ক্রিয়েটিভ রাইটিং (গল্প) || প্রবাসীদের জীবনে দুঃখের কোনো সীমা নেই(দ্বিতীয় পর্ব )

in hive-129948 •  5 months ago 

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।


প্রথম পর্ব


প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি বাস্তব গল্প শেয়ার করবো। এর আগে এই গল্পের প্রথম পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি এবং আজকে দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করতে যাচ্ছি। যাইহোক মোবারক ভাই যেহেতু আর্জেন্টিনার নাগরিকত্ব লাভ করে,আর্জেন্টিনা থেকে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়াতে প্রবেশ করেছিলেন,তাই তিনি টুরিস্ট ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়াতে কাজ করতে পারবেন না। মানে টুরিস্ট ভিসায় কাজ করার কোনো অনুমতি নেই। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়াতে এখনও কিছু কিছু কোম্পানিতে অবৈধভাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তবে সেগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটু গ্রামের দিকে। কিন্তু আমরা যেহেতু সিটিতে ছিলাম, সেসব জায়গায় অবৈধ লোক খুব কম ছিলো। মানে সেখানকার বেশিরভাগ কোম্পানি অবৈধ লোককে কাজের জন্য নিয়োগ দিতে চায় না।


person-8258273_1280.jpg

Source


তাই মোবারক ভাই বহু বছর আগে যে কোম্পানিতে কাজ করেছিলেন দীর্ঘদিন,উনি সেই কোম্পানিতে কাজের জন্য যোগাযোগ করলেন। যেহেতু সেই কোম্পানিতে মোবারক ভাইয়ের কাজের বেশ সুনাম ছিলো, তাই অবৈধ হওয়া সত্ত্বেও সেই কোম্পানিতে কাজের সুযোগ দেওয়া হলো। যাইহোক মোবারক ভাই বাবু ভাইয়ের রুমে থেকেই ,সেই কোম্পানিতে আসা যাওয়া করে কাজ করতে শুরু করলো। তবে কিছুদিন পর আমাদের আশেপাশেই বাসা নিয়ে বসবাস করবে, এমন চিন্তা ভাবনা মোবারক ভাইয়ের ছিলো। বাবু ভাইয়ের রুমে যেহেতু সবসময়ই আসা যাওয়া ছিলো আমাদের, তো মোবারক ভাইয়ের সাথে প্রায়ই দেখা হতো এবং উনাকে কিছু কিছু কথা জিজ্ঞেস করতাম উনার জীবন সম্পর্কে। কারণ দীর্ঘদিন দক্ষিণ কোরিয়াতে কাজ করার পর, এই বয়সে আবারও দক্ষিণ কোরিয়াতে পাড়ি জমানোর ব্যাপারটা আমাদের সবার কাছেই অস্বাভাবিক লাগতো।


সেখানে আমাদের যে পরিচিত ভাই ব্রাদাররা ছিলো, সবাই বলতো যে লোকটার জন্য আসলেই খুব খারাপ লাগে। কারণ দক্ষিণ কোরিয়ার যেকোনো কোম্পানিতে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়। আর মোবারক ভাইয়ের তখন বয়স ছিলো প্রায় ৫০। এই বয়সে দক্ষিণ কোরিয়াতে পরিশ্রম করাটা এতো সহজ নয়। যাইহোক মোবারক ভাই উনার নিজের পরিবারের কিছু কথা শেয়ার করলেন। যেমন উনার এক ছেলে এবং এক মেয়ে। ছেলের বয়স ১৫ এবং মেয়ের বয়স ১১। তো মোবারক ভাইয়ের ওয়াইফ এবং ছেলেমেয়ে উনাকে প্রায়ই দেশে চলে যেতে বলতেন। বিশেষ করে উনার ছেলে সারাক্ষণই বলতো মোবারক ভাইকে বাংলাদেশে চলে যেতে। তো মোবারক ভাই নিজের পরিবারকে বুঝাতেন, ৩/৪ বছর কোরিয়াতে কাজ করে উপার্জন করে বাংলাদেশে চলে যাবেন।


যেহেতু মোবারক ভাই আর্জেন্টিনার নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন,উনার ইচ্ছে ছিলো ছেলের ১৮ বছর পূর্ণ হলে,তারপর উনার ছেলেকে আর্জেন্টিনাতে নিয়ে গিয়ে, হয়তো সেখানে সেটেল্ড করে দিবে কিংবা ইউরোপের ভালো কোনো দেশে সেটেল্ড করার চেষ্টা করবে। বলতে গেলে উনার চিন্তা ভাবনা বেশ ভালোই ছিলো। যাইহোক উনার ব্যাপারে অনেক কিছু জানার কৌতুহল কাজ করতো মনের মধ্যে,কিন্তু নতুন পরিচয় হিসেবে বেশি কিছু জিজ্ঞেস করতেও অস্বস্তি লাগতো। কারণ উনি যদি মনে মনে অন্য কিছু ভাবে,সেজন্য অনেক কিছুই জিজ্ঞেস করতে পারতাম না। তবে ধীরে ধীরে অনেক কিছুই জানতে পারবো,সেটা ভেবে বেশি কিছু জিজ্ঞেস করতাম না। আমার আসলে প্রবাসীদের জীবন সম্পর্কে জানার জন্য আগে থেকেই মনের মধ্যে কৌতুহল কাজ করতো। যাইহোক মোবারক ভাইয়ের জীবনে আর কি কি ঘটেছিলো, সেটা পরবর্তী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। (চলবে)



2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZA8GzS2DQRCenaYmQc8PKmKoqUpUeK1EYkXvpDQ1G4vq9r2thnL24nVMe9HEoTA18P3XxZmEBqKV5Qa.png

পোস্টের বিবরণ

ক্যাটাগরিগল্প(ক্রিয়েটিভ রাইটিং)
পোস্ট তৈরি@mohinahmed
ডিভাইসSamsung Galaxy Note 20 Ultra 5g
তারিখ২৯.৬.২০২৪
লোকেশননারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ

বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

9vWp6aU4y8kwSZ9Gw15LFL3aMdhmgmBBFMpDJregpdP328CzpX9QvbjSPXbrW8KqUMMwTrRCn3xcSQ6EA6R67TcD5gLnqAWu8W41xe41azymkyM19LEXr548bkstuK4YE8RXJKQJWbxQ1hVAD.gif

আমার পরিচয়

IMG-20240212-WA0036.jpg

🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹

5ZJ4Z52ZRyQfNkCWFfXsATSsPtfkBwT3a5k8RVinr67352Jpu6E5J43D5L7yhn5d5CrcpnTvTLcF5db3ftZK7V9GzsAkLjb3PriF27x53soS8yKq9EnT1Gez2W6L2XUZu7jXnMduxdzGd4QzpYoozSDTPz3jUEkZ8x9rPrFry12vk2pkpsukTxq2kgJhF2zDYwrV.png

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81RRg3nBstm6z4qmufGsvFT24rqXwtpQD564XVCvACqesd3KULjLw7vQPhCNBNpraDPBk9z8jqn3ncuykugzMhQ2.png

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PxWHDWW9CETD5B5Jw9Q6ERAnD25KhyHKAX53jBLJKQRtPJf1WFG3aJd6PXbp2rpTXdWPxnRnq65CqtM8PawHiD5knScnfCbWvcVRuFVv1rtwzsXe59AixEGDGYZT2EWzPMzrWjWrbujcJd79Q1Sjs2X.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

প্রবাসী সবাইকে কষ্ট করে থাকতে হয়। পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশের মতো বা ধরুন নিজের দেশের মতো সুখ বাইরে কোথাও নেই। ওখানে ভিসার সমস্যা, পরের দেশে পরের মতো করে বাঁচা খুবই কষ্টের। আমি বেশ কিছুদিন সিঙ্গাপুরে থাকার কারণে দেখেছিলাম, বাংলাদেশ থেকে অনেক লোকজন কাজের জন্য ওখানে গিয়ে থাকতেন। লিটিল ইন্ডিয়া বলে একটা জায়গা আছে যেখানে সমস্ত বাঙ্গালীদের ভিড় এপার বাংলা ওপার বাংলার। ওখানে গিয়ে কথায় কথায় জেনেছিলাম ওই দাদা রা কি কষ্ট করে এখানে থাকেন। সামান্য দিনমজুরের কাজ করে, দিনের শেষে একটা হোস্টেলের মত জায়গায় একটা ঘরের মধ্যে অনেকে মিলে কোনভাবে দিন যাপন করে টাকা বাঁচায়। কারণ তাদের দেশে টাকা পাঠাতে হয় সেখানে তাদের পরিবার-পরিজন আছে। সবাই ভাবে বোধহয় বিদেশের খুব আনন্দ করেই থাকে। কিন্তু নিজের বাড়ির লোকজনকে ছেড়ে অন্যের মাটিতে পড়ে থাকা আরেক কঠিন জিনিস।

আপনার ব্লগটি পড়ে অনেক কিছু মনে পড়ে গেল। ভালো থাকবেন দাদা৷

এমনিতে দক্ষিণ কোরিয়াতে প্রবাসীদের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা বেশ ভালোভাবেই করা হয়। তবে কোম্পানিতে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়। যাইহোক গল্পটা পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।