ক্রিয়েটিভ রাইটিং (গল্প)|| প্রবাসীদের জীবনে দুঃখের কোনো সীমা নেই (শেষ পর্ব )

in hive-129948 •  3 months ago 

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।


পঞ্চম পর্ব


প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি বাস্তব গল্প শেয়ার করবো। এর আগে এই গল্পের পঞ্চম পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি এবং আজকে শেষ পর্ব শেয়ার করতে যাচ্ছি। যাইহোক মোবারক ভাইয়ের রুমে আমরা সবাই গিয়ে দেখি যে উনি বিছানায় শুয়ে আছেন। উনাকে জিজ্ঞেস করার পর তিনি বললেন যে উনার বুকে প্রচন্ড ব্যথা করছে। তারপর আমরা ভাবলাম যে হয়তো পরিবারের সবাইকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করেন বলে উনার ব্লাড প্রেসার বেড়ে গিয়েছে এবং পালস রেট বেড়ে গিয়েছে। হয়তোবা সেজন্য উনার বুক ব্যথা করছে। কারণ মানুষ অনেক সময় দুশ্চিন্তা করলে এমনিতেই বুক ব্যথা করে। যাইহোক আমরা সবাই উনাকে নিয়ে বাসার পাশের একটি ফার্মেসীতে চলে গেলাম ব্লাড প্রেসার মাপতে।


JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH815z8bVJxvrVBf2K6Z2aTTx3MKUp4YBgFjx27M4QBecv4hHwyroZNohJTqi2ELa8NjAkJpcNymirPUEVsWEhZxvRDMdS14.jpeg

Source


ব্লাড প্রেসার মাপার পর দেখলাম ১৭০/১১০ এবং পালস রেট খুব সম্ভবত ৯৮ ছিলো। তো ফার্মাসিস্ট জিজ্ঞেস করলেন উনি কি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মেডিসিন খান কিনা। আমরা বললাম উনি প্রতিদিনই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ঔষধ খেয়ে থাকেন। তারপর ডক্টর বললো হয়তোবা দুশ্চিন্তার কারণে প্রেসার এতোটা বেড়েছে। ফার্মাসিস্ট সাজেস্ট করলেন ডক্টর দেখিয়ে সবকিছু বলতে এবং দুশ্চিন্তা না করতে। কারণ ডক্টর দেখালে হয়তোবা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মেডিসিন পরিবর্তন করে দিতে পারে। যাইহোক মোবারক ভাইকে নিয়ে বাসায় চলে গেলাম এবং উনাকে সবাই বললাম দুশ্চিন্তা না করতে। তাছাড়া ২/১ দিনের মধ্যে ডক্টর দেখানোর জন্য। সেদিন রাতে বাবু ভাই মোবারক ভাইয়ের সাথে উনার রুমে থেকেছিল। কারণ এমন অবস্থায় রুমের মধ্যে একা থাকাটা রিস্ক।


যাইহোক মোবারক ভাই পরের দিন অফিসে না গিয়ে ক্লিনিকে গেলেন এবং ডক্টর দেখিয়ে মেডিসিন পরিবর্তন করলেন। তারপর থেকে মোবারক ভাই মোটামুটি স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে লাগলেন। কিন্তু মাঝেমধ্যে পরিবার নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তা করেন বলে, আমরা সবাই সাজেস্ট করলাম যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশে চলে যেতে। কারণ উনার এমনিতেই অনেক বয়স হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া উনি সারাক্ষণ যেহেতু দুশ্চিন্তা করেন,যেকোনো সময় খারাপ কিছু হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া উনার যেহেতু মোটামুটি ভালোই বয়স হয়ে গিয়েছিল,দক্ষিণ কোরিয়াতে কঠোর পরিশ্রম করতে উনার ভীষণ কষ্ট হয়ে যেতো। এমনিতে মোবারক ভাইয়ের পরিবার সবসময়ই বলতেন উনাকে দেশে চলে যাওয়ার জন্য। যাইহোক মোবারক ভাই সবদিক বিবেচনা করে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিলেন, বাংলাদেশে গিয়ে একটি দোকান দিয়ে ছোটখাটো একটা ব্যবসা শুরু করবেন।


পরবর্তীতে উনার ছেলেকে আর্জেন্টিনাতে নিয়ে গিয়ে সেটেল্ড করে দিয়ে আসবেন। তারপর উনার পরিবার নিয়ে বাংলাদেশেই থাকবেন। যাইহোক আমরা সবাই উনাকে এয়ারপোর্টে এগিয়ে দিয়ে এসেছিলাম। কয়েকমাস পরে উনাকে ফোন দিয়ে জানতে পেরেছিলাম,দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ইনকাম করা টাকা দিয়ে, উনি ছোটখাটো একটা ব্যবসা শুরু করে পরিবার নিয়ে মোটামুটি ভালো আছেন। পরবর্তীতে উনার সাথে আর সেভাবে যোগাযোগ করা হয়নি। তাই শেষ পর্যন্ত উনার ছেলেকে আর্জেন্টিনা নিয়ে গিয়ে সেটেল্ড করে দিয়েছে নাকি সেটা সঠিক জানি না। যাইহোক মোবারক ভাইয়ের জীবনটা এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল উনার মা বাবার ভুলের কারণে। তাই প্রবাসীদের উচিত পরিবারের কাছে সব টাকা না পাঠিয়ে, বরং নিজের একাউন্টে কিছু টাকা সঞ্চয় করা। যাতে করে পরবর্তীতে দেশে ফেরার পর ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারে।



2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZA8GzS2DQRCenaYmQc8PKmKoqUpUeK1EYkXvpDQ1G4vq9r2thnL24nVMe9HEoTA18P3XxZmEBqKV5Qa.png

পোস্টের বিবরণ

ক্যাটাগরিগল্প(ক্রিয়েটিভ রাইটিং)
পোস্ট তৈরি@mohinahmed
ডিভাইসSamsung Galaxy S9 Plus
তারিখ২.৮.২০২৪
লোকেশননারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ

বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

9vWp6aU4y8kwSZ9Gw15LFL3aMdhmgmBBFMpDJregpdP328CzpX9QvbjSPXbrW8KqUMMwTrRCn3xcSQ6EA6R67TcD5gLnqAWu8W41xe41azymkyM19LEXr548bkstuK4YE8RXJKQJWbxQ1hVAD.gif

আমার পরিচয়

IMG-20240212-WA0036.jpg

🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹

5ZJ4Z52ZRyQfNkCWFfXsATSsPtfkBwT3a5k8RVinr67352Jpu6E5J43D5L7yhn5d5CrcpnTvTLcF5db3ftZK7V9GzsAkLjb3PriF27x53soS8yKq9EnT1Gez2W6L2XUZu7jXnMduxdzGd4QzpYoozSDTPz3jUEkZ8x9rPrFry12vk2pkpsukTxq2kgJhF2zDYwrV.png

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81RRg3nBstm6z4qmufGsvFT24rqXwtpQD564XVCvACqesd3KULjLw7vQPhCNBNpraDPBk9z8jqn3ncuykugzMhQ2.png

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PxWHDWW9CETD5B5Jw9Q6ERAnD25KhyHKAX53jBLJKQRtPJf1WFG3aJd6PXbp2rpTXdWPxnRnq65CqtM8PawHiD5knScnfCbWvcVRuFVv1rtwzsXe59AixEGDGYZT2EWzPMzrWjWrbujcJd79Q1Sjs2X.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!