিছু জায়গায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে খুলনা এবং পটুয়াখালীর উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছে এবং অনেক মানুষ আহত হয়েছে। তবে আমাদের এখানে তেমন ক্ষয়ক্ষতি না হলেও, আমাদের নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গিয়েছিল বলে টানা ২৯ ঘন্টা বিদ্যুৎ ছিলো না। এতে করে সবাইকে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছিল। যাইহোক সবকিছু এখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে, এটাই সবচেয়ে বড় বিষয়।
মূল কথায় ফেরা যাক, সোমবার ভোরবেলা থেকেই প্রচুর বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছিল। তো সকালে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। তারপর বাসার ছাঁদে উঠতে গিয়ে দেখি যে সিঁড়ি একেবারে পানিতে ভিজে রয়েছে এবং ছাঁদের উপর থেকে অনবরত বৃষ্টির পানি পরছে। সেটা দেখে তো মেজাজ একেবারে খারাপ হয়ে গেলো। কারণ টাইলসের সিঁড়ি এমন পিচ্ছিল হয়ে থাকলে, যে কেউ স্লিপ করে পড়ে যেতে পারে। তো আমার বাসার নিচতলা এবং উপর তলার ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়াদের বললাম সিঁড়ি দিয়ে উঠানামা করার সময় সাবধানে চলতে। যাইহোক সিঁড়িতে বেশ কয়েকটি বালতি দিয়ে রেখেছিলাম এবং বালতির মধ্যে পানি ভরে গেলে বাথরুমে নিয়ে ফেলে দিতে হয়েছিল। মানে ভোগান্তির শেষ নেই। এককথায় সেদিন খুবই বাজে পরিস্থিতিতে পরেছিলাম। তারপর একজন মিস্ত্রীকে ফোন দেওয়ার পর বললো যে বৃষ্টি কমলে আসতে পারবে।
তবে সেদিন একটানা বৃষ্টি হয়েছিল বলে,তার পরের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে মিস্ত্রী এসেছিল। মিস্ত্রী সবকিছু দেখে বললো যে,হয়তো ঝড় বৃষ্টির কারণে কাঠ কিছু কিছু জায়গায় ভেঙে গিয়েছে এবং টিন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই সবকিছু পরিবর্তন করতে হবে। তবে কাঠ না কিনে লোহার এঙ্গেল কেনার পরামর্শ দিলো। কারণ কাঠ তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। উপর তলার কাজ হয়তোবা কয়েক মাসের মধ্যেই করা হবে। সেজন্য মিস্ত্রী বললো ঢালাই না দিয়ে, লোহার এঙ্গেল এবং টিন কেনাটাই ভালো হবে। তারপর উপর তলার কাজ করার সময়, এটা খুলে উপর তলায় শিফট করা যাবে। যাইহোক মিস্ত্রী আমাকে লিস্ট তৈরি করতে বললো কি কি কিনতে হবে। আমি সবকিছু লিস্ট করে,একটু পরেই চলে গিয়েছিলাম প্রয়োজনীয় সব মালামাল কিনতে। তারপর ভিএসএল কোম্পানির এঙ্গেল কিনলাম প্রায় ৬৩ কেজি, যার দাম প্রতি কেজি ৯৪ টাকা।
তারপর ১০ ফিট সাইজের ৪ পিস টিন কিনলাম এবং ১১ ফিট সাইজের ৪ পিস টিন কিনলাম আবুল খায়ের কোম্পানির। যদিও মিস্ত্রী আমাকে বলেছিল মিনিমাম ২৬ মি.লি. থিকনেস এর টিন কিনতে। কিন্তু যাওয়ার পর দেখলাম যে, ২৬ মি.লি. থিকনেস এর টিন একেবারে পাতলা। তাই আমি ৩২ মি.লি. থিকনেস এর টিন কিনলাম মোট ৮ পিস ৮,৫০০ টাকা দিয়ে। তারপর আরও কিছু মালামাল কিনলাম হার্ডওয়্যার এর দোকানে গিয়ে। এরপর মিস্ত্রী আরও ২ জন ছেলেকে সাথে নিয়ে অর্থাৎ তারা ৩ জন গতকাল সকাল ৯ টার পর আমার বাসায় এসেছে কাজ করার জন্য। কাজ করা অবস্থায় বিদ্যুৎ চলে গিয়েছিল এবং অনেকক্ষণ পর বিদ্যুৎ এসেছিল। তারপর দুপুর ৩ টার দিকে তাদের কাজ শেষ হলে,তাদের পারিশ্রমিক ২,৫০০ টাকা দিয়ে তাদেরকে বিদায় করে দিলাম। কাজ খুব সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। অবশেষে চরম ভোগান্তি থেকে রক্ষা পেলাম। আর আপনাদের সাথে এই ঘটনা শেয়ার করে আরও বেশি ভালো লাগছে।
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | লাইফস্টাইল |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ৩০.৫.২০২৪ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
আসলে ঠিক বলেছেন, টাইলসের মধ্যে যদি পানি পড়ে তাহলে কিন্তু পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাটা বেশি থাকে। কাঠ আর টিন নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে মূলত এরকম হয়েছে। আসলে লোহার অ্যাঙ্গেল ব্যবহার করে ভালই করেছেন। এগুলো এখন দেখছি অনেকেই ঘরের মধ্যে ব্যবহার করে। পুরো কাজটা সম্পূর্ণ করতে পেরেছেন দেখে ভালো লাগলো। আশা করি নিশ্চয়ই পরে আর বৃষ্টিতে সমস্যা হবে না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ আপু আমি সিঁড়ি কোটার উপরে লোহার এঙ্গেল এবং টিন ব্যবহার করেছি, কিন্তু অনেকে এখন এঙ্গেল দিয়ে রুম তৈরি করে। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী ভাইয়া সেদিন শুনেছিলাম ঘূর্ণিঝড়ে আপনাদের বাসার সিড়িতে বৃষ্টির পানিতে ভিজে গেছিলো। টাইলসের সিড়ি ভিজে গেলে অনেক রিক্স হয়ে যায়। যায়হোক এখন দেখছি অনেক মজবুত করেই টিনের চালটি তৈরী করেছেন। আশা করি অনেক বছর টেকশই হবে। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ ভাই অনেক মজবুত করে তৈরি করলাম এটা। যাতে পরবর্তীতে আর কোনো সমস্যা না হয়। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit